রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

মরকেলের বিজয় এবং জার্মান রাজনীতির ভবিষ্যৎ

জার্মানি বড় দেশ। বড় দেশ হওয়ার কারণে এখানে বরাবরই কোয়ালিশন রাজনীতি প্রাধান্য পেয়েছে। ১৯৬০ সালে চ্যান্সেলর ছিলেন কনরাড আডেনাওয়ার, সিডিইউ-সিএসইউ আর এফডিপি ছিল ক্ষমতায়। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৭০, ১৯৮০, ১৯৯০, ২০০০ কিংবা ২০১০ সালে প্রতিবারই দেখা গেছে একটি কোয়ালিশন সরকার। এবারও হতে যাচ্ছে একটি কোয়ালিশন সরকার গেল ২৪ সেপ্টেম্বর জার্মানির পার্লামেন্টের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী) অ্যাঞ্জেলা মরকেল তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছেন বটে; কিন্তু জার্মান রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এরই মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অ্যাঞ্জেলা মরকেল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছেন।

চতুর্থবারের মতো তিনি চ্যান্সেলর হতে যাচ্ছেন; কিন্তু ২০১৩ সালের মতো এবারও তিনি একটি গ্র্যান্ড কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে পারবেন কিনা, সে ব্যাপারটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। ২৪ অক্টোবর জার্মান পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন বসছে। এর আগেই কোয়ালিশন-সংক্রান্ত সব আলোচনা শেষ করতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী জার্মান রাজনীতি মূলত দুইটি বড় দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) আর সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) নিয়ন্ত্রণ করলেও বরাবর তৃতীয় একটি দল ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) সরকার গঠনে একটি ভূমিকা পালন করে আসছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে এ দৃশ্যপট পাল্টে যায়। নির্বাচনে শতকরা ৫ ভাগ ভোট নিশ্চিত না হওয়ায় ২০১৩ সালে পার্লামেন্টে এফডিপির কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না। এবার এফডিপি পার্লামেন্টে ফিরে এসেছে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হচ্ছে, জার্মান রাজনীতিতে নব্য নাজি পার্টি হিসেবে পরিচিত এএফডি বা অলটারনেটিভ ফর জার্মানির আবির্ভাব এবং পার্লামেন্টে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ। মাত্র ৪ বছর আগে দলটির জন্ম হয়। মূলত মুসলমানবিদ্বেষ আর শরণার্থীবিরোধী ভূমিকাই দলটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। এএফডির উত্থান এখন প্রচলিত জার্মান রাজনীতির ধারাকে বদলে দিতে পারে।

মোট ৭০৯টি আসনের সংসদে সিডিইউ-সিএসইউর আসনসংখ্যা ২৪৬, এসপিডির ১৫৩, এফডিপির ৮০, এএফডির ৯৪, গ্রিন পার্টির ৬৭, আর দ্য লেফটের ৬৯। মূল ধারার দুইটি দল সিডিইউ ও এসপিডির আসন কমেছে। সিডিইউ-সিএসইউ (বায়ার্ন প্রদেশের সহযোগী) পেয়েছে শতকরা ৩৩ ভাগ ভোট (কমেছে ৮ দশমিক ৫ ভাগ ভোট), এসপিডি পেয়েছে ২০ দশমিক ৫ ভাগ ভোট (আসন কমেছে ৫ দশমিক ২ ভাগ ভোট), তৃতীয় দল হিসেবে আবির্ভূত নব্য নাজি পার্টি এএফডি পেয়েছে ১২ দশমিক ৬ ভাগ ভোট। এফডিপি ১০ দশমিক ৭ ভাগ ভোট (আসন বেড়েছে ৫ দশমিক ৯ ভাগ), দ্য লেফট ৯ দশমিক ২ ভাগ ভোট (আসন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬ ভাগ), আর গ্রিন পার্টি পেয়েছে ৮ দশমিক ৯ ভাগ ভোট (আসন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ ভাগ)। বলা ভালো, জার্মানিতে নির্বাচনে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন প্রথা চালু রয়েছে। একজন ভোট দেন প্রার্থীকে এবং একই সঙ্গে দলকেও। চূড়ান্ত বিচারে কোন দল শতকরা কত ভোট পায়, তার ওপর নির্ভর করে ওই দল সংসদে কত আসন পাবে। এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, একটি কোয়ালিশন সরকার হবে; কিন্তু তাতে কোন কোন দল থাকবে? ২০১৩ সালের নির্বাচনের পর একটি গ্র্যান্ড কোয়ালিশন হয়েছিল। অর্থাৎ সিডিইউ-সিএসইউ আর এসপিডি ও গ্রিন পার্টি মিলে সরকার গঠন করেছিল। সরকার গঠনের জন্য ৩৫৪ আসন দরকার। আর সেটা সম্ভব হবে যদি এসপিডি সরকারে যোগ দেয়; কিন্তু এসপিডি সরকারে যোগ দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে এ দুই বড় দলের সম্মিলিত আসনসংখ্যা দাঁড়াবে ৩৯৯। অন্যদিকে একটি জ্যামাইকা কোয়ালিশন কথাও বলছেন কেউ কেউ। জ্যামাইকা কোয়ালিশন অর্থাৎ জ্যামাইকা রাষ্ট্রের পতাকার রঙ তিন রঙেরÑ কালো, হলুদ আর সবুজ। জার্মানির রাজনৈতিক দলগুলো এ রঙ দিয়েই পরিচিত। যেমনÑ সিডিইউ-সিএসইউর রঙ কালো, এসপিডির লাল, গ্রিন পার্টির সবুজ, এফডিপির হলুদ, এএফডির (নব্য নাজি পার্টি) রঙ নীল আর লেফটের রঙ বেগুনি। এক্ষেত্রে দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকার পতাকা অনুসরণ করে যদি কালো, হলুদ আর সবুজের সমন্বয় হয় (অর্থাৎ সিডিইউ-সিএসইউ, এফডিপি আর গ্রিন), তাহলে একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন করা সম্ভব। অন্যদিকে যদি সিডিইউ-সিএসইউ এবং এফডিপির মধ্যে ঐক্য হয়, তাহলে সরকার গঠন করতে আরও দরকার ২৯টি সিট। ফলে কালো আর হলুদ এর সমন্বয় হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রতিটি দলই বলছে, তারা নব্য নাজি দল এএফডির সঙ্গে কোনো ধরনের ঐক্যে যাবে না। দ্য লেফট ৬৯টি আসন পেয়ে সংসদে পঞ্চম বৃহত্তম দল। কিন্তু তারা দক্ষিণপন্থী সিডিইউর সঙ্গে কোনো ঐক্যে যাবে না। এসপিডির একার পক্ষে কোনো সরকার গঠন করাও সম্ভব নয়। এর অর্থ হচ্ছে, একটি অনিশ্চয়তা থাকলই সরকার গঠন নিয়ে। এসপিডি যদি তাদের মত পরিবর্তন করে কোয়ালিশনে যোগ দেয়, তাহলে এ সরকার স্থায়িত্ব পাবে। যদি সরকারে যোগ না দেয়, তাহলে অনিশ্চয়তা বাড়বে। নয়া নির্বাচনের সম্ভাবনাও ফেলে দেয়ার মতো নয়। এখন অনেক কিছুই নির্ভর করছে এসপিডির চেয়ারম্যান মার্টিন গুলজের ওপর। এ নিয়ে দলের ভেতরে বিতর্ক বাড়তে পারে এবং মার্টিন গুলজ যদি তার দলের চেয়ারম্যানশিপ হারান, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। মরকেল ক্ষমতায় থেকে যাচ্ছেন বটে; কিন্তু এ নির্বাচন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। 

প্রথমত, কট্টর দক্ষিণপন্থী নাজি পার্টি হিসেবে পরিচিত এএফডির উত্থান প্রমাণ করল জার্মানিতে কট্টরপন্থীদের অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে। আগামীতে এরা সিডিইউ-সিএসইউর বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে। জার্মানির ১৬টি স্টেটের মধ্যে ১৩টি স্টেটের পার্লামেন্টে এদের প্রতিনিধিত্ব আগেই নিশ্চিত হয়েছে। এখন কেন্দ্রে এদের অবস্থান তৃতীয়। সবচেয়ে বড় স্টেট এবং কনজারভেটিভদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত বায়ার্ন প্রদেশে ১৯৪৮ সালের পর এ প্রথমবারের মতো সিএসইউ (সিডিইউর বিকল্প দল শুধু বায়ার্ন স্টেটে) সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। এখানে এএফডি ভালো করেছে। ফলে আশঙ্কা থাকলই ধীরে ধীরে এএফডি সিডিইউ-সিএসইউর বিকল্প হয়ে উঠতে পারে! আমরা যেন ভুলে না যাই, অ্যাডলফ হিটলার ও তার নাজি পার্টি জার্মানিতে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল এবং হিটলার নির্বাচিত চ্যান্সেলর হিসেবেই রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করেছিলেন। এখন এএফডি কি ধীরে ধীরে নাজি পার্টির অবস্থানে যাচ্ছে, সেটাই দেখার বিষয়। দ্বিতীয়ত, ২০১৫ সালে ইউরোপে ব্যাপক শরণার্থী (সিরীয়, ইরাকি ও আফগানি) আগমনকে কেন্দ্র করে পুরো ইউরোপের রাজনীতির দৃশ্যপট বদলে যায়; কট্টরপন্থীদের ব্যাপক উত্থান ঘটে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের বিজয় এ দক্ষিণপন্থী উত্থানকে আরও উৎসাহিত করেছে। ওই সময় ১০ লাখের বেশি সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে মরকেল সারা বিশ্বের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন; কিন্তু তার পার্শ্ববর্তী তিনটি দেশ তার সমালোচনা করেছিল। হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড এবং চেক রিপাবলিক বরাবরই সিরীয়-ইরাক শরণার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয়ার বিপক্ষে ছিল। মরকেল যখন জার্মানিতে সেসব শরণার্থীকে আসার সুযোগ করে দেন, তখন এ তিনটি দেশের সরকারপ্রধানরা এর সমালোচনা করেছিলেন। এখন তারা নতুন করে যুক্তি তুলবেন যে, তাদের সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল। জার্মান নির্বাচন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোয় কট্টরপন্থীদের আরও উৎসাহিত করবে। আগামী মাসে চেক রিপাবলিকের নির্বাচন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আন্দ্রেই বাবিস ও তার দল ভালো করবে বলে সবার ধারণা। বাবিস অনেকটা ডোনাল্ড ট্রাম্প স্টাইলে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চান। বাবিস একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি। চেক রিপাবলিকে তার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি নিজে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর ভিক্টর ওরবান কিংবা পোল্যান্ডের ক্ষমতাসীন দলের নেতা জারুজলাভ কাসিনিস্কির মতো দক্ষিণপন্থী নেতা। এদের উত্থানে পুরো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাজনীতির দৃশ্যপট বদলে দিতে পারে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যেসব মডারেট নেতা আছেন, বিশেষ করে মরকেল কিংবা ম্যাক্রোঁর (ফ্রান্স) মতো নেতাদের ভূমিকা সীমিত হয়ে যেতে পারে। তৃতীয়ত, জার্মানিতে সম্ভাব্য একটি কোয়ালিশন সরকার (সিডিইউ-সিএসইউ, এফডিপি আর গ্রিন) যদি গঠিত হয়, তাহলে এ সরকারকে কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। এক্ষেত্রে অ্যাঞ্জেলা মরকেল কতটুকু এ ঐক্য ধরে রাখতে পারবেন, এটাও একটা প্রশ্ন।

কেননা অনেকগুলো জাতীয় প্রশ্নে এফডিপি ও গ্রিন পার্টির মধ্যে নীতিগতভাবে মতপার্থক্য রয়েছে। একটি প্রশ্নে বড় পার্থক্য রয়েছে, গ্রিন পার্টি চাচ্ছে আগামীতে ২০টি কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে; কিন্তু ব্যবসাবান্ধব এফডিপি এর পক্ষে। তাহলে সমঝোতা হবে কীভাবে? এ মতপার্থক্য জার্মানিতে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিতে পারে। এক্ষেত্রে একটি সংখ্যালঘু সরকার হয়তো গঠিত হবে; কিন্তু মরকেল তা চাচ্ছেন না। তৃতীয়ত, এএফডির বিজয় সরকারকে শরণার্থী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ি আরোপ করতে পারে। ২০১৬ সালে প্রায় ৮ লাখ শরণার্থী জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছে। তবে ২০১৭ সালে এ সংখ্যা কম। শুধু তা-ই নয়, এতে জাতিগত বৈষম্যও বেড়ে যেতে পারে। এএফডির শীর্ষ নেতা আলেকজান্ডার গাউল্যান্ড অতিসম্প্রতি গ্রিন পার্টির শীর্ষ নেতা সেম ওঁজদেমির এবং বর্তমান কোয়ালিশন সরকারের মন্ত্রী ও গ্রিন পার্টির নেতা আইদান ওঁজগুজ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। দুইজনই তার্কিশ। এদের জন্ম জার্মানিতে, বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা জার্মানিতেই। গাউল্যান্ড বলেছেন, এদের দুইজনকে তুরস্কে পাঠিয়ে দেয়া উচিত, যেখান থেকে তাদের বাবারা এসেছিলেন। এরা যদি পার্লামেন্টে এ ধরনের বক্তব্য দেন, তাতে জাতিগত বৈষম্য বাড়তে পারে। জার্মানি বড় দেশ। বড় দেশ হওয়ার কারণে এখানে বরাবরই কোয়ালিশন রাজনীতি প্রাধান্য পেয়েছে। ১৯৬০ সালে চ্যান্সেলর ছিলেন কনরাড আডেনাওয়ার, সিডিইউ-সিএসইউ আর এফডিপি ছিল ক্ষমতায়।


সে ধারাবাহিকতায় ১৯৭০, ১৯৮০, ১৯৯০, ২০০০ কিংবা ২০১০ সালে প্রতিবারই দেখা গেছে একটি কোয়ালিশন সরকার। এবারও হতে যাচ্ছে একটি কোয়ালিশন সরকার। তবে এবারের প্রেক্ষাপট যে একটু ভিন্ন, সন্দেহ নেই তাতে। এক্ষেত্রে এসপিডির সরকারে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত অনেকেই সমর্থন করেছেন। এসপিডি বিরোধী দলে থেকে যে ভূমিকা পালন করতে পারবে, সরকারে থেকে তা পারবে না। উপরন্তু সরকারে থাকলে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে নব্য নাজি পার্টি এএফডি, যা দলটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেবে এবং ইউরোপে কট্টরপন্থীদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি আরও বাড়িয়ে দেবে। এক্ষেত্রে জ্যামাইকা কোয়ালিশন আগামীতে সরকার পরিচালনা করবে। কিন্তু ওই সরকার থাকবে নড়েবড়ে। ৭০৯ সিটের পার্লামেন্টে তাদের হাতে থাকবে মাত্র ৩৯৩ আসন। সুতরাং বোঝাই যায়, কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেয়া মরকেলের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। টানা চারবার চ্যান্সেলর হয়ে অ্যাঞ্জেলা মরকেল ইতিহাসে নাম লেখালেন। এক সময় পূর্ব জার্মানিতে জন্ম নেয়া এই শিক্ষাবিদ (যার রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে) রাজনীতিতে এসেছিলেন দুই জার্মানি একত্রিত হওয়ার পরই। অতিসাধারণ জীবনযাপন করা মরকেলের এমন এক সময় ছিল, পূর্ব জার্মানিতে যখন তিনি বাসা ভাড়া দিতে পারতেন না। সঠিক নীতি, সাধারণ জীবন, শরণার্থীদের ব্যাপারে তার সহানুভূতি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ঐক্য ধরে রাখা, ট্রাম্পের কট্টরনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া তাকে বিশ্বরাজনীতিতে অসাধারণ করেছে। তিনি একসময় জার্মান চ্যান্সেলর উইলি ব্লান্ডের জনপ্রিয়তাকেও ছাড়িয়ে গেছেন। অব্যাহত কট্টরপন্থীদের উত্থানের বিরুদ্ধে সীমিত কিছু কোয়ালিশন সিট নিয়ে তিনি আগামীতে কীভাবে জার্মানির নেতৃত্ব দেন, সেটাই দেখার বিষয়।

0 comments:

Post a Comment