জিএসপি-সুবিধা
ফিরে পেতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অধিকার ও নিরাপত্তায় অনেক কিছু করতে হবে।
গত ৪ জুলাই বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তরের এক
প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা বলা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে জিএসপি-সুবিধা
ফিরে পেতে বাংলাদেশের সব উদ্যোগ আপাতত ব্যর্থ হল। বাণিজ্যমন্ত্রী নিজে জুন
মাসে ওয়াশিংটনে গিয়েও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে
তাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী এ সিদ্ধান্তকে দুর্ভাগ্যজনক
হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এভাবে অসহযোগিতা
চালিয়ে যায়- তাহলে টিকফা বাস্তবায়নে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।যুক্তরাষ্ট্রে
বাংলাদেশি পণ্যের বাজার ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলারের। এর মধ্যে আমরা
শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই ০.৫ শতাংশ পণ্যে। অর্থের পরিমাণে এর পরিমাণ ২৬
মিলিয়ন ডলার। আমরা শুল্কমুক্ত সুবিধা পাই তামাক, সিরামিক, ফার্নিচার,
প্লাস্টিক, খেলনা প্রভৃতি পণ্যে। অথচ এসব সেক্টরে খুব কম পণ্যই আমরা
যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করি। আমাদের পণ্যের বড় বাজার হচ্ছে তৈরি পোশাক। এই
খাতে আমাদের রপ্তানি বেড়েছে ১২ শতাংশ হারে। শতকরা ১৫ দশমিক ৬২ ভাগ হারে
শুল্ক দিয়ে আমরা তৈরি পোশাকের বিশাল এক বাজার গড়ে তুলেছি যুক্তরাষ্ট্রে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী গেল ৫ বছরে শুধু তৈরি পোশাকশিল্পে শুল্ক দেওয়া হয়েছে ৩
মিলিয়ন ডলার। কিছুদিন আগে বাণিজ্যমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে একটা তথ্য আমাদের
দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, তুলনামূলক বিচারে অন্যান্য শিল্পোন্নত তথা
মধ্যসারির উন্নয়নশীল দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে বেশি শুল্ক
দেয়। যেমন- মার্কিন বাজরে পণ্য পাঠাতে ভিয়েতনাম শুল্ক দিচ্ছে ৮.৩৮,
ইন্দোনেশিয়া ৫.৩০, তুরস্ক ৩.৫৭, চীন ৩.০৮, ফিলিপাইন ২.৯৭, ইতালি ২.৪৯, ভারত
২.২৯, থাইল্যান্ড ১.৭৯, স্পেন ১.৭৭ শতাংশ ইত্যাদি। এখানেও একধরনের
বিভ্রান্তি রয়েছে। পোশাকশিল্পে ইন্দোনেশিয়া, চীন কিংবা ভিয়েতনাম, ভারত
আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। এসব দেশ যে পরিমাণ শুল্ক দেয়- বলা হচ্ছে তা কি শুধু
পোশাক শিল্পের জন্য, নাকি অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? সাংবাদিকরা
এ প্রশ্ন করেছিলেন ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারি
বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ডিলানিকে। তিনি বলেছেন, টিকফার আওতায় স্বল্পোন্নত
দেশ হিসেবে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে
শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ, চীন, হংকং কিংবা
ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি শুল্ক দেয়- এটা ঠিক নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের
বাংলাদেশ মতো ‘মোস্ট ফেভারড ন্যাশনস’ হিসেবে সুবিধা পায়। সমস্যাটা এখানেই।
বাংলাদেশ কি তাহলে ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে? ডিলানি কি ভুল তথ্য দিয়েছেন?
