সাম্প্রতিক
সময়গুলোতে বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী যে
নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়েছে তার একটি হচ্ছে এ অঞ্চলকে ঘিরে জঙ্গি নেটওয়ার্ক বিস্তার।
সিরিয়া-ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কার্যক্রম সীমিত হয়ে আসছে। আইএস নিয়ন্ত্রিত অনেক
শহর এখন সিরিয়া তথা ইরাকের বাহিনীর দখলে। বলা হচ্ছে, ওই সব এলাকায় যেসব জিহাদি ছিল,
তারা এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া কিংবা মালয়েশিয়ায় পালিয়ে
গেছে। এর একটা অংশ রাখাইনে আসতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে অনেকে। অস্ট্রেলিয়ার Lowy
Institute-এর দুজন গবেষক খালিদ কোসার ও লাইলা সুমিকি-লোগানের একটি গবেষণা প্রতিবেদন
ছাপা হয়েছে গত ৫ অক্টোবর (Defusing the ticking time-bomb in Cox’s Bazar)। রোহিঙ্গা পরিস্থিতিকে
‘টাইম
বোম্ব’-এর
সঙ্গে তুলনা করেছেন তাঁরা। এখানে উগ্রবাদ বিস্তার করতে পারে এমন আশঙ্কাও দেখছেন তাঁরা।
যাঁরা বিশ্বব্যাপী জঙ্গি কার্যক্রম নিয়ে কাজ করেন তাঁরা লক্ষ করেছেন যে সিরিয়া-ইরাকে
আইএসের কার্যক্রম সীমিত হয়ে আসছে। আইএস রাকায় পরাজিত হয়েছে এরই মধ্যে। তবে এখানে যেসব
জঙ্গি ‘যুদ্ধে’ অংশ নিয়েছিল, তারা এখন সেখান থেকে সটকে পড়েছে। ভবিষ্যতে জঙ্গি কার্যক্রম
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিস্তৃত হবে বলে অনেকে মন্তব্য করেছে। এ ক্ষেত্রে দুটি দেশের দিকে
অঙ্গুলি নির্দেশ করেছে অনেকে। একটি ফিলিপাইনে, অন্যটি মিয়ানমার-বাংলাদেশে রোহিঙ্গা
নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে। দ্য ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনে অক্টোবর (২০১৭) সংখ্যায় অধ্যাপক জাকারি
আবুজার (Zachary Abuza) একটি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে ফিলিপাইনে জঙ্গিবাদের প্রসার নিয়ে।
অধ্যাপক আবুজা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত National war college-এর একজন অধ্যাপক। তাঁর
প্রবন্ধের নাম Mayhem in Marawi। ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের একটি শহর মারাভি
(Marawi)।
সেখানে গত মে (২০১৭) থেকে ফিলিপাইনের সেনাবাহিনী আইএস সংশ্লিষ্ট আবু সায়াফ গ্রুপের সঙ্গে যে ‘যুদ্ধে’ লিপ্ত, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। গত চার মাসে সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে ১৪৭ জন সেনাবাহিনীর সদস্য এবং ৪৭ জন সিভিলিয়ান। জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে ওই শহরটি পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এই যুদ্ধের সঙ্গে সিরিয়া-ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে সিরিয়া ও ইরাকি বাহিনী যে যুদ্ধ পরিচালনা করছে তার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী এখন মারাভি শহরের নিয়ন্ত্রণভার নিতে পেরেছে। শহরটি এখন পরিপূর্ণভাবে পরিত্যক্ত। শহরের ১০০ শতাংশ বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ এখন সম্প্রসারিত হয়েছে ফিলিপাইনে। সিএনএন গত ২৯ মে (২০১৭) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে Phillipines : the next ISIS strong hold? অর্থাৎ ফিলিপাইন কি হতে যাচ্ছে আইএসের পরবর্তী শক্তিশালী ঘাঁটি? ওই প্রতিবেদনে একটি মসজিদে আইএস কর্তৃক তাদের পতাকা উত্তোলন করার দৃশ্য আমরা দেখেছিলাম।
সেখানে গত মে (২০১৭) থেকে ফিলিপাইনের সেনাবাহিনী আইএস সংশ্লিষ্ট আবু সায়াফ গ্রুপের সঙ্গে যে ‘যুদ্ধে’ লিপ্ত, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। গত চার মাসে সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে ১৪৭ জন সেনাবাহিনীর সদস্য এবং ৪৭ জন সিভিলিয়ান। জঙ্গিদের সঙ্গে যুদ্ধে ওই শহরটি পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এই যুদ্ধের সঙ্গে সিরিয়া-ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে সিরিয়া ও ইরাকি বাহিনী যে যুদ্ধ পরিচালনা করছে তার কথা মনে করিয়ে দেয়। সেনাবাহিনী এখন মারাভি শহরের নিয়ন্ত্রণভার নিতে পেরেছে। শহরটি এখন পরিপূর্ণভাবে পরিত্যক্ত। শহরের ১০০ শতাংশ বসতবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ এখন সম্প্রসারিত হয়েছে ফিলিপাইনে। সিএনএন গত ২৯ মে (২০১৭) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে Phillipines : the next ISIS strong hold? অর্থাৎ ফিলিপাইন কি হতে যাচ্ছে আইএসের পরবর্তী শক্তিশালী ঘাঁটি? ওই প্রতিবেদনে একটি মসজিদে আইএস কর্তৃক তাদের পতাকা উত্তোলন করার দৃশ্য আমরা দেখেছিলাম।
এ অঞ্চলের তিনটি
দেশে—ফিলিপাইন,
মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ায় গত দুই বছরে যেসব জঙ্গি কর্মকাণ্ড হয়েছে এবং যার সঙ্গে আইএস
জড়িত তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে সিএনএনের প্রতিবেদনে। পাঠকদের উদ্দেশে সেখান থেকে কিছু
তুলে দিচ্ছি। ২৮ জুন ২০১৬—কুয়লালামপুরের একটি নাইট ক্লাবে জঙ্গি হামলায় আটজনের মৃত্যু। ১৪ জানুয়ারি
২০১৬—জাকার্তায়
সন্ত্রাসী হামলায় চারজনের মৃত্যু। জাকার্তায় ২৪ মে ২০১৭—সন্ত্রাসী হামলায় তিনজনের মৃত্যু।
২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ফিলিপাইনের দাভাও শহর—সন্ত্রাসীর বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু ১৪ জন। আর মারাভির ঘটনা আমরা আগেই
উল্লেখ করেছি। প্রতিটি ঘটনায় আইএস তার দায় স্বীকার করেছে। সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়
বেশ কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন তৎপর, যাদের সঙ্গে আইএসের যোগাযোগ রয়েছে। যেমন বলা যেতে পারে,
মরো লিবারেশন ফ্রন্ট (এমআইএলএফ)। এরা তৎপর সুলু দ্বীপপুঞ্জ এলাকায়। সুলু দ্বীপপুঞ্জ
এলাকায়ও Bangsamoro Islamic freedom fighters (BIFF) তৎপর। জাকার্তায় তৎপর জামেইয়া
ইসলামিয়া। আবু সায়াফ গ্রুপ ও মাউটে গ্রুপও তৎপর দক্ষিণাঞ্চলে। আবার ব্রুনেইতে আবু সায়াফ
গ্রুপ তাদের তৎপরতা সম্প্রসারিত করেছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক Center for Political
Violence and Terrorism Research (ICPVTR) তাদের এক গবেষণায় উল্লেখ করেছে, আইএস সম্প্রতি
সিরিয়াফেরত জঙ্গিদের নিয়ে এ অঞ্চলে নতুন একটি ব্রিগেড তৈরি করেছে, যার নাম Katibah
Al Muhajir। পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ওই ব্রিগেডের তৎপরতা রয়েছে। এই ব্রিগেডের নেতৃত্ব
দিচ্ছেন হাপিলন নামের এক জঙ্গি। হাপিলন এসেছেন সুলু অঞ্চল থেকে। ২০১৬ সালে আইএস তাঁকে
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আমির হিসেবে ঘোষণা করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মার্কিন গোয়েন্দাদের
মতে, হাপিলন ইংরেজি বা আরবি ভাষা কিছুই বোঝেন না এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানও
সীমিত। যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে ধরার জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছে।
কয়েক হাজার জঙ্গি বর্তমানে এ অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত। ফলে আগামী দিনগুলোতে এ অঞ্চলে
যে অস্থিরতা বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য। এখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওই জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে
যুক্ত হলো রোহিঙ্গাদের নাম। ফিলিপাইনে জঙ্গি উত্থানের পাশাপাশি এখন রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রিত
অঞ্চলে জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যেতে পারে বলে অনেক গবেষক আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সিএনবিসি
(যুক্তরাষ্ট্র) টিভি চ্যানেল তাদের এক প্রতিবেদনে (১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭) বলেছে, রোহিঙ্গা
সংকটকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো সুযোগ নিতে পারে।
একটি আশঙ্কার কথা বলছে অনেকে যে রাখাইন অঞ্চল সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে সুলু অঞ্চলে (মিন্দানাও) অবস্থানরত জিহাদিরা সমুদ্রপথে রাখাইনে যেতে পারে এবং সেখানে সন্ত্রাসী তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে। সুলু অঞ্চল (ফিলিপাইন) আর রাখাইন অঞ্চলের অনেক মিল আছে। অস্ত্র আনা-নেওয়া কিংবা সন্ত্রাসীদের মুভমেন্টের জন্য সমুদ্রপথ খুবই উপযোগী। ফলে ফিলিপাইনের জিহাদিরা যদি ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর মারাভি থেকে উত্খাত হয়ে আরাকানে আশ্রয় নেয়, আমি অবাক হব না। এখন পর্যন্ত আরাকানে আরাকান স্যালভেশন আর্মির খবর আমরা জানি, যারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণের ফলে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর বাইরেও আরো কয়েকটি গ্রুপের অস্তিত্ব রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, স্যালভেশন আর্মি খুব বড় সশস্ত্র সংগঠন নয়। কোচিন লিবারেশন ফোর্স মিয়ানমারের বড় বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ। এরা কোচিন প্রদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে জাতিগত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেনি। কোচিনরা ধর্মীয়ভাবে খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাসী। বোঝাই যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলমানদের টার্গেট করেছে। এখন স্যালভেশন আর্মি কতটুকু রোহিঙ্গাদের স্বার্থ দেখে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছে, তারা এ সংগঠনের ব্যাপারে তেমন কিছু জানে না। এরই মধ্যে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আইএসের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এ অঞ্চলের ব্যাপারে আইএসের আগ্রহ আছে, এটা বোগদাদির একটি বক্তব্যে আমরা জেনেছিলাম সেই ২০১৪ সালেই। এখন নতুন করে সাত লাখ রোহিঙ্গা (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাস অনুযায়ী) বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে! এদের যে জঙ্গিরা টার্গেট করবে, এটা বলাই বাহুল্য। জঙ্গিরা সুযোগটি নেবে। রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম বৃদ্ধি পেতে পারে, যা কিনা বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে একটি সংকটের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
একটি আশঙ্কার কথা বলছে অনেকে যে রাখাইন অঞ্চল সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে সুলু অঞ্চলে (মিন্দানাও) অবস্থানরত জিহাদিরা সমুদ্রপথে রাখাইনে যেতে পারে এবং সেখানে সন্ত্রাসী তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে। সুলু অঞ্চল (ফিলিপাইন) আর রাখাইন অঞ্চলের অনেক মিল আছে। অস্ত্র আনা-নেওয়া কিংবা সন্ত্রাসীদের মুভমেন্টের জন্য সমুদ্রপথ খুবই উপযোগী। ফলে ফিলিপাইনের জিহাদিরা যদি ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের শহর মারাভি থেকে উত্খাত হয়ে আরাকানে আশ্রয় নেয়, আমি অবাক হব না। এখন পর্যন্ত আরাকানে আরাকান স্যালভেশন আর্মির খবর আমরা জানি, যারা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণের ফলে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর বাইরেও আরো কয়েকটি গ্রুপের অস্তিত্ব রয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, স্যালভেশন আর্মি খুব বড় সশস্ত্র সংগঠন নয়। কোচিন লিবারেশন ফোর্স মিয়ানমারের বড় বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ। এরা কোচিন প্রদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সেখানে জাতিগত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেনি। কোচিনরা ধর্মীয়ভাবে খ্রিস্ট ধর্মে বিশ্বাসী। বোঝাই যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মুসলমানদের টার্গেট করেছে। এখন স্যালভেশন আর্মি কতটুকু রোহিঙ্গাদের স্বার্থ দেখে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। রোহিঙ্গাদের অনেকেই বলেছে, তারা এ সংগঠনের ব্যাপারে তেমন কিছু জানে না। এরই মধ্যে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের সঙ্গে আইএসের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে এ অঞ্চলের ব্যাপারে আইএসের আগ্রহ আছে, এটা বোগদাদির একটি বক্তব্যে আমরা জেনেছিলাম সেই ২০১৪ সালেই। এখন নতুন করে সাত লাখ রোহিঙ্গা (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাস অনুযায়ী) বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে! এদের যে জঙ্গিরা টার্গেট করবে, এটা বলাই বাহুল্য। জঙ্গিরা সুযোগটি নেবে। রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম বৃদ্ধি পেতে পারে, যা কিনা বাংলাদেশের নিরাপত্তাকে একটি সংকটের মুখে ঠেলে দিতে পারে।
সবচেয়ে বড় ভয়ের
কারণটি হচ্ছে, রাকা থেকে আইএস জঙ্গিরা উত্খাত হওয়ার পর এরা হারিয়ে যাবে না। এমনকি ফিলিপাইনের
মারাভি শহর থেকেও আইএসকে উত্খাত করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট
দুতার্তে। তাহলে আইএস জঙ্গিরা কোথায় এখন আশ্রয় নেবে? ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার
ইস্ট পলিসিতে কর্মরত গবেষক আরন ওয়াই জেলিন মনে করেন, আইএস শেষ হয়ে যায়নি। তারা কিছুদিন
চুপ করে থেকে আবার শক্তি সঞ্চয় করবে এবং তাদের অনুসারীদের উৎসাহ জোগাবে। তারা গেরিলা
কায়দায় তাদের কর্মতৎপরতা অব্যাহত রাখবে (with loss of it caliphate, ISIS May
Return to Guerrilla Roots, NP Times, Oct. 18, 2017)। আর ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা
MI5-এর পরিচালক এন্ডু পারকার মনে করেন, That threat is Multidimantional, evolving
repidly and operating at a scale and pace we’ve not seen before। বক্তব্য পরিষ্কার। নতুন উদ্যোগে আইএস আবির্ভূত হতে
পারে। সিরিয়াস পাঠকরা লক্ষ করে থাকবেন অতি সম্প্রতি আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে
আইএসের একটি ‘সম্পর্ক’ স্থাপিত হয়েছে। এর অর্থ আইএস তৎপরতা আফগানিস্তানে বাড়বে। একই সঙ্গে
সোমালিয়ায় গেল সপ্তাহে যে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে, যাতে প্রায় ৫০০ মানুষ মারা গেছে,
সেখানে আইএসের সঙ্গে সম্পৃক্ত আল-শাবাব গ্রুপ তাদের শক্তি বৃদ্ধি করেছে। এ ধরনের আত্মঘাতী
বোমা হামলা চালিয়ে আইএস সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলো জানান দিল তারা শেষ হয়ে যায়নি। একই
সঙ্গে আল-কায়েদা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ওসামা বিন লাদেনের ছেলে ২৭ বছরের হামজা বিন লাদেন
এখন আল-কায়েদার নতুন নেতা। Foundation for the Defence of Democracies-এর সিনিয়র গবেষক
বিল রোজ্জিও (Bill Roggio) মনে করেন, আইএস যে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল, তা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। কিন্তু আল-কায়েদা
রয়ে গেছে। ফলে রাকায় আইএসের পতনে আমরা যেন উৎসাহিত না হই। এদের কর্মতৎপরতা বন্ধ হবে
না, বরং সম্প্রসারিত হবে অন্যত্র। ইউরোপে সন্ত্রাসী হামলা বাড়তে পারে। লন্ডন, প্যারিসের
মতো বড় শহরগুলো এখন টার্গেট। সেই সঙ্গে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উত্খাতের পর সেখানে যে
সংকটের জন্ম হয়েছে তার সুবিধা নিতে পারে আইএস। বিষয়টি আমাদের নীতিনির্ধারকরা যেন ভুলে
না যান। তাই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে ‘ভুল’ করেনি বটে; কিন্তু আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা এলাকায় আমাদের সামরিক ও বেসামরিক
গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো দরকার। সীমান্তে সেনা টহলও বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো
জঙ্গি তৎপরতা আমাদের নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলতে পারে।
0 comments:
Post a Comment