রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কোথায় দাঁড়িয়ে শিক্ষক সমাজ

Image result for Gopalganj University


আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর থেকে এ দিনটি পালিত হয়। মূলত ইউনেস্কো এ উদ্যোগটি নিয়েছিল। শিক্ষকরা জাতি গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে এবং শিক্ষকদের মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য সামনে রেখেই এ দিবস পালন করা হয়। উদ্দেশ্যটি নিঃসন্দেহে ভালো ও প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু বাংলাদেশে আমরা যখন এ দিনটি পালন করতে যাচ্ছি, তখন একজন শিক্ষক হিসেবে আমার মাঝে অনেক প্রশ্ন, অনেক জিজ্ঞাসা- শিক্ষক হিসেবে আমরা জাতি গঠনে কতটুকু অবদান রাখতে পারছি? আমি শঙ্কিত উচ্চশিক্ষা নিয়ে। আমার শঙ্কার কারণ সাম্প্রতিককালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তাতে করে উচ্চশিক্ষা রীতিমতো প্রশ্নের মুখে আজ। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের ব্যর্থতা ও নানারকম দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারি উচ্চশিক্ষাকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধই করেনি, এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কাও সৃষ্টি করেছে। উপাচার্য নিয়োগে সঠিক ও যোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন না দেয়া, একাধিক উপাচার্যের দুর্নীতির ব্যাপারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না নেয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি বেড়েছে। এখন সময় এসেছে এ ব্যাপারে কঠোর হওয়ার এবং ক্যাম্পাসে দুর্নীতি হ্রাস করার ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হতে না পারে, যদি মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা না যায়, তাহলে বাংলাদেশ আগামীতে বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারবে না। সামনে বাংলাদেশের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জ। এক বিশাল তরুণ প্রজন্ম আমাদের। এই তরুণ প্রজন্মকে যদি দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে। জাতিসংঘ ২০১৭ সালে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা দিয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের উপরে থাকা, আয় বৃদ্ধি, মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব ইত্যাদি নানা কারণে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে এই মর্যাদা দেয়। ফলে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। দেশে এখন ৩ দশমিক ২ কোটি যুবক। আর বিবিএসের রিপোর্ট অনুযায়ী কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৯১ লাখ, যার মধ্যে কর্মে নেই ৪ কোটি ৮২ লাখ। অর্থাৎ কর্মে আছে ৬ কোটি মানুষ। তরুণ প্রজন্মই সারা বিশ্বে পরিবর্তন আনছে। চীন এর বড় উদাহরণ। আমরা যাদের জেনারেশন  Z বলছি (জন্ম ১৯৯৫ সালের পর), তারাই হচ্ছে ভবিষ্যৎ। তাদের নেতৃত্বেই গড়ে উঠবে নতুন এক বিশ্ব।
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবসে প্রশ্ন এখানেই- আমরা বাংলাদেশে এই জেনারেশন  Z-এর জন্য কী সম্ভাবনা তৈরি করছি? অর্থাৎ এই প্রজন্ম বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে ও যাচ্ছে। কিন্তু তাদের কি আমরা যোগ্য প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলতে পারছি? আমরা এক ‘বিসিএস প্রজন্ম’ গড়ে তুলছি। সবাই ছুটছে সরকারি চাকরির আশায়। একজন ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারকে যখন দেখি তিনি পুলিশে চাকরি করছেন, বিসিএসের জন্য গাইড বই পড়ছেন, তখন ভাবি- এই প্রজন্ম দিয়ে আমরা কী করব? একজন ডাক্তার কেন পুলিশে যেতে চায়, আমরা তা নিয়ে ভাবি না। যারা পিএসসিতে মৌখিক পরীক্ষা দিতে বসেন, তাদের ভবিষ্যৎ বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। সরকারি আমলারা তাদের সীমিত জ্ঞান নিয়ে সরকারি চাকরি করে অবসরে গিয়ে আবার বিশেষ মহলের আশীর্বাদে পিএসসির সদস্যপদে নিয়োগ পান। তারা কি জানেন কীভাবে চীনের জেনারেশন Z  প্রজন্ম চীনকে পরিপূর্ণভাবে বদলে দিয়ে দেশটিকে আজ এক বিশ্বশক্তিতে পরিণত করেছে? আর আমাদের ভিসিরা? কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্যরা? তারা কী প্রজন্ম তৈরি করছেন? বিশ্ব শিক্ষক দিবসের ভাবনা এখানেই। ইউজিসির একজন চেয়ারম্যান পেয়েছিলাম আমরা, যিনি কলাম লিখে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার প্রধান কাজ হওয়া উচিত ছিল উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে সরকারকে সহযোগিতা করা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখেছি, তিনি নিত্য তার কলামে বিএনপি ও বেগম জিয়ার সমালোচনা করেছেন। এটা তার প্রধান ‘কাজ’ হওয়া উচিত ছিল না।
