প্রথমে
মিয়ানমার ও পরে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা নির্ধারিত হওয়ার পর যে
প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, সমুদ্রভিত্তিক বিশাল যে
অর্থনীতি, তার কতটুকু আমরা কাজে লাগাতে পারব? কিংবা সমুদ্র অর্থনীতিকে বোঝা
ও ব্যবহারের জন্য যে জনশক্তি আমাদের দরকার, তা কি আমাদের আদৌ আছে? দ্য
হেগের সর্বশেষ রায়ের পর সবার দৃষ্টি এখন এদিকেই থাকবে। এই রায়ের পর ‘সমুদ্র
জয় হয়েছে’ বলে একটি অতি উৎসাহী ভাব আমি কারও কারও মাঝে লক্ষ্য করেছি। আসলে
সমুদ্র জয় করা যায় না। সমুদ্র হচ্ছে বিশাল। বিশাল এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।
এই অর্থনৈতিক সম্ভাবনার খুব কম অংশই আমরা আহরণ করতে পারি। সমুদ্রের বিশাল
সম্ভাবনা এখনও অনাবিষ্কৃত। আমরা সাধারণত জানি, গভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাস
পাওয়া যায়। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও মিয়ানমার গভীর সমুদ্র থেকে তেল ও
গ্যাস আহরণ করছে। কিন্তু এখানে কোবালরিচ ক্রাস্ট, পলিমেটালিক সালফাইড,
পলিমেটালিক নডিউলস ও গ্যাস হাইড্রেটের মতো মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ সাগরের
তলদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তা আহরণের প্রযুক্তি ও জনশক্তি আমাদের নেই।
তাছাড়া উপকূলজুড়েই রয়েছে জিরকন, ইলমেনাইট, ম্যাগনেটাইট, মোনজাইট ও গারনেটসহ
অনেক ধরনের খনিজ পদার্থ। ক্রুক্ড স্যান্ড ও হেভি মিনারেলস তো আছেই। ‘ব্লাক
ডায়মন্ড’ নামে পরিচিত খনিজ হচ্ছে ইলমেনাইট। বাংলাদেশে এর প্রচুর মজুদ
রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বলা ভালো, হেভি মিনারেলস ব্যবহার হয় ধাতব
শিল্প, বিমান ও রকেট শিল্প এবং রেডিও-ইলেকট্রনিকের মতো শিল্পে। আর গ্যাস
হাইড্রেট হচ্ছে এক ধরনের বলের মতো, যা থেকে মিলবে গ্যাস। নডিউলস সালফাইড
থেকে মিলবে কপার, ম্যাগনেসিয়াম, নিকেল ও কোবাল্টের মতো দুষ্প্রাপ্য ও
মূল্যবান খনিজ পদার্থ (যায়যায়দিন, ১৩ জুলাই ২০১৪)।সমুদ্রে প্রচুর মৎস্য
সম্পদ রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সাগর-মহাসাগরে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে।
তবে বঙ্গোপসাগরে কত প্রজাতির মাছ রয়েছে এর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই।
বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি গবেষণা চালানো হয়েছে বটে, কিন্তু তাতে পূর্ণাঙ্গ
চিত্র উঠে এসেছে বলে মনে হয় না। এখানেই এসে যায় মূল প্রশ্নটি। আমরা অতীতে
কখনও সমুদ্রকে গুরুত্ব দিইনি। সমুদ্রের সম্পদ যে এ অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে শুধু
বাঁচিয়ে রাখতে পারবে, তা নয়। বরং এই সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে
আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারব। সমুদ্রের ঢেউ
নিয়েও কথা থেকে যায়। পশ্চিমা বিশ্বে এটা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে,
এই ঢেউ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এই প্রযুক্তি বা জনশক্তি আমাদের
নেই- এটা আমরা স্বীকার করতেই পারি। তবে ভবিষ্যতে যে এই প্রযুক্তি এ দেশে
আসবে না, তা আমরা বলতে পারি না। পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। নতুন নতুন
প্রযুক্তি আসছে। পশ্চিমা বিশ্বেও সমুদ্র নিয়ে গবেষণা বাড়ছে। সুতরাং আমরাও
পিছিয়ে থাকতে পারি না।
আমাদের সমুদ্র সীমানা এখন আন্তর্জাতিকভাবে
স্বীকৃত। এটা নিয়ে বিতর্ক কিংবা প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়ার কোনো সুযোগ নেই।
