গত ১২ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান পারমাণবিক সমঝোতা চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোসংক্রান্ত একটি প্রশাসনিক আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। তবে এটা জানাতেও তিনি ভোলেননি যে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির ব্যাপারে তাঁর রিজার্ভেশন আছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে ও পরে বারবার বলে আসছিলেন, তিনি ইরান পারমাণবিক চুক্তি মানবেন না। গত শুক্রবার প্রশাসনিক আদেশটি স্বাক্ষরের সময় ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোকে ইরানের মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বলেছেন। তিনি এটা জানাতে ভেলেননি যে ইরানের মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় যদি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা না যায়, তাহলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান পারমাণবিক সমঝোতা চুক্তি থেকে বের করে নিয়ে আসবেন।
ট্রাম্প প্রশাসনিক আদেশটি জারি করে চুক্তির মেয়াদ যে বাড়িয়ে দিলেন, এটা প্রয়োজন ছিল। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি পর্যালোচনা আইনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন প্রতি তিন মাস পর কংগ্রেসের কাছে ইরান চুক্তির শর্তাবলি মেনে চলছে কি না তা মূল্যায়ন করে জানাবে। প্রেসিডেন্ট এতে সত্যায়ন না করলে গোটা বিষয়টি কংগ্রেসের হাতে চলে যাবে এবং ৬০ দিন পর কংগ্রেস ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন করে অবরোধ আরোপ করতে পারবে। ১২ জানুয়ারি ছিল সত্যায়ন আদেশের শেষ দিন। ট্রাম্প এক প্রশাসনিক আদেশে তা সত্যায়িত করলেন। এর মধ্য দিয়ে আগামী তিন মাস পর্যন্ত ইরান পারমাণবিক চুক্তিটি বহাল থাকল। এরপর কী হবে বলা মুশকিল। ট্রাম্প এটা স্পষ্ট করেছেন যে তিনি চান এসংক্রান্ত একটি স্থায়ী চুক্তি। ইরানের মিসাইল প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় তিনি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আনতে চান, এটা উল্লেখ করতে তিনি ভোলেননি। ট্রাম্প ওই চুক্তিটি মেনে চলবেন বলে সত্যায়িত করলেও নতুন করে ১৪ জন ইরানি নাগরিকের ওপর এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অন্য একটি প্রশাসনিক আদেশ জারি করেছেন। এসব ব্যক্তির কেউ কেউ ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত। এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এলো এমন এক সময়, যখন ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গত ২৯ ডিসেম্বর ইরানের বিভিন্ন শহরে যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে মারা গিয়েছিল ২২ জন ব্যক্তি। বিক্ষোভকারীরা সরকার পতনের লক্ষ্যে কাজ করেছিল বলে ইরান সরকার অভিযোগ করেছিল। ইরান সরকার সরাসরি অভিযোগ করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের মদদে ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ইরান সরকার ওই বিক্ষোভ দমন করতে পেরেছিল বটে, কিন্তু সেটি নানা প্রশ্ন রেখে গেছে। ওই ঘটনার মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কটি সামনে চলে এসেছিল। ইরানের ভূমিকা, বিশেষ করে ইয়েমেনে ইরানের ভূমিকাকে সন্দেহের চোখে দেখছে সৌদি আরব। শঙ্কা তৈরি হয়েছে সৌদি রাজপরিবারেও। ইরানের এই ভূমিকাকে সৌদি আরব যেমনি পছন্দ করছে না, ঠিক তেমনি পছন্দ করছে না যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। ফলে এ অঞ্চলে সৌদি আরব-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল একটি অলিখিত অ্যালায়েন্স গড়ে উঠছে। এখন ট্রাম্পের ছয় জাতি পারমাণবিক সমাঝোতাকে অস্বীকার করা নতুন করে এ অঞ্চলে উত্তেজনার জন্ম দেবে। ওই সমাঝোতা চুক্তিতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চুক্তিতে উল্লেখ আছে, ইরান আগামী ১০ বছর কোনো পারমাণবিক কর্মসূচি হাতে নিতে পারবে না। তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক নজরদারিতে থাকবে। ওই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ইরানের যে সম্পদ জব্দ করা হয়েছিল, ইরানকে তা ফেরত দেওয়া হয়। ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর এ অঞ্চলে এক ধরনের স্বস্তি ফিরে এসেছিল। এখন ট্রাম্পের ওই চুক্তি বাতিলের হুমকি নতুন করে এ অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্ম দিতে পারে। সৌদি আরবও পারমাণবিক কর্মসূচি হাতে নিতে পারে।
এখানে বলা প্রয়োজন যে ইরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে—এই অভিযোগ তুলে ২০০৬ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বাতিল করার দাবিসংবলিত একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। এরপর অন্তত এসংক্রান্ত আরো ছয়টি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল এবং ইরান ওই কর্মসূচি বাতিল না করায় ২০১০ সালে জাতিসংঘ ইরানের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক মালিকানার সম্পদ জব্দসহ দেশটির বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। উল্লেখ্য, ২০০৬ সাল থেকেই ইরানের সঙ্গে ছয় জাতি (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া ও জার্মানি) আলোচনা চলে আসছিল। কিন্তু তাতে কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছিল না। ২০১৩ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত হাসান রুহানি বিজয়ী হলে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ করা যায়। ফলে এই ছয় জাতির আলোচনা আরো গতি পায়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং এপ্রিলে (২০১৫) সুইজারল্যান্ডের লুজানে একটি খসড়া চুক্তিতে ইরান ও ছয় জাতি উপনীত হয়। ওই বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এই খসড়া চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। জুলাইয়ে (২০১৫) চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে অন্তত একটি জিনিস স্পষ্ট হয়েছিল। আর তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক বৃদ্ধির একটি সম্ভাবনা। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই সম্পর্ক আরো উন্নত করার প্রয়োজন ছিল। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে, প্রশাসনে, সেনাবাহিনীতে এখনো ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের পর দীর্ঘ ৪৪৪ দিন রেভল্যুশনারি স্টুডেন্টস কর্তৃক তেহরানের মার্কিন দূতাবাস দখল করে নেওয়ার ঘটনার স্মৃতি একটি ‘ক্ষতচিহ্ন’ হিসেবে রয়ে গেছে। ফলে সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনাটা অত সহজ ছিল না। এরপর যোগ হয় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি। ওই ঘটনার দীর্ঘ ৩৬ বছর পর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এই দেশ দুটিকে আরো কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। এর ফলে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধু’ ইসরায়েলের আপত্তি সত্ত্বেও। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিস্টদের কেউ কেউ মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে ইরাক-সিরিয়ায় জঙ্গিবাদী রাজনীতির উত্থান ঠেকাতে ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে তাঁদের ইরানের সমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে। অনেকের স্মরণ থাকার কথা, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে বারাক ওবামা স্বীকার করেছিলেন, তিনি গোপনে ইরানি সমর্থন চেয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। প্রতি উত্তরে খামেনিও গোপনে তাঁকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। আইএস (ইসলামিক স্টেট) জঙ্গিদের ঠেকাতে ওবামা খামেনিরই সমর্থন চেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইয়েমেনে ‘হুতি বিদ্রোহ’ প্রমাণ করেছিল, সেখানেও একটি স্থিতিশীল সরকার গঠনে ইরানের সমর্থন প্রয়োজন রয়েছে। কেননা হুতিরা শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত এবং অভিযোগ আছে হুতি বিদ্রোহীরা ইরান থেকে আর্থিক ও সামরিক সাহায্য পেয়ে থাকে, যদিও ইরান বারবার তা অস্বীকার করে আসছে। ২০১৫ সালের পর কেটে গেছে আরো দুই বছর। মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা আসেনি। বরং নতুন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। ইরানে সাম্প্রতিক সময়ে যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা নতুন একটি মাত্রা। এই বিক্ষোভ বা অসন্তোষ শেষ পর্যায়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বলা মুশকিল। তবে ইরান সরকারকে কোনো গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উত্খাত করা যাবে না। সরকারের পেছনে জনসমর্থন যেমনি আছে, ঠিক তেমনি সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে রেভল্যুশনারি গার্ড। সুতরাং সরকার উত্খাতের কাজটি খুব সহজ হবে না।
ইরানের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশকে মেলানো যাবে না। যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ ইন্ধনে, আর্থিক সহযোগিতায় আরব বসন্ত (২০১১) হয়েছিল। মিসর, তিউনিসিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে সরকারের পরিবর্তন হয়েছিল। তিউনিসিয়ায় জাইন এল আবিদিন বেন আলী, হোসনি মোবারক (মিসর), মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া), আলী আবদুল্লাহ সালেহ (ইয়েমেন) উত্খাত হয়েছিলেন। কুয়েত, মরক্কো ও জর্দানে সাংবিধানিক সংস্কার আনা হয়েছিল। সিরিয়ায় সরকার উত্খাত হয়নি সত্য, কিন্তু দেশটি ধ্বংস হয়ে গেছে। বিশ্ব দেখেছে, সেখানে আইএসের উত্থান (২০১৪), আর পতন (২০১৭)। ‘আরব বসন্ত’-এর সঙ্গে ‘রেজিম চেঞ্জ’-এর একটি সম্পর্ক আছে। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যসহ অন্যান্য দেশে কোথাও কোথাও ওই নীতি অনুসরণ করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে এই নীতি অনুসরণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ভুল করবে। ইরানের সঙ্গে অন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থাকে মেলানো যাবে না। ইরানের সমাজে শিয়া ধর্মীয় সংস্কৃতির একটা বড় প্রভাব রয়েছে।
