রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক


ভারতের মনিপুর রাজ্যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে শুধু একটি প্রশ্নের মুখেই ঠেলে দেয়নি, বরং বাংলাদেশকে ভারত কী চোখে দেখে সেই বিষয়টিও সামনে চলে এসেছে। টিপাইমুখে বাঁধটি নির্মিত হলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল বড় ধরনের পরিবেশগত ক্ষতির সম্মুখীন হবে। নয়াদিলি্লতে গত ২২ অক্টোবর যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা আগামী ৮৭ মাসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। প্রস্তাবিত ওই বাঁধটি সম্পর্কে খোদ মনিপুরবাসীরও আপত্তি রয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভ একাধিকবার প্রকাশ হলেও, ভারতের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে টিপাইমুখে আদৌ কোনো বাঁধ নির্মিত হচ্ছে না। এমনকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিলি্ল সফরের সময়ও (জানুয়ারি ২০১০) ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছিলেন ভারত এমন কিছু করবে না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। তিনি এ কথাও বলেছিলেন ভারত যদি কিছু করে, তাহলে বাংলাদেশকে জানিয়েই করবে। এরপর মনমোহন সিং ঐতিহাসিক সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় তখন টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কেননা আমরা বিশ্বাস করেছিলাম ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কথায়। কিন্তু আজ যখন চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলো, এখন কী বলবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী?
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নতুন একটি মাত্রা পেয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ভারতকে ট্রানজিট দিয়েছি। অথচ এখন অবধি ট্রানজিটের ফি নির্ধারিত হয়নি। এমনকি ভারতের ৪২ চাকার যান চলাচলের জন্য আমাদের যে পরিবেশগত ক্ষতি হবে, তারও কোনো সমীক্ষা তৈরি হয়নি। ওই যান চলাচল করছে। এর জন্য রাস্তা তৈরি করতে হচ্ছে। ফলে বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলে কোথাও কোথাও জলাবদ্ধতারও সৃষ্টি হয়েছে। সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় যে উন্নয়ন ও সহযোগিতা সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সেখানে ট্রানজিটের কথা আছে। অথচ তিস্তার পানি আমরা পাইনি। চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়নি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে।
শুধু তিস্তার পানি বণ্টনের কথা কেন বলি, এর আগে ১৯৯৬ সালে আমরা গঙ্গার পানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলাম। কিন্তু ওই চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ পানি পাওয়ার কথা, সেই পরিমাণ পানিও আমরা এখন পাচ্ছি না। ছিটমহল বিনিময় নিয়ে যে সমঝোতা হয়েছিল, তাতেও রয়ে গেছে এক ধরনের অস্পষ্টতা। ওই সমঝোতার প্রতিবাদে ছিটমহলবাসীরা ১০ দিন চুলা না জ্বালিয়ে যে প্রতিবাদ করেছিলেন, তার সংবাদও ঢাকার পত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। তিনবিঘা করিডোর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বটে, কিন্তু তিনবিঘা আমরা পাইনি। অথচ আমরা বেরুবাড়ী দিয়েছিলাম কত আগে ১৯৭৪ সালে। ভারত সে উন্নয়ন ও সহযোগিতা চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে, তা নিয়েও কথা আছে। ওই চুক্তিতে নিরাপত্তার যে ধারাটি রয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই চুক্তিতে যে ভাষা ও বক্তব্য রয়েছে, তার মাধ্যমে অতি কৌশলে ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে ট্রানজিট আদায় করে নিয়েছে। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই যে ভারতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় আমরা আমাদের দক্ষতা দেখাতে পারিনি। ভারতের দক্ষ আমলারা কৌশলে আমাদের কাছ থেকে ট্রানজিট আদায় করে নিল। যদিও এক্ষেত্রে বাংলাদেশে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমলাদের চেয়ে দু'জন উপদেষ্টার (ড. মসিউর রহমান ও ড. গওহর রিজভী) ব্যক্তিগত ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা কাজ করেছিল বেশি। কেননা তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা তারা বাস্তবায়ন করেছেন মাত্র।
এখন যে প্রশ্নটি সামনে চলে এসেছে, তা হচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের ভূমিকা আসলে কী? ভারত কী চায়? ভারত বড় দেশ। বড় অর্থনীতি। যদিও জনগোষ্ঠীর ৩৭ ভাগ এখনো দরিদ্র সেখানে (২০১০)। ভারতের কোনো কোনো রাজ্যে দারিদ্র্য এত বেশি যে প্রায়ই সেখানে কৃষকরা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করে। তারপরও বাস্তবতা হচ্ছে আগামী ৩০ বছরে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতিতে পরিণত হবে। মাথাপিছু আয় এখন ৯৪০ ডলার (বর্তমান) থেকে বেড়ে গিয়ে দাঁড়াবে ২২ হাজার ডলারে। তখন বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত অবদান রাখবে শতকরা ১৭ ভাগ (বর্তমানে মাত্র ২ ভাগ)। এই যে ভারত, এই ভারত আমাদের উন্নয়নে বড় অবদান রাখতে পারে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের মানসিকতা নিয়ে (মমতাও এ থেকে বাদ যান না)। এই মানসিকতা বোঝানোর জন্য আমি রাশিয়ার সঙ্গে বেলারুশের সম্পর্কের বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দিতে চাই। দেশ দুটো এখন স্বাধীন। বেলারুশ সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও, ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার মধ্য দিয়ে স্বাধীন একটি দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। রাশিয়ার যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে বেলারুশে। বেলারুশ রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল। উঁৎুযনধ বা ঋৎরবহফংযরঢ় পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাশিয়া তেল সরবরাহ করে বেলারুশকে। বেলারুশ আবার এই তেলের একটি অংশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশে বিক্রি করে। এই তেল সরবরাহ নিয়ে ২০০৯ সালে দেশ দুটোর মধ্যে যে তিক্ততার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল ্তুএধং ডধৎ্থ হিসেবে। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেংকো বরাবরই রাশিয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে শঙ্কিত। ইতোমধ্যে দেশ দু'টো একটা ঈঁংঃড়স্থং টহরড়হ গঠন করেছে এবং একটি ্তুটহরড়হ ঝঃধঃব্থ চুক্তিতেও দেশ দু'টো স্বাক্ষর করেছে। রাশিয়ার নেতৃবৃন্দ মনে করেন রাশিয়ার ন্যাচারাল অধিকার রয়েছে তার পাশের দেশ বেলারুশে। রাশিয়ার নেতৃবৃন্দ এটাকে বলছেন ্তুতড়হব ড়ভ চৎরারষবমবফ ওহঃবৎবংঃ্থ। অর্থাৎ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এলাকা। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ এই তত্ত্বের প্রবক্তা। মূল কথা হচ্ছে রাশিয়ার পাশের দেশ বেলারুশে রাশিয়ার স্বার্থ রয়েছে। বেলারুশকে এই 'রাশিয়ার স্বার্থ'কে স্বীকার করে নিতে হবে। রাশিয়ার এটা স্বাভাবিক অধিকার।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ্তুতড়হব ড়ভ চৎরারষবমবফ ওহঃবৎবংঃ্থ-এর ধারণাটি আমাদের জন্য একটা দৃষ্টান্ত হতে পারে। ভারতের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে বাংলাদেশে। ভারতের সঙ্গে স্বার্থ মূলত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের 'সাতবোন' রাজ্যের উন্নয়ন। ভারতের এই ৭টি রাজ্য (অসম, ত্রিপুরা, মনিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল) মূলত মূল ভূখ- থেকে বিচ্ছিন্ন। সেখানে উন্নয়নও হচ্ছে না। দারিদ্র্যের ও অশিক্ষার হারও বেশি। এখন 'সাতবোন' রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশের অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। গুজরাল ডকট্রিন-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে 'সাতবোন' রাজ্যের উন্নয়নের কথা বলা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর গুজরাল (ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী) লন্ডনের দিরয়াল ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সে বক্তৃতা দেয়ার সময় গুজরাল তার এই মতবাদ তুলে ধরেছিলেন। ওই মতবাদে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা, চট্টগ্রাম পোর্ট ব্যবহারের কথা বলা হয়েছিল। এটা ছিল মূলত 'ইন্ডিয়া ডকট্রিন'-এর সম্প্রসারিত ও পরিবর্তিত রূপ। 'ইন্ডিয়া ডকট্রিন'-এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে ভারতের স্বার্থ নিশ্চিত করা। একইসঙ্গে তৃতীয় কোনো দেশকে এ অঞ্চলের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা। এ অঞ্চলের উন্নয়নে ভারতই ভূমিকা রাখবে। অন্য কোনো দেশ নয়- এটাই 'ইন্ডিয়া ডকট্রিন'-এর মূল কথা।
'গুজরাল ডকট্রিন'-এ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে 'সাতবোন রাজ্যের' উন্নয়নের কথা বলা হলেও, ভারত ধীরে ধীরে এই মতবাদ নিয়ে এগিয়ে গেছে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার বাংলাদেশ সফরের সময় (জানুয়ারি ১৯৯৭) এটা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে ভারত ও বাংলাদেশ ৪টি দেশ নিয়ে (ভূটান ও নেপালকে সঙ্গে নিয়ে) একটি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা গড়ে তুলবে। এই উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাকে তখন বলা হয়েছিল উন্নয়নের চতুর্ভুজ বা ঝড়ঁঃয অংরধহ এৎড়ঃিয ছঁধফৎধহমষব (ঝঅএছ)। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে কাঠমা-ুতে অনুষ্ঠিত চার দেশীয় পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে ঝঅএছ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যাবে ঝঅএছ এ সমগ্র ভারতবর্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি রাজ্যকে। দীর্ঘদিন উন্নয়নের চতুর্ভুজ নিয়ে তেমন কিছু শোনা না গেলেও, মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে এই ধারণাটি আবার সামনে চলে এসেছে। যে সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তার সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তিটি বাদে বাকিগুলো আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নয়। এর একটিতেও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হবে না। বাংলাদেশের স্বার্থ যে সব ক্ষেত্রে জড়িত ছিল (যেমন তিস্তাসহ সব নদীর পানি বণ্টন চুক্তি, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত, ৪৬টি পণ্যের পরিবর্তে ৪৮০টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার ইত্যাদি), সে সব ক্ষেত্রে একটি চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়নি। ফলে ভারত সম্পর্কে এ দেশের জনগণের এক অংশের যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে, তাতে আদৌ কোনো পরিবর্তন আসবে না। ভারতের নেতৃবৃন্দের এই কর্তৃত্ববাদী আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। জাতিসংঘ সনদের ২নং এবং ৪.১ নং ধারায় যে সমতা ও সমঅধিকারের কথা বলা হয়েছে, এর আলোকেই আমরা ভারতের সঙ্গে স্থায়ী দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু ভারত যদি একতরফাভাবেও নিজ স্বার্থকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, তাতে বিতর্কের মাত্রা বাড়বেই। ভারতের নেতৃবৃন্দের 'মাইন্ডসেটআপ'-এ পরিবর্তন আনতে হবে।
বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে 'ছোট' দেশ হতে পারে। কিন্তু প্রায় ১৬ কোটির দেশ এটি। বাংলাদেশও অনেক কিছু ভারতকে দিতে পারে। কিন্তু তথাকথিত বন্ধুত্বের নামে ভারত সব স্বার্থ আদায় করে নেবে, তা হতে পারে না। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে আরো একবার প্রমাণিত হলো ভারতের নিজেদের স্বার্থ যেখানে জড়িত, সেখানে ভারত এতটুকু ছাড় দিতে নারাজ। বাঁধ নির্মাণের সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশে এর মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সিলেটে ১ ডিসেম্বর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছে। বেগম জিয়া কঠোর ভাষায় এর নিন্দা করেছেন। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ যখন উদ্বিগ্ন, তখন ভারত সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন টিপাইমুখ বাঁধে বাংলাদেশের তেমন ক্ষতি হবে না। এই বক্তব্য বন্ধুত্বের মানসিকতার পরিপন্থী। এটাকে বন্ধুত্ব বলে না।
আমরা অবশ্যই ভারতের বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু একতরফাভাবে বন্ধুত্ব হয় না। বন্ধুত্ব হতে হবে দু'তরফা, উভয়ের স্বার্থ যেখানে জড়িত, সেই স্বার্থকে সামনে রেখেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা গেল ভারত তার স্বার্থের বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। বাংলাদেশের অগ্রাধিকার তার কাছে আদৌ কোনো গুরুত্ব পায়নি। আমরা আশা করব ভারতীয় নেতারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্ট বুঝবেন এবং টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ সংক্রান্ত যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা কার্যকর করা থেকে বিরত থাকবেন।
দৈনিক যায় যায় দিন ২৮ নভেম্বর, ২০১১। ড. তারেক শামসুর রেহমান আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক,  অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

0 comments:

Post a Comment