বিশ্ব শিক্ষক দিবসে সমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে যখন লিখছি, তখন শিক্ষামন্ত্রীর একটি বক্তব্য চোখে পড়ল। তিনি একটি অনুষ্ঠানে সততা ও নৈতিকতা দিয়ে কাজ করার জন্য উপাচার্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এ আহ্বানটি জানালেন এমন একটি সময় যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। একজন ‘ক্যাসিনো সম্রাটের’ কাহিনী যখন পত্র-পত্রিকায় গত দু’সপ্তাহ ধরে আলোচিত হচ্ছে, তখন একাধিক উপাচার্য নিজেদের ‘শিক্ষা সম্রাট’ হিসেবে প্রমাণ করছেন! গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্যের কাহিনী তো সবার মুখে মুখে। তার নিজের বাসায় বিউটি পার্লার দেয়া, নারী কর্মচারী কর্তৃক তার সন্তানের পিতৃত্ব দাবি, ২ কোটি টাকার গোবর বাণিজ্য, নিজের ভাতিজাকে কর্মচারী থেকে একলাফে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে নিয়োগ ইত্যাদি বিষয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, যেখানে তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘তোমরা কত টাকা দেয়ার জন্য রাজি আছ’ (বাংলা ট্রিবিউন, ১ অক্টোবর ২০১৯)। টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ আছে সেখানে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা একজন সরকারি দলের এমপির নিজ সন্তান ও উপ-উপাচার্যের মেয়ের জামাইয়ের চাকরি পাওয়ার বিষয়টি সেখানে বড় বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। বণিক বার্তা পত্রিকায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দুর্নীতি সম্পর্কিত প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। ওই দৈনিকে সরকারি অডিট অধিদফতরের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ভিসির বাসভবন নির্মাণে উপাচার্য নিজে প্রজ্ঞাপন শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। ২০ কাঠা জমির মূল্য পরিশোধ করা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা, সরকারি নিরীক্ষকদের মতে তা বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। পত্রিকার ভাষ্য, পুরো প্রক্রিয়াটিই হয়েছে বর্তমান উপাচার্যের সময়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে জাবি ছাত্রলীগের নেতাদের ২ কোটি টাকা দেয়ার (যা ছাত্রলীগ নেতারা স্বীকার করেছেন) অভিযোগ উঠলেও তার সমাধান হয়নি। উপাচার্যের স্বামী ও সন্তানের বিরুদ্ধে স্বয়ং শিক্ষকরা অভিযোগ এনেছেন। শিক্ষকদের একটা অংশ তাকে ‘লাল কার্ড’ দেখিয়ে প্রতিদিন মিছিল করছেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ৫৩টি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা এ ব্যাপারে একটি শ্বেতপত্রও প্রকাশ করেছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে আর্থিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, টিএ/ডিএ নিয়ে প্রতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় ঢাকায় যাওয়া (তার পরিবার ঢাকায় থাকে), নিজের গার্মেন্ট ব্যবসা (ঢাকায়) পরিচালনা করা ইত্যাদি। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত উপাচার্য ঢাকায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিচালনা করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিকবার একাধিক পত্রিকা সংবাদ করেছে যে, তিনি বছরের বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। ঢাকায় একটি এনজিওর তিনি চেয়ারম্যান। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়ে একই সঙ্গে তিনি একটি বিদেশি সাহায্যপুষ্ট এনজিওর চেয়ারম্যান থাকতে পারেন কি? সকালে প্লেনে করে রংপুর গিয়ে অফিস করে বিকালে প্লেনে ঢাকায় ফিরে আসেন। এ সংক্রান্ত রিপোর্ট একাধিকবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে রাত ১২টায় ক্লাস নিয়ে তিনি একবার ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিলেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ভিসি প্রতিদিন নাশতার বিল তুলতেন ৭ হাজার টাকা। দুদক তাকে নোটিশ পর্যন্ত করেছিল। সম্প্রতি ১৪ জন ভিসির বিরুদ্ধে ইউজিসি তদন্তে নেমেছে বলেও সংবাদমাধ্যমগুলো আমাদের জানাচ্ছে (জাগো নিউজ, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। সর্বশেষ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ‘জয় হিন্দ’ বলেছেন একটি অনুষ্ঠানে, যার কারণে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন কাদের সিদ্দিকী।
বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে উপাচার্যদের বিরুদ্ধে এ ধরনের সংবাদ আমাদের আহত করে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ করেছে সরকার। গত ১০ বছরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য সরকারি অনুদান বেড়েছে ৩৬১ শতাংশ। ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মান্নান বিবিসি বাংলার কাছে স্বীকার করেছেন, তিনি বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক অনিয়ম লক্ষ করেছেন। গবেষণার জন্য যে টাকা বরাদ্দ থাকে, কিছু শিক্ষক তা ভাগবাটোয়ারা করে নেন বলেও অধ্যাপক মান্নান স্বীকার করেছেন (বিবিসি বাংলা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। এই সত্য কথাটা বলার জন্য তিনি ধন্যবাদ পেতেই পারেন। আমি খুশি হতাম তিনি যদি ওইসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন। তিনি তা নেননি। শুধু টাকা ভাগবাটোয়ারাই নয়, কোনো কোনো শিক্ষক হাউজিং ব্যবসায় জড়িয়ে গেছেন (জাহাঙ্গীরনগর)। কোনো কোনো শিক্ষক বেসরকারি টিভিতে ফুলটাইম চাকরি করেন (ঢাবি)। কেউ কেউ গবেষণা পরিচালক হিসেবে কোনো কোনো গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান থেকেও মাসিক বেতন নেন। উপাচার্যরা এসব জানেন। কিন্তু অত্যন্ত ক্ষমতাবান ওইসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ‘ব্যবস্থা’ নিতে পারেন না। দলীয় আনুগত্য আদায় করার জন্য গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তা তারা বিবেচনায় নেন না। এতদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ছিল সার্টিফিকেট ‘বিতরণ’ করার। এখন অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই সার্টিফিকেট বিতরণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সরকারি অনুদানে চলা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগেই এখন টাকার বিনিময়ে ‘সান্ধ্যকালীন কোর্স’, ‘উইকএন্ড কোর্স’ চালু করা হয়েছে। যারা কোনোদিন ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি, তারাই লাখ টাকা দিয়ে ওইসব কোর্স করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট কিনে নিচ্ছেন। তথাকথিত পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েও তেলেসমাতি কাণ্ড চলছে। কোনো কোর্স ওয়ার্ক কিংবা লাইব্রেরি ওয়ার্ক না করে, ফুলটাইম চাকরি করেও যে পিএইচডি নেয়া যায়, তার প্রমাণ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
শিক্ষামন্ত্রী নৈতিকতা ও সততার কথা বলেছেন। কিন্তু কোটি টাকা ঈদ সালামি দেয়া, নিজ বাসভবনে বিউটি পার্লার বসানো, ১০০ কোটি টাকা দিয়ে ভিসি বাংলো বানানো, কিংবা শিক্ষক নিয়োগে টাকা নেয়া- এগুলো কোন নৈতিকতার মাঝে পড়ে? প্রধানমন্ত্রী ‘ক্যাসিনো সম্রাট’দের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে প্রশংসিত হয়েছেন। এখন শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করব ‘শিক্ষক সম্রাট’দের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান শুরু করার। উপাচার্যদের নিয়োগ যথাযথ হচ্ছে না। একজন ক্যাসিনো ব্যবসায়ীকে যদি দুর্নীতি ও অন্যায়ের কারণে গ্রেফতার করা যেতে পারে, তাহলে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ভিসিরা মাফ পাবেন কোন যুক্তিতে? একটি কমিশন গঠন করে ভিসিদের অনিয়ম আর দুর্নীতির তদন্ত করা হোক। একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক। আমি চাই জাতীয় সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হোক। অযোগ্য উপাচার্যদের কারণে উচ্চশিক্ষা আজ প্রশ্নের মুখে। কোটি কোটি তরুণ প্রজন্মের কাছে আমরা কোনো স্বপ্ন উপস্থাপন করতে পারছি না। ‘জেনারেশন জেড’ আমাদের কাছে বোঝা হয়ে উঠছে দিনে দিনে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই ‘জেনারেশন জেড’ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারছে না। আমরা সার্টিফিকেটসর্বস্ব এক ‘বিসিএস প্রজন্ম’ তৈরি করছি, যারা ধীরে ধীরে সমাজের জন্য এক ধরনের বোঝা হয়ে উঠছে। শিক্ষক হিসেবে এটা আমারও ব্যর্থতা। বিশ্ব শিক্ষক দিবসে আমার ভাবনা এটাই।
Daily Jugantor
05.10.2019

0 comments:

Post a Comment