তবে কে জয়ী হয়েছে, কে হেরে গেছে এ বিতর্ক না তোলাই মঙ্গল। এটা সত্য,
সমুদ্রসীমায় একটি বড় অংশই আমরা পেয়েছি। কিন্তু পুরোটা আমরা পাইনি। যে ৬
হাজার ১৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকায় আমরা হারিয়েছি, সেখানেই রয়েছে প্রাকৃতিক
গ্যাসের বিপুল রিজার্ভ। তালপট্টি দ্বীপ ওই ৬ হাজার ১৩৫ বর্গকিলোমিটারের
অন্তর্ভুক্ত। তবে এর আশপাশে যে অঞ্চল, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত, সেখানেও
প্রাকৃতিক গ্যাসের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের অনেকে এখন রাজশাহী
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের নাম জানেন। অধ্যাপক রহমান
একবার বলেছিলেন, ১৯৬৫ সালে জাতিসংঘের একটি সংস্থা দক্ষিণ তালপট্টি এলাকায়
বিপুল রিসোর্সের কথা উল্লেখ করেছিল। সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্যটি
সম্প্রতি উল্লেখ করেছেন। এদিকে ফার্স্ট পোস্ট নামে ভারতের একটি সংবাদ
সংস্থা জানিয়েছে, জাতিসংঘ সমুদ্রসীমা রায়ের মাধ্যমে হাড়িয়াভাঙ্গা নদী ও
দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপের মালিকানা লাভ করায় ভারত বিপুলভাবে লাভবান হয়েছে।
রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, হাড়িয়াভাঙ্গা নদী যেখানে সাগরে মিশেছে, সেখান থেকে
প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণের একটি খাঁড়িতে ভারত ২০০৬ সালে ১০০ ট্রিলিয়ন
ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পেয়েছিল। হাড়িয়াভাঙ্গার মজুদ গ্যাসের
পরিমাণ ভারতের কৃষ্ণ-গোদাবারি অববাহিকার পুরো মজুদের প্রায় দ্বিগুণ।
বাংলাদেশ
গভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য যে ২৮ ব্লকে এলাকাটিকে ভাগ
করেছিল, তার মধ্যে ২১ নং ব্লকে অন্তর্ভুক্ত ছিল দক্ষিণ তালপট্টি। ব্যক্তিগত
আলাপচারিতায় ও টিভি টকশোতে অধ্যাপক হোসেন মনসুর (চেয়ারম্যান, পেট্রোবাংলা)
জানিয়েছেন, দক্ষিণ তালপট্টি এলাকায় জ্বালানি সম্পদ আছে (তেল ও গ্যাস) এ
তথ্য তার জানা নেই। আমি জ্বালানি বিশেষজ্ঞ নই। ফলে কার বক্তব্য সত্য, এটা
নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। ভারত বঙ্গোপসাগরে ১০০ টিসিএফ গ্যাস ও ২ বিলিয়ন ব্যারেল
তেল আবিষ্কার করেছে। মিয়ানমার করেছে ৭.৭ টিসিএফ গ্যাস। ২০০৬ সালে ভারত
সরকার তাদের ২৪টি গভীর সমুদ্র ব্লক টেন্ডার প্রদানের জন্য দরপত্র আহ্বান
করে। এর মধ্যে ব্লক ডি ২৩ (৮৭০৬ বর্গকিলোমিটার) ও ব্লক ডি ২২ (৭৭৯০
বর্গকিলোমিটার) বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ১৯৯১ সালের ২১টি ব্লকের অনেক অংশজুড়ে
রয়েছে। এখন নতুন রায়ের ফলে দেখতে হবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্লকগুলোর ক’টি
এবার পুনর্বিন্যাস করতে হবে। মহিসোপান নিয়েও একটা বিভ্রান্তি আছে। এমনকি
‘ধূসর এলাকা’ নিয়েও আছে প্রশ্ন।তবে এটা বলতেই হবে, এ রায় বাংলাদেশের
জন্য বিশাল এক সম্ভাবনা সৃষ্টি করল। বাংলাদেশের সালিশি আদালতে যাওয়ার
সিদ্ধান্তটিও ছিল সঠিক ও যুক্তিসঙ্গত। চূড়ান্ত মুহূর্তে ভারত আলোচনার
প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই ১৯৭৪ সাল থেকেই আলোচনা চলে আসছিল। ফলাফল ছিল শূন্য।
উল্লেখ্য, সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য বর্তমানে বলবৎ রয়েছে 3rd United
Nations Convention on the Law of Sea (UNCLOS III)। এটি ১৯৮২ সালে গৃহীত
এবং ১৯৯৪ সালের নভেম্বর থেকে কার্যকর। ভারত ১৯৯৫ সালের ২৭ জুন ও মিয়ানমার
১৯৯৬ সালের ২১ মে UNCLOS III অনুমোদন করে। বাংলাদেশ অনুমোদন করে অনেক পরে,
২০০১ সালের ২৭ জুলাই (অনুস্বাক্ষর ১৯৮২)। নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ১০ বছরের
মধ্যে সমুদ্রসীমার দাবির পক্ষে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে হতো। বাংলাদেশ
২০১১ সালের জুলাইয়ের পর তথ্য-উপাত্ত জমা দেয়ার পরই আদালত এ সিদ্ধান্ত নিল।
এখন আদালতের এ রায় আমাদের জন্য যেমন সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করল, ঠিক তেমনি
দায়িত্বও বেড়ে গেল।সমুদ্রে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। প্রচুর তেল/গ্যাস
সম্পদের পাশাপাশি খনিজ ও মৎস্য সম্পদের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু মিঠা
পানির মাছের সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের আমিষের একটা সম্ভাবনা
হল সমুদ্রের মৎস্য সম্পদ। এ সম্পদ আহরণে আমাদের পর্যাপ্ত আধুনিক ট্রলার
নেই। ছোট ছোট নৌকা বা ছোট ট্রলারে করে মৎস্য আহরণ করা হয়। কিন্তু এগুলো
গভীর সমুদ্রে যেতে পারে না। ফলে আমাদের এলাকা থেকে মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে
থাইল্যান্ড ও ভারতীয় জেলেরা। বাংলাদেশ সরকারকে এখন উদ্যোগী হয়ে বড় বড়
ট্রলার তৈরি ও মৎস্যজীবীদের মাঝে সমবায়ের ভিত্তিতে বিতরণ করতে হবে, যাতে
তারা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারে। দক্ষ জনশক্তি আমাদের নেই। সমুদ্র
নিয়ে গবেষণা হয় কম। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের স্বার্থে কিছু গবেষণা করে।
কিন্তু তাদের সীমাবদ্ধতা আছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ
আছে। চট্টগ্রামে একটি মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে
সরকার। এসব সিদ্ধান্ত ভালো। বরিশাল ও পটুয়াখালী (যা সমুদ্র এলাকায়
অবস্থিত) বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ চালুর উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রয়োজনে নৌবাহিনী ও সমুদ্র অধিদফতর থেকে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের এসব
বিভাগে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে আইন অনুষদ
আছে, সেখানে বাধ্যতামূলকভাবে সমুদ্র আইন সংক্রান্ত একটি বিষয় চালু করতে
হবে।দীর্ঘদিন পর মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে আমাদের সমুদ্রসীমা নির্ধারিত
হল। কিন্তু কাজ অনেক বাকি। সরকারের একটি বড় উদ্যোগের প্রতি তাকিয়ে থাকবে
এখন সবাই। এখন বিজয় উৎসবের সময় নয়। এ নিয়ে কৃতিত্ব নেয়ারও কিছু নেই। আমরা
ভারতের দৃষ্টান্ত দেখে শিখতে পারি। ভারতে এটা নিয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।
লেখালেখি তেমন চোখে পড়েনি। একটা রায় হয়েছে এবং আমাদের অধিকার স্বীকৃত
হয়েছে। এখন দেখতে হবে এই ‘অধিকারকে’ আমরা কীভাবে ব্যবহার করি। আমরা দুটি
রায়ই পেলাম। রায়ের আলোকে অতি দ্রুত সীমানা নির্ধারণ করে সেখানে আমাদের
কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। এজন্য সমুদ্র অধিদফতরকে আরও শক্তিশালী
করতে হবে। একই সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের UNCLOS ডেস্ককে আরও শক্তিশালী
করাও জরুরি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরুণ কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠিয়ে এ
বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বঙ্গোপসাগর হচ্ছে ২ দশমিক ২
মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এক বিশাল এলাকা। এর মাঝে একটা সীমিত এলাকা আমাদের।
তবে এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। শুধু মৎস্য সম্পদ আহরণ করে আমরা
আমাদের আমিষের ঘাটতি মেটাতে পারি। আগামী দিনে বঙ্গোপসাগরের স্ট্রাটেজিক
গুরুত্ব বাড়বে। একদিকে চীন, অন্যদিকে ভারত এ অঞ্চলে তাদের নৌ তৎপরতা
বাড়াচ্ছে। ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্যের শতকরা ৫০ ভাগ পরিচালিত হয় এই রুট দিয়ে।
আর চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের শতকরা ৬০ ভাগ বঙ্গোপসাগরের ওপর নির্ভরশীল।
সুতরাং আগামী দিনে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব বাড়বে। এজন্য আমাদের নৌবাহিনী ও
কোস্টগার্ডকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বহিঃসমুদ্রে টহল বাড়াতে হবে।
বঙ্গোপসাগর নিয়ে গবেষণার পরিধি বাড়াতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকায় ‘বিস’ এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘বিস’ একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা
প্রতিষ্ঠান। তবে সেখানে বঙ্গোপসাগর নিয়ে কোনো কাজ হয় না। এখন হতে পারে।
সিঙ্গাপুরের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান ইনস্টিটিউটের সঙ্গেও যৌথভাবে গবেষণাকর্ম
পরিচালনা করা সম্ভব। আমরা একটা ‘রায়’ পেয়েছি বলে যদি আত্মতুষ্টিতে ভুগি,
তাহলে আমরা ভুল করব। আমাদের কাজ আরও বাড়ল। আমাদের যেতে হবে অনেক দূর।
মহিসোপানের
বিষয়টিরও সমাধান হয়নি। এটা সমাধান করবে জাতিসংঘের অপর একটি সংস্থা। ২০০
নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চল শেষ হওয়ার পরই শুরু হয় মহিসোপান। উপরের অংশ,
অর্থাৎ জলরাশি দিয়ে মহিসোপানের বিচার করা হয় না। মহিসোপানের বিচার করা হয়
পানির নিচের অংশ দিয়ে, যেখানে তেল, গ্যাসসহ প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে।
মহিসোপানে আমাদের সীমানা নির্ধারিত হলেই আমরা মহিসোপানে অর্থাৎ সাগরের নিচে
আমাদের কর্মকাণ্ড চালাতে পারব। এই মহিসোপানের সীমানা নির্ধারণের জন্য
আমাদের ন্যূনতম চার থেকে ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে। সাধারণত ৩৫০ থেকে ৪০০
নটিক্যাল মাইলকে মহিসোপানের সীমানা ধরা হয়। বাংলাদেশ ২০১১ সালে তার
মহিসোপানের দাবি জাতিসংঘে জমা দেয়। মোট ৫২টি দেশের আবেদনপত্র জাতিসংঘ
বিবেচনা করছে।এখানে একটা কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। সরকারকে এখন খুব
দ্রুত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। রায়ের পর সরকার সময় পাবে ৫ বছর।
নিয়মানুযায়ী কোনো দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পর প্রথম ৫ বছর সামুদ্রিক
সম্পদ আহরণের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সি-বেড অথরিটিকে কোনো অর্থ পরিশোধ করতে
হয় না। কিন্তু ৫ বছরের পর থেকে আহরিত মোট সামুদ্রিক সম্পদের একটা অংশ এই
কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। সমুদ্র সম্পদ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য
সমুদ্র অধিদফতরকে রেখেও একটি বৃহৎ পরিসরে পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠন করা জরুরি
হয়ে পড়েছে। নৌবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সিনিয়র কর্মকর্তাদের এই কর্তৃপক্ষের
সঙ্গে জড়িত করা প্রয়োজন। এর ফলে তাদের মেধা ও যোগ্যতাকে আমরা কাজে লাগাতে
পারব। একজন অদক্ষ আমলাকে দিয়ে এই কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করা সম্ভব হবে না।
একটা রায় পেয়েছি। এটা নিয়ে যদি আমরা বসে থাকি, আমরা অনেক বড় ভুল করব
Daily JUGANTOR
16.07.14
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment