তারেক শামসুর রেহমান ০৯
মন্ত্রিপরিষদের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এ বিধিনিষেধ আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ বিধিনিষেধের আওতায় কী করা যাবে, কী করা যাবে না- তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এ বিধিনিষেধ করোনা নিয়ন্ত্রণে আদৌ কি কাজ করবে? নতুন করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হল এমন একটা সময়ে; যখন কোভিড-১৯ বিশ্বব্যাপী ‘নিউ ওয়েভ’ বা দ্বিতীয় একটি স্রোতের সূচনা করেছে। অর্থাৎ চীনের উহানে গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রথম শনাক্তের পর ছ’মাসেরও অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। এখন জুলাই-আগস্টে শুরু হয়েছে ‘দ্বিতীয় একটি স্রোত’; যদিও এ স্রোতে চীন যতটা না আক্রান্ত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল আর মেক্সিকোর মতো দেশ।
ইউরোপের ‘দ্বিতীয় স্রোত’ আঘাত হেনেছে এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। জাপানের বহুল পঠিত ‘এশিয়ান রিভিউ’-এর ২ আগস্টের সংখ্যায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১২৬টি দেশের মধ্যে ৭০ ভাগ দেশে আবার কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রে হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের কো-অর্ডিনেটর ডা. ডেবরা ব্রিকস নিজেও তা স্বীকার করে বলেছেন, কোভিড-১৯ নতুন এক স্তরে প্রবেশ করেছে। তিনি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টি রাজ্যে মৃত্যুহার বাড়ছে। আর গার্ডিয়ানের যুক্তরাষ্ট্র সংস্করণের এক প্রতিবেদনে (৩ আগস্ট) বলা হয়েছে, শুধু জুলাই মাসেই ৮০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের এই সংখ্যা প্রথম ছ’মাসে যত মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি।
এই যে পরিসংখ্যান, এ পরিসংখ্যান আমাদের কতগুলো প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। প্রথমত, কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ কমে যাবে; কিংবা একে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে-এ ধারণা ভুল। এখন ‘দ্বিতীয় স্রোত’ বা সেকেন্ড ওয়েভের কথা বলা হচ্ছে। আমি সম্ভাব্য একটি ‘তৃতীয় স্রোত’কেও অস্বীকার করতে পারি না। এ ক্ষেত্রে করণীয় কী? যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও এটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। এর সমাধান একটাই- প্রতিষেধক; অর্থাৎ টিকার ব্যবহার। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে কী করবে?
শুধু প্রজ্ঞাপন জারি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের ‘দায়িত্ব’ শেষ করেছেন। কোথাও বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ আমাদের চোখে ধরা পড়েনি। ঈদুল আজহার সময় গাদাগাদি করে ফেরিতে যাওয়া, দূরপাল্লার বাসে গ্রামের বাড়ি যাওয়া; আবার একই প্রক্রিয়ায় ঢাকায় ফিরে আসা- এ দৃশ্য দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত। ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখার কথা বলে যানবাহনের ভাড়া বাড়ানো হল। কিন্তু বাস মালিকরা তা মানছেন না। বাসে সেই পুরনো দৃশ্য- বাসভর্তি যাত্রী নিয়ে লোকাল ও দূরপাল্লার বাসগুলো চলাচল করছে। অথচ কী এক কৌশলে বাসভাড়া বাড়িয়ে নিলেন বাস মালিকরা। এসব দেখার কেউ নেই। ‘সামাজিক দূরত্ব’ বিষয়টি এখন শুধু কাগজ-কলমে রয়ে গেছে।
গবেষকরা দেখিয়েছেন, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুহার বেশি। এর কারণ হচ্ছে, সেখানে ‘সামাজিক দূরত্ব’ মানা হয়নি। ফলে সংক্রমণের হার বেড়েছে। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে একটি বড় ঝুঁকিতে পড়ল। কয়েক লাখ মানুষ ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামে গেছেন। এরা এখন ভাইরাসটি শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে দিলেন। আমেরিকায় যে ‘দ্বিতীয় স্রোত’ শুরু হয়েছে, সেখানে শহর নয়; বরং গ্রামাঞ্চল আক্রান্ত হয়েছে বেশি। বাংলাদেশের অবস্থাও তদ্রূপ। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের কোনো পরিসংখ্যান আমাদের হাতে নেই।
