চলতি বছরের শেষের দিকে জেরুজালেম নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ ছাপা হয়েছে। তথ্য মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়ার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যা কার্যত ইসরায়েল যে জেরুজালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে দাবি করে আসছিল, তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার শামিল।
দ্বিতীয়ত, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। নামধাম লিখে রাখা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির পরও ১২৮টি দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘জেরুজালেম নগরীর মর্যাদার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অকার্যকর ও বাতিলযোগ্য’ শীর্ষক যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তার পক্ষে ভোট দিয়েছে। আর বিপক্ষে, অর্থাৎ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৯টি দেশ। ভোটদানে বিরত ছিল ৩৫টি দেশ। তৃতীয়ত, জেরুজালেমকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্থায়ী রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইরানের জাতীয় সংসদে একটি বিল পাস হয়েছে। তুরস্কও এরই মধ্যে ঘোষণা করেছে, তারা তাদের দূতাবাস পূর্ব জেরুজালেমে সরিয়ে নেবে! সব মিলিয়ে জেরুজালেমকে নিয়ে হঠাৎ করেই মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই রাজনীতি আগামী দিনে মধ্যপ্রাচ্যকে কোথায় নিয়ে যাবে, তা এ মুহূর্তে বলা কিছুটা কঠিন। তবে এটা স্পষ্ট করেই বলা যায়, ২০১৮ সালের রাজনীতিতে এই জেরুজালেম ইস্যু একটি বড় ভূমিকা পালন করবে। এরই মধ্যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে আর তারা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মানে না।
মুসলমান বিশ্বের জন্য জেরুজালেম একটি স্পর্শকাতর বিষয়। পূর্ব জেরুজালেম যে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হবে, এটি অনেক আগেই স্বীকৃত। এখানে রয়েছে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ। তবে ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়। সেই থেকে পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি দখলদারি বজায় রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১৯৮০ সালে ইসরায়েল এক আইনবলে সমগ্র জেরুজালেমকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু জাতিসংঘে গৃহীত এক সিদ্ধান্তে (সিদ্ধান্ত নং-৪৭৮) এর সমালোচনা করা হয়েছিল। ২০১৭ সালে এসেও জাতিসংঘ আরেকটি সিদ্ধান্ত নিল—সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘জেরুজালেম নগরীর মর্যাদার বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অকার্যকর ও বাতিলযোগ্য। ’ নন-বাইন্ডিং প্রস্তাবটি পালনে কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু চীন, রাশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো (জার্মানি, যুক্তরাজ্য) যখন এ ধরনের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় তখন এটিকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। ফলে সংগত কারণেই যে প্রশ্নটি এখন উঠেছে, তা হচ্ছে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আন্দোলন এখন কোন পথে? সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের’ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। একটি ‘দুই রাষ্ট্র’ ফর্মুলার দিকে ধীরে ধীরে এই দুই পক্ষ এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত এখন এই ফর্মুলার পেছনে ছুরিকাঘাতের শামিল! দুই রাষ্ট্রের ফর্মুলায় পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী হবে—এমন কথা স্বীকৃত ছিল। ওবামা প্রশাসন এই ‘দুই রাষ্ট্র’ ফর্মুলায় অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন সেখান থেকে সরে এলো এখন। তারা ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামকে উপেক্ষা করে পুরো জেরুজালেম যে ইসরায়েলের রাজধানী, সেটা স্বীকার করল! এতে উপেক্ষিত হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের চিন্তাধারা। পাঠক স্মরণ করতে পারেন, ১৯১৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ জে বেলফো ব্রিটিশ জায়নিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি লর্ড রথচাইল্ডকে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠির উদ্দেশ্য হচ্ছে ইহুদিদের জন্য একটি আবাসভূমি প্রতিষ্ঠা। ইতিহাসে এটিই ‘বেলফো’র ঘোষণা নামে পরিচিত। এই সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেই ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনি এলাকা বিভক্তির সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে একাধিকবার আরব রাষ্ট্রগুলো ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে গিয়েছিল। মূলত ইসরায়েলের আগ্রাসী তৎপরতার কারণে সেখানে শান্তি পরিকল্পনা বেশি দূর যেতে পারেনি। ১৯৭৮ সালে মিসর ও ইসরায়েল পরস্পরকে স্বীকৃতি ও সিনাই থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, ১৯৯৩ সালের পিএলও ও ইসরায়েল পরস্পরকে স্বীকৃতি এবং ওয়াশিংটনে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর, ১৯৯৪ সালে গাজা ও জেরিকোতে ফিলিস্তিনি শাসন প্রতিষ্ঠা, ১৯৯৫ সালে পশ্চিম তীরে স্বায়ত্তশাসনসংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর ইত্যাদি শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হলেও মূল সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। অর্থাৎ স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে বটে; কিন্তু এর কোনো সার্বভৌমত্ব নেই। উপরন্তু পশ্চিম তীর আর গাজা নিয়ে যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্ম, তা কার্যত অনেকটাই ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘একটি রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল এমন একটি রাষ্ট্রই দেখতে চায়, যা তাদের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে। পাঠক, ২০১৪ সালের পরিস্থিতির কথা স্মরণ করতে পারেন। ওই সময় ইসরায়েলি বিমান আর ট্যাংকের গোলায় গাজা নগরী একটি ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছিল। সাত সপ্তাহ ধরে এই আগ্রাসন অব্যাহত ছিল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় শত শত শিশু সেখানে মারা গিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বসম্প্রদায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। একদিন, ৭০ বছর আগে, পশ্চিমা বিশ্ব একটি ইহুদি রাষ্ট্র জন্মের পথ প্রশস্ত করেছিল। কিন্তু সেখানে আজও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এখন ট্রাম্প কর্তৃক জেরুজালেমকে ইহুদি রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতিদানের মধ্য দিয়ে সেই স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা আরো অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে গেল। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেখানে যে অসন্তোষের জন্ম হয়েছে, তা সহজে থামার নয়। এই অসন্তোষ পুরো আরববিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এতে বাড়তে পারে জঙ্গি তৎপরতা। ট্রাম্প সত্যিকার অর্থেই বিশ্বকে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিলেন। এতে ইসরায়েল তার দীর্ঘদিনের ‘পরিকল্পনা’ বাস্তবায়নের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল। যাঁরা ইসরায়েলি রাজনীতি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা রাখেন তাঁরা জানেন ইনন পরিকল্পনা সম্পর্কে। ওডেড ইনন (Oded Yinon) হচ্ছেন মূলত একজন কট্টর ইহুদি স্ট্র্যাটেজিস্ট। তিনি মূলত একজন গবেষক ও শিক্ষক। বলা যেতে পারে, থিওডোর হারজেল যে স্বপ্ন একসময় দেখতেন, তা বাস্তবে রূপ দিতেই ইনন সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিলেন। আর তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও ইসরায়েল সরকার। ইনন পরিকল্পনায় রয়েছে লেবাননকে ভেঙে পাঁচটি রাষ্ট্রে বিভক্ত করা, সিরিয়াকে ভেঙে একাধিক রাষ্ট্রে পরিণত করা ইত্যাদি (দেখুন, Oded Yinon, A strategy for Israel in the Nineteen Eighties, Belment, Massachusetts, 1982)। আজ থেকে ৩৫ বছর আগে এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলেও আজ পর্যন্ত এতে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। তবে স্ট্র্যাটেজিতে নতুন নতুন উপাদান যুক্ত হচ্ছে! আরববিশ্বের মধ্যে যদি বিভক্তি জিইয়ে রাখা যায়, তাতেই লাভ ইসরায়েলের। আজ এত বছর পর ইসরায়েল অনেক অংশে সফল। আরববিশ্বে বিভক্তি যত বেশি স্পষ্ট এখন, অতীতে তেমনটি ছিল না। কাতার-সৌদি দ্বন্দ্ব, সৌদি আরব-ইয়েমেন দ্বন্দ্ব কিংবা ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যকার প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা, কুর্দিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সিরিয়া-ইরাকে আইএসের উত্থান ও পতন সব মিলিয়ে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে ইসরায়েল তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিচ্ছে। ইসরায়েলের এই ‘গ্রেট গেম’ যদি সত্যি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এই একুশ শতকেই নতুন এক মধ্যপ্রাচ্যকে আমরা দেখতে পাব। ইনন পরিকল্পনায় একাধিক মুসলিম রাষ্ট্রের জন্মের কথা যেমন বলা হয়েছে, ঠিক তেমনি একটি ‘গ্রেটার ইসরায়েল রাষ্ট্র’-এর কথাও বলা হয়েছে। বৃহত্তর এই ইসরায়েলি রাষ্ট্রটি গঠিত হবে পুরো ফিলিস্তিনি এলাকা, দক্ষিণ লেবানন থেকে সিডন (Sidon) এবং লিটানি নদী (Litani River), সিরিয়ার গোলান উপত্যকা (যা অনেক আগেই ইসরায়েল দখল করেছে), হাওরান (Hauran) ও দেরা (Deraa) উপত্যকা, হিজাজ (Hijaz), রেলপথ দেরা (Deraa) থেকে আম্মান (জর্দান) পর্যন্ত এবং সেই সঙ্গে Gulf of Aaaba-এর নিয়ন্ত্রণভার। কোনো কোনো ইসরায়েলি স্ট্র্যাটেজিস্ট আরো ইহুদি এলাকা সম্প্রসারণের পক্ষে—পশ্চিমে নীল নদ থেকে পূর্বে ইউফ্রেতিস (Euphraets) নদী পর্যন্ত, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে ফিলিস্তিনি এলাকা, লেবানন, পশ্চিম সিরিয়া ও দক্ষিণ তুরস্ক। স্টেফান লেন্ডম্যানের (Stephen Lendman) বই ‘Greater Isreal’-এ এমন ধারণার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখন এই বৃহত্তর ইসরায়েল রাষ্ট্রের ধারণা কতটুকু বাস্তবায়িত হবে, সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। কিন্তু ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত যে ইসরায়েলকে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উত্সাহ জোগাবে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। স্পষ্টতই মধ্যপ্রাচ্য একটি বিপজ্জনক পথে হাঁটছে এখন।
মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও এখন প্রশ্নের মুখে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক জেরুজালেম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ঘোষণা করেছেন। তিনি গত শুক্রবার রাজধানী পুত্রজায়ায় জুমা নামাজের পর এক বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন। সেখানে তিনি বলেন, ট্রাম্পের ওই ঘোষণার বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া তার সর্বশক্তি প্রয়োগে প্রস্তুত রয়েছে। এ ধরনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সম্পর্কের অবনতি হওয়ার একটি ইঙ্গিত দিচ্ছে। যেসব রাষ্ট্র জাতিসংঘে ট্রাম্পের ঘোষণার বিরুদ্ধে ‘অবস্থান’ নিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ‘দেখে নেওয়ার’ যে পরোক্ষ হুমকি দিয়েছে, তা যেকোনো বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘আগ্রাসী মনোভাবের’ পরিচায়ক। অতীতেও জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়েছে। কিন্তু এভাবে ‘হুমকি দিয়ে’ কথা বলার কথা কখনো জাতিসংঘে উচ্চারিত হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে যে সাত লাখ কোটি ডলার সাহায্য দিয়ে আসছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বোকার মতো এই অর্থ ব্যয় করেছে! একজন ‘ব্যবসায়ী’ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মূলত রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দ্বিপক্ষীয় সব সম্পর্ককে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্র বড় অর্থনীতির দেশ। বিশ্বের এক নম্বর অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের। এ কারণে বিশ্বরাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই একটি বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। কিন্তু ট্রাম্পের একের পর এক কর্মকাণ্ড তাঁর ‘ভূমিকাকে’ প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা এবং স্বাধীন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের সংকট বাড়বে বৈ কমবে না। মধ্যপ্রাচ্যের সংকটময় পরিস্থিতিতে এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ হলো। এর ফলে এ অঞ্চলে উত্তেজনা রয়ে যাবে। সিরিয়া-ইরাক থেকে আইএস বিতাড়নের পর একদিকে সৌদি-ইয়েমেন দ্বন্দ্বের যেমন কোনো সমাধান হয়নি, ঠিক তেমনি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিকে একটি বিপজ্জনক পথে ঠেলে দিল। চীন ও রাশিয়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকায় এবং ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় স্নায়ুযুদ্ধের একটি নয়া রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করব আগামী দিনগুলোতে, যা বিশ্বরাজনীতির জন্য কোনো ভালো খবর বয়ে আনবে না।
Daily Kalerkontho
28.12.2017
0 comments:
Post a Comment