বিশ্বব্যাপী ন্যাটোর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের আশংকা করছেন অনেকে। সম্প্রতি ন্যাটোর একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ক্রোয়েশিয়ায়। ইউরোপের ৩১টি দেশের মধ্যে এ মুহূর্তে ন্যাটোর সদস্য ২৫টি। মজার কথা, ক্রোয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল ৫৫টি দেশ। এ সম্মেলনটিকে তারা নামকরণ করেছে Strategic Military Partnership Conference। যারা সরাসরি ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্র নয়, তারাও এ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল। ন্যাটোর সঙ্গে কাজ করতে পারে এমন দেশগুলোকে ন্যাটোর নীতিনির্ধারকেরা চার ভাগে ভাগ করেছেনÑ যারা ন্যাটোর সদস্য নয়, তবে ন্যাটোর সহযোগী। যেমন, ইউরোপের ১২টি দেশকে নিয়ে গঠিত হয়েছে The Partnership for Peace। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলভুক্ত আলজেরিয়া, তিউনিসিয়ার মতো দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত হয়েছে Mediterranean Dialogue Members। সৌদি আরব কিংবা ওমানের মতো দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত হয়েছে Istanbul Cooperation Initiative। অস্ট্রেলিয়া কিংবা জাপানের মতো দেশগুলোকেও ন্যাটো partners Across the Globe-এর ব্যানারে একত্রিত করেছে। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানও এ ব্যানারে রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে ন্যাটোর কোন কর্মকাণ্ড নেই। এখন এল সালভাদর ও কলম্বিয়ার মতো দেশও ন্যাটোর সঙ্গে জড়িত হতে যাচ্ছে। মজার ব্যাপার, ইউরোপে ন্যাটোর কমান্ডার অ্যাডমিরাল স্টাভরিডিস সম্প্রতি বলেছেন, তারা ভারত ও ব্রাজিলের মতো দেশকে নিয়ে ভাবছেন এবং আশা করছেন এ দেশ দুটো Partners Across the Globe-এর ব্যানারে আগামীতে ন্যাটোর কর্মকাণ্ডে শরিক হবে।
২০১০ সালে ন্যাটো লিসবন সম্মেলনে তার Strategic concept গ্রহণ করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রোয়েশিয়ায় সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়ে গেল, একুশ শতকে ন্যাটো নতুন এক কৌশলগত ধারণা নিয়ে উপস্থিত হচ্ছে। ন্যাটোর এ ভূমিকা অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিশ্বকে কর্তৃত্ব করার প্রবণতা নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের জন্ম দিতে পারে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে দুই পরাশক্তির প্রভাব বলয়কে কেন্দ্র করে জš§ হয়েছিল øায়ুযুদ্ধের। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে সেই øায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটেছিল। আশির দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ওয়ারশ সামরিক জোট ভেঙে দেয়া হলেও ন্যাটো জোট ভেঙে দেয়া হয়নি; বরং এর সম্প্রসারণ ঘটেছিল। øায়ুযুদ্ধ চলাকালীন ন্যাটো ও ওয়ারশ জোটের মধ্যে সামরিক প্রতিযোগিতা এমন এক পর্যায়ে উন্নীত হয়েছিল যে, ইউরোপে একাধিকবার ‘পারমাণবিক যুদ্ধে’র আশংকা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ‘যুদ্ধ’ হয়নি বটে, কিন্তু বিংশ শতাব্দীর পুরোটা সময় এ দুই শক্তির মাঝে প্রতিযোগিতা বজায় ছিল। দুই পরাশক্তিই ইউরোপে পারমাণবিক বোমা বহনযোগ্য অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র মোতায়েন করেছিল। শুধু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরই এ øায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটে। এর প্রধান কারণ ছিল একটিÑ রাশিয়া এখন আর ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি নয়। দুটি আদর্শের (সমাজতন্ত্র বনাম পুঁজিবাদ) মাঝে যে দ্বন্দ্ব ছিল, সেই দ্বন্দ্বেরও অবসান ঘটে। এখন রাশিয়া আদর্শ হিসেবে মুক্তবাজার ও পুঁজিবাদকে গ্রহণ করেছে। উপরন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার অনেক আগেই ১৯৮৮ সালে গর্বাচেভ ‘ওয়ারশ’ সামরিক জোট ভেঙে দিয়েছিলেন। যে কারণে ইউরোপে রাশিয়ার উত্থান যুক্তরাষ্ট্র তথা ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি আর হুমকি নয়। তাই নতুন করে এ অঞ্চলে øায়ুযুদ্ধের সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখন ভারত মহাসাগর হচ্ছে সম্ভাব্য ক্ষেত্র, যেখানে নতুন করে øায়ুযুদ্ধের জš§ হতে যাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে চীন। চীনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভয় ও শংকা এখন অনেক বেশি। প্রথমত, তত্ত্বগতভাবে চীন এখনও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তবে তারা এখন আর ধ্র“পদী মার্কসবাদ-মাওবাদ অনুসরণ করে না। চীনে যে নতুন প্রজšে§র জš§ হয়েছে, তারা সমাজতন্ত্র বোঝে না। এরা বোঝে ভোগবাদ। চীনে একদলীয় কমিউনিস্ট পার্টির শাসন রয়েছে বটে, কিন্তু এ একদলীয় শাসনে চীনা নেতৃত্ব তিনটি বিষয়কে একত্রিত করেছে : ১. পূর্ব এশিয়ার নয়া কর্তৃত্ববাদ ২. ল্যাটিন আমেরিকার করপোরেটইজম ৩. পশ্চিম ইউরোপের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাসি। ফলে চীনকে এ মুহূর্তে একটি পুরোপুরি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যাবে না। বিশ্বে এখন যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে একমাত্র শক্তি হচ্ছে এই চীন। সুতরাং চীনকে ‘ছেঁটে ফেলার’ একটি স্ট্রাটেজি গ্রহণ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয়ত, আগামী দুই দশকের মধ্যে চীন অন্যতম একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। চীনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দুই ট্রিলিয়ন (এক হাজার বিলিয়নে এক ট্রিলিয়ন) ডলার। ‘ফরচুন’ ম্যাগাজিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ যে ৫০০ বহুজাতিক সংস্থার নাম করেছে, তাতে চীনের রয়েছে ৩৭টি। বিশ্বে যে জ্বালানি ব্যবহƒত হয়, চীন একাই শতকরা ১৬ ভাগ তা ব্যবহার করে। আর তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্বে চীনের অবস্থান তৃতীয়। চীন বিশ্বের রূপান্তরযোগ্য জ্বালানি বিনিয়োগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। গত বছর সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি ডলার এ খাতে খরচ করেছে। চীন বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতি। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পর তার স্থান। কিন্তু ২০২০ সালে জাতীয় উৎপাদনের দিক দিয়ে চীন জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে। চীনের এ অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থে বড় ধরনের আঘাত হানছে। প্রভাব বলয় বিস্তারের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এখন চীনকে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছে। তৃতীয়ত, পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে চীনের যে বিনিয়োগ, তাতে উৎকণ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৩ থেক ২০০৮ সাল পর্যন্ত আফ্রিকাতে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার। ল্যাটিন আমেরিকাতে এর পরিমাণ বেড়েছে এক বিলিয়ন থেকে তিন দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার। আর এশিয়াতে বেড়েছে এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন থেকে ৪৩ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার। সুদান ও কম্বোডিয়ায় বিনিয়োগের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে চীন। অন্যদিকে সুদানের পাশাপাশি ইরানের তেল সেক্টরে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। ২০০৯ সালে চীন ইরানের তেল ও গ্যাস সেক্টরে ব্যাপক বিনিয়োগ করে। আগামী পাঁচ বছরে এ সেক্টরে তারা বিনিয়োগ করবে ১২০ বিলিয়ন ডলার। ইরানের তেলের অন্যতম ক্রেতা আজ চীন। আন্তর্জাতিক অবরোধ উপেক্ষা করে চীন ইরান থেকে তেল আমদানি করছে। এসব বিষয় মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। অনেকেরই জানার কথা, যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়। এ ঋণের পরিমাণ এখন প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার। এ ঋণ যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। চতুর্থত, দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান চীনের উপস্থিতি মার্কিন নীতিনির্ধারকদের চিন্তার অন্যতম একটি কারণ। ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিনসহ সব বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে যে এক ধরনের ‘শূন্যতা’র সৃষ্টি হবে, সে শূন্যতা চীন পূরণ করতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছে। চীন এরই মধ্যে আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশের আইনাক নামক স্থানে কপার ফিল্ড উন্নয়নে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। নেপালের মহাসড়ক নির্মাণ, সীমান্ত পোর্ট নির্মাণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীন জড়িত রয়েছে। মিয়ানমারে মহাসড়ক নির্মাণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে চীন। মিয়ানমারের সমুদ্র উপকূলে যে বিশাল গ্যাস রিজার্ভ আবিষ্কৃত হয়েছে, তা এখন পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনের ইউনান প্রদেশে যাবে। আর ঐতিহাসিকভাবেই চীনের সঙ্গে সামরিক চুক্তি রয়েছে মিয়ানমারের। মিয়ানমার ও পাকিস্তানে (গাওদার) গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে চীন। কারাকোরাম পর্বতমালায় সড়কপথও নির্মাণ করছে চীন। শ্রীলংকায় হামবানতোতায় (প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের এলাকা) গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করছে চীন। এ পোর্ট পুরোপুরিভাবে চালু হবে ২০২০ সালে। একই সঙ্গে প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে এ দ্বীপরাষ্ট্রটির দক্ষিণাঞ্চলে একটি দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও তৈরি করছে চীন। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের এই যে বিশাল বিনিয়োগ, তা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অজানা নয়। এমনকি বাংলাদেশে বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। বাংলাদেশে সোনাদিয়া দ্বীপের গভীরে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করতে চায় চীন। ভারত মহাসাগরভুক্ত বিভিন্ন সমুদ্রবন্দরকে যুক্ত করে চীন যে ‘ঝঃৎরহম ড়ভ চবধৎষং’ বা মুক্তার মালার নীতি গ্রহণ করেছে তা শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, ভারতের স্বার্থকেও আঘাত হানছে।
ভারত মহাসাগর আগামী দিনে প্রত্যক্ষ করবে এক ধরনের ‘øায়ুযুদ্ধ’। এখানে কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে এ বিপুল জলসীমা, তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এ অঞ্চলজুড়ে গাওদার (বেলুচিস্তান, পাকিস্তান), হামবানতোতা (শ্রীলংকা), সিটওয়ে, কিয়াউক পাইউই বন্দরে (মিয়ানমার) রয়েছে চীনের নৌবাহিনীর রিফুয়েলিং-সুবিধা ও সাবমেরিন ঘাঁটি। কোকো দ্বীপপুঞ্জও চীনা নৌবাহিনী ব্যবহার করে। চীনের জ্বালানি চাহিদা প্রচুর। এ চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ মালাক্কা প্রণালী দিয়ে পরিবহন করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য হয়ে শ্রীলংকা পর্যন্ত ভারত মহাসাগর। তারপর এ মহাসাগর হয়ে মালাক্কা প্রণালী (মালয়েশিয়া) অতিক্রম করে ইন্দোনেশিয়ার পাশ দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে যাওয়ার যে সমুদ্রপথÑ এ পথের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় চীন। যুক্তরাষ্ট্রও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম নৌশক্তি। এ অঞ্চলে চীনা নৌশক্তির উপস্থিতি তার কাম্য নয়। অথচ জ্বালানি সরবরাহের নিশ্চয়তার জন্য এ রুটটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠুক, চীন তা কখনোই চাইবে না। এমনকি মধ্য এশিয়ার গ্যাস গাওদার বন্দরের মধ্য দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনের পূর্বাঞ্চলে নিয়ে যাওয়ার এক বিশাল ও ব্যয়বহুল প্রকল্পও হাতে নিয়েছে চীন। এজন্য ভারত মহাসাগর তার নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রয়োজন রয়েছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রও চায় এ অঞ্চলে তার কর্তৃত্ব থাকুক। কেননা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরান আক্রমণ করতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারত মহাসাগর তথা গাওদার পোর্টের গুরুত্ব রয়েছে। গাওদার থেকে ‘স্ট্রেইট অব হরমুজ’-এর দূরত্ব মাত্র ১৮০ নটিক্যাল মাইল (এ পথ দিয়ে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের তেলবাহী জাহাজ চলাচল করে), আর ৭২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইরান সীমান্ত। বেলুচিস্তানের মরুভূমিতে কিছুদিন আগ পর্যন্ত একটি বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করত। সুতরাং আগামী দিনে ভারত মহাসাগর অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে মার্কিন সমরনায়কদের কাছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘিরে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ‘কনটেইনমেন্ট থিওরি’ প্রয়োগ করেছিল। পশ্চিম ইউরোপ এ ক্ষেত্রে পালন করেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আজ সেই ‘কনটেইনমেন্ট থিওরি’ আবার নতুনভাবে প্রয়োগ হতে যাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে ভারত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে চারদিক থেকে ঘিরে চাপ প্রয়োগ করে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতা সংকুচিত করতে চেয়েছিল, আজ চীনকে সামনে রেখে সেই একই স্ট্র্যাটেজি রচনা করছে তারা। এতে লাভ কতটুকু হবে বলা মুশকিল। তবে নতুন করে আবার উত্তেজনার জš§ হবে। নতুন করে আবার জš§ হবে øায়ুযুদ্ধের। ফলে ভারত মহাসাগরভুক্ত দেশগুলো এ প্রতিযোগিতায় কোন একটি পক্ষ অবলম্বন করতে বাধ্য হবে। অতীতে øায়ুযুদ্ধ চলাকালীন বিশ্ব দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্র প্রতিযোগিতা বেড়েছিল। আজও সে রকম একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বিশ্ব। নিশ্চিত করেই বলা যায়, এতে কোন পক্ষের লাভের সম্ভাবনা ক্ষীণ। বরং এতে এ অঞ্চলের দারিদ্র্য আরও বাড়বে। ন্যাটোর ভূমিকার ব্যাপারে তাই পর্যবেক্ষকদের আগ্রহ থাকবে। সরাসরিভাবে ন্যাটোর সদস্য না হলেও যৌথ অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া ও প্যাসিফিকভুক্ত অনেক দেশকে ন্যাটোর স্ট্রাটেজিক কনসেপ্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত করছে। বাংলাদেশও এ প্রক্রিয়ার অংশীদার। এতে ধীরে ধীরে আমরা আবারও নতুন এক ধরনের øায়ুযুদ্ধের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। নতুন করে জš§ হওয়া øায়ুযুদ্ধ বিশ্ববাসীর জন্য আদৌ কোন মঙ্গল ডেকে আনবে না।
দৈনিক যুগান্তর 22 জুলাই tsrahmanbd@yahoo.com
0 comments:
Post a Comment