মন্ত্রিসভা থেকে যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের কেউ কেউ যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তাঁদের বাদ দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক—এ প্রশ্ন করাই যায়। কেননা পরিবর্তিত বিশ্বরাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের গুরুত্ব তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। পররাষ্ট্র, পরিবেশ, বাণিজ্য, অর্থ মন্ত্রণালয় পরিচালনার জন্য দক্ষ মন্ত্রী দরকার। না হলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা টিকে থাকতে পারব না। বর্তমান বিশ্ব অতি বেশি মাত্রায় প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নশীল বিশ্বকে নানা ধরনের বিধি-বিধানের মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে একজন মন্ত্রী, যিনি মন্ত্রণালয়ের প্রধান এবং মন্ত্রণালয়কে নেতৃত্ব দেবেন, তিনি যদি অভিজ্ঞ না হন, তাহলে এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তিনি বাংলাদেশকে সঠিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না। দুঃখজনক আরো, আমরা একটি দক্ষ আমলা শ্রেণিও তৈরি করতে পারিনি; যার ফলে অন্য দেশের সঙ্গে ‘নেগোসিয়েশনে’ আমরা সফলতা অর্জন করতে পারছি না। ফলে কখনোসখনো আমাদের জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত থাকছে। এ জন্য একটি দাবি কোনো কোনো মহল থেকে উচ্চারিত হচ্ছে যে মন্ত্রিসভায় ‘টেকনোক্র্যাট’ কোটায় মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়ানো উচিত, যদিও এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন করার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ বিশেষ মন্ত্রণালয়ে ‘টেকনোক্র্যাট’ কোটায় যাঁরা বিশেষ বিশেষজ্ঞ, তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। নয়া মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন তাঁরা সবাই যে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, তা বলা যাবে না। এ ক্ষেত্রে তাঁরা কতটুকু সফল হবেন, তা শুধু আগামী দিনগুলো বলে দেবে। একটি ‘বড়’ মন্ত্রিসভা হয়েছে। হয়তো আগামী দিনে এই মন্ত্রিসভা আরো সম্প্রসারিত হবে। তবে অনেক উন্নত দেশ অনেক ছোট মন্ত্রিসভা নিয়েই সরকার পরিচালনা করে থাকে।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছেন। এ নিয়ে টানা তিনবার তিনি সরকার গঠন করলেন। ২০০৮ সালের পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি দলীয় সরকার গঠিত হয়েছে। মন্ত্রিসভায় ‘চমক’ আছে। এই ‘চমক’-এর কথা আগেই বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের। ৪৬ সদস্যের মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকজন এই প্রথমবারের মতো মন্ত্রী তথা প্রতিমন্ত্রী হলেন। আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা মন্ত্রী হননি। অথবা বলা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রীর আস্থা অর্জন করতে পারেননি। বিশেষ করে তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, শাজাহান খানদের মতো ব্যক্তিদের যখন মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় না তখন তাতে ‘চমক’ থাকে বৈকি! কিন্তু যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী এই মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন একটি নেতৃত্ব সৃষ্টি করার উদ্যোগ নিলেন। যে ২৭ জন প্রথমবারের মতো মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তাঁরাই আগামী দিনের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যাবে, যাঁরাই মন্ত্রিসভা থেকে ‘বাদ’ পড়েছেন, তাঁদের কারো কারো বিরুদ্ধে ‘কিছু না কিছু’ অভিযোগ ছিল। মন্ত্রিসভায় জোট শরিকরা নেই। ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, জেপি, বিকল্পধারা, এমনকি জাতীয় পার্টি থেকেও কোনো মন্ত্রী নেওয়া হয়নি। জাতীয় পার্টি এবার বিরোধী দলে থাকছে। ফলে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম, যদিও এটি নিয়ে পার্টির ভেতরে দ্বন্দ্ব আছে। তবে শিগগিরই শরিকদের প্রতিনিধি মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হবেন। এ ক্ষেত্রে শরিকদের পক্ষ থেকে কারা কারা অন্তর্ভুক্ত হবেন, সেটি নিয়েও প্রশ্ন আছে।
নির্বাচন নিয়ে যত বিতর্কই থাকুক না কেন, বিশ্বনেতাদের অভিনন্দন শেখ হাসিনার অবস্থানকে আরো শক্তিশালী করেছে। এটি সত্য, গেল কয় বছরে তিনি যেসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন, উন্নয়নকে তিনি যেভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এটি নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে এবং ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলছে। পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্যভাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি যেখানে ৬ শতাংশের কিছুটা ওপরে ছিল, ২০১৮ সালে সেখানে তা ৭.২ শতাংশে দাঁড়ায় এবং ২০১৯ সালে তা ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছবে। ওই সময় পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে ৫ শতাংশের নিচে! বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি (২০১৯) ভারতের প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে (সূত্র এডিবি, এশিয়া টাইমস, ২ জানুয়ারি)। শেখ হাসিনার সময়সীমায় মাথাপিছু আয় বেড়েছে। মাথাপিছু আয় ২০১৬ সালের দিকে ছিল এক হাজার ৬১০ ডলারের মতো। কিন্তু ২০১৮ সালে তা এক হাজার ৭৫১ ডলারে উন্নীত হয়। দারিদ্র্য (২০১৭) ২৩.১ থেকে কমে হয়েছে ২১.৮ শতাংশ (২০১৮)। আর একই সময়সীমায় অতি দারিদ্র্য ১২.১ থেকে কমে হয়েছে ১১.৩ শতাংশ। শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। মেয়েশিশুদের স্কুলে যাওয়ার হার বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি, তা ভারতের অগ্রগতির চেয়ে অনেক বেশি। শিশুমৃত্যুর হার প্রতি এক হাজারে যেখানে ছিল ৪৩, সেখানে তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২৬-এ। আর স্কুলে উপস্থিতির হার বেড়েছে ১০ শতাংশ হারে। অবকাঠামো খাতে চীন থেকে ৪২ মিলিয়ন ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এটি নিশ্চয়ই উন্নয়নপ্রক্রিয়াকে আরো সামনের দিকে নিয়ে যাবে। তবে চীনা ঋণের ব্যাপারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা কিংবা কেনিয়ার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে আছে। এসব দেশ চীনা ঋণ পরিশোধে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
বৈদেশিক মন্ত্রণালয় আমাদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা যিনি এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন তাঁকে অনেক ‘ইস্যু’ এখন মোকাবেলা করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যার আপাতত কোনো সমাধান আমরা দেখছি না। মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ ঠিক হলেও একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি। আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা প্রশ্নে একটি স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। এতে আমরা আক্রান্ত হতে পারি। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-চীন দূরত্ব বাড়ছে। ভারত মহাসাগর ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের জন্য আগামী দিনগুলো সত্যিকার অর্থেই কঠিন। ড. মোমেন সনাতন কূটনীতিক নন। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকতা করতেন। জাতিসংঘে তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন বটে; কিন্তু আন্তর্জাতিক রাজনীতির কূটকৌশল তিনি কতটুকু রপ্ত করতে পেরেছেন আমি নিশ্চিত নই। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বাংলাদেশের স্বার্থ আদায়ে তিনি কতটুকু সফল হবেন, এটি একটি বড় প্রশ্ন এখন। শিক্ষামন্ত্রীও নতুন।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। মঞ্জুরি কমিশনে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার, যারা আগামী দিনের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন বেকার জন্ম দেওয়ার প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে হবে। ব্যাংকিং খাতের দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাউন্সিল ও একটি নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন করাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, চলতি ২০১৯ সালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’, যা আপাতত এক ধরনের ‘স্ট্যাটাসকো’ অবস্থায় আছে, তা যেকোনো সময় খারাপের দিকে টার্ন নিতে পারে এবং এতে বাংলাদেশের বাণিজ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিষয়টির দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। বিশ্বে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট যখন একটি নেতিবাচক ইঙ্গিত দিচ্ছে তখন নয়া সরকার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে। তাই তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক বেশি। রাজনীতি আর অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। তাই যেকোনো বিবেচনায় স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এ জন্য বিরোধী দলের সঙ্গে একটি ‘আস্থা ও বিশ্বাসের’ সম্পর্কে যাওয়া উচিত। আস্থা ও বিশ্বাসের অপর নামই গণতন্ত্র। এটি না থাকলে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে না। বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যফ্রন্টের ভূমিকা গৌণ হয়ে গেছে। বিএনপি বড় সংকটে আছে। এ অবস্থায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক সমঝোতা’ হলে ক্ষতি কী? গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করে নিয়ে বিএনপিকে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালাতে দিলে তা প্রকারান্তরে সরকারেরই লাভ। বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টকে ‘দূরে’ ঠেলে দিলে তা জটিলতাই সৃষ্টি করবে মাত্র। সরকারের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ—একটি আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা এবং সেই সঙ্গে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা। হেভিওয়েট মন্ত্রীদের ‘অবসরে’ পাঠিয়ে শেখ হাসিনা একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন নতুনদের জন্য। তাঁদের অনেককে আমি টক শোতে আমার সঙ্গে পেয়েছি। টক শোতে তাঁদের বরাবরই সরব উপস্থিতি ছিল। দলের পক্ষে তাঁরা টক শোতে কথা বলেছেন। সরকারপ্রধানের আস্থা অর্জন করেছেন। এখন সরকারপ্রধান তাঁদের ওপর যে ‘আস্থা ও বিশ্বাস’ রেখেছেন, তাঁদের এখন তাঁর প্রতিদান দিতে হবে। নিজেদের আগামী প্রজন্মের ‘নেতা’ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সিনিয়ররা পথ তৈরি করে দিয়ে গেছেন—আর সেই পথে এখন তাঁদের হাঁটতে হবে। তাঁরা নিজেদের একেকজন ‘যোগ্য মন্ত্রী’ হিসেবে প্রমাণ করুন, দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থাকবেন, সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন। আমাদের প্রত্যাশা এটিই। শুধু মন্ত্রী হয়ে, গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে ক্ষমতায় থাকা যায় বটে; কিন্তু এতে জনমানুষের আস্থা অর্জন করা যায় না। অতীতে কোনো কোনো মন্ত্রীকে ‘চমক’ দিতে দেখেছি। মিডিয়ায় কাভারেজ পাওয়ার আশায় একজন প্রতিমন্ত্রী সাধারণ বাসে করে সচিবালয়ে যাতায়াত শুরু করেছিলেন। তাঁর সাধারণ বাসে যাত্রী হয়ে যাওয়ার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। কিন্তু তিনি কি সব সময় বাসেই যাতায়াত করতেন? না, তিনি তা করেননি। একজন মন্ত্রীর বাসে যাতায়াতের প্রয়োজন নেই। তাঁর নিরাপত্তার প্রশ্ন আছে। সুতরাং মিডিয়ায় কাভারেজ পাওয়ার আগে নিজ মন্ত্রণালয়ে তাঁর ‘যোগ্যতা’ দেখানোটাই প্রয়োজন। আশা করি, আমাদের বর্তমান মন্ত্রীরা এ ধরনের ‘চমক’ দেখাবেন না। অসংলগ্ন কথা বলে কোনো এক সাবেক মন্ত্রী সমালোচিত হয়েছিলেন। আরেকজন সাবেক মন্ত্রীর মুখে বিরোধী দলের নেত্রীর সমালোচনা ছাড়া কিছুই থাকত না। তাঁরা এখন নেই বটে; কিন্তু তাঁদের ‘অভিজ্ঞতা’ যেন নতুনদের স্পর্শ না করে! আমরা বড় বেশি অতীতমুখী। আমাদের তাকাতে হবে সামনের দিকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে পা দিতে এখন আর খুব বেশিদিন বাকি নেই। একটি দেশের জন্য ৫০ বছর একেবারে কম সময় নয়। তাই বর্তমান মন্ত্রিসভার ওপর আমাদের আস্থাটা একটু বেশিই। কেননা এই মন্ত্রিসভার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করবে ২০২১ সালে। তাঁদের দায়িত্বটা তাই একটু বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম অর্থনীতির দেশ। ২০২১ সালে আমরা দেশটিকে বিশ্বের ২০তম অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে চাই। বিশ্বের পরবর্তী ৯টি উন্নয়নশীল দেশের একটি বাংলাদেশ। এ অবস্থায় একটি শক্তিশালী ও দক্ষ মন্ত্রিসভা বাংলাদেশকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে—এটিই আমাদের প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। তারা যেন এই আস্থার মর্যাদা দেয়। যদি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর আত্মতুষ্টিতে তারা ভোগে, তাহলে বাংলাদেশ তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না।
দৈনিক কালের কন্ঠ ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
দৈনিক কালের কন্ঠ ১৩ জানুয়ারি ২০১৯
0 comments:
Post a Comment