পাকিস্তান
নিয়ে গল্পটি আবারও শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দেশটির রাজনৈতিক
সংকটে দেখা করেছেন সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফের সঙ্গে। কী কথা হয়েছে
দুজনের সঙ্গে, জানার কোনো উপায় নেই। তবে একটা বড় ফাঁড়া তিনি কাটিয়ে উঠতে
পেরেছেন কি না, তা নিশ্চিত নই। তিনি দেখা করেছিলেন পিপিপির কো-চেয়ারম্যান
আসিফ আলি জারদারির সঙ্গেও। এতে কিছুটা কাজ হয়েছে বলে মনে হলো। জারদারি
সমর্থন করেছেন নওয়াজ শরিফকে। যুক্তি- সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা।
যুক্তিটা হয়তো ঠিক আছে। কিন্তু নওয়াজের ‘বিপদ’ কেটে গেছে- এটি বলা যাবে
না। এটি তো একটি সোজা হিসাব- কত বিপদে পড়লে একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী
সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করেন! সেটি নওয়াজ শরিফ করেছেন। পাকিস্তান নিয়ে
আমাদের দেশে কিংবা খোদ পাকিস্তানে যারা লেখালেখি করেন, তারা অনেক
‘তত্ত্ব’কে এখন সামনে নিয়ে এসেছেন। এক. ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরির
ইসলামাবাদ ঘেরাও আন্দোলনের পেছনে ছিল সেনাবাহিনী। উদ্দেশ্য পরিষ্কার- নওয়াজ
শরিফকে চাপে রেখে সুবিধা আদায় করে নেওয়া। এ স্ট্র্যাটেজিতে একটু ভুল ছিল-
বড় কোনো রাজনৈতিক দলের সমর্থন সেনাবাহিনী নিশ্চিত করতে পারেনি। পিপিপি বা
জামায়াত- কেউই ইমরান খানের আন্দোলনকে সমর্থন করেনি। ফলে সরকারের পতন হয়নি।
দুই. পর্দার অন্তরালে থেকে কলকাঠি নাড়িয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রেসিডেন্ট
জেনারেল পারভেজ মোশাররফ। মোশাররফ এখন অন্তরীণ। তার বিচার হচ্ছে। ১৯৯৯ সালে
নওয়াজকে উৎখাত করেই জেনারেল মোশাররফ ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন। দীর্ঘ ৯ বছর
ছিলেন ক্ষমতায়। নওয়াজ শরিফ ক্ষমতা পেয়ে যখন ‘বদলা’ নিতে চাইলেন,
সেনাবাহিনীর একটি অংশ এর বিরোধিতা করল। তাই ওই অংশের ‘ষড়যন্ত্র’-এর’ ফলেই
মাঠে নামলেন ইমরান খান ও তাহিরুল কাদরি। তিন. পাকিস্তানের ভেতরে ও বাইরে
একটি শক্তি চাচ্ছে, পাকিস্তানে একটি তৃতীয় শক্তির জন্ম হোক। অর্থাৎ মুসলিম
লীগ (নওয়াজ শরিফ) এবং পিপলস পার্টি পিপিপির (জারদারি) বাইরে একটি শক্তি-
যারা এ দুটি বড় দলের বাইরে থেকে ক্ষমতা পরিচালনা করবে। এই আন্দোলনের
উদ্দেশ্য ছিল তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতায় বসানো। কিন্তু তা এ মুহূর্তে সফল হয়নি।
এ মুহূর্তে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা প্রাধান্য পেল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে,
তা কতদিনের জন্য? আপাতত নওয়াজ শরিফ টিকে আছেন বটে কিন্তু নিঃসন্দেহে এই
সংকট থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। বলা ভালো, গত বছরের ১১ মের নির্বাচনে নওয়াজ
শরিফের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ বিজয়ী হওয়ার পর গত ৪ জুন ২০১৩ প্রধানমন্ত্রী
হিসেবে শপথ নেন। এর আগে দু’দুবার তিনি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন।
কিন্তু একবারও মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। ১৯৯০ ও ১৯৯৭- দু’দুবারই তিনি
নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। পাকিস্তানের অন্যতম রাজনৈতিক শক্তি সেনাবাহিনীর
কাছে তিনি কখনোই গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন না। ১৯৯৩ সালের ১৮ এপ্রিল
তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইসহাক খান তাকে ক্ষমতাচ্যুত করলেও পেছনে ছিল
সেনাবাহিনী। ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর সেনাপ্রধানের সঙ্গে দ্বন্দ্বের পরিণতিতে
তিনি সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। কিন্তু এবার? তিনি কি পারবেন তার
৫ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে? এ প্রশ্নের জবাব এ মুহূর্তে দেওয়া কঠিন। তবে
সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফের সঙ্গে তার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে গিয়ে
উন্নীত হয়, এর ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। জেনারেল রাহিলকে নিয়ে তার ভয়
অনেক। ২০১৩ সালে নভেম্বর জেনারেল রাহিল নয়া সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন। কোনো
নয়া সেনাপ্রধান পাকিস্তানের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই তার সঙ্গে
নওয়াজ শরিফের সম্পর্ক কেমন হয়, সে ব্যাপারটির প্রতিই দৃষ্টি থাকবে অনেকের।
নওয়াজ শরিফের জন্যও এটি একটি কঠিন পরীক্ষা। তার আস্থাভাজন জেনারেল তিনি খুব
কমই পাবেন সেনাবাহিনীতে। দুজন পূর্ণ জেনারেল ও ২১ জুন লেফটেন্যান্ট
জেনারেলের মধ্যে তিনি রাহিলকে বেছে নিয়েছিলেন। এখন রাহিলই তাকে চোখ
রাঙালেন। কিয়ানির মতোই একজন পাঞ্জাবি জেনারেল যে সেনাবাহিনীর স্বার্থ
দেখবে, এটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। তাই এমন কথা ইতোমধ্যে চাউর হয়ে গেছে,
বর্তমান সেনাপ্রধান অথবা সেনাবাহিনী যা চাইবে, এর বাইরে যেতে পারবেন না
প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের
মধ্যকার সম্পর্কের ওপর আগামীতে প্রভাব বিস্তার করবে, তা হচ্ছে
পাকিস্তানপন্থী তালেবানের সঙ্গে সরকারের সংলাপ ও সংলাপের ভবিষ্যৎ, ভারতের
সঙ্গে নওয়াজ শরিফের সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ, ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে
সব বিদেশি সৈন্য প্রত্যাহার ইত্যাদি। প্রধানমন্ত্রী এখন যে সিদ্ধান্তই নিন
না কেন, সেনাবাহিনীর স্বার্থ যাতে বিঘিœত না হয়, সেটি বিবেচনায় নিয়েই তিনি
সিদ্ধান্ত নেবেন। এক্ষেত্রে সরাসরি বিবাদে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কম। সিভিল
প্রশাসনকে ক্ষমতায় রেখেই সেনাবাহিনী তাদের প্রভাব অব্যাহত রাখবে।পাকিস্তানের
জন্য সমস্যা এখন অনেক। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে গত নির্বাচন
সম্পন্ন হয়েছিল, তা এখন বিতর্কিত হলো। পাকিস্তানে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে
সংবিধানের ২০তম সংশোধনী এনে সেখানে পরবর্তী নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। সাবেক বিচারপতি মীর
হাজার খান খোসো এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেন। তারা সাফল্যের সঙ্গে
এই সংসদ নির্বাচন (১৪তম) পরিচালনা করলেও (২০১৩) পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে
রেখে গেছেন বিভিন্ন প্রশ্ন। বিশেষ করে যে জঙ্গিবাদ পাকিস্তানের অস্তিত্বকে
এখন প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে, সরকার এই জঙ্গিবাদের উত্থান ঠেকাতে এখন কী
পদক্ষেপ নেবে? ৩টি প্রধান জঙ্গি সংগঠনের কথা বলা যায়, যাদের কর্মকা- আজ
আন্তর্জাতিক পরিসরেও ব্যাপক সমালোচিত- তেহরিক-ই-তালেবান, লস্কর-ই-তৈয়্যবা ও
জইসই মোহম্মদ। এর মধ্যে লস্কর-ই-তৈয়্যবা ও জইসই মোহম্মদ পাকিস্তানের বাইরে
ভারতে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পার্লামেন্ট
ভবনে হামলার জন্য এ দুই জঙ্গি সংগঠনকে দায়ী করা হয়। এ দুটো সংগঠনের
তৎপরতার কারণে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নত হয়নি। অন্যদিকে
তেহরিক-ই-তালেবান বেশিমাত্রায় আফগানিস্তানের তালেবান দ্বারা প্রভাবিত। তারা
পাকিস্তানের ভেতরেই তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ইসলামবিরোধী
রাজনীতিকদের হত্যা, জনসভায় আত্মঘাতী বোমা হামলা- তাদের অন্যতম কর্মকা-।
নির্বাচনের আগে তাদের সঙ্গে নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান সংলাপের প্রস্তাব
করেছিলেন। ওই সংলাপ আদৌ অনুষ্ঠিত হয় কি না, সেটি এখন বড় প্রশ্ন। বিচার
বিভাগের সঙ্গে প্রশাসনের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়, সেদিকে লক্ষ্য
থাকবে অনেকের। বর্তমান প্রধান বিচারপতি নিজাম-উল-মুলকের ভূমিকা এখনো স্পষ্ট
নয়। ইসলামাবাদে অবস্থানকারীদের উৎখাতের নির্দেশ দিয়ে প্রধান বিচারপতির
নেতৃত্বে একটি বোর্ড সবার দৃষ্টি কেড়েছে। কিন্তু অতীত বলে সাবেক প্রধান
বিচারপতি ইফতেখার মোহম্মদ চৌধুরী একাধিক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
মোশাররফ কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি ফিরেও এসেছিলেন। বিচার বিভাগের সঙ্গে
সেনাবাহিনীর সম্পর্ক পুরনো। তাই বিচার বিভাগের ভূমিকার দিকে রাজনৈতিক
বিশ্লেষকদের দৃষ্টি থাকবেই। পাকিস্তানের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আরও দুটো
কারণে সেনাবাহিনী নওয়াজ শরিফকে চাপের মুখে রাখবে। প্রথমটি দেশের বিদ্যুৎ
পরিস্থিতি, দ্বিতীয়টি বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। পাকিস্তানের
বর্তমান অর্থনীতির অবস্থা খুবই শোচনীয়। প্রায় ১৮০ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৮ কোটি
জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটির প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৩ শতাংশ। বৈদেশিক রিজার্ভে
যা আছে, তা দিয়ে মাত্র দুই মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সাম্প্রতিক
রেমিট্যান্সের প্রবাহও কম। বাজেট ঘাটতির হার ৮ শতাংশ। বেকার সমস্যা প্রবল।
বিনিয়োগের পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয়। জাতিসংঘের ঐঁসধহ উবাবষড়ঢ়সবহঃ জবঢ়ড়ৎঃ
(ঐউজ) অনুযায়ী ১৮৬ দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ১৪৬-এ। বাংলাদেশের
অবস্থান ১৪২। তুলনামূলক বিচারে পাকিস্তানের চেয়ে ভালো। বয়স্কদের মধ্যে ৫৫
শতাংশই অশিক্ষিত। পাখতুনসোয়া প্রদেশ কিংবা ঋঅঞঅ এলাকায় শিশু, বিশেষ করে
মেয়েশিশুদের স্কুলে না যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। এমনকি দাঙ্গা-বিক্ষুব্ধ
করাচি শহরের ৪ ভাগের ১ ভাগ শিশু স্কুলে যায় না। তবে পাঞ্জাব প্রদেশে
শিশুদের স্কুলে যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। আইএমএফের সঙ্গে প্রায় ৯ বিলিয়ন
ডলারের ঋণচুক্তি নিয়ে আলোচনা আটকে আছে। সরকারের জন্য এটি হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে, তা এখন মানতে বাধ্য হবে সরকার। বিনিয়োগের জন্য
বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিদ্যুৎ ঘাটতি। ১৫ বছর আগেও পাকিস্তান ছিল বিদ্যুতে
সারপ্লাস। তখনকার পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের পরিস্থিতি মেলানো যাবে না।
বিদ্যুতের লোডশেডিং এখন খুব স্বাভাবিক ব্যাপার পাকিস্তানে। দিনের বেশিরভাগই
বিদ্যুৎ থাকে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব,
অসমতা ইত্যাদি সমস্যা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থাকে অত্যন্ত নাজুক
অবস্থায় নিয়ে গেছে। এদিকে বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নওয়াজ শরিফ সরকারকে
বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পাকিস্তান-ইরান গ্যাস পাইপ নিয়ে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ- আপত্তি রয়েছে। পাকিস্তান জ্বালানি সংকট মেটাতে ইরান
থেকে গ্যাস আমদানি করা সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। কিন্তু
যুক্তরাষ্ট্রের এতে আপত্তি রয়েছে। এমনিতেই পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে
অব্যাহত ড্রোন হামলা এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করেছে। বিগত
সরকার এই ড্রোন হামলা বন্ধের ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।
নয়া সরকারের জন্য বিষয়টি হবে বেশ স্পর্শকাতর। কেননা এ ড্রোন হামলা
পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একটি জনমত তৈরি করেছে। নির্বাচনের আগে
নির্বাচনী প্রচারে ইমরান খান গুলি করে ড্রোন ফেলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি
দিয়েছিলেন। ভারতের সঙ্গেও সম্পর্কের তেমন উন্নতি হয়নি। গত বছর পাকিস্তানের
কারাগারে ভারতীয় এক বন্দির মৃত্যু (যিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর
এজেন্ট ছিলেন) কেন্দ্র করে এ সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটেছিল। একই সঙ্গে
বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের
জন্য চিন্তার অন্যতম কারণ। বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে পাকিস্তানের
অন্যান্য প্রদেশে উন্নয়ন ঘটলেও খোদ বেলুচিস্তানে এর ছোঁয়া লাগেনি। বরং
বেলুচদের অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের জাতীয় নেতাদের হত্যা করা
হচ্ছে। বেলুচিস্তানে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছে- যারা স্বাধীন
বেলুচ রাষ্ট্রের জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করছে। ওই বেলুচিস্তানের
ভবিষ্যৎ এখন বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে। সম্প্রতি বেলুচিস্তানের ভূরাজনৈতিক
গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। বেলুচিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ইরানি প্রদেশ
সিসতান বেলুচিস্তানের। অন্যদিকে বেলুচিস্তানের সাওদারে রয়েছে একটি গভীর
সমুদ্রবন্দর। চীন এ বন্দরটি নির্মাণ করে দিয়েছে। ভারত মহাসাগরে চীনা
নৌবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সাওদারের গুরুত্ব অনেক
বেড়েছে। এমনকি সিসতান বেলুচিস্তানের সঙ্গে একত্র হয়ে অদূর ভবিষ্যতে একটি
গ্রেটার বেলুচিস্তান রাষ্ট্র গঠন বিচিত্র কিছু নয়। ভারত মহাসাগরে জ্বালানি
সরবরাহ লাইন নিশ্চিত রাখা কিংবা তেহরানের কেন্দ্রীয় সরকারকে ‘চাপে’ রাখার
কাজে এই বেলুচিস্তান আগামী দিনে বাইরের শক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে
পারে।
সুতরাং পাকিস্তান নিয়ে গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। গত বছর নির্বাচন হয়েছে বটে কিন্তু তা পাকিস্তানে স্থিতিশীলতা দিতে পারেনি। নওয়াজ শরিফের ক্ষমতায় থাকার কথা ২০১৮ সাল পর্যন্ত। তবে মাত্র ১৬ মাসের মাথায় সরকার উৎখাতের আন্দোলন শুরু হলো। অনেক ‘খেলোয়াড়’ এখন রাজনীতির মাঠে। সুতরাং নওয়াজ শরিফের দিনগুলো আগামীতে যে সুখের হবে- এটি মনে করার কারণ নেই। লাহোর হাইকোর্ট ইতোমধ্যে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চালু করার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হচ্ছে, নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন! তাহিরুল কাদরি আন্দোলন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের ৩১ এমপির পদত্যাগ স্পিকার গ্রহণ করেছেন। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হলো। তাহলে কি পাকিস্তান কোনো বিকল্প প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে? ‘হত্যা মামলা’য় অভিযুক্ত হয়ে কি নওয়াজ সরে দাঁড়াচ্ছেন? তাই বলছিলাম, পাকিস্তান নিয়ে গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। পর্দার অন্তরালে থেকে গুটি চালাচ্ছে অন্য কেউ। Daily Amader Somoy 31.08.14
সুতরাং পাকিস্তান নিয়ে গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। গত বছর নির্বাচন হয়েছে বটে কিন্তু তা পাকিস্তানে স্থিতিশীলতা দিতে পারেনি। নওয়াজ শরিফের ক্ষমতায় থাকার কথা ২০১৮ সাল পর্যন্ত। তবে মাত্র ১৬ মাসের মাথায় সরকার উৎখাতের আন্দোলন শুরু হলো। অনেক ‘খেলোয়াড়’ এখন রাজনীতির মাঠে। সুতরাং নওয়াজ শরিফের দিনগুলো আগামীতে যে সুখের হবে- এটি মনে করার কারণ নেই। লাহোর হাইকোর্ট ইতোমধ্যে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চালু করার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হচ্ছে, নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন! তাহিরুল কাদরি আন্দোলন থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। অন্যদিকে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের ৩১ এমপির পদত্যাগ স্পিকার গ্রহণ করেছেন। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হলো। তাহলে কি পাকিস্তান কোনো বিকল্প প্রধানমন্ত্রী পাচ্ছে? ‘হত্যা মামলা’য় অভিযুক্ত হয়ে কি নওয়াজ সরে দাঁড়াচ্ছেন? তাই বলছিলাম, পাকিস্তান নিয়ে গল্পটা এখনো শেষ হয়নি। পর্দার অন্তরালে থেকে গুটি চালাচ্ছে অন্য কেউ। Daily Amader Somoy 31.08.14
0 comments:
Post a Comment