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার চুক্তির খুঁটিনাটি বড় জটিল।
এগুলো বোঝা ও ব্যাখ্যা দেওয়ার বিশেষজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়ে। যে ‘সেলটি’, সেখানে যারা কাজ করেন, তারাও দক্ষ নন। যতদূর
জানি, প্রতিটি পণ্যের আলাদা শুল্ক। এমনকী তৈরি পোশাকেও হাজারটা ‘আইটেম’
আছে। সব আইটেম বাংলাদেশ তৈরি করে না, রপ্তানিও করে না। প্রতিটি আইটেমের
শুল্ক আলাদা। এখানে আমাদের আলোচকরা সব কিছু গুলিয়ে ফেলেছেন কি না- আমার
সন্দেহ হয়! তাই মাইকেল ডিলানির বক্তব্য উল্লেখ করেই বাংলাদেশের উচিত আরএমজি
(তৈরি পোশাক) সেক্টরে অতিরিক্ত শুল্কের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা।
জিএসপি-সুবিধা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৫ সালে হংকংয়ে
অনুষ্ঠিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে ধনী দেশগুলো ৯৭ শতাংশ পণ্যে
শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার শর্ত কার্যকর করতে রাজি হয়েছিল। এতে একটা ধারণার
জন্ম হয়েছিল, অনুন্নত বিশ্ব পশ্চিমা উন্নত দেশে তাদের পণ্যের আওতা বাড়াতে
পারবে। তবে একটা প্রশ্ন ছিল পণ্যের মান ও উৎস নির্ধারণ নিয়ে। এই দুটো বিষয়
নির্ধারণের ক্ষমতা ছিল আমদানিকারক দেশগুলোর হাতে। হংকং সম্মেলনের দীর্ঘ ৮
বছর পর গত বছরের ৩-৭ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে সর্বশেষ বিশ্ববাণিজ্য
সংস্থার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় (মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠক)। বালি সম্মেলনের মধ্য
দিয়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে বটে কিন্তু ‘বালি
ঘোষণা’য় কোন পক্ষ কী পেল কিংবা বাণিজ্যবৈষম্যের শিকার অনুন্নত দেশগুলোর
জন্য বিশেষ সুবিধাগুলো বাস্তবায়ন হবে কি না, সে প্রশ্ন থেকে গিয়েছিল।
বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা গেল, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের প্রশ্নে
এ প্রশ্নগুলোই আবারও উত্থাপিত হয়েছে। আমাদের জিএসপি-সুবিধা পাওয়ার কথা।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকে কোনও জিএসপি-সুবিধা দিচ্ছে না। তারপরও
অন্যান্য পণ্যে যতটুকু সুবিধা পেত বাংলাদেশ, তাও গত জুন (২০১৩) থেকে স্থগিত
রাখা হয়েছে। জিএসপি-সুবিধা স্থগিত করার পেছনে যুক্তরাষ্ট্র মূলত ৩টি
প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল। এক. শ্রমমান, দুই. শ্রমিকনেতা আমিনুল ইসলাম
হত্যাকা-ের পূর্ণ তদন্ত ও বিচার এবং তিন. ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার। ঢাকার
টিকফার প্রথম বৈঠকেও যুক্তরাষ্ট্র আকার-ইঙ্গিতে এ প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল।
শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ ‘রুলস অব অরিমিন’-এর কঠিন শর্তে
আটকে আছে। ধনী দেশগুলো এটা তাদের স্বার্থে ব্যবহার করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে
বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৬১.৩ শতাংশ জিএসপি-সুবিধার আওতায় তৈরি পোশাকের
ক্ষেত্রে মোট রপ্তানির প্রায় ৬০ শতাংশ সুবিধা ব্যবহার করতে পারছে বাংলাদেশ।
বলা ভালো, বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৭৮ শতাংশ হচ্ছে তৈরি পোশাক। এই তৈরি
পোশাকের ৬০ শতাংশ যায় ইউরোপে আর ২৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে। তৈরি পোশাক আমাদের
আয়ের অন্যতম উৎস হলেও এ খাতের সঙ্গে জড়িত নানা ‘প্রশ্ন’-এর ব্যাপারে সঠিক
ব্যাখ্যা ও বক্তব্য বাংলাদেশ উপস্থাপন করতে পারেনি। দরকষাকষিতে আমাদের
অবস্থান অত্যন্ত দুর্বল। আমলানির্ভর আমাদের মন্ত্রণালয়ের আমলারা ‘বিদেশ
সফর’, ‘সম্মেলনে অংশগ্রহণ’ ইত্যাদিকেই প্রধান্য দেন বেশি। এখানে দক্ষ
জনশক্তির বড় অভাব। বিজেএমইএও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারেনি। তাদের গবেষণা
‘সেল’ও শক্তিশালী নয়। শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধার সঙ্গে রুলস অব
অরিজিন, ‘অ্যান্টিডাম্পিং’ ও ‘কাউন্টার ভেইলিং ব্যবস্থা’, ‘প্রেফারেন্স
ইরোসন’, শ্রমমান ইত্যাদি টেকনিশাল প্রশ্ন জড়িত। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের
অবস্থান অত্যন্ত দুর্বল। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায়ও আমরা এসব
প্রশ্নে শক্ত অবস্থানে যেতে পারিনি। গত ২৮ এপ্রিল ঢাকায় টিকফার প্রথম বৈঠক
শেষ হয়েছিল। এতে আমাদের প্রাপ্তি কী ছিল? আমাদের প্রাপ্তির খাতাটা ছিল
শূন্য। জিএসপি-সুবিধার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও ‘কমিটমেন্ট’ ছিল না।
যদিও ডিলানি তখন বলেছিলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে সমস্যা
সমাধানে করাই টিকফার লক্ষ্য। এটা একটা ‘কূটনৈতিক জবাব’। যুক্তরাষ্ট্র
বলেছে, তারা চুক্তির ১৬ অনুচ্ছেদের সবটির পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। কিন্তু যে
প্রশ্নগুলো বিভিন্ন মহলে ইতোমধ্যে উঠেছে, এর কোনও সুস্পষ্ট জবাব আমরা
পাইনি। টিকফা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের
ট্যাক্স-সুবিধা দেবে। এতে আমরা কতটুকু সুবিধা পাব? যুক্তরাষ্ট্রের
কম্পানিগুলোকে আর্থিক নিরাপত্তা দেবে বাংলাদেশ। এতে আমাদের স্বার্থ কতটুকু
অর্জিত হবে? যুক্তরাষ্ট্র টেলিকমিউনিকেশন, জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য,
যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করবে। ফলে এসব খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে যাবে। এতে কি
সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না? সেবা খাত কি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না? শিক্ষা,
স্বাস্থ্য ও জ্বালানি খাত ঝুঁকির মুখে থাকবে। শিক্ষা খাতে সরকারি বিনিয়োগ
কমবে। স্বাস্থ্য খাত বেসরকারিকরণ হবে। ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষের। শস্যবীজ,
চাল, গম ইত্যাদির নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে মার্কিন বহুজাতিক কম্পানিগুলোর হাতে।
আমরা একরকম জিম্মি হয়ে যাব মার্কিন কম্পানিগুলোর কাছে। জিএমও ফুড নিয়ে
যুক্তরাষ্ট্রে বড় বিতর্ক থাকলেও বাংলাদেশে এটি সম্প্রসারিত হবে। ফলে
স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকব আমরা। মেধাস্বত্ব আইনের দোহাই তুলে কৃষি, ওষুধ,
কম্পিউটার ইত্যাদি একতরফাভাবে মার্কিন কম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ওষুধ
শিল্প ‘বিশেষ সুবিধা’ ভোগ করলেও এই শিল্প এখন ঝুঁকির মুখে থাকবে। বিশ্বের
৮৭ দেশে আমরা সস্তায় ওষুধ সরবরাহ করি। প্যাটেন্ট ক্রয় করে বাংলাদেশ সস্তায়
ওষুধ তৈরি করে। এটা এখন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অভ্যন্তরীণ বাজারেও ওষুধের
মূল্য বেড়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে ‘কোন কম্পিউটার’ তৈরি বন্ধ হয়ে গেলে
কম্পিউটারের মূল্য অনেকগুণ বেড়ে যাবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এসব ক্ষেত্রে
বাংলাদেশের শক্ত অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এখন চুক্তি অনুযায়ী
যুক্তরাষ্ট্রের সব দাবি পূরণ করতে বাধ্য। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য আলোচনায় আমরা
জিএসপি-সুবিধা আর জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকির কারণে বিশেষ সুবিধা দাবি করেছি।
কিন্তু এটা এখন স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি-সুবিধাকে তাদের ‘রাজনৈতিক
স্বার্থে’ ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের শ্রমমান আর পশ্চিম ইউরোপের শ্রমমান যে
এক নয়, তা আমরা বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের ব্যর্থতা, আশুলিয়ার শ্রমিকনেতা
আমিনুল ইসলামের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে পারিনি। সীমিত পরিসরে ট্রেড
ইউনিয়ন করার অধিকার থাকলেও তা যে শ্রমিকদের স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছে না- এ
বিষয়টিও আমরা স্পষ্ট করতে পারিনি। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গত বছরের
জুনে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেওয়া জিএসপি-সুবিধা স্থগিত করে। এরপর এই
সুযোগ ফেরত পেতে বাংলাদেশকে করণীয় ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, এই অ্যাকশন প্ল্যানের অনেক কিছুই বাংলাদেশ বাস্তবায়ন
করেনি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের ব্যাখ্যা ভিন্ন। বাণিজ্যমন্ত্রী একাধিকবার
বলেছেন, বেঁধে দেওয়া শর্তের অনেক শর্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে কিছু শর্ত
যে বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তা স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়। যেমন- বলা যেতে পারে, ১২০টি শ্রমিক ইউনিয়নের নিবন্ধন দেওয়া,
শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া, বেসরকারি
খাতে গড়ে ওঠা ‘অ্যালায়েন্স’ ও ‘অ্যাকর্ড’কে কারখানা পরিদর্শনে সহায়তা করা
ইত্যাদি। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, গার্মেন্ট খাতে বাংলাদেশের আরও কিছু
করা উচিত ছিল। শ্রম আইন সংস্কারে তেমন অগ্রগতি নেই। উপরন্তু বিজেএমইএ
সভাপতি অতিসম্প্রতি শ্রমিকনেতাদের দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করায় তা
মার্কিন প্রশাসনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। উল্লেখ্য, বিজিএমইএ সভাপতি
আতিকুল ইসলাম সম্প্রতি শ্রমিকনেতা নজরুল ইসলাম খান ও রায় রমেলা চন্দের
নেতৃত্বাধীন গ্রুপ ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল’ নেতাদের দেশদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত
করেছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেরি হার্ফ এর তীব্র
প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এখন বাণিজ্যমন্ত্রী যে প্রতিক্রিয়া জানালেন, তা
কতটুকু সঠিক হয়েছে- সে প্রশ্নও উঠতে পারে। টিকফা চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে
জিএসপি-সুবিধার বিষয়টি তিনি এক করে দেখেছেন। স্পষ্ট করেই বলেছেন, এতে টিকফা
বাস্তবায়নে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। গত বছর বাংলাদেশ টিকফা চুক্তি
স্বাক্ষর করেছিল। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই প্রত্যাশা করেছিল, দেশটিকে
জিএসপি-সুবিধা দেওয়া হবে এবং বাংলাদেশি গার্মেন্টের শুল্কমুক্ত
প্রবেশাধিকারের একটা সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু সেটি হল না। এর মধ্য দিয়ে
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এখন।
Daily Amader Somoy
06.07.14
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment