রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সদিচ্ছা কি বাস্তবতাকে ছাপিয়ে যেতে পারবে?


গত ২৭ এপ্রিল দুই কোরিয়ার বেসামরিক অঞ্চল পানমুনজমে দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যকার বৈঠকের সম্ভাবনা এখন অনেক বেশি উজ্জ্বল। যদিও এখন অব্দি ঠিক হয়নি এই শীর্ষ সম্মেলন কোথায় অনুষ্ঠিত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কয়েকটি সম্ভাব্য জায়গার কথা বলা হয়েছে। এর সঙ্গে সিঙ্গাপুর, পানমুনজম ও মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাতোরের নামও রয়েছে। এক্ষেত্রে পানমুনজমের ব্যাপারে উত্তর কোরিয়া রাজি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার প্রয়াত বাবার মতোই বিমানে ভ্রমণের চেয়ে ব্যক্তিগত বুলেট প্রুফ ট্রেনে যাতায়াত করতেই পছন্দ করেন। সেজন্য উত্তর কোরিয়া শীর্ষ বৈঠকের জন্য পানমুনজম অথবা উলানবাতোরকে বেছে নিতে পারে। উলানবাতোরের সঙ্গেও পিয়ংইয়ংয়ের রেল যোগাযোগ আছে। কিম জং উন কখনও বিমানে ভ্রমণ করেছেন এরকম তথ্য কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কাছেই নেই।
পানমুনজমে দুই কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠক কতটুকু সফল হয়েছে, কতটুকু ‘লোক দেখানো’ তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কোনো কোনো পর্যবেক্ষকের লেখায় এই ‘লোক দেখানো’ কথাটাও আমি খুঁজে পেয়েছি। তাদের যুক্তি- শীর্ষ বৈঠকে কোরিয়া উপদ্বীপকে পরমাণুমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সত্য, কিন্তু উত্তর কোরিয়া কি তার সংগ্রহে থাকা প্রায় ৬০টি পরমাণু বোমা ধ্বংস করার কোনো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে? কোনো সংবাদপত্রেই কিন্তু এ সংক্রান্ত তথ্য আমি পাইনি। এখন সঙ্গত কারণেই যে প্রশ্নটি উঠবে তা হচ্ছে, ট্রাম্প-কিম আলোচনার এজেন্ডা কী হবে? এটা অনেকেই জানেন, ট্রাম্প প্রশাসনের উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে একধরনের নেতিবাচক মনোভাব আছে। মার্কিন প্রশাসন মনে করে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি দক্ষিণ কোরিয়া, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতিও হুমকিস্বরূপ। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্র চাইবে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পরিপূর্ণ ধ্বংস। অনেকের মনে থাকার কথা, উত্তর কোরিয়া চলতি বছরের গোড়ার দিকে একের পর এক আন্তঃমহাসাগরীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একধরনের বিবাদে জড়িয়ে গিয়েছিল। একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ামে পারমাণবিক বোমা হামলার হুমকি দিয়েছিল। পেন্টাগনের সিনিয়র জেনারেলরা নিশ্চয়ই এটা ভুলে যাননি। সুতরাং আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার থাকবে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করার বিষয়ে। কিন্তু উত্তর কোরিয়া কি তা করবে?
বর্তমান বিশ্বে ৮টি দেশ রয়েছে যারা ঘোষিত পারমাণবিক শক্তি। এর বাইরে ইসরাইলকে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু ইসরাইল উত্তর কোরিয়ার মতো পারমাণবিক দেশ হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেনি। ইতিহাস বলে নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দেশ, যে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সব ধরনের পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আর কোনো দেশ তা করেনি। তাহলে উত্তর কোরিয়া কী করবে? যুক্তরাষ্ট্রের একজন পারমাণবিক গবেষক ও ইতিহাসবিদ, যিনি নিউ জার্সির স্ট্রেভেনস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির সঙ্গে জড়িত, তিনি বলেছেন উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে এরকম নাও ঘটতে পারে। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই উত্তর কোরিয়া ও তৎকালীন দক্ষিণ আফ্রিকার একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। উভয় দেশই শত্রুদেশ দ্বারা ঘেরাও অবস্থায় রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সীমান্তে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, যেখানে মোতায়েন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রেও এমনটি ছিল। সত্তর ও আশির দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদী শাসনামলে দেশটি এমনসব দেশ দ্বারা হুমকির মুখে ছিল, যারা দক্ষিণ আফ্রিকার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতাকামীদের পেছনে ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। কিউবানদের উপস্থিতি ছিল আফ্রিকায়। ফলে একপর্যায়ে দক্ষিণ কোরিয়া তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে পারমাণবিক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। কিন্তু এ কর্মসূচি যে আদৌ প্রয়োজন ছিল না, এ কথা বর্ণবাদী আমলের প্রেসিডেন্ট ডি ক্লার্ক পরে স্বীকারও করেছিলেন। ফলে একপর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগ করে।
উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে যেটা বড় সমস্যা তা হচ্ছে দেশটির নিরাপত্তাহীনতা। উত্তর কোরিয়া মনে করে তারা একধরনের ‘আগ্রাসনের’ মুখে আছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন বিশাল মার্কিন বাহিনী উত্তর কোরিয়ার জন্য একধরনের নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করেছে। সম্প্রতি দুই কোরিয়ার মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু এতে করে বরফ কি গলবে? একটা আস্থার সম্পর্ক কি সৃষ্টি হবে? উত্তর কোরিয়া এর মধ্যে একটি পারমাণবিক চুল্লি বন্ধ করার কথা ঘোষণা করেছে। এটা নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কিন্তু যেতে হবে অনেক দূর। এখনই প্রশ্ন উঠেছে, দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে ‘ঐক্য’ কী করে সম্ভব? দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘শত্র“’ হিসেবেই এতদিন গ্রহণ করেছে উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী। সেই মানসিকতা পরিত্যাগ করা কি সম্ভব? দুই কোরিয়া একত্রীকরণের প্রশ্নে যৌথ শিক্ষা কার্যক্রমই বা কীভাবে পরিচালিত হবে? উত্তর কোরিয়ায় কোনো দ্বিতীয় রাজনৈতিক দল নেই। সেখানে কি দ্বিতীয় রাজনৈতিক দল গড়তে দেয়া হবে? এ ধরনের শত শত প্রশ্ন এখন উঠবে। তবে ‘স্ট্যাটাস কো’ বজায় রেখেই দুই কোরিয়ার মধ্যে একটি রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে উঠতে পারে- একধরনের কনফেডারেশন! এক কোরিয়ার পতাকাতলে তো খেলোয়াড়রা অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন। তেমনি একধরনের রাজনৈতিক সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে কোরিয়ার একত্রীকরণ সম্ভব। তবে ভয়টা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের উদ্দেশ্য নিয়ে। বিখ্যাত ‘ফরেন পলিসি’ ম্যাগাজিনেও উত্তর কোরীয় নেতার সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। মিখাইল জে গ্রিন তার একটি নিবন্ধে (Pyongyang Is Playing Washington and Seoul, April 27, 2018) এ ধরনের একটি আশঙ্কাই করছেন। তার মতে উত্তর কোরিয়ার নেতারা তাদের ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এ উদ্যোগকে (উত্তর-দক্ষিণ কোরিয়া সংলাপ) কাজে লাগাতে পারে। তবে বলাই বাহুল্য, এই সংলাপ যদি সফল হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র উৎপাদনকারীদের জন্য তা হবে দুঃসংবাদ। ইতিমধ্যে তাদের কোম্পানির শেয়ার মার্কেটে দরপতন হয়েছে। যেমন লকহিড মার্টিনের শেয়ার বাজারের পতন হয়েছে শতকরা ২.৫ ভাগ, যার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯২.১ বিলিয়ন ডলার। নর্থরোপ গ্রুমম্যানের শেয়ারের পতন ঘটেছে ৩.২০ ভাগ, যার বাজারমূল্য ৬২.৫ বিলিয়ন, জেনারেল ডাইনামিক্স ৩.৮ ভাগ, যার বাজারমূল্য ৬০.৭ বিলিয়ন, রেথিউন ৩.৬ ভাগ, বাজারমূল্য ৫০.৮ বিলিয়ন ডলার এবং বোয়িং শতকরা ১ ভাগ, বাজারমূল্য ২০০.২ বিলিয়ন ডলার। এটা একটা চিন্তার কারণ। তারা কি এই সফলতা দেখতে চাইবে? এতে করে তো অস্ত্র প্রতিযোগিতা কমে যেতে পারে। অস্ত্র বিক্রি বন্ধ হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এসব অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। বিশেষ করে Terminal High Altitude Area Defense (THAAD) ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা যায়। এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা উৎপাদন করে লকহিড মার্টিন। অব্যাহত উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হামলার মুখে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ক্ষেপণাস্ত্র বসায়। একেকটি THAAD ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেমে ৬টি করে রকেট থাকে, যা মহাশূন্যে যে কোনো শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে পারে। একটি THAAD ক্ষেপণাস্ত্রের দাম এক বিলিয়ন ডলার। এখন যদি কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে আর এ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন হবে না। এটা কি লকহিড মার্টিন চাইবে? তারা ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটাতে চাইবে।
তাই দেখা যায় দুই কোরিয়ার শীর্ষ বৈঠকের ব্যাপারে ট্রাম্প খুব একটা আশাবাদী হননি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছে। আর উত্তর কোরিয়ার কাছে রয়েছে ৬০টির মতো পারমাণবিক বোমা। শীর্ষ বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়ার কিছু সিদ্ধান্তে দক্ষিণ কোরিয়া আশাবাদী হয়েছে। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইবে উত্তর কোরিয়ার সব পারমাণবিক স্থাপনা বন্ধ ঘোষণা এবং একইসঙ্গে সব পারমাণবিক বোমার ধ্বংস। উত্তর কোরিয়া তার নিরাপত্তা চাইবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কীভাবে, এটা একটা বড় প্রশ্ন। উত্তর কোরিয়ার জ্বালানি সংকট রয়েছে। চীন থেকে আমদানিকৃত কয়লা উত্তর কোরিয়ার জ্বালানির অন্যতম উৎস। কিন্তু এখন তাতে ভাটা পড়েছে। জাতিসংঘ নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় চীন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য সংকটও রয়েছে। সমঝোতার একটি ভিত্তি হবে উত্তর কোরিয়ায় জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ করা। নিঃসন্দেহে ট্রাম্প-কিম আলোচনায় এ প্রশ্ন উঠবে।
এটা বলতেই হবে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন অনেক বদলে গেছেন। যিনি ক’মাস আগেও যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি কীভাবে হঠাৎ করে বদলে গেলেন? তার ওপর সত্যিই কি আস্থা রাখা যায়? কিমের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন মহল থেকে যেসব কথাবার্তা বলা হয়েছে, তা খুব একটা আশার কথা বলে না। সিনেটর রয় ব্লান্ট বলেছেন, ‘Not sure you can trust' (NBC News)। অর্থাৎ আস্থা রাখা যাচ্ছে না! নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বলেছেন, ‘Trump administration has eyes wide open on whether to trust North Korea' (ABC News) । কনজারভেটিভদের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত The National Interest-G Adam Cathcart লিখেছেন, Trump should not trust North Korea (27 April, 2018)। Washington Post-এর মন্তব্যটি ছিল একটু ভিন্ন মাত্রার। James D. Fearon অনেক আগেই লিখেছিলেন, উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে আমাদের সমস্যাটা হচ্ছে আমরা তাদের বিশ্বাস করি না তেমন নয়, সমস্যা হচ্ছে এরা আমাদের বিশ্বাস করে না। এ ধরনের অনেক মিশ্র মন্তব্য মার্কিন মিডিয়ায় পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে TIME ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এডমিরাল জেমস স্টাভরিডিসের প্রবন্ধটি (27 April, 2018) গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। তিনি মন্তব্য করেছেন এভাবে : 'It seems highly unlikely Kim will give up all his nuclear weapons. While I believe we should accept a limited arsenal, with an inspection regime and a diminution of the ballistic missiles to deliver them.' তিনি আরও লিখেছেন, 'We do not need to rush away. We will need to be patient.' এটাই হচ্ছে আসল কথা। এডমিরাল স্টাভরিডিস বর্তমানে অবসরে। ন্যাটোতে তিনি মিত্র বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে Fletcher School of Law-এর অধ্যাপক। তিনি ভালো স্ট্রাটেজিস্টও। তিনি ভালো করেই জানেন আলোচনা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তার কথার সূত্র ধরেই বলতে হয়, কিম জং উন সব সমরাস্ত্র ধ্বংস করে দিতে রাজি হবেন না। তার নিরাপত্তার জন্যও তার কাছে কিছু মারণাস্ত্র রাখার সুযোগ করে দিতে হবে। আলোচনা শুরু হলে তা এগিয়ে নিয়ে যেতে
হবে। আলোচনা যাতে ভেঙে না যায়, সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে। এক আলোচনায় কিছু প্রত্যাশা করাও
ঠিক হবে না।
আগামী ৯ মে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া একটি বৈঠকে বসছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দুই কোরিয়ার মধ্যকার শীর্ষ বৈঠক ও আগামীতে ট্রাম্প-কিম আলোচনা সামনে রেখেই এই তিন দেশ একটি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। এটাও একটা ‘পজিটিভ’ দিক। আলোচনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আলোচনার মধ্য দিয়েই কোরিয়া উপদ্বীপকে পরমাণুমুক্ত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বৈরিতা কোনো সমাধান দেয়নি। কোরিয়ার বিভক্তিও বাস্তবতা। এটা মানতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, উত্তর কোরিয়া যদি তার নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চয়তা পায়, আমার ধারণা- সমস্যার সমাধান এর মাঝেই নিহিত।
Daily Jugantor
06.05.2018

0 comments:

Post a Comment