রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

প্রশ্নের মুখে ভারতের গণতান্ত্রিক সংহতি


কাশ্মীরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল
কাশ্মীর সংকট শুরু হওয়ার দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও এ সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না ভারত। গেল সপ্তাহে কাশ্মীর নিয়ে একাধিক সংবাদ ছাপা হয়েছে, যা ভারতের গণতান্ত্রিক চর্চার সঙ্গে বেমানান।
গত ১৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কাশ্মীরে দমন-নীতি গণতন্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভারতের সাপ্তাহিক ফ্রন্টলাইনে আনন্দ ভক্ত লিখেছেন, কাশ্মীর বড় ধরনের আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে এবং অবরুদ্ধ উপত্যকার চারপাশে চক্বর দিলে এর আগাম পূর্বাভাস কারও দৃষ্টি এড়াবে না (১৫ অক্টোবর)।
এদিকে ভারতের সুপ্রিমকোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসন। ভারতের সর্বোচ্চ আদালত বলছে, ‘যা বলবেন মেনে নেবেন, ধরে নেবেন না।’ কাশ্মীরে ব্যাপক ধরপাকড়ের মুখে সুপ্রিমকোর্ট এক শুনানিতে এ ধরনের কথা বলেছে (আনন্দবাজার, ১৬ অক্টোবর)। কাশ্মীর এখনও অশান্ত, অবরুদ্ধ। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নির্যাতন আর অত্যাচার এখন আন্তর্জাতিক সংবাদে পরিণত হয়েছে।
খোদ ভারতেও মোদি সরকারের এ সিদ্ধান্ত বড় বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন ভারতীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘গণতন্ত্রের পথে এত পথ এগোনার পর এবং প্রাচ্যের প্রথম দেশ হিসেবে গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করে এখন যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে তার জন্য আমাদের সুনাম নষ্ট হোক- একজন ভারতীয় হিসেবে এসব বিষয়ে আমি গর্ববোধ করতে পারছি না।’
সরকারের অজুহাত ও যুক্তির পেছনে অমর্ত্য সেনের মন্তব্য হচ্ছে ‘এটা তো উপনিবেশবাদের পুরনো অজুহাত। এভাবেই ব্রিটিশরা এ দেশকে ২০০ বছর ধরে শাসন করেছে।’ ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সাবেক বিচারপতি মার্কান্দে কাটজুর মন্তব্যটি ছিল আরও কঠিন। তিনি বলেছেন, ভারতে এখন এমন কিছু ঘটছে, যা নাজি যুগে জার্মানিতে সংঘটিত ঘটনার কথা আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয় (সূত্র : ম্যাটার্স ইন্ডিয়া)।
সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ কাশ্মীরকে একটি আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন (newsx.com, ২৮ সেপ্টেম্বর)। গত দুই মাস বিবিসি, সিএনএন ও আল জাজিরা কাশ্মীরে নির্যাতন নিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ করেছে, তা ভারতের গণতন্ত্রের চর্চার সঙ্গে বেমানান। কাশ্মীরে এ নির্যাতন আর গুমের ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্ব করে না। ভারতীয় গণতন্ত্রের এক ভিন্ন চিত্র এখন আমরা পাই। এটা গণতন্ত্রের মূল স্পিরিটের পরিপন্থী।
কাশ্মীরে নারী নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ভারতের কয়েকজন নারী অ্যাক্টিভিস্টের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছিল। তারা ২৩ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ‘Fact Finding’ উপস্থাপন করেন। তারা কাশ্মীরের ঘটনাবলিকে ‘human tragedy’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন (newslaundry.com, ২৪ সেপ্টেম্বর)।
সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, ১৩ হাজার কাশ্মীরি তরুণকে তুলে নেয়া হয়েছে, তাদের খবর পরবর্তী সময়ে আর পাওয়া যায়নি। সিপিআই, ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান উইম্যান, প্রগতিশীল মহিলা সংস্থা ও মুসলিম উইম্যান ফোরামের প্রতিনিধিরা ১৭ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর অবরুদ্ধ কাশ্মীর সফর করেন। এ সফরের পরপরই তাদের পর্ষবেক্ষণ গণমাধ্যমে উপস্থাপন করেন।
বিশিষ্ট লেখিকা অরুন্ধতী রায়ও বলেছেন, কাশ্মীরে দুর্বৃত্তের মতো আচরণ করছে মোদি সরকার। তিনি ভারতীয় গণতন্ত্রের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক ও গবেষক রামচন্দ্র গুহ ওয়াশিংটন পোস্টে একটি প্রবন্ধে লিখেছেন- ‘India was a miracle democracy; but it is time to downgrade its credential’। তার বক্তব্য পরিষ্কার- ভারত রাষ্ট্রটি অনেক জাতি ও উপজাতির সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিল। সেখানে উত্তরাঞ্চলের সংস্কৃতির সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সংস্কৃতির কোনো মিল নেই। আচার-আচরণ, ধর্ম, সংস্কৃতির মাঝেও পার্থক্য রয়েছে।
