রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সিরিয়া যুদ্ধের শেষ কোথায়


)
শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছেন। গত ১৪ এপ্রিল মার্কিন বিমানবাহিনীকে তিনি সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে এই হামলার নির্দেশ দেন। এবারও মার্কিন বিমানবাহিনীর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের বিমানবাহিনী। বর্তমান পরিস্থিতি ২০০৩ সালের পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিল। ইরাকের কাছে ডাব্লিউএমডি (WMD) বা মারাত্মক সব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—এই অভিযোগ তুলে সাবেক প্রেসিডেন্ট বুশ ইরাকে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা গেল, ইরাকের কাছে ডাব্লিউএমডি নেই। কিন্তু তত দিনে ইরাকে মার্কিন দখলিস্বত্ব কায়েম হয়েছে। এবারের পরিস্থিতিও অনেকটা সে রকম। অভিযোগ, ক্ষমতাসীন সরকার রাজধানী দামেস্কের পাশে একটি ছোট্ট শহর দৌমায় রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে। আর এই হামলার ছবি সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাসায়নিক হামলার প্রতিবাদে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দিলেন। কিন্তু প্রশ্ন এখন দুটি। এক. আসাদ বাহিনী কি আদৌ এই রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল? দুই. মার্কিন এই বিমান হামলা সিরিয়ার পরিস্থিতিকে এখন কোন দিকে নিয়ে যাবে? এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রুশ-মার্কিন সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটিয়েছে।
এমনিতেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। ২০১৬ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার অবৈধ হস্তক্ষেপের অভিযোগ, ক্রিমিয়ার রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তি, পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে সমর্থন এবং সর্বশেষ রাশিয়ার আসাদকে সমর্থন—ইত্যাদি কারণে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এরই মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্বকে নয়া স্নায়ুযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এখন বিভিন্ন ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। এর আগে রাশিয়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল যে যুক্তরাষ্ট্র যদি সিরিয়ায় হামলা চালায়, তাহলে এর পরিণতি ভালো হবে না। রাশিয়া বলেছে, এ ধরনের হামলা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হবে। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি বলেছেন, সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগের যে প্লট সাজানো হয়েছে তার সঙ্গে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা জড়িত। তিনি আরো বলেছেন, এ ব্যাপারে তাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ আছে। এটাই হচ্ছে মুখ্য বিষয়। দৌমায় যে রাসায়নিক বোমা হামলা চালানো হয়েছিল এবং যাতে ৪০ জন সিরীয় নাগরিকের মৃত্যু, যাদের অনেকেই ছিল শিশু, এই হামলার সঙ্গে সিরিয়ার সেনাবাহিনী কি আদৌ জড়িত ছিল? এটা গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে এই যুক্তি তুলে ধরে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হলো। অথচ অভিযোগ আছে, এ ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই। এমনকি ব্রিটেনের পার্লামেন্টেও ব্রিটেনের বিমান হামলার কোনো অনুমতি ছিল না। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট নিজে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন না। এ জন্য তাঁর কংগ্রেসের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প তা করেননি। তবে ট্রাম্পের একটা প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যানদের অনেকেই আসাদবিরোধী। ফলে কংগ্রেসের সমর্থন তিনি পাবেন। তবে এই ‘যুদ্ধ’ সিরিয়ার রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে পরিপূর্ণভাবে বদলে দিল। সিরিয়া সংকটের সমাধানের পথে এখন বড় অনিশ্চয়তা এলো। তবে এটা এখনো নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মেরিন সেনা পাঠাবে কি না। ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল ২০০৩ সালে। কিন্তু লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে যখন উত্খাতের উদ্যোগ নেওয়া হয় (২০১৩) তখন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে সেনা পাঠায়নি। বিমান হামলার মধ্য দিয়ে সেখানে গাদ্দাফিকে উত্খাত করা হয়েছিল। ‘আরব বসন্ত’ পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্র স্ট্র্যাটেজিতে ‘রেজিম চেঞ্জ’-এর একটি ধারণা আছে। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন সরকারকে উত্খাত করা। সিরিয়ার ক্ষেত্রেও এমনটি হতে যাচ্ছে বলেই ধারণা অনেকের।
তাহলে সমাধানটা হবে কিভাবে? সিরিয়ার পরিস্থিতি সত্যিকার অর্থেই জটিল হয়ে পড়েছে। এখানে কার্যত দুটি বড় শক্তির অবস্থান পরস্পরবিরোধী। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টতই কুর্দিদের নিয়ে সিরিয়ায় আসাদবিরোধী একটি ফ্রন্ট গড়ে তুলতে চায়। অর্থাৎ আসাদবিরোধী একটি পক্ষকে সমর্থন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় তার অবস্থান ধরে রাখতে চায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানে তুরস্কের সমর্থন না পাওয়া। কুর্দিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহাবস্থান ও সমর্থন তুরস্ক ভালো চোখে দেখছে না। যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে সিরিয়ায় ইরানি প্রভাব কমানো। এ ক্ষেত্রে সুন্নি ধর্মাবলম্বী তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাচারাল মিত্র হতে পারত; কিন্তু তা হয়নি। বরং তুরস্ক ও ইরান এক ধরনের অ্যালায়েন্সে গেছে। রাশিয়া আইএসবিরোধী অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে ছিল। কিন্তু রাশিয়া চায় না আসাদ অপসারিত হোক। আসাদকে রেখেই রাশিয়া এক ধরনের সমাধান চায়। এখানে তুরস্কের আপত্তি থাকলেও বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে তুরস্ক আজ রাশিয়ার মিত্র। রাশিয়া নিজ উদ্যোগে সিরিয়ায় একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করতে চায়। সে জন্যই সোচিতে সিরিয়ার সব দল ও মতের প্রতিনিধিদের একটি সম্মেলন আহ্বান করেছিল রাশিয়া, যাকে তারা বলছে ‘সিরিয়ান কংগ্রেস অব ন্যাশনাল ডায়ালগ’। কিন্তু সেখানেও বিরোধ আছে। নানা মত ও পক্ষের প্রায় এক হাজার ৫০০ প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও একটা বড় অংশ এতে অংশগ্রহণ করেনি। সবাইকে নিয়ে একটি সমাধান বের করাও সহজ কাজ নয়; যদিও সোচিতে সবাই সিরিয়ার অখণ্ডতা রক্ষায় একমত হয়েছে। একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ধারা ও নির্বাচনের প্রশ্নে সবাই একমত হয়েছে। তার পরও কথা থেকে যায়—বড় বিরোধী দলের অবর্তমানে এই সমঝোতা আদৌ কাজ করবে কি না?
যুক্তরাষ্ট্রের এই বিমান হামলা স্পষ্টতই আসাদকে উত্খাত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে। গাদ্দাফির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল মানবাধিকার লঙ্ঘনের। তখন নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন করা হয়েছিল—Humanitarian Intervention. অর্থাৎ মানবাধিকার রক্ষায় সামরিক হস্তক্ষেপ। ২০০৩ সালে জাতিসংঘ অনুমোদন দেয়নি ইরাক আক্রমণের। তবে নিরাপত্তা পরিষদে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল—তাতে বলা হয়েছিল, ‘প্রয়োজনীয় বিধিব্যবস্থা’ গ্রহণ করার। আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যায় এই ‘প্রয়োজনীয় বিধিব্যবস্থা’ কোনো পর্যায়েই যুদ্ধকে সমর্থন করে না। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র যখন লিবিয়া আক্রমণ করল তখনো কোনো সমর্থন ছিল না নিরাপত্তা পরিষদের। জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া যুদ্ধ শুরু করা যাবে না। কিন্তু সেই অনুমোদন ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে ও লিবিয়ায় যুদ্ধ শুরু করেছিল। লিবিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছিল একটি তত্ত্ব—Humanitarian Intervention আর সিরিয়ার ক্ষেত্রে এখন ব্যবহৃত হতে পারে Responsibility to Protect তত্ত্ব। অর্থাৎ বাংলা করলে যা দাঁড়ায়, তা হচ্ছে মানবতা রক্ষায় আন্তর্জাতিক দায়িত্ব। সিরিয়ায় অতীতেও এ ধরনের রাসায়নিক হামলার খবর আমরা শুনেছি। জাতিসংঘের টিমকে পর্যন্ত সেখানে পাঠানো হয়েছিল, যারা খুঁজে পায়নি কারা সেখানে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার নিঃসন্দেহে শুধু নিন্দনীয়ই নয়, বরং একটি অপরাধও। এখানে অনেক পক্ষ আছে, যারা এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। আসাদ সরকারের সেনাবাহিনী যেমন এটা করতে পারে, তেমনি বিদ্রোহী বাহিনীও এই অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এর আগে ২০১৩ সালেও এ রকম একটি অভিযোগ ছিল। ওই সময় রাশিয়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে একটি ডকুমেন্ট প্রকাশ করে। এতে দেখা যায় সিরিয়ার বিদ্রোহী সেনারাই এই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছিল। একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান Global Research ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল, সিরীয় সরকার নয়, বরং বিদ্রোহীদের হাত রয়েছে ওই রাসায়নিক অস্ত্রের হামলার পেছনে। তবে এও সত্য, আসাদ বাহিনী যে এটা করতে পারবে না, তেমনটাও নয়। তারাও করতে পারে।
সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র আছে, এ অভিযোগ অনেক পুরনো। ২০১৩ সালে জেনেভায় লেভারভ-কেরি একটি সমঝোতা হয়েছিল। ওই সমঝোতার কারণে সেখানে যুদ্ধ এড়ানো গেছে। ওই সমঝোতায় সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রের হিসাব, অবস্থান, মজুদ, অস্ত্রের ধরন, গবেষণা ইত্যাদি সম্পর্কে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কমিটি জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে একটি প্রতিবেদনও দিয়েছিল। ফলে ওই সময় আর যুদ্ধ হয়নি। এখানে বলা ভালো, ধারণা করা হয় সিরিয়ায় মোট ৪০টি রাসায়নিক কারখানা অথবা এলাকা রয়েছে, যেখানে এসব অস্ত্র উত্পাদন করা হয় অথবা তা সংরক্ষণ করা হয়। প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন গ্যাস (সারিন ও মাস্টার্ড গ্যাস) সিরিয়া সংরক্ষণ করেছে, এমন একটা কথা পশ্চিমা বিশ্বে চাউর হয়ে আছে। এসব গ্যাস ধ্বংস করা কঠিন কাজ। একজন গবেষক লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ২৮ বছর ধরেই তাদের কাছে রক্ষিত রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে আসছে; কিন্তু পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব হয়নি। আরো একটা সমস্যা ছিল—কোন প্লান্ট বা স্থানে তা ধ্বংস করা হবে। সিরিয়ায় তা করা যাবে না। সিরিয়া থেকে সরিয়ে নিয়ে অন্য কোনো দেশে, তা ধ্বংস করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের ১৩টি প্লান্টের মধ্যে ৯টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের পরিবেশবাদীরা অত্যন্ত শক্তিশালী। তাঁরা যেকোনো পরিবহনব্যবস্থায় (গ্যাস পরিবহন) প্রতিবন্ধকতা গড়ে তুলতে পারে। একমাত্র সম্ভাবনা ছিল রাশিয়ায়। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্কের কারণে সেটা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। ফলে একটি সমঝোতা হয়েছিল বটে, কিন্তু তাতে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র সব ধ্বংস হয়েছে, তা বলা যাবে না।
পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যাবে বলা মুশকিল। রাশিয়া সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেও চূড়ান্ত বিচারে রাশিয়া এই ‘যুদ্ধে’ আদৌ জড়াবে না। এমনিতেই রাশিয়া নানা রকম সংকটে আছে এখন। ক্রিমিয়া অধিগ্রহণ করার পর জি-৮ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। রাশিয়ার ওপর সীমিত অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। তা এখনো বলবৎ আছে। ১৪ জুন থেকে রাশিয়ায় শুরু হচ্ছে ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল। রুশ-মার্কিন দ্বন্দ্ব যদি শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের সংঘর্ষের জন্ম দেয়, তাহলে বিশ্বকাপ ফুটবল ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে। পশ্চিমা কিছু দেশ কিংবা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজে বিশ্বকাপ বয়কটের ডাক দিতে পারেন। এ ধরনের একটি ঝুঁকি আছেই। ফলে প্রেসিডেন্ট পুতিন সিরিয়া যুদ্ধে রাশিয়াকে জড়িত করবেন না। কিন্তু তার পরও কথা থেকে যায়। সিরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এই যুদ্ধ আবারও প্রমাণ করল যুক্তরাষ্ট্র কোনো অবস্থায়ই ‘যুদ্ধ’ থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না।
আফগান যুদ্ধ পরিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে, এটা বলা যাবে না। সেখানে ট্রাম্প আরো কিছু সেনা পাঠাতে চান। ট্রাম্পের সিরিয়া যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ায় যুদ্ধের খরচ আরো বাড়বে। পাঠকদের জানিয়ে রাখি, শুধু একটি টমাহক মিসাইল বা ক্ষেপণাস্ত্রের দাম আট লাখ ৩২ হাজার ডলার (Investopedia)। তা-ও ১৯৯৯ সালের হিসাবে এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান হিসাবে এর দাম আরো বেশি। সুতরাং যুদ্ধ যদি সেখানে প্রসারিত হয়, তাহলে মিসাইলের ব্যবহার বাড়বে। বাড়বে যুদ্ধের খরচ।
যুদ্ধ মানুষ চায় না। ইরাক, লিবিয়া কিংবা আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতা আমাদের ভালো নয়। যুদ্ধ সেখানে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারেনি। ফলে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্য দিয়ে সেখানে অস্থিতিশীলতা বাড়বে বৈ কমবে না।
Daily Kalerkontho
26.04.2018

0 comments:

Post a Comment