ভারতে লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে আগামীকাল, ১১ এপ্রিল থেকে।
এটা ১৭তম লোকসভা নির্বাচন। ৫৪৩টি আসনের এই লোকসভা নির্বাচন সাত ধাপে শেষ
হবে আগামী ১৯ মে। মে মাসের দ্বিতীয় পক্ষের শেষের দিকে ২৩ মে জানা যাবে কে
হতে যাচ্ছেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে বিজেপির
নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের পাল্লা অনেক ভারী। জনমত জরিপে ও বিশ্লেষকদের
অনেকের লেখায়ই তাঁরা নরেন্দ্র মোদিকে এগিয়ে রাখছেন। ২০১৪ সালের সর্বশেষ
নির্বাচনে এনডিএ জোট ৩৩৬টি আসন পেয়ে সর্বভারতব্যাপী তাদের কর্তৃত্ব
প্রতিষ্ঠা করেছিল। আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট মাত্র ৬০টি আসন পেয়ে
ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে বড় ধরনের ‘সংকটে’ পড়েছিল। এবারে নির্বাচনী
রাজনীতি বেশ জমজমাট। একদিকে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে যেমনি নানা
অভিযোগ উঠেছে, ঠিক তেমনি কংগ্রেসও চেষ্টা করছে সর্বভারতব্যাপী তাদের ইমেজ
বাড়াতে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচনের গুরুত্ব রয়েছে। প্রথমত,
নির্বাচনের ফলাফলে যদি এনডিএবিরোধী জোট বিজয়ী হয়, সে ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তা কতটুকু প্রভাব ফেলবে? দ্বিতীয়ত, যদি
এনডিএ জোট আবার ক্ষমতাসীন হয়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের
ক্ষেত্রে যেসব অন্তরায় রয়েছে, তা দূর করার উদ্যোগ নয়া সরকার নেবে কি না।
তৃতীয়ত, যদি এনডিএ কিংবা ইউপিএ জোটের বাইরে তৃতীয় একটি শক্তি (বিভিন্ন
আঞ্চলিক দলের সমন্বয়ে) সরকার গঠন করতে পারে, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের
ব্যাপারে নয়া সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে? এসব প্রশ্ন এখন বাংলাদেশের
বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। রাজনীতিগতভাবে এনডিএ জোট ও ইউপিএ জোটের মধ্যে
যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। কিংবা বহুজন সমাজ পার্টির নেতা ও উত্তর প্রদেশের
চারবারের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী (১৯৯৫, ১৯৯৭, ২০০২ ও ২০০৭), যিনি
প্রধানমন্ত্রী হতে চান, তিনি যদি তৃতীয় একটি শক্তির নেতৃত্ব দেন, এই শক্তি
কতটুকু পরিবর্তন আনতে পারবে, সেই প্রশ্নও বিভিন্ন মহল থেকে উচ্চারিত হচ্ছে।
আমরা
চাই নয়াদিল্লিতে যে সরকারই আসুক না কেন, সেই সরকার দ্বিপক্ষীয় সমস্যা
সমাধানে আরো আন্তরিক হবে। এটা সত্য, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত
হয়েছে। তাঁর শাসনামলেই ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। ১৯৭৪ সালের ১৬ মে
মুজিব-ইন্দিরা স্থল সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ভারত দীর্ঘদিন ওই
চুক্তিটি অনুমোদন করেনি। কিন্তু বাংলাদেশ সংবিধান সংশোধন করে ওই চুক্তিটি
অনুমোদন করেছিল। এর জন্য ভারতের সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। ৫ মে (২০১৫)
ভারতের মন্ত্রিসভায়, ৬ মে রাজ্যসভায়, ৭ মে লোকসভায় বিলটি অনুমোদিত হয়েছিল।
স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড়
ধরনের অগ্রগতি। ১১১টি ছিটমহলের ৪০ হাজার ৪৭০ জন নাগরিক এখন বাংলাদেশের
নাগরিক। এতে ১৭১৬০.৬৩ একর জমি বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আর ভারতের
সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ৭১১০.০২ একর জমি। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটা
একটা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কিন্তু কিছু কিছু সমস্যা যা ছিল, তাই রয়ে গেছে।
এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে আসামের তথাকথিত নাগরিকত্ব তালিকা (এনআরসি), যে
তালিকায় আসামে বসবাসকারী বেশ কিছু মুসলমানকে বাংলাদেশি হিসেবে ‘চিহ্নিত’
করে তাদের বাংলাদেশে জোর করে ফেরত পাঠানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ-ভারত উষ্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া বড় ধরনের অন্তরায়। এ
ক্ষেত্রে বিজেপি সরকারের একটি সাম্প্রদায়িক মনোভাব লক্ষ করা যায়, যখন তারা
প্রকাশ্যেই বলছে তারা পশ্চিমবঙ্গেও এই তালিকা করবে। তবে হিন্দু
ধর্মাবলম্বীদের তারা থাকতে দেবে। আসামে তারা এই তালিকা করলেও, পশ্চিমবঙ্গে
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির মুখে তারা এই তালিকা করতে পারেনি। মমতা
প্রকাশ্যেই বলছেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গে এই তালিকা করতে দেবেন না।অনেকেই জানে, সাম্প্রতিক সময় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে (সাত বোন রাজ্য) বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফলাফল করেছে। ত্রিপুরাসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিজেপি সরকারও গঠন করেছে। এখন তাদের টার্গেট পশ্চিমবাংলা। মমতাকে হটিয়ে তারা সেখানে সরকার গঠন করতে চায়। সুতরাং তারা যে নাগরিকত্ব তালিকাকে ইস্যু করবে, এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায় হচ্ছে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়া। যত দূর জানা যায় মমতার আপত্তির কারণেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তিটি করতে পারেনি। তিস্তা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি ইস্যু। মমতা এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, পশ্চিমবাংলার উত্তরবঙ্গের মানুষকে পানি না দিয়ে তিনি বাংলাদেশকে পানি দিতে পারবেন না! অথচ তাঁর নিয়োগকৃত কল্যাণ রুদ্র কমিশনের অভিমত হচ্ছে, উত্তরবঙ্গকে পর্যাপ্ত পানি দিয়েও বাংলাদেশের প্রাপ্য পানি দেওয়া সম্ভব। তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। আন্তর্জাতিক নদীর পানির ব্যবহারসংক্রান্ত যেসব আইন রয়েছে (১৯৬৬ সালের হেলসিংকি নীতিমালা, ১৯৯২ সালের ডাবলিন নীতিমালা, ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘের জলপ্রবাহ কনভেনশন, কিংবা জীববৈচিত্র্য কনভেনশন), প্রতিটি আইনে বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি উজানে পানি প্রত্যাহার করে নেন, সেটা হবে আন্তর্জাতিক পানিসংক্রান্ত আইনের বরখেলাপ। এ ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে।
ফারাক্কা চুক্তি নিয়েও চিন্তা করার সময় এসেছে। ১৯৯৬ সালে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ পানি বাংলাদেশের পাওয়ার কথা, বাংলাদেশ তা পাচ্ছে না। ১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালে, অর্থাৎ ১৯৭৭ সাল থেকে ৫০ বছর পর। এই ৫০ বছরে জনসংখ্যা বাড়বে তিন গুণ। মোটামুটি হিসাবে পানির প্রয়োজনও বাড়বে তিন গুণ। কিন্তু ১৯৯৬ সালের চুক্তিতে যে পানি পেয়েছি, ২০২৭ সাল পর্যন্ত পেতে থাকব আরো কম। সুতরাং বিষয়টির গভীরতা উপলব্ধি করে এখন থেকেই আলোচনা শুরু করা প্রয়োজন। গঙ্গার এই পানি সংকট মোকাবেলায় ভারতের পানি বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন যে ১১টি রাজ্যে গঙ্গার অববাহিকা বিস্তৃত, সেখানে গঙ্গা বা উপনদীর ওপর জলাধার নির্মাণ ও সেচের প্রয়োজনে নদী থেকে পানি টেনে নেওয়া এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যাতে নদীর কোনো অংশ সম্পূর্ণ শুকিয়ে না যায়। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, ভূগর্ভের পানির স্তর থেকে নদীর দিকে মূল প্রবাহ বা বেস ফ্লো অক্ষুণ্ন রাখার জন্য নদীপার থেকে ৫০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত গভীর ও অগভীর নলকূপের সাহায্যে সেচের পানি তোলা নিষিদ্ধ করা দরকার। সেই সঙ্গে গঙ্গা চুক্তির পুনর্মূল্যায়নের কথাও বলছেন তিনি।
বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরেকটি অন্তরায়। বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করে কম, আমদানি করে বেশি। বাংলাদেশ ভারতের অন্যতম বাজারে পরিণত হয়েছে। বাণিজ্য অনুপাত ১:৭.৯। বাণিজ্য ভারসাম্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে ভারতের সরকারি নীতি। কিছু অশুল্ক বাধার কারণে দুই দেশের কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্য বাড়ছে না। বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে বন্দর, পণ্য পরীক্ষা ও বকেয়াসহ প্রতিবন্ধকতার ফলে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। এদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট এবং চট্টগ্রাম-মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার নিয়েও কথা আছে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ আয় মিলিয়ে বন্দরভিত্তিক কার্যক্রমে বার্ষিক মোট ৩৭ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরিত হচ্ছে। এখন চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে পণ্য প্রবাহের ১০ শতাংশও যদি ভারতের ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যসামগ্রী পরিবহন করা হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি থেকে চার হাজার কোটি টাকার (ফি বাবদ) ট্যারিফ, চার্জ, মাসুল বাবদ নিশ্চিত আয় হওয়ার কথা। এটি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
ভারত বড় অর্থনীতির দেশ। নরেন্দ্র মোদির বৈদেশিক নীতির একটি অন্যতম দিক হচ্ছে তাঁর ‘নেইবারহুড ফাস্ট’ পলিসি। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিকে তিনি তাঁর অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি এ আলোকেই রচিত। তাঁর শাসনামলে বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তি রচিত হয়েছে। এই উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বাংলাদেশের পানি সংকট ও জ্বালানি সংকট সমাধানে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারত থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে। একই সঙ্গে নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করে বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটানো সম্ভব। একই সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটেরও সমাধান সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ভারতকে আরো উদার হতে হবে। ভুটান কিংবা নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হলে তা ভারতীয় এলাকার ওপর দিয়ে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভারত না চাইলে আমরা তা পাব না। আশার কথা মোদি সরকার এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। মোদি সরকার একদিকে বিবিআইএন উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণাকে এগিয়ে নিয়ে যেমনি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সাত বোন রাজ্যের সম্পর্ককে আরো উন্নতর পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তেমনি শিলং ডায়ালগ এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন এক মাত্রা এনে দিয়েছে। এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় এশিয়ান কনফ্লুয়েন্স আয়োজিত শিলং ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত বছরের আগস্টে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে। কৃষি, পর্যটন ও বাণিজ্য—এই তিনটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়েই শিলং ডায়ালগের আয়োজন করা হয়েছিল। এ ধরনের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর আরো কাছাকাছি নিয়ে যাবে।
তবে বাংলাদেশে কোনো কোনো বিষয়ে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার উদ্যোগ নিতে হবে ভারতীয় নেতাদের। সীমান্ত হত্যা এখনো বন্ধ হয়নি। আন্ত সংযোগ নদী প্রকল্প নিয়েও একটি নেতিবাচক ধারণা বাংলাদেশে রয়েছে।
ভারতে সরকার পরিবর্তন হলেও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে খুব একটা পরিবর্তন আসে না। অতীতের সরকারগুলোর পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতির খুব একটা পার্থক্য লক্ষ করা যায় না। এ ক্ষেত্রে ‘অ্যাপ্রোচের’ হয়তো পার্থক্য রয়েছে। মোদির ‘নেইবারহুড ফাস্ট’ পলিসি এ কথাই আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই সংগত কারণেই ধারণা করছি বাংলাদেশের ব্যাপারে নয়া সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির খুব একটা পার্থক্য দেখা যাবে না। তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নয়া সরকার দুই দেশের মধ্যে যেসব সমস্যা রয়েছে, সেসব সমস্যার সমাধানে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করবে
Daily kalerkontho
10.04.2019
0 comments:
Post a Comment