আইসিসি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গণহত্যার
দায়ে শীর্ষস্থানীয় মিয়ানমারের জেনারেলদের বিচারের পক্ষে অভিমত দিয়েছে।
কিন্তু মিয়ানমার সরকার যেভাবে এর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাতে করে একটা
প্রশ্ন উঠেছে যে আদৌ কী রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের
বিচার করা যাবে? মিয়ানমারের রাখাইনে গেল ২৫ আগস্ট (২০১৭) ব্যাপক সহিংস ঘটনা
ঘটে, যার ফলে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
গত এক বছরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশ সফর করেছেন। তারা
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নারীদের মুখ থেকে ধর্ষণ, হত্যাকাণ্ডের খবর
জেনেছেন। মিয়ানমার সফর করা আন্তর্জাতিক রেডক্রসের প্রধানও প্রত্যক্ষদর্শী
হয়ে আছেন রাখাইনে গণহত্যার।
ফলে রাখাইনে যে গণহত্যা হয়েছে, তা এখন প্রমাণিত। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিও রাখাইনে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান এই কমিটির নেতৃত্ব দেন। গত ২৬ আগস্ট (২০১৮) তিনি জেনেভায় তার প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইংসহ আরও ৫ জন জেনারেলকে অভিযুক্ত করেন। এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার-১ আদালত তাদের রায়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বকভাবে বহিঃষ্কার করে বাংলাদেশে পাঠানোসহ অন্যান্য অভিযোগ আইসিসি তদন্ত করতে পারবে। কিন্তু মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টদপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছে এ ধরনের বিচার করার অধিকার আইসিসির নেই। ফলে প্রশ্নটা থাকলই, আদৌ কী এই গণহত্যার বিচার হবে?
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) যে সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে তা প্রতিটি
মিয়ানমারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রোম স্ট্যাটিটিউটের ৫ নং ধারায় ‘অপরাধের’
কথা বলা হয়েছে। এই অপরাধগুলো পরে আবার ৬, ৭ ও ৮ নং ধারায় বিস্তারিত উল্লেখ
করা হয়েছে। যেমন ৬ নং ধারায় বলা হয়েছে ‘জেনোসাইড’ বা জাতিগত গণহত্যার কথা। ৭
নং ধারায় বলা হয়েছে ‘ক্রাইম এগেইনিস্ট হিউমিনিটি’ বা মানবতার বিরুদ্ধে
অপরাধ। ৮ নং ধারায় বলা হয়েছে ‘ওয়ার ক্রাইম’ ও ‘ত্রুাইম অব এগ্রেসান’ এর
কথা। অর্থ্যাৎ যুদ্ধাপরাধ ও আগ্রাসন সংত্রুান্ত অপরাধ। আইসিসির
প্রসিকিউটাররা যদি মনে করেন ৬, ৭ ও ৮ নং ধারাবলে কোনো একটি দেশে, কোনো একটি
বিশেষ শ্রেণি ‘অপরাধ’ সংগঠন করেছেন, তাহলে তাদের শাস্তির আওতায় এনে বিচার
করতে হবে। সার্বিয়ার যুদ্ধবাজ নেতা রাদোভান কারাদজিক, লাইবেরিয়ার সাবেক
প্রেসিডেন্ট চার্লস টেইলর, সূদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশীর কেনিয়ার
প্রেসিডেন্ট উহুরু কেজিয়াত্তা (অভিযোগ পরে প্রত্যাহার) সবার বিচার হয়েছিল
উপড়ে উল্লেখিত ধারা বলে।
৬ নং ধারায় জেনোসাইড বা গণহত্যার ক্ষেত্রে ৫টি সুনির্দিষ্ট ‘অপরাধ’ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে একটি বিশেষ শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে হত্যা, তাদের মানসিক কষ্ট দেওয়া, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই জনগোষ্ঠীর লোকদের উচ্ছেদ, পরিকল্পিতভাবে এই জনগোষ্ঠীর জন্মহার নিয়ন্ত্রণ, শিশুদের অন্যত্র স্থানান্তর ইত্যাদি। ৭ নং ধারায় ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ এ যেসব ‘অপরাধ’ ও অপরাধের ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। তা হচ্ছে খুন, পরিপূর্ণভাবে ধংস করা বা বিনাশ সাধন, দাসত্ব, জোরপূর্বক বিতড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ,যৌন দাসত্ব, বর্ণবাদনীতি ইত্যাদি। যুদ্ধ অপরাধ (৮নং) ধারায় যে সব অপরাধের কথাবলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে অত্যাচার,অমানবিক আচরণ, বিচার অস্বীকার করা, আইন বহির্ভূতভাবে বিতাড়ন, সম্পত্তি ধ্বংস করা ইত্যাদি।