ইরান বিপ্লবের (১৯৭৯) পর ইরান একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত হয়েছে। জাতি হিসেবে এখানে বিভক্তি কম। রাজনৈতিক নেতৃত্বও ‘ভেলায়েতি ফাকিহ’ বা ধর্মীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। ফলে যখনই ইরানে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ বেড়েছে, তখনই সরকারের পক্ষে একটি শক্তিশালী পক্ষ অবস্থান নিয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর যে বিক্ষোভ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তা শেষ পর্যন্ত দমন করা গেছে। কিন্তু যে প্রশ্নটি কোনো কোনো মহল থেকে উচ্চারিত হয়েছে, তা হচ্ছে ওই বিক্ষোভের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের বিষয়টির কোনো যোগসূত্র আছে কি না? পারমাণবিক চুক্তি বাতিলের ‘হুমকি’ নিংসন্দেহে ইরান সরকারের ওপর এক ধরনের ‘চাপ’। এবং এটাও ঠিক, ইরানের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ আয়োজন করে বিক্ষোভকারীরা সরকারের ওপর একটা ‘চাপ’ সৃষ্টি করেছিল। সুতরাং এই দুয়ের মধ্যে একটা যোগসূত্র থাকাটাই স্বাভাবিক।
ইরানে ব্যাপক বিক্ষোভ আর ট্রাম্পের একটি ‘টুইট বার্তা’ প্রমাণ করে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক যে রাজনীতি, তার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে এখন ইরান। একসময় সিরিয়ার ক্ষেত্রে ‘রেজিম চেঞ্জ’-এর ধারণা অনুসরণ করেছিল ওবামা প্রশাসন। এ কারণে সিরিয়ায় আসাদবিরোধী শক্তিগুলোকে আর্থিক ও অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। অভিযোগ আছে, আইএসের উত্থানের পেছনেও যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল। কিন্তু সিরীয় সংকটে রাশিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ (বিমান হামলা) পুরো দৃশ্যপট বদলে দেয়। সিরিয়ার আসাদ সরকার জীবন পায়। এমনকি রাশিয়া সিরীয় সংকটে এক ধরনের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হয়েছে। সিরিয়ায় ২০১৪ সাল থেকে যে গৃহযুদ্ধ চলে আসছিল, তা এখন অনেকটা সমাপ্তির দিকে। ফলে হোয়াইট হাউস প্রশাসনের জন্য ইরানে একটি ‘ফ্রন্ট’ ওপেন করা প্রয়োজন ছিল। পাঠক স্মরণ করতে পারেন, ট্রাম্প তাঁর এক টুইট বার্তায় ইরানে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেখার জন্য তৈরি থাকার জন্য ইরানি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন! স্পষ্টতই এটা একটা মেসেজ, ট্রাম্প প্রশাসন ইরানে নতুন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেখতে চায়! ইরানে জানুয়ারির প্রথম দিকে বিক্ষোভ চলার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই টুইট বার্তাটি প্রেরণ করেছিলেন। ইরানে বিক্ষোভকারীরা যখন সরকার পরিবর্তন করতে ব্যর্থ হলো, তখন সামনে এলো পারমাণবিক চুক্তির বিষয়টি।
আপাতত ওই চুক্তিটি ট্রাম্প বাতিল করলেন না বটে, কিন্তু বললেন, এটাই শেষ সুযোগ। এরপর তিনি আর চুক্তিটি অনুমোদন করবেন না। তিনি আপত্তি জানিয়েছেন ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির। বলেছেন, ইউরোপীয় মিত্রদের দায়িত্ব অনেক বেশি। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়ে দিয়েছে, ইরান চুক্তিটি যথাযথভাবে মেনে চলছে। গেল সপ্তাহে ইইউর সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএর ৯টি রিপোর্টের কথা তুলে ধরে বলেন, সমাঝোতা ঠিকমতো কাজ করছে। ইইউ আবারও পরমাণু চুক্তির প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে এবং একই সঙ্গে এই চুক্তির প্রতি সম্মান দেখানোর জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পারস্য উপসাগরের রাজনীতি এখন এক ধরনের স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। আইএস সেখান থেকে উত্খাত হওয়ার পর ধীরে ধীরে রাজনীতিতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। এমন এক পরিস্থিতিতে ইরান পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যদি কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়, তাহলে তা কারো জন্য কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না।
Daily Kalerkontho
21.1.2018
0 comments:
Post a Comment