রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ইসলাম গণতন্ত্র ও আরব বিশ্বের রাজনীতি



অনেক নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে ড. মোহাম্মদ মুরসি মিসরের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন। প্রথম দফা নির্বাচনে তিনি শতকরা ৫০ ভাগ ভোট নিশ্চিত করতে পারেননি। ফলে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়।দ্বিতীয় দফায় তিনি ভোট পান ৫২ শতাংশ, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শফিক পান ৪৮ শতাংশ। কিন্তু তারপরও তাঁকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার ব্যাপারে পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্র চলে। কেননা অত্যধিক ক্ষমতাসম্পন্ন সর্বোচ্চ সেনা পরিষদ মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির এই নেতার বিজয়কে সহজভাবে মেনে নিতে পারছিল না। অনেকেরই মনে থাকার কথা, প্রথমে দলটির প্রার্থী ছিলেন সাইরাত এল সাতের। কিন্তু তাকে ষড়যন্ত্র করে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ড. মুরসিকে প্রার্থী করা হয়। মুরসির বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পরও তা ঘোষণা করা হচ্ছিল না। এমনি এক পরিস্থিতিতে  তাহরির স্কয়ারে মানুষ আবার সমবেত হতে শুরু করে। ফলে সামরিক জান্তা এক সময় বাধ্য হয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে। এর মধ্য দিয়ে মিসর এক নতুন যুগে প্রবেশ করলো।
আরব বিশ্বের পরিবর্তনটা প্রথম শুরু হয়েছিল তিউনিসিয়ায়। সেখানে ২৩ বছরের শাসক জয়নুল আবেদিন বিন আলীর পতনের পর প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, তাতে বিজয়ী হয়েছে ইসলামপন্থী হিসেবে পরিচিত এন্নাহদা পার্টি। ২১৭ আসনের সংসদে তারা পেয়েছে ৮৯টি আসন। এই ইসলামপন্থী দলটি ধর্মনিরপেক্ষ একটি দলের সাথে মিলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করেছে ইতোমধ্যে। নির্বাচনে বিজয়ী তিনটি দলের মাঝে সেখানে যে সমঝোতা হয়েছে, তাতে এন্নাহদার নেতা হামদি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস ফর দি রিপাবলিক পার্টির মুনসেফ মারজুকি প্রেসিডেন্ট আর এত্তাকাতুল দলের মুস্তাফা বিন জাফর হয়েছেন স্পিকার। ঠিক এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে মরক্কোয়। সেখানে অতি সম্প্রতি যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, তাতে ইসলামপন্থী দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বিজয়ী হয়েছে। যদিও দলটি এককভাবে বিজয়ী হতে পারেনি। অনেকটা তিউনিসিয়ার মতই একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম হতে যাচ্ছে মরক্কোতে। তিউনিসিয়ায় যেমনি ইসলামপন্থী ও ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা একটি প্লাটফর্মে একত্র হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছিলেন, ঠিক তেমনটি হয়েছে এখন মরক্কোতে। এখানে ইসলামপন্থীরা এককভাবে বিজয়ী হয়েছে সত্য (৩৯৫ আসনের ১২০টিতে বিজয়ী), কিন্তু জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির ঐক্য করতে হয়েছে ইন্ডিপেন্ডেন্স পার্টি ও সোশ্যালিস্ট ইউনিয়ন অফ পপুলার ফোর্সের সাথে। জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি নেতা আবদেলইয়া বারকিরানে হয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এটাই হচ্ছে বাস্তববাদী নীতি।
মিসরে ড. মুরসির বিজয় প্রমাণ করলো ইসলামপন্থীদের ভিত সেখানে কত শক্তিশালী। অথচ এই শক্তিকে সেখানে দমিয়ে রাখা হয়েছিল। ১৯২৮ সালে গঠিত হয়েছে মুসলিম ব্রাদারহুড, যে সংগঠনটির প্রতিনিধি হয়ে সাধারণ মানুষের ভোটে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন ড. মুরসি। এর আগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া সংসদ নির্বাচনেও ইসলামপন্থীরা বিজয়ী হয়েছিলেন, যদিও সেই নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছে সর্বোচ্চ সেনা পরিষদ। ওই নির্বাচনে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টি ৪৩ দশমিক ৪ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিল (মোট আসন ৪৯৮-এর মাঝে ২১৬)। অপর একটি ইসলামিক দল আল নূর পেয়েছিল ২১ দশমিক ৪ ভাগ ভোট (আসন ১০৯)। অথচ ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা পরাজিত হয়েছিল। ইজিপসিয়ান ব্লক (৬.