তার মতে, ভারত হচ্ছে ‘A Nation of maû Nations’। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও প্র্যাকটিস ভারতকে এক কাঠামোয় রাখতে পেরেছিল। কিন্তু এখন সেই গণতন্ত্রকে আর প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র বলা যাবে না।
মিথ্যা বলেননি রামচন্দ্র গুহ। বিশাল এক দেশ ভারত। অনেক ধর্মের অনুসারীদের বাস এ ভারতে। জনসংখ্যার ৭৯ দশমিক ৮০ ভাগ হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এর পরেই মুসলমানদের স্থান, জনসংখ্যার হার ১৪ দশমিক ২৩ ভাগ। খ্রিস্ট ও শিখ ধর্মাবলম্বীদের হার যথাক্রমে ২.৩০ ও ১.৭২ ভাগ। ২০ কোটির ওপর মুসলমানের এই সংখ্যাটি যে কোনো মুসলমানপ্রধান দেশের চেয়ে বেশি।
বর্ণ, ধর্ম ও জাতিভিত্তিকভাবে বিভক্ত ভারতকে এক কাঠামোয় রাখতে ভারতীয় সংবিধান প্রণেতারা একদিকে যেমন দলিত শ্রেণির (নিু শ্রেণির, অশিক্ষিত মানুষ) জন্য সংবিধানে এক ধরনের রক্ষাকবচ রেখেছেন, অন্যদিকে বিশেষ বিশেষ রাজ্যের জন্য (যেমন উত্তর-পূর্বাঞ্চল, কাশ্মীর, অন্ধপ্রদেশ) বিশেষ মর্যাদা তথা সীমিত স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা রেখেছিলেন।
উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট- একটি ফেডারেল রাষ্ট্র-কাঠামোয় কিছু রাজ্যকে কিছু সুবিধা দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির আওতায় ভারতীয় ঐক্যকে টিকিয়ে রাখা। এ ক্ষেত্রে দীর্ঘ ৭২ বছর এ ঐক্য টিকে থাকলেও এখন তাতে ফাটল দেখা দিয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদ, কিংবা হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনীতি এখন ভারতীয় ঐক্যের জন্য নিয়মিত হুমকি।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চলে আসছিল, তা একটা পর্যায়ে স্তিমিত হয়ে এলেও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিল হওয়ায় নাগাল্যান্ডের মতো রাজ্যে নতুন করে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ অসন্তোষ এখন অন্যান্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং একইসঙ্গে ৩৫-এ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীর ‘আলাদা মর্যাদা’ পেত।
এ ধরনের ‘বিশেষ সুবিধা’ (স্থানীয়দের চাকরি-শিক্ষা ক্ষেত্রে সুবিধা, স্থায়ী নাগরিকের মর্যাদা ইত্যাদি) শুধু জম্মু ও কাশ্মীরের ক্ষেত্রেই যে প্রযোজ্য ছিল তা নয়, অন্য বেশকিছু রাজ্য এখনও সাংবিধানিকভাবে এ ধরনের ‘বিশেষ সুবিধা’ ভোগ করে থাকে। ৩৭১-এ ও ৩৭১-জি ধারা বলে উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থানীয় জনগোষ্ঠী অনেকটা কাশ্মীরিদের মতো একই ধরনের সুবিধা পায়।
পার্বত্য এলাকায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জমির ওপর, বন ও খনিজসম্পদের ওপর ব্যক্তিগত অধিকার স্বীকৃত। তাদের কোনো কর দিতে হয় না। চাকরির ক্ষেত্রেও রয়েছে অগ্রাধিকার। এ অঞ্চলে সংবিধানের অনেক ধারা কার্যকর নয়। সেখানে দেশীয় আইন, ঐতিহ্য অনুযায়ী অনেক কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। সম্পত্তি ও জমির হস্তান্তরও নিজস্ব নিয়মে চলে।
সংবিধানের ৩৬৮ ধারার ভিত্তিতে ৩৭১ নম্বর ধারায় ৯টি রাজ্যকে বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে। কাশ্মীরের বাইরে মহারাষ্ট্র, গুজরাট ও অন্ধপ্রদেশ রয়েছে সেই তালিকায়। ৩৭১-বি ধারায় কিংবা ২৪৪-এ ধারা অনুযায়ী আসাম বেশকিছু সুবিধা পেয়ে থাকে।
৩৭১-ডি ও ই ধারায় অন্ধপ্রদেশে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণসহ কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে রাষ্ট্রপতির হাতে। ৩৭১-এইচ ধারা মতে অরুণাচল রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারেন কেন্দ্র থেকে নিযুক্ত রাজ্যপাল।
সুতরাং যেসব অঞ্চল বিশেষ সুবিধা পেয়ে আসছে তাদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। ইতিমধ্যে নাগাল্যান্ড, মিজোরামে বিক্ষোভ হয়েছে এবং স্থানীয় নেতারা কঠোর হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, জম্মু ও কাশ্মীর দ্বিখণ্ডিত হওয়ায় অনেক রাজ্যেই এর প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। দার্জিলিংয়েও পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি প্রকাশ্যে এসেছে।
দার্জিলিংয়ের পৃথক রাজ্য গড়ার নেতা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চ্চার বিমল গুরুং আত্মগোপনস্থল থেকে এক বার্তায় দার্জিলিংকেও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। এটি একটি অশনিসংকেত। অন্যান্য রাজ্য থেকেও এ ধরনের দাবি উঠতে পারে।
প্রশ্ন হচ্ছে, কেন্দ্রের বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার কি শুধু ‘মিশন কাশ্মীর’ নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন? নাকি অন্য অঞ্চলগুলোর ব্যাপারে সংবিধানে যে সুযোগ-সুবিধা ও বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে, তাও খর্ব করার উদ্যোগ নেবেন? কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে জনঅসন্তোষ গড়ে উঠছে, তা যদি কেন্দ্র বিবেচনায় নেয়, তাহলে অন্যান্য ও পশ্চাৎপদ রাজ্যগুলোর স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থে সংবিধানের রক্ষাকবচগুলো বাতিলের কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।
তবে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের ব্যাপারে ওই সিদ্ধান্ত মুসলমানবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ধর্মীয়ভাবে খ্রিস্টধর্মের অনুসারী।
ভারতের সংবিধান প্রণেতারা এ ধরনের রক্ষাকবচ দিয়েই দেশটির ফেডারেল রাষ্ট্র কাঠামোকে ‘এক’ রাখতে চেয়েছেন। দীর্ঘদিন কোনো সরকারই এই রক্ষাকবচের ওপর হাত দেয়নি। কারণ তারা জানতেন সংবিধানে লিপিবদ্ধ এসব রক্ষাকবচে যদি ‘হাত’ দেয়া হয়, তাহলে ভারতের সংহতি বিনষ্ট হবে।
ভারত ভেঙে যেতে পারে! বিজেপি সরকারের কাশ্মীর প্রশ্নে নেয়া সিদ্ধান্ত এখন একদিকে সংবিধানকে যেমন আঘাত করেছে, তেমনি ভারতের সংহতি ও ঐক্যকেও আঘাত করেছে। একইসঙ্গে ভারতের গণতান্ত্রিক সংহতিকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। এমনিতেই ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। বলা হচ্ছে, ভারতের গণতন্ত্র হচ্ছে ‘election only democracy’। অর্থাৎ এ গণতন্ত্র শুধু নির্বাচকেন্দ্রিক।
গণতন্ত্রের মূল স্পিরিট অনেক ক্ষেত্রেই এখানে অনুপস্থিত। পারিবারিক শাসন তথা পরিবারকেন্দ্রিক রাজনীতি (স্থানীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে কিছু পরিবার), দলিতদের ব্যবহার করে স্থানীয় তথা জাতীয় রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করা (মায়াবতী, লালু প্রসাদ), ক্রিমিনালদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব (৪৩ শতাংশ সংসদ সদস্যের ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে, দ্য হিন্দু, ২৬ মে ২০১৯) ভারতীয় গণতন্ত্রকে সনাতন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে পৃথক করেছে।
মোদি জমানায় এটি নতুন একটি মাত্রা পেয়েছে- তা হচ্ছে জনগণের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ নিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি অব্যাহত রাখা। রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন সাম্প্রদায়িক নীতি প্রমোট করা হচ্ছে, যা সনাতন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সঙ্গে বেমানান। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির নামে এক ধরনের ‘কর্পোরেট সংস্কৃতি’ (ধনী গোষ্ঠীর সুবিধা নেয়া) সনাতন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকেও এখন চ্যালেঞ্জ করছে। এ কর্পোরেট সংস্কৃতির প্রতিনিধি হচ্ছেন মোদি।
সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে, কাশ্মীরে জমি কিনে কর্পোরেট জগতের ‘বস’রা কাশ্মীরে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিচ্ছেন; যেখানে সাধারণ কাশ্মীরিদের কিংবা কাশ্মীরের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারীদের কোনো ভূমিকা নেই।
একদিকে কাশ্মীর, অন্যদিকে আসামে এনআরসি- সব মিলিয়ে এক অনিশ্চয়তার পথে হাঁটছে ভারত। তাই দীপক সিনহা যখন সাউথ এশিয়া মনিটরে লেখেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধূমায়িত ক্ষোভ’ (১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯), তখন ভারতের ভবিষ্যৎ আমাদের ভাবিত করে। ভারতের অনেক কিছু দেখার আছে। আমাদের উন্নয়নের অংশীদার ভারত।
গত ১২ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট ভারত সফর শেষ করেছেন। শি জিনপিং-মোদি দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় কাশ্মীর ইস্যু স্থান পায়নি। স্পষ্টতই এটা মোদি সরকারের জন্য খুব ভালো খবর নয়। আন্তর্জাতিক পরিসরে কাশ্মীর প্রশ্নে মোদি সরকার সমর্থন আদায় করতে পারছেন না। সব মিলিয়ে কাশ্মীর প্রশ্নে মোদি-অমিত শাহ জুটির সিদ্ধান্ত তার সরকারের জন্য বুমেরাং হয়ে দেখা দেয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়।
Daily Jugantor
19.10.2019

0 comments:

Post a Comment