দ্বিতীয়ত, কোভিড-১৯-এ আক্রান্তের মাপকাঠি হচ্ছে দৈনিক টেস্ট। আমরা ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে টেস্টের আওতায় আনতে পারিনি। সেটা বোধকরি সম্ভবও নয়। প্রায় ১৭ কোটি জনগোষ্ঠীর দেশে দৈনিক টেস্ট হচ্ছে ১০-১২ হাজার। একটি পরিসংখ্যান আমরা পেয়েছি, তাতে দেখা যায়, ব্রিটেনে প্রতি ১০ লাখ নাগরিককে টেস্ট করার পর ‘করোনা পজিটিভ’ পাওয়া গেছে ২ লাখ ২৩ হাজার, যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৭০ হাজার আর বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর হিসাবে প্রতি ১০ লাখে মাত্র ৭ হাজার। এটা অপ্রতুল। এর একটি কারণ বাংলাদেশে টেস্টের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। চীনের উহানে যখন দ্বিতীয়বার কোভিড-১৯ আঘাত হানল, তখন উহানে বসবাসকারী প্রত্যেক নাগরিককে টেস্টের আওতায় আনা হয়েছে। চীনের সেই দক্ষতা ও সক্ষমতা রয়েছে এবং তারা সেটা প্রমাণ করেছে। আমাদের এখানে বাস্তবিক অর্থেই সেটা সম্ভব নয়। উপরন্তু টেস্টের নামে যে দুর্নীতি হয়েছে, তাতে মানুষের আস্থা কমে গেছে। এখন ব্যাপক জনগোষ্ঠীকে টেস্টের আওতায় আনতে না পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণের পুরো চিত্র আমরা পাব না।
তৃতীয়ত, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের যে ভূমিকা রাখার কথা ছিল, তা তারা রাখতে পারেনি। অধিদফতরের মহাপরিচালক অদক্ষতার অভিযোগে পদত্যাগ করলেন। অধ্যাপক খুরশীদ আলম নয়া মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু তার বক্তব্য প্রমাণ করে, দুর্নীতি উৎখাত করতে তার ‘কমিটমেন্ট’ কতটুকু। স্বাস্থ্য দফতরের দুর্নীতির খবরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যখন উষ্মা প্রকাশ করলেন, সেখানে দায়িত্ব নিয়ে তিনি বললেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির দায় সরকারের একার নয়। দুর্র্নীতির দায় আমাদের সবার। ব্যক্তিগতভাবে মানুষ সৎ না হলে কোনোভাবেই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব নয়।’ এ কথা বলে তিনি কী বোঝাতে চাইলেন? সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত- এটা বলা হয়নি কখনও। বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি তথা সাহেদ-সাবরিনা আর মিঠুর মতো অসৎ ঠিকাদারদের কারণে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ নয়-ছয় হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে আমার মতো অনেকেই আছেন, যারা সৎ জীবনযাপন করেন। সাহেদ-সাবরিনা আর মিঠুদের দুর্নীতির দায় আমি কেন বহন করব? অধ্যাপক খুরশীদ আমার মতো হাজার হাজার সৎ লোকের সঙ্গে মিঠুদের এক কাতারে দাঁড়িয়ে মূল্যায়ন করেছেন। এটা তিনি ঠিক করেননি। তিনি প্রকারান্তরে সাহেদ-মিঠুদের পরোক্ষ সমর্থন দিলেন কি না, সেটাই প্রশ্ন এখন। নয়া ডিজির পাশাপাশি ক্রিকেটার মাশরাফিও তার একটি বক্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন। তিনি এখন নড়াইল-২-এর সংসদ সদস্য। গত ২ আগস্ট একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষিত মানুষই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’ এ কী কথা বললেন একজন সংসদ সদস্য! এভাবে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে কি জনসম্মুখে হেয় করা চলে? মাশরাফি নিজে কি শিক্ষিত নন? এভাবে শিক্ষিত মানুষকে অভিযুক্ত করে তিনি কি প্রকারান্তরে নিজেই নিজেকে অভিযুক্ত করলেন না? সব সমাজেই কিছু খারাপ লোক থাকে। এসব খারাপ লোককে শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত এভাবে ভাগ করা যায় না।
চতুর্থত, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি বললেন বটে ‘দুর্নীতির দায় আমাদের সবার’; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরকে ‘নিয়ন্ত্রণে’ আনাই হচ্ছে তার প্রধান কাজ। নিঃসন্দেহে কোভিড-১৯ মোকাবেলাকে তিনি অগ্রাধিকারের তালিকায় প্রথমে রাখবেন, কিন্তু এটা করতে হলে তাকে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। শুধু দুর্নীতির কারণেই যে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার খারাপ দিকটি ফুটে উঠেছে, তেমনটি নয়। অনেক দিন থেকেই আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার মান খারাপ। আমরা জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের GHS Index-এর কথা উল্লেখ করতে পারি। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে ২০১৯ অক্টোবরে এ সূচক প্রকাশিত হয়েছিল, যাতে ১৯৫টি দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে (৬টি ক্ষেত্রে)। এ ক্ষেত্রে দেখা যায়, Prevention বা রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের স্কোর ২৭.৩ (বিশ্বে অবস্থান ১১৬), দ্রুত রোগ চিহ্নিতকরণে ৫০.৯ (৫৯), রোগ বিস্তার রোধে দ্রুত ব্যবস্থাপনা ও প্রশমনে ২৩.১ (১৬৫), স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তায় ১৪.৭ (১৩২), স্বাস্থ্যসেবা উন্নতকরণে আগ্রহ ও অর্থায়নে ৫২.৫ (৭৪), পরিবেশগত ঝুঁকি ও জৈব নিরাপত্তায় ৪৪.০ (১৪২)। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের স্কোর ৪৪.০ (বিশ্বে অবস্থান ১৪২)। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের অবস্থা যে ভালো- এ গবেষণা তা প্রমাণ করে না। সুতরাং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এ বিষয়গুলো আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এখন নয়া ডিজি দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি একজন ভালো শিক্ষকও বটে। শিক্ষকতা আর প্রশাসন এক নয়। দেখার পালা, তিনি প্রশাসক হিসেবে কতটুকু সফল হন। তিনি যত কম ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ দেবেন, তত ভালো করবেন। গতানুগতিক ধারায় প্রশাসন চালালে তিনি পারবেন না। স্বাস্থ্য প্রশাসনে বড় ও ব্যাপক সংস্কার আনতে হবে।
পঞ্চমত, করোনাভাইরাস ও এর প্রতিষেধক ধনী ও গরিব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এক ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করতে পারে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও তার পার্টনার Astra-Zeneca plc এবং ফাইজার Biotech SE সম্মিলিতভাবে করোনা প্রতিরোধে একটি টিকা আবিষ্কারের শেষ পর্যায় রয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরও অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। এখনও তৃতীয় ট্রায়াল সম্পন্ন হয়নি।
ব্লুমবার্গ গবেষকদের তথ্যমতে, ২০২২ সালের প্রথম কোয়ার্টারের আগে কোনোমতেই এক বিলিয়ন ডোজের এ টিকা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না (আগস্ট ২, ২০২০)। টিকা আবিষ্কারের আগেই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইইউ ও জাপান ১ বিলিয়ন ডোজ টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত জুনেই ১৮ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছিল পরীক্ষামূলক টিকার জন্য। ২০২১ সালের জন্য তাদের বরাদ্দ ২০ মিলিয়ন ডলার। প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের মতো গরিব দেশগুলো কী পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে এ টিকা পাবে? এ টিকা সরবরাহের ব্যাপারে গঠিত হয়েছে COVAX Initiative। ৭৫টি দেশ ইতোমধ্যে ইচ্ছা পোষণ করেছে এ উদ্যোগে যোগ দিতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ এ উদ্যোগের সঙ্গে নেই। এরা টিকা বিপণনে অর্থায়ন করবে। তবে GAVI বা The Global Alliance for Vaccines and Immunization আরও একটি উদ্যোগ নিয়েছে; তারা গরিব দেশগুলোকে বিনা মূল্যে টিকা সরবরাহ করবে। GAVI-এর অনেক উদ্যোগ অতীতে প্রশংসিত হয়েছিল। GAVI বিশ্বের ৭৬০ মিলিয়ন শিশুকে টিকা দিয়ে তাদের মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। বাংলাদেশ GAVI প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। এখন দেখার পালা, বাংলাদেশ কোন প্রক্রিয়ায় এ টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে।
সব মিলিয়ে কোভিড-১৯-এর ‘দ্বিতীয় স্রোত’ মোকাবেলায় কাগজে-কলমে বাংলাদেশের প্রস্তুতি আছে বটে; কিন্তু এই ‘প্রস্তুতি’ বাস্তব ক্ষেত্রে কী ফল বয়ে আনবে, সেটাই বড় প্রশ্ন এখন। এখন স্বাস্থ্য সেক্টর হওয়া উচিত একমাত্র ‘অগ্রাধিকার’। ব্রাজিলের দৃষ্টান্ত থেকে আমরা যেন শিখি- দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য সেক্টর এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া এ মহামারী মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
Jugantor
9.8.2020
0 comments:
Post a Comment