রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ঢাকা সিটি করপোরেশনের বিভক্তি প্রসঙ্গে এরশাদের মন্তব্য

মহাজোট সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে ঢাকাকে এক করা হবে। গত ২৭ জানুয়ারি আইডিইবি মিলনায়তনে 'লোকাল গভর্নমেন্ট ফর দ্য বেটার রুরাল লাইফ অ্যান্ড সাস্টেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট : কনটেক্সট অ্যান্ড ইন্টারভেনশন' শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেছেন। দৈনিক যায়যায়দিন-এ সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে গত শনিবার। গত ২৯ নভেম্বর জাতীয় সংসদে 'স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন সংশোধনী) বিল-২০১১ পাস হয়েছে। সংসদে এই বিলটি পাস হওয়ার পর ঢাকা এখন ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণে দুভাগে ভাগ হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ডিসিসির বিভক্তির প্রতিবাদে গত ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালও পালন করেছে। শুধু তাই নয়, অব্যাহতিপ্রাপ্ত ডিসিসির মেয়র সাদেক হোসেন খোকা হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন। হাইকোর্ট সরকারকে এই সিদ্ধান্ত কেন বাতিল করা হবে না, তা জানাতে ৪ সপ্তাহ সময়ও দিয়েছেন। তারপরও যা বাস্তবতা তা হচ্ছে সরকার ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণের জন্য দুজন প্রশাসক নিয়োগ করেছে। বলতে দ্বিধা নেই সরকারের সমর্থক বেশকিছু বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বও ঐতিহ্যম-িত ঢাকার এই বিভক্তিকে মেনে নেননি। সভা-সেমিনারে তারা এর সমালোচনা করেছেন। এখন করলেন এইচএম এরশাদ। এই বিভক্তির ফলে এখন ডিসিসির দক্ষিণে পড়েছে ৫৬ ওয়ার্ড, আর উত্তরে পড়েছে ৩৬টি। এর ফলে আয়-ব্যয়ের দিক দিয়ে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে। কেননা ডিসিসির বেশি আয় হয় দক্ষিণ অঞ্চল থেকে। এখন বিভক্তির ফলে দক্ষিণ অঞ্চল থেকে রাজস্ব আসবে ৭০ শতাংশ। আর উত্তর অঞ্চল থেকে রাজস্ব আসবে মাত্র ৩০ শতাংশ। এর ফলে একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। উত্তর অঞ্চল থেকে রাজস্ব কম আমলে সেখানে কর্মচারীদের বেতনভাতা নিয়মিত পরিশোধ করা সমস্যা হবে। একই সালে উত্তর অঞ্চলের মানুষ সিটি করপোরেশনের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এমনকি আগামীতে দুই মেয়র দায়িত্ব নেয়ার পর ক্ষমতা পরিচালনা করতে গিয়ে এদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিতে পারে। আর আমাদের দেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি, তাতে করে ওই দ্বন্দ্ব যদি সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নেয় তাতে আমি অবাক হব না। আমরা জানি, সিটি করপোরেশনের একটা বড় কাজ হচ্ছে স্থানীয় বাজার, রাস্তাঘাট উন্নয়ন ও নয়: নিষ্কাশন, বর্জ ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করা। কিন্তু ডিসিসির বিভক্তির ফলে এক ধরনের সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হবে। লোকবলের অভাব হেতু বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এখন দুটি করপোরেশন গঠিত হয়েছে। ফলে সরকারের খরচও বাড়বে। কেননা দ্বিতীয় মেয়রের জন্য অফিস তৈরি, জনবল নিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে সরকারকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে। জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাবে। সে ক্ষেত্রে ওই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলরদের সঙ্গে বিশেষ করে বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের সঙ্গে মেয়রের একটা দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতে পারে, যা কিনা করপোরেশনের সুষ্ঠু পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের অন্তরায় সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি এ খাতে যে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হবে, অর্থনীতির এ মন্দার যুগে তা গ্রহণযোগ্য নয়। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী বিলুপ্ত ঘোষিত ডিসিসিতে ছিলেন, তাদের কেউ কেউ নতুন সৃষ্ট কোনো একটি সিটি করপোরেশনে যোগ দিতে চাইছেন না। তাদের ট্রান্সফার করা হয়েছে। তাদের কেউ উচ্চ আদালতে ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিট করতে পারেন। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ট্রান্সফারের বিষয়টি একটি বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাদের পেনশানের ব্যাপারটিও এর সঙ্গে জড়িত। সরকার যেভাবে সীমানা চিহ্নিত করে 'সিটি করপোরেশন উত্তর' ও সিটি করপোরেশন দক্ষিণ করেছেন তাও আইনগত জটিলতায় জড়িয়ে যেতে পারে। ভুক্তভোগী যে কোনো নাগরিক ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের প্রতিকার চাইতে পারেন। উচ্চ আদালতের যে কোনো সিদ্ধান্ত নানা জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। সিটি করপোরেশনের বিভক্তি সংক্রান্ত বিলটি সংসদে পাস হওয়ার ফলে সরকার দুটি সিটি করপোরেশনে দুজন প্রশাসক নিয়োগ করেছে। সরকার ৯০ দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেবে। এখানে নানা জটিলতায় (মামলা-মুকদ্দমা, প্রার্থী বাছাই ইত্যাদি) নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসকরা (আমলা) নির্ধারিত সময়ের বাইরেও ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন। সরকার এমনিতেই ডিসিসির নির্বাচন দিতে পারেনি। আধুনালুুপ্ত ডিসিসির মেয়র খোকা ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তার টার্ম শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বর্তমান সরকার নির্বাচন দিতে পারেনি। যে সমস্যার জন্য সরকার নির্বাচন দিতে পারেনি, সেই সমস্যা থেকে যাবে। ফলে ডিসিসির বিভক্তি কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসকরাও নানা কৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবেন। ফলে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হবে। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাংকের ঋণে আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্টের মাধ্যমে সীমানা সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। ওই সময় মন্ত্রিসভায় অন্যান্য দেশের মতো এককেন্দ্রিক কর্তৃপক্ষ (ইউনিটারি অথরিটি) প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছিল। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিসিসির বিভক্তির সিদ্ধান্তটি ওই আগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে করে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আরো খারাপ হতে পারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে দাতা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক ভালো নয়। পদ্মা সেতু অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক অর্থ ছাড়করণ বন্ধ রেখেছে এখন ডিসিসির বিভক্তির সিদ্ধান্ত দাতা সংস্থাটির সঙ্গে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটাতে পারে। ডিসিসির বিভক্তি নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করতে আদৌ কোনো সাহায্য করবে না। সরকার তার ক্ষমতাবলে এই কাজটি করা। কিন্তু এর ফলাফল ভোগ করবে এই ঢাকা শহরে বসবাসরত নাগরিকরা। ডিসিসির বিভক্তি কোনো সমাধান নয়। পৃথিবীর অনেক বড় বড় শহর, বিশেষ করে লন্ডন, নিউইয়র্ক কিংবা কলকাতার মতো শহরে একজনই মেয়র আছেন। লন্ডন কিংবা নিউইয়র্কের মেয়রের কর্মকা- অনেক ব্যাপক। প্রশাসনিক এলাকাও অনেক বড়। সেখানে একজন মেয়র যদি বিশাল এক এলাকার কর্মকা- পরিচালনা করতে পারেন তাহলে ঢাকার একজন মেয়র পারবেন না কেন? আসলে ডিসিসির বিভক্তির বিষয়টি রাজনৈতিক। বলা হয় ক্ষমতাসীন দলে একাধিক মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। তাদের খুশি করার জন্যই মূলত এই বিভক্তি। এর মধ্যদিয়ে