৮ ভাগ ভোট), সোস্যাল ডোমাক্র্যাটিক পার্টি (৩.২ ভাগ), ফ্রি ইজিপসিয়ান পার্টির (৩ ভাগ) মতো ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। যদিও ইসলামপন্থীরা দু’টি ব্লকে (ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির নেতৃত্বে ডেমোক্র্যাটিক এ্যালায়েন্স ও আল নূর পার্টির নেতৃত্বে ইসলামিক এ্যালায়েন্স) ভাগ হয়ে গিয়েছিল। তারপরও ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির উত্থানকে ঠেকানো যায়নি। ধারণা করছি আগামীতে সংসদের যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তাতে ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টি তাদের একক প্রাধান্য বজায় রাখতে পারবে। আরব বসন্ত-পরবর্তী আরব বিশ্বের রাজনীতিতে ইসলামপন্থীদের উত্থান নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য  ঘটনা। এই ঘটনা সমগ্র আরব বিশ্বের চলমান রাজনীতিতে যে প্রভাব যোগাবে,  তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।
মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুড তথা ফ্রিডম এন্ড জাস্টিস পার্টির বিজয় পশ্চিমা বিশ্ব ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখলেও ব্রাদারহুডের রাজনৈতিক মনোভাব সম্পর্কে অনেকেই অবগত আছেন। ড. মুরসি জাতীয় ঐকমত্যের কথা বলেছেন বটে, কিন্তু একটি ইসলামিক শাসনতন্ত্র প্রণয়নের ব্যাপারে তিনি কতটুকু উদ্যোগী হন, সেটাই হচ্ছে দেখার বিষয়। হোসনি মুবারকের উৎখাতের প্রাক্কালে ফেব্রুয়ারিতে (২০১১) মুসলিম ব্রাদারহুডের গাইডিং কাউন্সিলের সদস্য এচ্ছামএল এর সিয়ানের একটি প্রবন্ধ নিউইয়র্ক টাইমসে ছাপা হয়েছিল (৯ ফেব্রুয়ারি)। সেখানে তিনি স্পষ্ট করেই বলেছিলেন যে, গণতন্ত্রে ইসলামিক মূল্যবোধকে স্বীকার করে না, সেই গণতন্ত্র মিসরবাসী গ্রহণ করে নেবে না। তিনি লিখেছিলেন, ইসলামিক দুনিয়ায় ইসলাম ধর্মের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং যে গণতন্ত্রে ধর্মের ভূমিকা স্বীকৃত এবং জনগণের অধিকার ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দেয়, সেই গণতন্ত্রই মিসরে বিকশিত হবে। অর্থাৎ  তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, ইসলামিক ভাবধারায় গড়ে উঠবে একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। আর মুসলিম ব্রাদারহুড তেমনি একটি গণতান্ত্রিক সমাজই চায়। এচ্ছামএল এরসিয়ান একই সাথে আমাদের এ কথাটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে, পশ্চিমা গণতন্ত্র মিসরের জন্য উপযুক্ত নয়। এখানে স্পষ্টতই একটি ইঙ্গিত ছিল যে, পরিপূর্ণভাবে পশ্চিমা ধারার গণতন্ত্র মিসর গ্রহণ করবে না। এখানে সংবিধান তথা দৈনন্দিন কাজে ইসলামিক মূল্যবোধের প্রাধান্য থাকবেই। এ ক্ষেত্রে ড. মুরসিকে কিছুটা উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে মিসরের সেনাবাহিনী অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা কোনো অবস্থাতেই মিসরকে একটি ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত হতে দেবে না। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে আরব বিশ্বের সর্বত্র ইসলামপন্থীরা যথেষ্ট শক্তিশালী। মরক্কোতে সর্বশেষ নির্বাচনে বিজয়ী ইসলামিক দল জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি এক সময় অত্যন্ত কট্টর ছিল। ২০১০ সালে দলটি মরক্কোর রাজধানীতে বিখ্যাত গায়ক এলটন জনের একটি কনসার্টের বিরোধিতা করেছিল। এলটন জন সমকামী। দলটি সমকামিতা ও প্রকাশ্যে মদ্যপানের বিরোধী। তারা কনসার্টের বিরোধিতা করেছিল এ কারণে। অথচ মরক্কোর বৈদেশিক অর্থের একটা বড় উৎস ট্যুরিজম ও বৈদেশিক বিনিয়োগ। এটা বিবেচনা করেই দলটি তখন আর এসব বিষয়ে কথা বলেনি। সর্বশেষ নির্বাচনে তারা গুরুত্ব দিয়েছে দারিদ্র্র্যদূরীকরণ ও তরুণদের চাকরির নিশ্চয়তা সম্পর্কিত সামাজিক  বিষয়াদি। দলটি এখন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, সুশাসন ও গণতন্ত্রের কথা বলছে। এটাই হচ্ছে বাস্তববাদী মনোভাব।
