রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

গোতাবায়া ও শ্রীলঙ্কার রাজনীতি

গোতাবায়া রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। মাহিন্দা রাজাপাকসে সাবেক প্রেসিডেন্ট। যদিও রনিল বিক্রমাসিংহের নেতৃত্বে যে সরকার ছিল, সেই সরকারের মেয়াদ ছিল আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত। কিন্তু তার আগেই বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করলেন। এর মধ্য দিয়ে রাজাপাকসে পরিবারের কাছে আবার শ্রীলঙ্কার শাসনভার চলে গেল। মাহিন্দা রাজাপাকসে ২০০৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। এরপর ২০১০ সালেও তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী হন। কিন্তু তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে চাইলে (২০১৫) দলীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন এবং মাইথ্রিপালা সিরিসেনার কাছে হেরে যান।
সিরিসেনা দলীয় ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন। দলীয় কোন্দলের কারণে মাহিন্দা রাজাপাকসে আলাদা দল পর্যন্ত গঠন করেন। তার বর্তমান দলের নাম শ্রীলঙ্কা পাদুজানা পেরাসুনা। এই দলের প্রার্থী হিসেবেই ছোট ভাই গোতাবায়া রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হন। মাহিন্দা রাজাপাকসে দুই টার্ম প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকলেও, রাজনীতি থেকে তিনি অবসর নেননি। বরং প্রথমে একজন সংসদ সদস্য ও পরে প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা ২০১৮ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগও দিয়েছিলেন। কিন্তু উচ্চ আদালতের রায়ে রনিল বিক্রমাসিংহে তার প্রধানমন্ত্রীর পদ ফিরে পেয়েছিলেন। মাহিন্দা রাজপাকসে তাই বরাবরই আলোচিত। মাহিন্দা রাজাপাকসের একটা বড় অবদান হচ্ছে তামিল বিদ্রোহীদের তিনি নিমূ©ল করে (২০০৯) শ্রীলঙ্কার ঐক্য নিশ্চিত করেছিলেন। তামিল বিদ্রোহীরা ১৯৮৩ সালে স্বাধীন একটি তামিল রাষ্ট্রের জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেছিল। পরে তামিল টাইগারদের নাম সারা বিশে^ ছড়িয়ে পড়ে। বিশে^র অন্যতম জঙ্গি সংগঠনে পরিণত হয়েছিল তামিল টাইগাররা। ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ ছিলেন এর নেতা। তামিল টাইগাররা আত্মঘাতী বোমার রাজনীতি অবলম্বনে অগ্রগণ্য। এদের হাতে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী, শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রেমাদাসা পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছিলেন। মাহিন্দা রাজাপাকসে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে সেই যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলেন। ছোট ভাই ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ছিলেন তখন দেশরক্ষামন্ত্রী। শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধের শেষের দিকে শ্রীলঙ্কার তামিলদের হত্যা, অত্যাচার ও তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ আছে। এ ধরনের ‘অপরাধের’ জন্য জাতিসংঘ কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিল। পরোক্ষভাবে মাহিন্দা রাজাপাকসেও অভিযুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।
অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে হলেও গোতাবায়া রাজপাকাসে ওই নির্বাচনে ‘বৌদ্ধ কার্ড’ ব্যবহার করেছেন। নির্বাচন ফলাফলে দেখা গেছে, তামিল ও মুসলমান সংখ্যাগুরু উত্তর ও পূর্বাঞ্চল ছাড়া প্রতিটি জেলায় শ্রীলঙ্কা পিপলস ফ্রন্টের (এসএলপিপি) প্রার্থী গোতাবায়া জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে তামিল ও মুসলমান এলাকাগুলোতে ব্যাপক ভোট পেয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা। মূলত তামিল ও মুসলমান দলগুলোকে নিয়েই গঠিত হয়েছিল ‘নিউ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। এনডিএফ থেকেই প্রার্থী হয়েছিলেন সাজিথ প্রেমাদাসা। এই নির্বাচনই প্রমাণ করল শ্রীলঙ্কার সমাজ জাতিগত প্রথায় ধর্মীয়ভাবে বিভক্ত। জাতিগত ও ধর্মীয়ভাবে এই বিভক্তি এত বেশি ছিল যে, নির্বাচনের পরপরই দেশটির উত্তরাঞ্চলে তামিল সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় সারা দিনই আতঙ্ক বিরাজ করছিল। রাস্তাঘাট ছিল জনশূন্য এবং জনগণ তাদের বাড়িঘরে থেকেছে। ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডেতে চার্চে সন্ত্রাসী হামলা ও মুসলমানবিদ্বেষ এই নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলেছিল। তারা সিংহলি সেন্টিমেন্টকে প্রাধান্য দিয়েছে। আর গোতাবায়া এই সিংহলি সেন্টিমেন্টকে পুঁজি করেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। গোতাবায়ার এই বিজয় এখন অনেকগুলো প্রশ্নকে সামনে আনল। সরকার পরিচালনার ড়্গেত্রে গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসের ওপর বেশি নির্ভর করবেন। শ্রীলঙ্কা একটি প্রেসিডেন্টশাসিত রাষ্ট্র। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেখানে সাংবিধানিকভাবে কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন। ফলে রাজাপাকসে পরিবার সেখানে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করায় কোনো বড় ধরনের সংকটের জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে নতুন সরকারের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে? মাহিন্দা রাজাপাকসেকে চীনাপন্থি হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ‘সিরিসেনা একসময় মাহিন্দা রাজাপাকসের খুব ঘনিষ্ঠ থাকলেও, ২০১৫ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তিনি কিছুটা ভারতের দিকে ঝুঁকেছিলেন। অভিযোগ আছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা তার প্রার্থীপদকে সমর্থন করেছিল। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি শ্রীলঙ্কাকে চীনের প্রভাব থেকে বের করে আনতে চেষ্টা করেছিলেন। ভারত ও চীন উভয় দেশের কাছেই শ্রীলঙ্কার স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব অনেক বেশি। এই স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্বের কারণেই চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের শ্রীলঙ্কার ব্যাপারে আগ্রহ বেশি।
চীন যে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এর এক মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, তাতে শ্রীলঙ্কার অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীন হামবানতোতায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করে দিয়েছে, যা ভারতের জন্য একটি চিন্তার কারণ। ভারত এটাকে দেখছে তার নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে। ২০১৪ সালে হামবানতোতায় চীনা সাবমেরিন ডকিং করেছিল, যা ভারতীয় নিরাপত্তা বিশেস্নষকদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। হামবানতোতা রাজাপাকসের এলাকা। এই এলাকাকে তিনি চীনা ঋণে পরিপূর্ণ একটি আধুনিক শহরে পরিণত করেছেন। চীনা ঋণ শ্রীলঙ্কাকে এক ধরনের ‘ডেব্‌ট ট্রাপ’ বা ঋণের ফাঁদে ফেলেছে। হামবানতোতা সমুদ্রবন্দরটি এখন শ্রীলঙ্কা ৯৯ বছরের জন্য চীনের কাছে ‘লিজ’ দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কাকে ঘিরে চীন-ভারত দ্বন্দ্ব এখন স্পষ্ট। মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ২০১২ সালে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রীলঙ্কা সফর করেন। ওই সময় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প নির্মাণের জন্য শ্রীলঙ্কাকে ১০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়। শ্রীলঙ্কার অফিসারদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করে চীন। শুধু চীনা সাবমেরিনের উপস্থিতিই ভারতের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়নি, বরং বন্দর নগরী ত্রিনকোমালিতে চীনারা একটি বিমান রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে। কৌশলগত অবস্থানে ভারতের জন্য কেন্দ্রটি তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণ। এই ঘটনা দুদেশের মধ্যকার বৃহত্তর নিরাপত্তা সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে ভারতীয় মহাসাগরে শক্তি জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। আর চীনা অস্ত্র ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে, এমন আশঙ্কাও ভয়ের আরেকটি কারণ। এটি বিবেচনায় নিয়েই ভারত সাম্পªতিক সময়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তার সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করেছে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তিন ধরনের যৌথ মহড়া চালিয়েছে ভারত। ২০১৩ সাল থেকে মিত্রশক্তি নামের দ্বিপক্ষীয় মহড়া চলছে। ২০১৭ সালের মহড়ায় সন্ত্রাসবাদের দিকে নজর দেওয়া হয়। দুই নৌবাহিনীর মধ্যেও যৌথ মহড়া হচ্ছে। এ ছাড়া মালদ্বীপকে নিয়ে হয়েছে ‘দোস্তি মহড়া’। ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভারত ১৭০০ শ্রীলঙ্কান অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আর প্রায় ৮০ ভাগ শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর অফিসার ভারত থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনীর সাদার্ন কমান্ড হামবানতোতা সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে চীনা নৌবাহিনীর সঙ্গে একটা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে– এ ধরনের একটি সম্ভাবনা কোনো কোনো মহলে আলোচিত হচ্ছে। কেন না, হামবানতোতা পরিপূর্ণভাবে এখন চীনাদের নিয়ন্ত্রণে। এখানে চীনা নৌবাহিনীর জাহাজ আসাটা অস্বাভাবিক নয়। সুতরাং এই বন্দরের দিকে ভারতের যে দৃষ্টি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এদিকে হামবানতোতায় চীন যখন ঘাঁটি গেড়েছে, তখন মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাত্তালা রাজাপাকসে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার ভার গ্রহণ করেছে ভারত। এই বিমানবন্দরটি এক রকম পরিত্যক্ত। তেমন যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। ভারতের ভয় ছিল এই বিমানবন্দরটিও চীন ‘লিজ’ নিতে পারে। আর তাহলে ভারত মহাসাগরে চীনের স্ট্র্যাটেজিক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
ভারত মহাসাগরে জিবুতিতে চীন তার প্রথম সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। সেখানে প্রায় ১০ হাজার চীনা সৈন্য নিয়োজিত রয়েছে। বেলুচিস্তানের (পাকিস্তান) গাওদারে চীন যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ শেষ করেছে, সেখানে চীন একটি নৌঘাঁটি নির্মাণ করছে বলেও মার্কিন পত্রপত্রিকাগুলো রিপোর্ট করেছে। জিবুতিতে চীনা ঘাঁটি থাকায় ভারতও এখন চেষ্টা করছে সিসেলিস, ওমান ও সিঙ্গাপুরে একটি নৌঘাঁটি নির্মাণ করার (সিএনসিসি, ২৮ ফেব্রম্নয়ারি ২০১৮)। সুতরাং বোঝাই যায়, ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর কর্মকাণ্ডে ভারত সন্তুষ্ট নয়। এক ধরনের প্রতিযোগিতা দেশ দুটির মধ্যে আছে। সর্বশেষ ঘটনায় চীন ভারতের অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের দাবি করে এবং তা ‘দক্ষিণ তিব্বত’ হিসেবে উল্লেখ করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেছে। ভারত এটাকে সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। ফলে ‘চেন্নাই-কানেক্ট’ (চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের চেন্নাই সফর, ২০১৯) দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার একটা সম্ভাবনা জাগালেও এক ধরনের আস্থাহীনতা রয়ে গেছে দুদেশের মধ্যে। এরই মধ্যে এখন যোগ হলো শ্রীলঙ্কার সরকার পরিবর্তনের খবরটি। শ্রীলঙ্কা আবারও চীনের দিকে ঝুঁকে পড়বে কি না– সেটাই দেখার বিষয়। এ অঞ্চলের দেশগুলোতে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে চীন ও ভারত উভয়ই জড়িত। সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই দুই শক্তি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকলেও দেখা গেছে যে, সরকারই ক্ষমতাসীন হয়েছে, তারা ভারত অথবা চীনের সহযোগিতার দিকে হাত বাড়িয়েছে। আমরা মালদ্বীপ ও নেপালের কথা বলতে পারি। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন ছিলেন চীনাপন্থি। তার আমলে (২০১৩-১৮) মালদ্বীপে ব্যাপক চীনা বিনিয়োগ হয়। ওই সময় একটা গুজব ছিল যে, চীন মালদ্বীপে একটি নৌঘাঁটি নির্মাণ করতে পারে। কিন্তু ২০১৮ সালের শেষের দিকে সেখানে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাতে বিজয়ী হন ইব্রাহিম সলিহ। ইব্রাহিম সলিহকে ভারতপন্থি হিসেবে মনে করা হয়। তিনি অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য চীনের বদলে ভারতকে বেছে নিয়েছেন। এদিকে নেপালের কমিউনিস্ট সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। দু-দশকের মধ্যে প্রথম একজন চীনা প্রেসিডেন্ট সম্পªতি নেপাল সফর করেছেন। এর মধ্য দিয়ে নেপাল কিছুটা চীনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। চীন নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির প্রায় কয়েক হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কমিউনিস্ট পার্টি এখন নেপালে ক্ষমতায়।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে এখন শ্রীলঙ্কা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে অনেকের– ‘শ্রীলঙ্কা কি আবারও চীনের দিকে ঝুঁকে পড়বে? ইতিমধ্যে নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ঘোষণা করেছেন, তিনি শিগগিরই ভারত সফরে যাবেন। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট সলিহও দায়িত্ব নেওয়ার পর ছুটে গিয়েছিলেন ভারতে। এখন গোতাবায়াও যাচ্ছেন। মেসেজটি পরিষ্কার। ভারত নিশ্চিত হতে চায় নয়া শ্রীলঙ্কা সরকারের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে? প্রভাবশালী সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ২১ নভেম্বর তাদের এক প্রতিবেদনে মন্তব্য করেছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া চীনের প্রশ্নে ‘low key’’ অর্থাৎ নিচুস্তরের একটা অবস্থান গ্রহণ করবেন। আর নিক্কি এশিয়ান রিভিউর মন্তব্য ‘India seeks to contain china presence in new Srilanka Governmen’– অর্থাৎ ভারত শ্রীলঙ্কায় চীনের প্রভাব কমানোর উদ্যোগ নেবে। এটাই হচ্ছে আসল কথা। চীন ও ভারতের উভয়েরই আগ্রহ রয়েছে শ্রীলঙ্কার নয়া সরকারের ওপর প্রভাব ফেলার। এখন রাজাপাকসে ভ্রাতৃদ্বয় শ্রীলঙ্কাকে কোথায় নিয়ে যাবেন– সেটাই দেখার বিষয়।
Daily Desh Rupantor
28.11.2019

0 comments:

Post a Comment