নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ডে বিশ্বনেতাদের শোক ও
নিন্দা প্রকাশ পেলেও ঘটনাটি বেশ কিছু বিষয় সামনে নিয়ে এসেছে, যা আগামী
দিনের বিশ্বরাজনীতিকে কিছুটা হলেও ‘নিয়ন্ত্রণ’ করবে। এটা একটা নতুন মাত্রা,
যা নতুন করে গড়ে ওঠা স্নায়ুযুদ্ধতেও প্রভাব ফেলবে। এটা বর্ণবাদী আচরণের
নতুন এক রূপ। বিশ্বব্যাপী নতুন করে এক ধরনের বর্ণবাদী আচরণ লক্ষ করা
যাচ্ছে। মার্কিন মুল্লুক থেকে আটলান্টিকের ওপারে ইউরোপের দেশগুলোতেও
বর্ণবাদী আচরণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জন্ম হচ্ছে উগ্র দক্ষিণপন্থী সংগঠনের,
যারা এক ধরনের ঘৃণার রাজনীতির জন্ম দিয়ে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে
চাচ্ছে।
ক্রাইস্টচার্চে ব্রেন্টন টারান্ট যে ৪৯ জন নিরীহ মুসলমান নাগরিককে
ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করল, তাকে নিছক একটি সাধারণ হত্যাকাণ্ড ভাবলে আমরা ভুল
করব। এটা বিশ্বব্যাপী ‘হেইট ক্যাম্পেইন’ বা ‘ঘৃণা প্রচারণার’ অংশবিশেষ। এর
মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বিশ্বব্যাপী শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা,
ধর্মীয়ভাবে মুসলমানদের ঘৃণা করা এবং ধর্মীয় বিভক্তি সৃষ্টি করে ‘সুবিধা’
আদায় করে নেওয়া। ক্রাইস্টচার্চের হত্যাকাণ্ডকে আমরা এখন কিভাবে মূল্যায়ন
করব? প্রথমত, নিঃসন্দেহে এর একটি ধর্মীয় দিক আছে। হত্যাকারী ব্রেন্টন
টারান্ট একজন উগ্র দক্ষিণপন্থী বর্ণবাদী মানুষ। তিনি প্রচণ্ডভাবে
মুসলমানবিদ্বেষী। তিনি চান বিশ্বব্যাপী শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে।
ট্রাম্প তাঁর অনুপ্রেরণার উৎস—এ কথা তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন। এর আগে
পৃথিবীর যেসব জায়গায় মুসলমানদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে এবং মুসলমানদের হত্যা
করা হয়েছে, তিনি সেসব ঘটনা থেকে উৎসাহিত হয়েছেন। দ্বিতীয়ত, আপাতদৃষ্টিতে
মনে হতে পারে, তিনি একাই ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছেন। কিন্তু ‘পরিকল্পনা’
প্রণয়ন করা, বাস্তবায়ন করা—এর সঙ্গে আরো লোকজন জড়িত রয়েছে এবং এটা একটা
সুদূর পরিকল্পনার অংশ। তৃতীয়ত, হত্যাকারী ব্রেন্টন টারান্ট লাইভ সম্প্রচার
করে দীর্ঘ ১৭ মিনিট ধরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করলেন, আগ্নেয়াস্ত্র বদল করে
হত্যাকাণ্ড চালানোর বিষয়টি কারো নজরে পড়ল না কেন? সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী
তিনি টুইটারে তাঁর তথাকথিত ইশতেহারটি প্রকাশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী
জাসিন্ডা আরডার্নের কার্যালয়ে তার একটি কপিও তিনি পাঠিয়েছিলেন।
সংবাদপত্র আমাদের সে খবরই দিয়েছে। তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সতর্ক
হলো না কেন? এটা কি প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থতা? গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা,
নাকি প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে এই হত্যাকাণ্ড
সংঘটিত হয়েছে? চতুর্থত, নিউজিল্যান্ডকে বরাবরই একটি ‘শান্তির দেশ’ হিসেবে
চিহ্নিত করা হয়। ৯/১১-এর ঘটনাবলির পর (যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ারে
সন্ত্রাসী হামলা, ২০০১) বিশ্বের অনেক দেশেই সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটলেও
নিউজিল্যান্ড ছিল ব্যতিক্রম। কিন্তু এই ‘শান্তির দেশ’টিও এখন অশান্ত হয়ে
উঠল। এই ‘হেইট ক্রাইম’ এখন শ্বেতাঙ্গশাসিত দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইউরোপে
ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পঞ্চমত, ব্রেন্টন টারান্ট তাঁর তথাকথিত
ইশতেহারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য দ্বারা অনুপ্রাণিত
হয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একজন ব্যবসায়ী ও উগ্র
মানসিকতাসম্পন্ন লোক ট্রাম্প নির্বাচনের আগে (২০১৬) এক ধরনের শ্বেতাঙ্গ
শ্রেষ্ঠত্ববাদ আর ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে সাধারণ আমেরিকানদের মন জয়
করতে পেরেছিলেন। মার্কিন সমাজ মূলত অভিবাসীদের নিয়েই গড়ে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্র যে অর্থনীতিতে বিশ্বের এক নম্বরে পরিণত হয়েছে, এর পেছনে রয়েছে
অভিবাসীদের বড় অবদান। এটা ঠিক, এই অভিবাসীদের (ট্রাম্প নিজেও অভিবাসী
পরিবারের সন্তান। তাঁর স্ত্রীও অভিবাসী) একটা বড় অংশ শ্বেতাঙ্গ; কিন্তু
কৃষ্ণাঙ্গ, চৈনিক কিংবা এশিয়ান অভিবাসীদের অবদানকে ছোট করে দেখা যাবে না।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তিনি তাঁর ‘হেইট ক্যাম্পেইন’
অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর এক নম্বর টার্গেট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিবাসী,
বিশেষ করে মুসলমান অভিবাসীদের বের করে দেওয়া এবং শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য সমাজে
প্রতিষ্ঠা করা। নিঃসন্দেহে ট্রাম্পের এই ‘স্ট্র্যাটেজি’ ব্রেন্টন টারান্টের
মতো হত্যাকারীদের অনুপ্রেরণা জুুগিয়ে থাকবে। ষষ্ঠত, হত্যাকারী ব্রেন্টন
‘ব্লাক সান’ (কালো সূর্য) নামে একটি নব্য নাজি সংগঠনের সদস্য। এই নব্য
নাজিরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সংগঠিত হচ্ছে! এরা নাজি মতাদর্শকে গ্রহণ করছে,
নাজিবাদকে আদর্শ হিসেবে মানছে। এমনকি তাদের সিম্বলও গ্রহণ করছে। এই
নাজিবাদী সংগঠনগুলো এখন সভ্যতার প্রতি এক ধরনের হুমকি। ১৯৯২ সালে জন্ম
নেওয়া কমব্যাট ১৮ (combat 18) নামে একটি সংগঠনের কথা আমরা এখানে উল্লেখ
করতে পারি। ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া উগ্র কট্টরপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী এই
সংগঠনের শাখা এখন ইউরোপের ১৮টি দেশে সংগঠিত হয়েছে। এদের মূল আদর্শ হচ্ছে
শ্বেতাঙ্গ কর্তৃত্ববাদ, ইসলামবিরোধী ও শক্তিশালী একক নেতৃত্ব। এদের
রাজনীতির সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে অভিবাসী প্রসঙ্গটি। ২০১৫-১৬ সালে ইউরোপে
ব্যাপকভাবে সিরীয় অভিবাসী আসায় পুরো ইউরোপের রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে বদলে দেয়।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল প্রায় ১০ লাখ সিরীয় অভিবাসীকে
জার্মানিতে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হলেও, তিনি বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি
গ্রহণ করেছিলেন। মুসলমান এই অভিবাসীদের ব্যাপকভাবে ইউরোপে আগমনকে কেন্দ্র
করে কট্টরপন্থী ডানপন্থী দলগুলো সেখানে শক্তিশালী হয়। শুধু তা-ই নয়,
ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালিতে তারা এখন ক্ষমতার কাছাকাছি। ২০১৭ সালের
নির্বাচনে জার্মানিতে উগ্র নব্য নাজি সংগঠন অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি পার্টি
তৃতীয় স্থান পেয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। এটা ছিল একটা অকল্পনীয় ব্যাপার।
একসময় একেবারেই অপরিচিত এই দল এখন ক্ষমতার কাছাকাছি। তারা যদি পরবর্তী
নির্বাচনে ক্ষমতার স্বাদ পায়, তাহলে ইউরোপে নতুন এক যুদ্ধের সূচনা হতে
পারে। শুধু জার্মানির কথা কেন বলি? ফ্রান্সে ন্যাশনাল ফ্রন্টের উত্থান,
ইতালিতে নর্দান লীগের ক্ষমতার অংশীদার, হাঙ্গেরিতে ‘জব্বিক’ কিংবা ‘নরডিক
রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্ট’ পুরো নরডিকভুক্ত দেশগুলোতে (সুইডেন, নরওয়ে,
ফিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক) যেভাবে নব্য নাজি সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড
বিস্তার লাভ করছে, তা যেকোনো শুভবুদ্ধির মানুষের জন্য চিন্তার কারণ। এরা
ইউরোপে ‘হেইট ক্রাইম’-এর জন্ম দিয়েছে এবং ‘লোন উলফ’ (Lone wolf) বা একক
সন্ত্রাসী হামলার জন্ম দিয়ে তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। উগ্র এই
সংগঠনগুলো ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। মুসলমান
অভিবাসীদের কারণেই ব্রেক্সিটের জন্ম। আগামী দিনে এসব নব্য নাজিবাদী সংগঠনের
জন্য ইউরোপ এক বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে এবং পরিস্থিতিকে দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধপূর্ব পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে বসনিয়া-হারজেগোভিনার পরিস্থিতি মানুষ আজও স্মরণ করে। তখন উগ্র সার্বীয় জাতীয়তাবাদ বসনিয়া-হারজেগোভিনা থেকে মুসলমানদের উত্খাত করেছিল। হাজার হাজার মুসলমান নারী-পুুরুষ ও শিশুকে উগ্র সার্বরা (ধর্মীয়ভাবে অর্থডক্স খ্রিস্টান) হত্যা করেছিল। ১৯৯৫ সালের ১২ জুলাইয়ের স্রেব্রেনিচার (Srebrenica) গণহত্যার খবর নিশ্চয়ই আমরা স্মরণ করতে পারি। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সার্ব যুদ্ধবাজ কমান্ডার রাটকো ম্লাদিকের (Ratko Mladic) বিচার হয়েছিল। আজ ব্রেন্টন টারান্টের অপরাধ স্রেব্রেনিচার গণহত্যার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
সমসাময়িক বিশ্বরাজনীতিতে ৯/১১-এর ঘটনা একটি বড় ধরনের ঘটনা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী মুসলমানবিদ্বেষী যে ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছিল, তা আজও চলমান। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মানুষ জেনেছে আল-কায়েদা নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের নাম। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যে ‘ঘটনা’ ঘটেছিল, তার রেশ এখনো ফুরিয়ে যায়নি। একের পর এক ‘ঘটনা’ ঘটে চলেছে। আফগানিস্তান দখল, ইরাক-লিবিয়ায় ক্ষমতার পরিবর্তন, আইএসের উত্থান—এসবই মূলত একই সূত্রে গাঁথা। অর্থাৎ মুসলমানপ্রধান দেশগুলোতে নেতৃত্বশূন্য করা, সারা বিশ্বে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব ছড়িয়ে দেওয়া, ইসলামকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা—দীর্ঘ ১৭ বছর আগে যে ‘স্ট্র্যাটেজি’ রচিত হয়েছিল, তা আজও রয়ে গেছে। সন্ত্রাসী ব্রেন্টন টারান্ট কর্তৃক ৪৯ জন সাধারণ মানুষকে হত্যা করা এরই সর্বশেষ উদাহরণ। এর মধ্য দিয়ে এই স্ট্র্যাটেজির (অ্যান্টি ইসলাম) যে এখানেই শেষ, তা বলা যাবে না। এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে পারে আগামী দিনে। এটা ঠিক, বিশ্বনেতারা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন বটে। কিন্তু এই ‘হেইট ক্রাইম’ বন্ধে কোনো বড় ধরনের উদ্যোগ বিশ্বসম্প্রদায় নিতে পারেনি। এমনকি ইসলামিক ঐক্য সংস্থার মতো সংগঠনও এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ। ইসলামকে যে পশ্চিমা বিশ্ব ‘সন্ত্রাসী ধর্ম’ (?) হিসেবে চিত্রিত করছে, সে ব্যাপারেও ওআইসি উদাসীন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের উত্থান ‘অ্যান্টি ইসলামিক’ সেন্টিমেন্টকে আরো উসকে দিয়েছে। তাই কোনো কোনো গণমাধ্যম মন্তব্য করেছে এভাবে, ‘New Zealand : Is Trumpism now replacing ISIL as a major cause of Stochastic terrorism? জুয়ান কোলের (Juan Cole) এই নিবন্ধ ছাপা হয়েছে Informed comment-এ গত ১৫ মার্চ। অর্থাৎ জুয়ান কোল বলতে চেয়েছেন, আইএসআইএল বা ইসলামিক স্টেট যে অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত, ট্রাম্পবাদ কি তার স্থলাভিষিক্ত বা প্রতিস্থাপিত হয়েছে? অর্থাৎ ট্রাম্পের মতবাদ যে উগ্র জাতীয়তাবাদ ও ‘হেইট ক্রাইম’-এর জন্ম দিয়েছে, এটাই হচ্ছে কোলের মূল্যায়ন। বাস্তবতা হচ্ছে, ট্রাম্প যদি শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ সম্পর্কে তাঁর আগের অবস্থান থেকে সরে আসতেন, বিশ্বে এই ‘হেইট ক্রাইম’ অনেক কমে আসত।
ক্রাইস্টচার্চের ঘটনা আমাদের জন্য একটি ‘ওয়েক আপ কল’। অর্থাৎ ‘জেগে ওঠার সময়’। বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্ব আসরে হয়তো আমরা ‘বড়’ ভূমিকা পালন করতে পারব না। কিন্তু বাংলাদেশ জাতিসংঘে সোচ্চার হতে পারে। ওআইসিতে ভূমিকা রাখতে পারে। ভুলে গেলে চলবে না, বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ মুসলমান। অতীতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান আমাদের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বে কিছুটা হলেও ক্ষতি করেছে। বাংলাদেশ যেকোনো সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার—এ কথাই আজ বিশ্বকে বলতে হবে
Daily Kalerkontho
18.03.2019
স্যার লেখাটা অনেক অ্যানালাইসিসমূলক ছিল।অনেক বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছি।ধন্যবাদ স্যার।🙂
ReplyDelete