মমতা আসলে কী চান?
06:59
No comments
তা রে ক শা ম সু র রে হ মা ন
মমতা ব্যানার্জি আসলে কী চান? গেল সেপ্টেম্বরে মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে একটি চুক্তিস্বাক্ষরের কথা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে আপত্তি জানালেন মমতা। ঢাকাতেও এলেন না। তার আপত্তির কারণে পিছিয়ে গেল তিস্তার পানিবণ্টনের চুক্তিটি। তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে অনিশ্চয়তা যখন বাড়ছে, তখন মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করলেন, ফারাক্কায় বেশি পানি পাচ্ছে বাংলাদেশ। মমতার যুক্তি ফারাক্কা ব্যারাজের ১৩ নম্বর গেটটি খারাপ হয়ে গিয়েছিল গেল জুন মাসে। আর ১৬ নম্বর গেটটি খারাপ হয় ডিসেম্বরে। ফলে এই দুটো গেট দিয়ে চুক্তির অতিরিক্ত (?) পানি বাংলাদেশ পেয়েছে। তিনি এটাকে কেন্দ্রীয় সরকারের ষড়যন্ত্র হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। মমতার এ ‘অভিযোগের’ পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে বলতে পারব না। কেননা এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বা ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কলকাতার প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার তার নয়াদিল্লির প্রতিনিধির পাঠানো এক প্রতিবেদনে (১৮ ফেব্র“য়ারি) জানিয়েছে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এটাই হচ্ছে মোদ্দা কথাÑ আদৌ তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে না!
ভারতের রাজনীতিতে মমতা ব্যানার্জি একটি ‘আনপ্রেডিকটেবল ক্যারেক্টার’। তিনি কী করবেন, কখন করবেন বলা খুব মুশকিল। কেন্দ্রে তার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় কংগ্রেসের মিত্র। বেশ ক’জন মন্ত্রীও রয়েছেন কেন্দ্রে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেস সমর্থন করেছিল মমতাকে। যদিও অনেক আগেই পশ্চিমবঙ্গে একটি ‘ক্ষেত্র’ তৈরি করে ফেলেছেন মমতা। বিধানসভার নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। তিনি এখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মমতাকে নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আমাদের সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীরা কেন জানি মমতাকে একটু বেশিই পছন্দ করেন। এর একটা কারণ হতে পারে মমতার পূর্বপুরুষ যশোরের অধিবাসী ছিলেন। তিনি বাঙালি। এজন্য আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখনই নয়াদিল্লি গেছেন, সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন ‘পদ্মার ইলিশ’, যা নাকি মমতার খুব পছন্দের। মমতা যখন পশ্চিমবঙ্গে বিজয়ী হলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সব প্রটোকল ভেঙে ফোন করেছিলেন মমতাকে। কিন্তু মমতাকে বোঝা খুব কঠিন। মমতা বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়াননি। মনমোহনের ঢাকা সফরের আগে একটি তিস্তাচুক্তির সমঝোতার কথা (বাংলাদেশ পাবে তিস্তার পানির ৪৮ ভাগ, আর ভারত ৫২ ভাগ) আমরা শুনেছিলাম। কিন্তু তখন মমতা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে কোনভাবেই ২৫ ভাগের ওপরে পানি দেয়া সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সরকার মমতাকে এ বিষযে বোঝাতে পারেননি। গত ১৯ ফেব্র“য়ারি কলকাতা গিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব রঞ্জন মাথাই। কিন্তু ফলাফল শূন্য। এখন তিস্তার রেশ কাটতে না কাটতে মমতা আপত্তি তুললেন, ফারাক্কায় বাংলাদেশ বেশি পানি পাচ্ছে। গঙ্গাচুক্তি নিয়েও এখন তার আপত্তি! কিন্তু মমতাকে খুশি করেই নতুন একটি ‘তিস্তা ফর্মুলা’ নিয়ে এগুতে চাচ্ছেন মনমোহন সিং।
নতুন ফর্মুলা অনুযায়ী যেটি স্পষ্ট তা হচ্ছে মমতাকে ‘খুশি’ করেই মনমোহন সিং তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিচ্ছেন। মমতা এর আগে হুমকি দিয়েছিলেন, বাংলাদেশকে ২৫ ভাগের বেশি পানি দেয়া যাবে না। এখন কেন্দ্র অনেকটা সেই সুরে সুর মিলিয়ে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির প্রস্তাব দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশকে। ভারতের প্রস্তাবে দুটি অংশ থাকছে। শিলিগুড়ির পাশে গজলডোবায় যে বাঁধ রয়েছে, সেখান থেকে ২৫ ভাগ দেয়া হবে বাংলাদেশকে। পরে দোমোহনিতে এসে যে পানি পাওয়া যাবে, সেখান থেকে মোট ৫০ ভাগ পানি দেয়া হবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, দোমোহনি এলাকা ‘রিচার্জ সাইট’। এখানে তিস্তার উপনদী থেকে এবং বৃষ্টির পানি থেকে পানির প্রবাহ বেড়ে যায়, পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘রিচার্জ সাইট’। পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে বাকি ২৫ ভাগ পানি দেয়া সম্ভব। এই যুক্তি মমতা ও তার উপদেষ্টাদের কাছে কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে, সে বিষয়ে অবশ্য আমরা নিশ্চিত নই। মমতা ব্যানার্জি তিস্তার পানি ভাগাভাগি, একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ নিশ্চিত করার ব্যাপারে কল্যাণ রুদ্রকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। কমিটি এই ফেব্র“য়ারিতেই তাদের রিপোর্ট দেবে। এটা বিবেচনায় রেখেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাই এ মাসের ১৯ তারিখ কলকাতা গেলেন। ধারণা করা হচ্ছে ওই সময় নতুন ফর্মুলার আলোকে চুক্তিটি চূড়ান্ত করা হবে। যদিও এ দফায়ও মমতার মন গলেনি। মমতা ব্যানার্জির সম্মতি পাওয়ার পরই আগামী মার্চে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর করার কথা। শোনা যাচ্ছে ‘কাকাবাবু’ প্রণব মুখার্জিও নাকি আসবেন। উদ্দেশ্য একটাই, নয়া চুক্তিতে বাংলাদেশের সম্মতি আদায় করা। প্রশ্ন হচ্ছে, নয়া চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হবে?
যতটুকু জানা গেছে, এটি হচ্ছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি। গঙ্গাচুক্তির মতো স্থায়ী কোন চুক্তি হবে না এটি। দ্বিতীয়ত, তিস্তার পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ একাই ফ্যাক্টর নয়, বরং সিকিমও একটি ফ্যাক্টর। অথচ সিকিমকে এই চুক্তির আওতায় আনা হয়নি। সিকিমের পবন চামলিং সরকার তিস্তাকে ব্যবহার করে ২৭টি হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। সিকিম থেকে প্রবাহিত ১৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাহাড়ি তিস্তার মূল নদীতে এবং শাখা নদীতে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সিকিম। একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজন হয় ৫ শতাংশ পানি। একসঙ্গে ২৭টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র উৎপাদনে গেলে তিস্তায় কী পরিমাণ পানি থাকবে, এটা নিয়ে সন্দেহ করেছেন অনেকেই। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গই বা কতটুকু পানি পাবে গজলডোবায়, কিংবা বাংলাদেশকেই বা কী পরিমাণ পানি দেবে ভারত, এটা একটা বড় প্রশ্ন এখন। তৃতীয়ত, একই নদীর ওপর এনএইচপিসির রয়েছে দুটি প্রকল্পÑ ৩৩২ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পে রয়েছে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এ কারণে তিস্তায় যথেষ্ট পানি থাকার কথা নয়। চতুর্থত, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়নে যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। এর অংশ হিসেবে ২৫ বছর আগে তৈরি ৩০ কি.মি. দীর্ঘ বাঁ-হাতি খালে তিস্তা থেকে পানি নিয়ে এসে ছাড়া হয়েছে। এতে উপকৃত হয়েছে সেখানকার ১১ হাজার হেক্টর জমির সেচকাজ। বাংলাদেশকে না জানিয়ে উজানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পানি প্রত্যাহার করে নিতে পারে কিনা, সেটা একটা বড় প্রশ্ন হয়েই রইল। বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করতে পারে। পঞ্চমত, ২০০৯ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ‘জাতীয় প্রকল্প’ হিসেবে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের ৬টি জেলার ৯ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০১৫ সালে। এই ব্যারাজ পুরোপুরিভাবে চালু হলে বাংলাদেশের পানিপ্রাপ্তি কমে যাবে শুধু তাই নয়, বরং ড্যামসংলগ্ন এলাকায় ভূমিধস বৃদ্ধি পাবে, নদীতে নুড়িপাথরের প্রবাহ বাড়বে, বিপুল পলি বাংলাদেশে প্রবেশ করে বাংলাদেশের নদী ভরিয়ে ফেলবে। ভূমিকম্পের সম্ভাবনাও বাড়বে। ইতিমধ্যে ভারত নিয়ন্ত্রিত গজলডোবা ব্যারাজের বিরূপ প্রভাবে লালমনিরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তাসহ ছোট-বড় ১২টি নদী নাব্য হারিয়ে আবাদি জমি ও খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে (আমার দেশ, ১৪ ফেব্র“য়ারি ২০১২)।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সিকিম হয়ে ভারতের দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ারের সমভূমি দিয়ে চিলাহাটি থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উত্তর খড়িবাড়ির কাছে ডিমলা উপজেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। চাতনাই থেকে এ নদী ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাটের সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, রংপুরের কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর হয়ে চিলমারীতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিশেছে। ডিমলা থেকে চিলমারী পর্যন্ত এ নদীর বাংলাদেশ অংশের মোট ক্যাচমেন্ট এরিয়া প্রায় ১ হাজার ৭১৯ বর্গকিলোমিটার।
১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দুই দেশের মন্ত্রিপর্যায়ের এক বৈঠকে তিস্তার পানিবণ্টনে ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ ও ৩৯ ভাগ ভারত এবং ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তে তিস্তার পানি প্রবাহের পরিমাণ বা কোন জায়গায় পানি ভাগাভাগি হবে এরকম কোন বিষয় উল্লেখ না থাকায় তা আর আলোর মুখ দেখেনি। অন্যদিকে ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ তিস্তার পানির ৮০ ভাগ দু’দেশের মাঝে বণ্টন করে বাকি ২০ ভাগ নদীর জন্য রেখে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ভারত সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। শুধু তাই নয়, ভারত তিস্তা ব্যারাজের সেচ এলাকা কমিয়ে দ্বিতীয় প্রকল্প বাতিল করার জন্য চাপ দেয় এবং সর্বশেষ এক চিঠিতে তিস্তার মাত্র ২০ ভাগ পানি ভাগাভাগি করার বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে চরম হঠকারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
১৯৮৫ সালে ভারত তিস্তার উৎসমুখে গজলডোবা নামক স্থানে ব্যারাজ নির্মাণ করায় শুষ্ক মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পটি সেচ প্রদানে অকার্যকর হয়ে পড়ে। এই সেচ প্রকল্পের উপকৃত এলাকা ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর। ইরিগেবল এরিয়া (কৃষিযোগ্য ভূমি) ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর। বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি নামক স্থানে ২৪ কোটি ৮৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় তিস্তা প্রকল্পের যে কাজ শুরু করেছে, তা বাস্তবায়িত হলে রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলার ৪ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে। এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে অতিরিক্ত প্রায় ১৬.২১ লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৪৩ হাজার টন গম উৎপাদিত হবে। এর বাজারদর ২০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু প্রধান নদীগুলো নাব্যতা হারিয়ে এখন পানিশূন্যতায় অসংখ্য চরের মরুদ্বীপে রূপান্তরিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্র“য়ারি সংবাদপত্রে (যুগান্তর) প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, তিস্তা ব্যারাজে পানিপ্রবাহ কমতে শুরু করেছে। এক দিনের ব্যবধানে কমেছে ২ হাজার কিউসেক। ১৩ ফেব্র“য়ারি পানির পরিমাণ যেখানে ছিল ৪ হাজার কিউসেক, পরের দিন তা কমে এসে দাঁড়ায় ২ হাজার কিউসেকে। সেচনির্ভর বোরো আবাদে তিস্তার সেচ কমান্ড এলাকায় পর্যাপ্ত পানি প্রয়োজন এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এভাবে পানি কমে গেলে বোরো আবাদ চরমভাবে ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা। এই যখন পরিস্থিতি, তখন তিস্তার পানি ভাগাভাগিতে নতুন যে ফর্মুলা নিয়ে ভারত অগ্রসর হচ্ছে, তাতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হবে না। তিস্তার উজানে পানির প্রবাহ আরও হ্রাস পাবে। ফলে আগামী দিনগুলোতে বোরো আবাদে নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুর জেলার ১৩ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৪৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে না। এতে করে বাংলাদেশ বড় ধরনের খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে।
তিস্তার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার রয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী স্বীকৃত। বাংলাদেশের কোনভাবেই মমতার চাপের কাছে নতি স্বীকার করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশকে চুক্তি করতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নয়। মমতার সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রমাণ করল সত্যিকার অর্থেই তিনি বাংলাদেশের ‘বন্ধু’ নন। পানি নিয়ে তিনি রাজনীতি শুরু করেছেন। তার উদ্দেশ্য, মনমোহন সিংকে চাপে রেখে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বেশি অর্থ আদায় করে নেয়া। তাই তিস্তার পানিবণ্টনের ‘নয়া ফর্মুলা’য় আদৌ জট খুলবে কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন।
ড. তারেক শামসুর রেহমান : প্রফেসর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
http://jugantor.us/enews/issue/2012/02/22/news0022.htm
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment