সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে যে বিতর্কের জন্ম হয়েছে, তা হচ্ছে ভারত মহাসাগরকে ঘিরে কি নতুন করে একটি স্নায়ুযুদ্ধের জন্ম হতে যাচ্ছে? বিশেষ করে গত ৩১ মে ভারতের প্রভাবশালী টিভি চ্যানেল ‘টাইম নাউ’ এর প্রতিবেদন, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যানেট্টার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত সাংগ্রি-লা সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ নৌ শক্তির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিয়োজিত করার ঘোষণার পর এ ধারণাটি এখন বদ্ধমূল হয়েছে যে, চলতি একুশ শতকেই স্নায়ুযুদ্ধের ‘নতুন এক রূপ’ আমরা দেখতে পাব। যারা আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা জানেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে প্রভাববলয়কে কেন্দ্র করে প্রথম স্নায়ুযুদ্ধের জন্ম হয়েছিল। ইউরোপের কর্তৃত্ব কার হাতে থাকবে, এটা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন। ইউরোপ মূলত দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলÑ একদিকে পশ্চিম ইউরোপ, যে দেশগুলো পুঁজিবাদী অর্থনীতি ও পুঁজিবাদনির্ভর গণতন্ত্রকে তাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করেছিল। অন্য দিকে পূর্ব ইউরোপ, যে দেশগুলো সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি গ্রহণ করেছিল এবং সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয় আদর্শ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময় থেকে ১৯৯১ সালের ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার আগ পর্যন্ত পরস্পর বিরোধী এই দুই আদর্শের মধ্যে লড়াই আমরা প্রত্যক্ষ করি। স্নায়ুযুদ্ধকে বলা হয় এমন একটি ‘যুদ্ধ’ যে ‘যুদ্ধ’ হয়নি বটে, কিন্তু তা ছিল যুদ্ধের চাইতেও ভয়ঙ্কর। প্রভাববলয় বিস্তারের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে আটলান্টিক মহাসাগরের ওপার থেকে এসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোকে নিয়ে গঠন করেছিল সামরিক জোট ‘ন্যাটো’। অন্য দিকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন পূর্ব ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিগুলোকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার স্বার্থেই গঠন করেছিল সামরিক জোট ‘ওয়ারশ’। ‘ন্যাটো’ আর ‘ওয়ারশ’ এর মধ্যে সামরিক প্রতিযোগিতা এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে ‘উন্নীত’ হয়েছিল যে, ইউরোপে একাধিকবার ‘পারমাণবিক যুদ্ধে’র সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ‘যুদ্ধ’ হয়নি বটে, কিন্তু বিংশ শতাব্দীর পুরোটা সময় এই দুই শক্তির মাঝে প্রতিযোগিতা বজায় ছিল। দুই পরাশক্তিই ইউরোপে পারমাণবিক বোমা বহনযোগ্য অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র মোতায়েন করেছিল। শুধুমাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন পতনের পরই এই স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটে। এর প্রধান কারণ ছিল একটি- রাশিয়া এখন আর ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি নয়। দু’টি আদর্শের (সমাজতন্ত্র বনাম পুঁজিবাদ) মাঝে যে দ্বন্দ্ব ছিল, সেই দ্বন্দ্বেরও অবসান ঘটে, যখন রাশিয়া আদর্শ হিসেবে মুক্তবাজার ও পুঁজিবাদকে গ্রহণ করে। উপরন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার অনেক আগেই ১৯৮৮ সালে গরবাচেভ ‘ওয়ারশ’ সামরিক জোট ভেঙে দিয়েছিলেন। যে কারণে ইউরোপে রাশিয়ার উত্থান যুক্তরাষ্ট্র তথা ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি নয়। আর তাই নতুন করে এই অঞ্চলে স্নায়ুযুদ্ধের জন্মের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কিন্তু ভারত মহাসাগর হচ্ছে সম্ভাব্য ক্ষেত্র, যেখানে নতুন করে স্নায়ুুযুদ্ধের জন্ম হতে যাচ্ছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে চীন। চীনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয় ও শঙ্কা’ এখন অনেক বেশি। প্রথমত, তত্ত্বগতভাবে চীন এখনও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তবে তারা এখন আর ধ্রুপদী মার্কসবাদ মাওবাদ অনুসরণ করে না। চীনে যে নতুন প্রজন্মের জন্ম হয়েছে এরা সমাজতন্ত্র বোঝে না। এরা বোঝে ভোগবাদ। চীনে একদলীয় কমিউনিস্ট পার্টির শাসন রয়েছে বটে। কিন্তু ঐ একদলীয় শাসনে চীনা নেতৃত্ব তিনটি বিষয়কে একত্র করেছে : ১. পূর্ব এশিয়ার (Now Authoritariamism,) ২. ল্যাতিন আমেরিকার করপরেটইজম (Corporatism) ৩. পশ্চিম ইউরোপের ‘স্যোসাল ডেমোক্র্যাসি (Social Democracy)। ফলে চীনকে এই মুহূর্তে একটি পুরোপুরি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যাবে না। বিশ্বে এখন যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে একমাত্র শক্তি হচ্ছে এই চীন। সুতরাং চীনকে ‘ছেঁটে ফেলার’ একটি স্ট্রাটেজি গ্রহণ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয়ত আগামী দুই দশকের মধ্যে চীন অন্যতম একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। চীনে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২ ট্রিলিয়ন (১ হাজার বিলিয়ন এক ট্রিলিয়ন) ডলার। ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৫০০টি বহুজাতিক সংস্থার নাম করেছে। তার মাঝে চীনের রয়েছে ৩৭টি। বিশ্বে যে জ্বালানি ব্যবহৃত হয়, চীন একাই শতকরা ১৬ ভাগ তা ব্যবহার করে। আর তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশ্বে চীনের অবস্থান তৃতীয়। চীন বিশ্বের রূপান্তরযোগ্য জ্বালানির বিনিয়োগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। গত বছর সাড়ে ৫ হাজার কোটি ডলার চীন এ খাতে খরচ করেছে। চীন বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতি। যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের পর তার স্থান। কিন্তু ২০২০ সালে জাতীয় উৎপাদনের দিক দিয়ে চীন জাপানকে ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্বের যত ফটোকপি, মাইক্রোওয়েভ ও জুতা উৎপাদন হয়, তার তিন ভাগের দু’ভাগ উৎপাদন হয় চীনে। বিশ্বের মোবাইল ফোনের শতকরা ৬০ ভাগ চীন একা উৎপাদন করে। একই সাথে বিশ্বের ডিভিডি উৎপাদনের শতকরা ৫৫ ভাগ, ক্যামেরার ৫০ ভাগ, ৩০ ভাগ পারসোনাল কম্পিউটার, শিশুদের খেলনার ৭৫ ভাগ চীন একাই উৎপাদন করে। চীনের এই অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে বড় ধরনের আঘাত হানছে। প্রভাব বলয় বিস্তারের রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এখন চীনকে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছে। তৃতীয়ত পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে চীনের যে বিনিয়োগ, তাতে উৎকণ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র। ২০০৩ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আফ্রিকাতে চীনের বিনিয়োগের পরিমাণ ৭৫ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। ল্যাটিন আমেরিকাতে এর পরিমাণ বেড়েছে ১ বিলিয়ন থেকে ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। আর এশিয়াতে বেড়েছে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন থেকে ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। সুদান ও কম্বোডিয়ায় বিনিয়োগের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে চীন। অন্য দিকে সুদানের পাশাপাশি ইরানের তেল সেক্টরে চীনের বড় বিনিয়োগ রয়েছে। ২০০৯ সালে চীন ইরানের তেল ও গ্যাস সেক্টরে ব্যাপক বিনিয়োগ করে। আগামী ৫ বছরে এই সেক্টরে তারা বিনিয়োগ করবে ১২০ বিলিয়ন ডলার। ইরানের তেলের অন্যতম ক্রেতা আজ চীন। আন্তর্জাতিক অবরোধ উপেক্ষা করে চীন ইরান থেকে তেল আমদানি করছে। এসব বিষয় মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। অনেকেরই জানার কথা যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে ঋণ নেয়। এই ঋণের পরিমাণ এখন প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার। এই ঋণ যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। চতুর্থত দক্ষিণ এশিয়ায় ক্রমবর্ধমান চীনের উপস্থিতি মার্কিন নীতি নির্ধারকদের চিন্তার অন্যতম কারণ। ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাসহ সকল বিদেশী সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে যে এক ধরনের ‘শূন্যতার’ সৃষ্টি হবে সেই শূন্যতা চীন পূরণ করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। চীন ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের লোগার প্রদেশের আইনাক (Aynak) নামক স্থানে কপার ফ্লিড উন্নয়নে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। নেপালের মহাসড়ক নির্মাণ, সীমান্ত পোর্ট নির্মাণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীন জড়িত রয়েছে। মিয়ানমারে মহাসড়ক নির্মাণ, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে চীন। মিয়ানমারের সমুদ্র উপকূলে যে বিশাল গ্যাস রিজার্ভ আবিষ্কৃত হয়েছে, তা এখন পাইপ লাইনের মাধ্যমে চীনের ইউনান প্রদেশে যাবে। আর ঐতিহাসিকভাবেই চীনের সাথে সামরিক চুক্তি রয়েছে মিয়ানমারের। মিয়ানমারের গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে চীন। পাকিস্তানেও (গাওদার) গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে চীন। কারাকোরাম পর্বতমালায় সড়ক পথও নির্মাণ করছে চীন। শ্রীলংকায় হামবানটোটায় (প্রেসিডেন্ট রাজা পাকসের এলাকা) গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করছে চীন। এই পোর্ট পুরোপুরিভাবে চালু হবে ২০২০ সালে। একই সাথে প্রায় ১৪০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে এই দ্বীপ রাষ্ট্রটির দক্ষিণাঞ্চলে একটি দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও তৈরি করছে চীন। হামবানটোটায় ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি তাদেরই তৈরি করে দেয়া। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের এই যে বিশাল বিনিয়োগ, তা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অজানা নয়। এমনকি বাংলাদেশেও বিনিয়োগ রয়েছে চীনের। বাংলাদেশেও সোনাদিয়া দ্বীপের গভীরে একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করতে চায় চীন। ভারত মহাসাগরভুক্ত বিভিন্ন সমুদ্র বন্দরকে যুক্ত করে চীন যে String of pearls বা মুক্তার মালার নীতি গ্রহণ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্র শুধু নয়, ভারতের স্বার্থকেও আঘাত হানছে।
ভারত মহাসাগর আগামী দিনে প্রত্যক্ষ করবে এক ধরনের ‘স্নায়ুযুদ্ধ’। এখানে কার নিয়ন্ত্রণ থাকবে এই বিপুল জলসীমা, তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামবে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এ অঞ্চলজুড়ে গাওদার (বেলুচিস্তান, পাকিস্তান), হামবানটোটা (শ্রীলংকা), সিটওয়ে, কিয়াউকপাইউই বন্দরে (মিয়ানমার) রয়েছে চীনের নৌবাহিনীর রিফুয়েলিং সুবিধা ও সাবমেরিন ঘাঁটি। কোকো দ্বীপপুঞ্জও চীনা নৌবাহিনী ব্যবহার করে। চীনের জ্বালানি চাহিদা প্রচুর। চীনের জ্বালানি চাহিদার শতকরা ৮০ ভাগ এ অঞ্চলে অবস্থিত মালাক্কা প্রণালী দিয়ে পরিবহন করা হয়। মধ্যপ্রাচ্য হয়ে শ্রীলংকা পর্যন্ত ভারত মহাসাগর। তারপর এই মহাসাগর হয়ে মালাক্কা প্রণালী (মালয়েশিয়া) অতিক্রম করে ইন্দোনেশিয়ার পাশ দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগর যাবার যে সমুদ্র পথ এই পথের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় চীন। যুক্তরাষ্ট্রও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম নৌ শক্তি। এ অঞ্চলে চীনা নৌ শক্তির উপস্থিতি তার কাম্য নয়। অথচ জ্বালানি সরবরাহের নিশ্চয়তার জন্যও এই রুটটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠুক, চীন তা কখনোই চাইবে না। এমনকি মধ্য এশিয়ার গ্যাস গাওদার বন্দরের মধ্যে দিয়ে পাইপ লাইনের মাধ্যমে চীনের পূর্বাঞ্চলে নিয়ে যাবার এক বিশাল ও ব্যয়বহুল প্রকল্পও হাতে নিয়েছে চীন। এজন্য ভারত মহাসাগরে তার নিয়ন্ত্রণ থাকা প্রয়োজন রয়েছে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রও চায় এই অঞ্চলে তার কর্তৃত্ব থাকুক। কেননা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দিনে দিনে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইরান আক্রমণ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারত মহাসাগর তথা গাওদার পোর্টের গুরুত্ব রয়েছে। গাওদার থেকে ‘স্ট্রেইট তার হরমুজ’ এর দূরত্ব মাত্র ১৮০ নটিক্যাল মাইল (এ পথ দিয়ে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের তেলবাহী জাহাজ চলাচল করে), আর ৭২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইরান সীমান্ত। বেলুচিস্তানের মরুভূমিতে কিছুদিন আগ পর্যন্ত একটি বিশাল ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্র ব্যবহার করতো। সুতরাং আগামী দিনে ভারত মহাসাগর অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে মার্কিন সমর নায়কদের কাছে।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘিরে ফেলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র Containment theory প্রয়োগ করেছিল। পশ্চিম ইউরোপ এ ক্ষেত্রে পালন করেছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আজ সেই Containment theory আবার নতুনভাবে প্রয়োগ হতে যাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে ভারত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অংশীদার। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে চারদিক থেকে ঘিরে চাপ প্রয়োগ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতাকে সঙ্কুচিত করতে চেয়েছিল, আজ চীনকে সামনে রেখেই সেই একই স্ট্রাটেজি রচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে লাভ কতটুকু হবে বলা মুস্কিল। তবে নতুন করে আবার উত্তেজনার জন্ম হবে। নতুন করে আবার জন্ম হবে স্নায়ুযুদ্ধের। ফলে ভারত মহাসাগরভুক্ত দেশগুলো এই প্রতিযোগিতায় কোনো একটি পক্ষ অবলম্বন করতে বাধ্য হবে। অতীতে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন বিশ্ব দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। অস্ত্র প্রতিযোগিতা বেড়েছিল। আজও সে রকম একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বিশ্ব। নিশ্চিত করেই বলা যায় এতে কোনো পক্ষের লাভের সম্ভাবনা ক্ষীণ বরং এতে করে এ অঞ্চলের দারিদ্র্য আরো বাড়বে।
0 comments:
Post a Comment