বদলে যাচ্ছে আরব বিশ্ব। সনাতন ইসলামিক দলগুলো তাদের রাজনৈতিক অবস্থানেও পরিবর্তন এনেছে। আল-কায়েদার মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরোধিতা করছে। সবচেয়ে বড় কথা ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সাথে যে সহাবস্থান সম্ভব, তা প্রমাণ করেছে তিউনিসিয়া ও মরক্কোর ইসলামিক দলগুলো। দীর্ঘ দিন একনায়কতান্ত্রিক যে সমাজব্যবস্থার জন্ম হয়েছিল আরব বিশ্বে, তাতে এখন পরিবর্তন আসছে। একটি আধুনিকমনস্ক গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সেখানে জন্ম হতে যাচ্ছে, যেখানে ধর্ম একটি অংশ, কিন্তু কট্টরপন্থী ইসলামিক চিন্তাধারা আদৌ কোনো প্রভাব বিস্তার করছে না। গত ষাট বছরের আরব বিশ্বের রাজনীতিতে এটা চতুর্থ ধারা। ১৯৫২ সালে মিসরে রাজতন্ত্র উৎখাত ও জামাল আবদুল নাসেরের উত্থানের মধ্যে দিয়ে আরব জাতীয়তাবাদী রাজনীতির যে ধারা সূচিত হয়েছিল, তা ২০১১ সালে এসে নতুন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। মাঝখানে ১৯৬৭ সালে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধে পরাজয় ও ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামিক বিপ্লবে নতুন দু’টি ধারার জন্ম দিলেও, তা স্থায়ী হয়নি। এখন মডারেট ইসলামিক শক্তির উত্থান চতুর্থ ধারার জন্ম দিলো। এই ধারা কত দিন স্থায়ী হয়, সেটাই দেখার বিষয়। তবে ড. মুরসির উত্থানের মধ্য দিয়ে একটি প্রশ্ন উঠেছে, তাহরির স্কয়ারের বিপ্লব কি ব্যর্থ হবে? ইতিহাসে এর প্রমাণ যে নেই, তা নয়। ১৭৮৯ সালে ফ্রান্সে বিপ্লবের প্রথম দিকে ভার্সাই দুর্গের পতনের মধ্য দিয়ে বিপ্লবের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিল। কিন্তু ৪ বছরের মধ্যে জ্যাকোবিনদের উত্থানে সেখানে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। এর মধ্য দিয়েই নেপোলিয়নের একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় বিপ্লবের প্রথম পর্বে কেরোনস্ক্রিফে ক্ষমতায় বসালেও তিনি থাকতে পারেননি। নভেম্বরে কট্টরপন্থী বলশেভিকরা ক্ষমতা দখল করেছিল। ১৯৫২ সালে মিসরে রাজতন্ত্র উৎখাত হয়ে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
জনগণ ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামপন্থীদের ক্ষমতায় বসায়। পাশ্চাত্যের বিভিন্নমুখী বিরোধিতার মুখেও ইসলামপন্থীরা গত চার দশক ধরে ক্ষমতায় আছে।
আমি মিসর নিয়ে আশাবাদী একটি কারণে, তা হচ্ছে ড. মুরসির ভূমিকা। ইসলাম মানেই যে কট্টরপন্থী এ মনোভাব তিনি ভেঙে দিয়েছেন। ইসলামিক রাজনীতি নিয়েও যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায়, তা তিনি প্রমাণ করেছেন। সাধারণ মানুষ তাঁকে ভোট দিয়েছে। আসলেই আরব বিশ্বে ইসলামের একটা জোয়ার এসেছে। ইসলাম ধর্ম তাদের জীবনের একটা অংশ। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের চর্চা করেও যে একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি উপহার দেয়া যায়, মিসর তার সর্বশেষ উদাহরণ। আরব বিশ্বের অন্তর্ভুক্ত না হয়েও তুরস্ক ইসলাম আর গণতন্ত্রের সমন্বয়ে নতুন এক রাজনীতি সে দেশে উপহার দিয়েছে। আজ মিসরও সম্ভবত তুরস্কের মডেল অনুসরণ করতে যাচ্ছে। ইসলামিক মূল্যবোধকে স্বীকার করে নিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চার যে রাজনীতি, এটি একটি ‘মডেল’ হয়ে উঠছে আরব বিশ্বের রাজনীতিতে। খ্রিস্টীয় মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে যে গণতন্ত্র পশ্চিমা বিশ্বে বিকশিত হয়েছে, সেই গণতন্ত্র আরব বিশ্বে গ্রহণযোগ্য হবে না। আরব বিশ্বের জন্য যে গণতন্ত্র, সেখানে থাকতে হবে ধর্মীয় মূল্যবোধ, থাকতে হবে ইসলামিক ঐতিহ্যের প্রকাশ। এই যে রাজনীতি, এই রাজনীতিই হচ্ছে ‘আরব বসন্ত’- পরবর্তী আরব বিশ্বের রাজনীতির মূল ধারা। এই মূল ধারার বাইরে যারা গেছে, তারাই ছিটকে পড়েছে। সর্বশেষ মিসরে ড. মুরসির বিজয় প্রমাণ করলোÑ ‘ইসলামিক গণতন্ত্র’ ছাড়া  আরব বিশ্বের কোনো বিকল্প নেই।

0 comments:

Post a Comment