আজ রাখাইনের পরিস্থিতির দিকে যদি তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এসব ধারা বলে অপরাধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে সেব্রেনিকসায় (ইউরোপ) অপরাধের জন্য (১৯৯৫) যদি সার্বিয়া যুদ্ধবাজদের বিচার করা যেতে পারে, তাহলে মিয়ানমারের যুদ্ধবাজ নেতাদের বিচার নয় কেন? আইসিসির গ্রহণযোগ্যতার অবশ্যই গণহত্যার বিচার বাঞ্ছনীয়। মিয়ানমার রোম স্ট্যাটিটিউটে সাক্ষর করেনি। কিন্তু তাতে করে অপরাধীদের বিচারে কোনো বাঁধা নেই। কোনো স্ট্যাটিটিউটে (১৯৯৮) অনুযায়ী আইসিসি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠিত হয় এবং বিভিন্ন স্থানে যেসব অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে (২০০২)সালে। সুদান ও রোম স্ট্যাটিটিউট সাক্ষর করেনি। কিন্তু দারফুরে গণহত্যার জন্য সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশীর অভিযুক্ত হয়েছিল এবং তার বিচারও হয়েছিল। আইনের দৃষ্টিতে তিনি এখন পলাতক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কাজ করছে। যদি আইসিসির কর্মকান্ডের দিকে তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে সেখানে এখনো যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তরা হেগের (ডিটেনশন) সেন্টারে বিচারের অপেক্ষায় আছেন। সুতরাং আইসিসি রাখাইন গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের যে কথা বলা হয়েছে ,এ লক্ষেই এখন আইসিসিতে কাজ করতে হবে। মিয়ানমারের উপর আন্তজাতিক ‘চাপ’বাড়াতে হবে। অলিখিত সরকার প্রধান হিসেবে সুচিও তার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। প্রয়োজনে তাকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশকেও এখন এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ মতবিনিময় করতে পারে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের কাউকে কাউকে সম্ভাব্য একটি নিষেধাজ্ঞা (মিয়ানমারের বিরুদ্ধে) চেয়ে কংগ্রেস একটি বিল উত্থাপন বিষয়টি নিয়ে কথা-বার্তা বলতে শুনেছি। বিষয়টি বাংলাদেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে পারে। ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ দূতাবাস সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস মতবিনিময় করতে পারে। এজন্য ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্ক এ বাংলাদেশ দূতাবাসকে আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ইমপার্শিয়াল অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট মেকানিজম বা আইআইআইএম এর বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে পারে। ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ আইআইআইএম সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এর আওতায় যেকোনো ফৌজদারি অপরাধের ভবিষ্যত বিচারের জন্য তথ্য প্রমাণ সংগ্রহও সংরক্ষণ করা।
মূলত ২০১১ সালের পর থেকে সিরিয়ায় যেসব অপরাধ সংগঠিত হয়েছে,সেইসব অপরাধকে বিবেচনায় নিয়েই আইআইআইএম গঠন করা হয়েছিল। যদিও এটি কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সংগঠনটির চেয়ারপারসন হচ্ছেন ফ্রান্সের একজন সাবেক বিচারপতি মিস মার্চিউল।
ইরাকে ইসলামিক স্টেট কিংবা আল কায়দা যেসব অপরাধ সংগঠিত করেছে,সে ব্যাপারে তিনি অনুসন্ধান করেছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেছেন,যাতে ভবিষ্যতে আই এস তথা আল কায়দার নেতাদেরকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো যায়। এখন যেহেতু জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দল রাখাইনে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে মতামত দিয়েছে,সেহেতু রোহিঙ্গা প্রশ্নে আইআইএমকে এখন সক্রিয় করা যায়। জাতিসংঘের সদর দফতরে আইআইআইএম কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ মতবিনিময় করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রশ্নে বিশ্ব সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশে আইসিসির সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিল সেখানে যুদ্ধপরাধীদের আনা কত জরুরি। বাংলাদেশের উচিত হবে এ লক্ষ্যে কাজ করা, পররাষ্ট্রনীতির সফলতা সেখানেই নিহিত।
Daily Amader Somoy.com
10.9.2018
ফলে রাখাইনে যে গণহত্যা হয়েছে, তা এখন প্রমাণিত। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটিও রাখাইনে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল মারজুকি দারুসমান এই কমিটির নেতৃত্ব দেন। গত ২৬ আগস্ট (২০১৮) তিনি জেনেভায় তার প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি গণহত্যার জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইংসহ আরও ৫ জন জেনারেলকে অভিযুক্ত করেন। এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার-১ আদালত তাদের রায়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বকভাবে বহিঃষ্কার করে বাংলাদেশে পাঠানোসহ অন্যান্য অভিযোগ আইসিসি তদন্ত করতে পারবে। কিন্তু মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টদপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছে এ ধরনের বিচার করার অধিকার আইসিসির নেই। ফলে প্রশ্নটা থাকলই, আদৌ কী এই গণহত্যার বিচার হবে?
৬ নং ধারায় জেনোসাইড বা গণহত্যার ক্ষেত্রে ৫টি সুনির্দিষ্ট ‘অপরাধ’ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে একটি বিশেষ শ্রেণির জনগোষ্ঠীকে হত্যা, তাদের মানসিক কষ্ট দেওয়া, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই জনগোষ্ঠীর লোকদের উচ্ছেদ, পরিকল্পিতভাবে এই জনগোষ্ঠীর জন্মহার নিয়ন্ত্রণ, শিশুদের অন্যত্র স্থানান্তর ইত্যাদি। ৭ নং ধারায় ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ এ যেসব ‘অপরাধ’ ও অপরাধের ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। তা হচ্ছে খুন, পরিপূর্ণভাবে ধংস করা বা বিনাশ সাধন, দাসত্ব, জোরপূর্বক বিতড়ন, অত্যাচার, ধর্ষণ,যৌন দাসত্ব, বর্ণবাদনীতি ইত্যাদি। যুদ্ধ অপরাধ (৮নং) ধারায় যে সব অপরাধের কথাবলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে সুপরিকল্পিতভাবে অত্যাচার,অমানবিক আচরণ, বিচার অস্বীকার করা, আইন বহির্ভূতভাবে বিতাড়ন, সম্পত্তি ধ্বংস করা ইত্যাদি।
আজ রাখাইনের পরিস্থিতির দিকে যদি তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এসব ধারা বলে অপরাধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে সেব্রেনিকসায় (ইউরোপ) অপরাধের জন্য (১৯৯৫) যদি সার্বিয়া যুদ্ধবাজদের বিচার করা যেতে পারে, তাহলে মিয়ানমারের যুদ্ধবাজ নেতাদের বিচার নয় কেন? আইসিসির গ্রহণযোগ্যতার অবশ্যই গণহত্যার বিচার বাঞ্ছনীয়। মিয়ানমার রোম স্ট্যাটিটিউটে সাক্ষর করেনি। কিন্তু তাতে করে অপরাধীদের বিচারে কোনো বাঁধা নেই। কোনো স্ট্যাটিটিউটে (১৯৯৮) অনুযায়ী আইসিসি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গঠিত হয় এবং বিভিন্ন স্থানে যেসব অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে (২০০২)সালে। সুদান ও রোম স্ট্যাটিটিউট সাক্ষর করেনি। কিন্তু দারফুরে গণহত্যার জন্য সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশীর অভিযুক্ত হয়েছিল এবং তার বিচারও হয়েছিল। আইনের দৃষ্টিতে তিনি এখন পলাতক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, সেখানে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কাজ করছে। যদি আইসিসির কর্মকান্ডের দিকে তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে সেখানে এখনো যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তরা হেগের (ডিটেনশন) সেন্টারে বিচারের অপেক্ষায় আছেন। সুতরাং আইসিসি রাখাইন গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের যে কথা বলা হয়েছে ,এ লক্ষেই এখন আইসিসিতে কাজ করতে হবে। মিয়ানমারের উপর আন্তজাতিক ‘চাপ’বাড়াতে হবে। অলিখিত সরকার প্রধান হিসেবে সুচিও তার দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। প্রয়োজনে তাকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশকেও এখন এগিয়ে আসতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ মতবিনিময় করতে পারে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের কাউকে কাউকে সম্ভাব্য একটি নিষেধাজ্ঞা (মিয়ানমারের বিরুদ্ধে) চেয়ে কংগ্রেস একটি বিল উত্থাপন বিষয়টি নিয়ে কথা-বার্তা বলতে শুনেছি। বিষয়টি বাংলাদেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে পারে। ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ দূতাবাস সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ দূতাবাস মতবিনিময় করতে পারে। এজন্য ওয়াশিংটন ও নিউইয়র্ক এ বাংলাদেশ দূতাবাসকে আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ইমপার্শিয়াল অ্যান্ড ইনডিপেনডেন্ট মেকানিজম বা আইআইআইএম এর বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে পারে। ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতিসংঘ আইআইআইএম সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।এর উদ্দেশ্য হচ্ছে এর আওতায় যেকোনো ফৌজদারি অপরাধের ভবিষ্যত বিচারের জন্য তথ্য প্রমাণ সংগ্রহও সংরক্ষণ করা।
মূলত ২০১১ সালের পর থেকে সিরিয়ায় যেসব অপরাধ সংগঠিত হয়েছে,সেইসব অপরাধকে বিবেচনায় নিয়েই আইআইআইএম গঠন করা হয়েছিল। যদিও এটি কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সংগঠনটির চেয়ারপারসন হচ্ছেন ফ্রান্সের একজন সাবেক বিচারপতি মিস মার্চিউল।
ইরাকে ইসলামিক স্টেট কিংবা আল কায়দা যেসব অপরাধ সংগঠিত করেছে,সে ব্যাপারে তিনি অনুসন্ধান করেছেন এবং তথ্য সংগ্রহ করেছেন,যাতে ভবিষ্যতে আই এস তথা আল কায়দার নেতাদেরকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো যায়। এখন যেহেতু জাতিসংঘের অনুসন্ধানী দল রাখাইনে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে বলে মতামত দিয়েছে,সেহেতু রোহিঙ্গা প্রশ্নে আইআইএমকে এখন সক্রিয় করা যায়। জাতিসংঘের সদর দফতরে আইআইআইএম কর্মকর্তাদের সাথে বাংলাদেশ মতবিনিময় করতে হবে। রোহিঙ্গা প্রশ্নে বিশ্ব সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশে আইসিসির সিদ্ধান্ত দেখিয়ে দিল সেখানে যুদ্ধপরাধীদের আনা কত জরুরি। বাংলাদেশের উচিত হবে এ লক্ষ্যে কাজ করা, পররাষ্ট্রনীতির সফলতা সেখানেই নিহিত।
Daily Amader Somoy.com
10.9.2018
0 comments:
Post a Comment