মেয়রের মর্যাদাও ছোট করা হলো। সাবেক মেয়র একজন কেবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা পেতেন। তিনি প্রটোকল অনুযায়ী মন্ত্রীর সমমর্যাদা ভোগ করতেন। কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী মেয়র একজন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করবেন। এর মধ্যদিয়ে দুই মেয়রের মর্যাদাকে একধাপ নিচে নামানো হলো। সিটি করপোরেশন দক্ষিণ করেছেন তাও আইনগত জটিলতায় জড়িয়ে যেতে পারে। ভুক্তভোগী যে কোনো নাগরিক ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের প্রতিকার চাইতে পারেন। উচ্চ আদালতের যে কোনো সিদ্ধান্ত নানা জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। সিটি করপোরেশনের বিভক্তি সংক্রান্ত বিলটি সংসদে পাস হওয়ার ফলে সরকার দুটি সিটি করপোরেশনে দুজন প্রশাসক নিয়োগ করেছে। সরকার ৯০ দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন দেবে। এখানে নানা জটিলতায় (মামলা-মকদ্দমা, প্রার্থী বাছাই ইত্যাদি) নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশাসকরা (আমলা) নির্ধারিত সময়ের বাইরেও ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন। সরকার এমনিতেই ডিসিসির নির্বাচন দিতে পারেনি। আধুনালুুপ্ত ডিসিসির মেয়র খোকা ২০০২ সালের ২৫ এপ্রিল দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। তার টার্ম শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বর্তমান সরকার নির্বাচন দিতে পারেনি। যে সমস্যার জন্য সরকার নির্বাচন দিতে পারেনি, সেই সমস্যা থেকে যাবে। ফলে ডিসিসির বিভক্তি কোনো কাজে আসবে না। প্রশাসকরাও নানা কৌশলে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবেন। ফলে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হবে। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বিশ্বব্যাংকের ঋণে আন্তর্জাতিক কনসালট্যান্টের মাধ্যমে সীমানা সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। ওই সময় মন্ত্রিসভায় অন্যান্য দেশের মতো এককেন্দ্রিক কর্তৃপক্ষ (ইউনিটারি অথরিটি) প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অনুমোদন করা হয়েছিল। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডিসিসির বিভক্তির সিদ্ধান্তটি ওই আগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এতে করে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক আরো খারাপ হতে পারে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে দাতা সংস্থাগুলোর সম্পর্ক ভালো নয়। পদ্মা সেতু অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক অর্থ ছাড়করণ বন্ধ রেখেছে এখন ডিসিসির বিভক্তির সিদ্ধান্ত দাতা সংস্থাটির সঙ্গে সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটাতে পারে। ডিসিসির বিভক্তির নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করতে আদৌ কোনো সাহায্য করবে না। সরকার তার ক্ষমতাবলে এই কাজটি করল। কিন্তু এর ফলাফল ভোগ করবে এই ঢাকা শহরে বসবাসরত নাগরিকরা। ডিসিসির বিভক্তি কোনো সমাধান নয়। পৃথিবীর অনেক বড় বড় শহর, বিশেষ করে লন্ডন, নিউইয়র্ক কিংবা কলকাতার মতো শহরে একজনই মেয়র আছেন। লন্ডন কিংবা নিউইয়র্কের মেয়রের কর্মকা- অনেক ব্যাপক। প্রশাসনিক এলাকাও অনেক বড়। সেখানে একজন মেয়র যদি বিশাল এক এলাকার কর্মকা- পরিচালনা করতে পারেন তাহলে ঢাকার একজন মেয়র পারবেন না কেন? আসলে ডিসিসির বিভক্তির বিষয়টি রাজনৈতিক। বলা হয় ক্ষমতাসীন দলে একাধিক মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। তাদের খুশি করার জন্যই মূলত এই বিভক্তি। এর মধ্যদিয়ে মেয়রের মর্যাদাও ছোট করা হলো। সাবেক মেয়র একজন কেবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা পেতেন। তিনি প্রটোকল অনুযায়ী মন্ত্রীর সমমর্যাদা ভোগ করতেন। কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী মেয়র একজন প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করবেন। এর মধ্যদিয়ে দুই মেয়রের মর্যাদাকে একধাপ নিচে নামানো হলো। একটি করপোরেশনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্টের বিকল্প কিছু নেই। অনেক বড় বড় সিটি করপোরেশন মেট্রোপলিটান গভর্নমেন্ট হিসেবে পরিচালিত হয়। নাগরিক সুবিধার সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয় (পুলিশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, রাস্তাঘাট ইত্যাদি) এই মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্টের আওতাধীন থাকে। ফলে একদিকে যেমনি এক ধরনের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয়, অন্যদিকে তেমনি নাগরিকরা নূ্যনতম সুবিধাও নিশ্চিত হয়। বর্তমান প্রেক্ষিতে এসব বিষয়াদিতে নগর প্রশাসনের করার কিছুই নেই। শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলেও পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নগর প্রশাসনের ভূমিকা এখানে শূন্য। তাই ডিসিসির বিভক্তি কোনো সমাধান নয়। ডিসিসিকে ঠিক রেখে এটাকে 'মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্ট' হিসেবে উন্নীত করা উচিত ছিল। আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা ও ঢাকার সাবেক মেয়র মরহুম মোহাম্মদ হানিফ ওই মেট্রোপলিটন গভর্নমেন্ট' ধারণার পক্ষে ছিলেন। অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেয়র সাদেক হোসেন খোকাও এমনটি চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, আগামী ১০০ বছরের ঢাকাকে চিন্তা করে এখনই একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত। বুড়িগঙ্গা থেকে শীতলক্ষ্যার পাড় ঘেষে কেরানীগঞ্জ থেকে সাভার হয়ে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত আগামী দিনের জন্য একটি পরিচালিত ঢাকা মহানগরীর মাস্টার প্ল্যান তৈরিতে এখন থেকেই কাজ শুরু করা উচিত। এটা না করে ডিসিসিকে ভাগ করে ঢাকা মহানগরীকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তোলা যাবে না। প্রায় সোয়া কোটি লোক বাস করে এই ঢাকা নগরীতে। জলাবদ্ধতা, ট্রাফিক জ্যাম, হকারদের ফুটপাত দখল, বিদ্যুৎ সঙ্কট, শিশুদের খেলার মাঠের অভাব, রাস্তাঘাটের দুরবস্থা এ নিয়ে যে ঢাকা মহানগর এই মহানগরের সম্প্রসারণ প্রয়োজন। এ মুহূর্তে এটাই জরুরি। এটাই প্রায়োরিটি। সরকারের এদিকে নজর দেয়া উচিত। কিন্তু এদিকে নজর না দিয়ে সরকার যখন ডিসিসিকে ভাগ করে দুটো সিটি করপোরেশন গঠন করে এখন প্রশ্ন উঠছে বৈকি। রিট আবেদনের সময় ড. কামাল হোসেন এ প্রশ্নটিই তুলেছিলেন। তিনি সংবিধান লঙ্ঘনের যে প্রশ্নটি তুলেছিলেন আদালত তা বিবেচনায়ও নিয়েছে। সংবিধানের ৫(১) ধারায় বলা আছে, প্রজাতন্ত্রের রাজধানী হবে ঢাকা। এখন রাজধানী হবে কোনটি_ ঢাকা উত্তর, না ঢাকা দক্ষিণ। আমরা জানি না চূড়ান্ত বিচারে আদালত কী রায় দেবেন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ডিসিসির বিভক্তি নিয়ে জটিলতা আরো বাড়ল। জানুয়ারিতে সরকার ৩ বছর পার করেছে। সরকারের হাতে সময় আছে মাত্র দুই বছর। কিছু কাজ এখনো বাকি। ইতোমধ্যেই সরকারের অনেক সিদ্ধান্ত বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিরোধী দল সাতটি বিভাগীয় শহরে রোডমার্চ সম্পন্ন করেছে। বড় কর্মসূচিতে যাচ্ছে বিএনপি। এরই মধ্যে ডিসিসির বিভক্তির পরিপ্রেক্ষিতে হরতালও হয়ে গেল। আগামীতে আরো বড় কর্মসূচি দেবে বিএনপি। এতে করে সরকারের শরিকরাও আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। এইচএম এরশাদের এই বক্তব্য হতাশারই প্রতিধ্বনি। এ মুহূর্তে ডিসিসির বিভক্তির প্রয়োজন ছিল না। তবুও ডিসিসি ভাগ হয়েছে। যদিও এটাকে মেনে নেয়া ছাড়া এ মুহূর্তে কোনো বিকল্পও নেই। ২০১২ সাল আমাদের জন্য যে কোনো সুখবর বয়ে আনবে না, তা দিব্যি দিয়ে বলা যায়। দৈনিক যায় যায় দিন ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ড. তারেক শামসুর রেহমানঅধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

0 comments:

Post a Comment