রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার আছে অনেক

 পাকিস্তান সরকার শেষ পর্যন্ত টিকে গেল বলেই মনে হচ্ছে। ইমরান খান আর তাহিরুল কাদরির যৌথ আন্দোলনের মুখে সেনাবাহিনী ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিলে একটা গুজবের জন্ম হয়েছিল যে সেনাবাহিনী সেখানে ক্ষমতা নিতে যাচ্ছে। কিন্তু নওয়াজ শরিফের সঙ্গে জারদারির বৈঠক বদলে গেল দৃশ্যপট। জারদারি সমর্থন করলেন নওয়াজ শরিফকে। অথচ পাকিস্তানের ইতিহাস বলে পিপলস পার্টি, জারদারি যার কো-চেয়ারম্যান, আর নওয়াজ শরিফ যিনি মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান, এ দুটি বড় দলের মধ্যকার দ্বন্দ্বে বারবার সেখানে সরকারের পতন ঘটেছে। নওয়াজ শরিফ দুবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বেনজির ভুট্টোও ছিলেন দুবার প্রধানমন্ত্রী। তবে কেউই তাদের টার্ম পূর্ণ করতে পারেননি। নওয়াজকে ক্ষমতাচ্যুত করেই সেনাবাহিনী ক্ষমতা নিয়েছিল। জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতায় ছিলেন দীর্ঘ প্রায় নয় বছর। তারপর মোশাররফের পদত্যাগ জারদারি তথা পিপিপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। পিপিপি তার পাঁচ বছরের টার্ম পূর্ণ করার পরই নওয়াজ শরিফ ক্ষমতায় আসেন গেল বছর। একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই নির্বাচন পরিচালনা করে। কিন্তু মাত্র ১৬ মাসের ব্যবধানে পাকিস্তান আবার অস্থিতিশীল হয়ে উঠল। কিন্তু এ আন্দোলনে পিপিপি নওয়াজ শরিফবিরোধী অবস্থানে যায়নি। বরং দুর্বল অবস্থানে থেকেও শরিফকে সমর্থন করেছে। বলা হয় সেনাবাহিনীই ইমরানের পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছে। সেনাবাহিনী তো সেখানে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি। গণতান্ত্রিক শক্তিকে কোনোদিনই বিকশিত হতে দেয়নি এ সেনাবাহিনী।
বর্তমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে রয়েছে দুজন পূর্ণ জেনারেল, ২১ জন লে. জেনারেল, আর ১৫০ জন মেজর জেনারেল। নৌবাহিনী আর বিমান বাহিনীর হিসাব না হয় নাইবা দিলাম। এই বিপুল প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি শক্তি। এ শক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন 'পেট্রোনাইজ' করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়া হয় তার একটা বড় অংশ যায় সেনাবাহিনীর কাছে। পরোক্ষভাবে এই সাহায্যের মধ্য দিয়ে পাক-সেনাবাহিনীকে 'পেট্রোনাইজ' করে এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন তাতে কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেয়া, ঋঅঞঅ অঞ্চলে উগ্রপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যর্থতা ও এর রেশ ধরে ওই অঞ্চলে অব্যাহত ড্রোন বিমান হামলা ইত্যাদির কারণে দু'দেশের সম্পর্ক এখন নিম্নস্তরে রয়েছে। এই যখন পরিস্থিতি, তখন গেল বছর এসেছিল উচ্চ আদালতের রায়। অপসারিত হয়েছিলেন গিলানি। আর রাজা আশরাফের অবস্থাও ছিল নড়বড়ে। পাকিস্তানের ইতিহাস বলে অতীতে কখনই কোনো রাজনৈতিক সরকার সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা পরিচালনা করতে পারেনি। একদিকে যেমনি ছিল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাসতা ও আস্থাহীনতা, অন্যদিকে ছিল অসাংবিধানিক শক্তির ক্ষমতা গ্রহণের অভিলাস। বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও বিচার বিভাগের কোনো কোনো সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের যাত্রা পথকে আরো পিচ্ছিল করে দিয়েছিল। সাবেক প্রধান বিচারপতি ইফতেখার চৌধুরীর কোনো কোনো সিদ্ধান্ত বড় ধরনের সঙ্কটের জন্ম দিয়েছিল পাকিস্তানে। এখানে বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা অদৃশ্য সম্পর্ক রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতির পেছনেও ছিল বিচার বিভাগের একটি সিদ্ধান্ত, যেখানে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে একটি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার পর পরই শুরু হয় ইসলামাবাদ অভিমুখে ইমরান-কাদরির লং মার্চ। আপাতত নওয়াজ কিছুটা রক্ষা পেয়েছেন বটে। কিন্তু অচিরেই তিনি দুর্নীতিসহ নানা জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে যেতে পারেন। নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রয়েছে। সেই মামলা পুনরুজ্জীবিত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ করেই বিচার বিভাগ এ ধরনের বিচার কার্যক্রম শুরু করবে না। সম্ভবত তারা অপেক্ষা করবে আরো কিছুদিনের জন্য। পর্দার অন্তরালে থেকে সেনাবাহিনী কী কলকাঠি নাড়ায় তাও দেখার বিষয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিচার বিভাগের একটা 'সখ্য' রয়েছে।
তবে নওয়াজ শরিফের মূল সমস্যা হচ্ছে অর্থনীতি। পাকিস্তানের অর্থনীতির অবস্থা খুবই শোচনীয়। প্রায় ১৮০ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১৮ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটির প্রবৃদ্ধির হার মাত্র ৩ ভাগ। বৈদেশিক রিজার্ভে যা আছে তা দিয়ে মাত্র দুই মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিট্যান্সের প্রবাহও কম। বাজেট ঘাটতির হার শতকরা ৮ ভাগ। বেকার সমস্যা প্রবল। বিনিয়োগের পরিস্থিতিও আশাব্যঞ্জক নয়। জাতিসংঘের ঐউজ (ঐঁসধহ উবাবষড়ঢ়সবহঃ জবঢ়ড়ৎঃ) অনুযায়ী ১৮৬ দেশের মধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ৪৬-এ। বাংলাদেশের অবস্থান ৩৪-এ। তুলনামূলক বিচারে পাকিস্তানের চেয়ে ভালো। বয়স্কদের মধ্যে শতকরা ৫৫ ভাগই অশিক্ষিত। পাখতুনখোয়া প্রদেশ কিংবা ঋঅঞঅ এলাকায় শিশু, বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। এমনকি দাঙ্গা বিক্ষুব্ধ করাচি শহরের চার ভাগের একভাগ শিশু স্কুলে যায় না। তবে পাঞ্জাব প্রদেশে শিশুদের স্কুলে যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। আইএমএফের সঙ্গে প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি নিয়ে আলোচনা আটকে আছে। সরকারের জন্য এটা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছে তা এখন মানতে বাধ্য হবে সরকার। বিনিয়োগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিদ্যুৎ ঘাটতি। ১৫ বছর আগেও পাকিস্তান ছিল বিদ্যুতে সারপ্লাজ। তখনকার পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের পরিস্থিতিকে মেলানো যাবে না। বিদ্যুতের লোডশেডিং এখন খুব স্বাভাবিক ব্যাপার পাকিস্তানে। দিনের বেশিরভাগ সময়েই বিদ্যুৎ থাকে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বেকারত্ব, অসমতা ইত্যাদি নানা সমস্যা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থাকে অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় নিয়ে গেছে। এদিকে বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নয়া সরকারকে নানা ধরনের প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে। পাকিস্তান-ইরান গ্যাস পাইপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ- আপত্তি রয়েছে। পাকিস্তান তার জ্বালানি সঙ্কট মেটাতে ইরান থেকে গ্যাস আমদানি করা সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের তাতে আপত্তি রয়েছে। এমনিতেই পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে অব্যাহত ড্রোন বিমান হামলা এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা জটিলতা তৈরি করেছে। বিগত সরকার এই ড্রোন বিমান হামলা বন্ধের ব্যাপারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। নয়া সরকারের জন্য বিষয়টি হবে বেশ স্পর্শকাতর। কেননা এই ড্রোন হামলা পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একটি জনমত তৈরি করেছে। নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রচারণায় ইমরান খান ড্রোন বিমান গুলি করে ফেলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ভারতের সঙ্গেও সম্পর্কের তেমন উন্নতি হয়নি। গেল বছর পাকিস্তানের কারাগারে একজন ভারতীয় বন্দির মৃত্যুকে (যিনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা 'র'-এর এজেন্ট ছিলেন) কেন্দ্র করে এই সম্পর্কের আরো অবনতি ঘটেছিল। একই সঙ্গে বেলুচিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন এখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য চিন্তার অন্যতম কারণ। বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশে উন্নয়ন ঘটালেও খোদ বেলুচিস্তানে এর ছোঁয়া লাগেনি। বরং বেলুচিদের অভিযোগ রয়েছে সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের জাতীয় নেতাদের হত্যা করা হচ্ছে। বেলুচিস্তানে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের জন্ম হয়েছে, যারা 'স্বাধীন বেলুচ রাষ্ট্রের' জন্য সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালনা করছে। এই বেলুচিস্তানের ভবিষ্যৎ এখন নানা প্রশ্নের মুখে।
সাম্প্রতিক সময়গুলোয় বেলুচিস্তানের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। বেলুচিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ইরানি প্রদেশ সিসতান বেলুচিস্তানের। অন্যদিকে বেলুচিস্তানের গাওডারে রয়েছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর। চীন এই বন্দরটি নির্মাণ করে দিয়েছে। ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গাওডারের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। এমনকি সিসতান বেলুচিস্তানের সঙ্গে একত্রিত হয়ে অদূর ভবিষ্যতে একটি গ্রেটার বেলুচিস্তান রাষ্ট্র গঠন বিচিত্র কিছু নয়। ভারত মহাসাগরের জ্বালানি সরবরাহ লাইন নিশ্চিত রাখা কিংবা তেহরানের কেন্দ্রীয় সরকারকে 'চাপে' রাখার কাজে এই বেলুচিস্তান আগামী দিনে বাইরের শক্তির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। অনেকেরই মনে থাকার কথা বেলুচিস্তানের গভীর মরুভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানঘাঁটি ছিল। ২০১২ সালে পাকিস্তান এটি বন্ধ করে দেয়। পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার এটাও একটা কারণ। নওয়াজ শরিফের সমস্যা তাই অনেক।
বেশ কিছুদিন আগে পাকিস্তান সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন মার্কিন আইন প্রণেতারা। মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলীয় নেতারা মন্তব্য করেছিলেন, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি 'বস্নাক হোল'-এর মতো। অর্থাৎ তারা যা বলতে চেয়েছেন তা হচ্ছে পাকিস্তান যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। এটা সেই 'বস্নাক হোল'-এর মতো, যার কোনো শেষ নেই। মার্কিন কংগ্রেসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, বিশেষ করে ডেমোক্রেট দলীয় গ্রে অ্যাকারম্যান কিংবা রিপাবলিকান দলীয় ড্যানা রোহরাব্যাচারের মতো ব্যক্তিত্ব যখন পাকিস্তান সম্পর্কে এ ধরনের মন্তব্য করেন তখন পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠিত না হয়ে পারা যায় না। মার্কিন আইন প্রণেতারা এ ধরনের মন্তব্য করেছিলেন ২০১৩ সালে মে মাসে কংগ্রেসের মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক একটি প্যানেলে আমন্ত্রিত হয়ে। মার্কিন আইন প্রণেতাদের এই মন্তব্য যখন ওয়াশিংটনে নীতি-নির্ধারকদের চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে ঠিক তখনই নওয়াজ শরিফের সরকার একটি ঝুঁকির মুখে পড়ল।
এটা ঠিক এই সঙ্কটে নওয়াজ শরিফের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে পিপিপি। পিপিপির সমর্থন না পেলে হয়তো পরিস্থিতি আজ অন্যরকম হতে পারত। নওয়াজ শরিফের পতনও হতে পারত। তা হয়নি। এটা পাকিস্তানের গণতন্ত্রের জন্য একটি ভালো দিক। একটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে তাদের পাঁচ বছরের টার্ম পূরণ করতে দেয়া উচিত। কিন্তু তা না করে আন্দোলনের নামে সরকারের পতন ঘটানো কোনো ভালো লক্ষণ হতে পারে না। পাকিস্তানের প্রেক্ষাপটে পিপিপি ও নওয়াজ শরিফের মধ্যে একটি সমঝোতাও গণতন্ত্রের উত্তরণের জন্য একটি ভালো খবর। দুটি বড় শক্তি যখন এক হয় তখন অসাংবিধানিক শক্তি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না।
ইমরান খানকে সামনে ঠেলে দিয়ে সেনাবাহিনী মূলত একটা 'চেষ্টা' চালাল। কিন্তু পিপিপি পাশে এসে দাঁড়ানোয় সেনাবাহিনীর সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল। এ 'আন্দোলন' থেকে এটাই বড় পাওয়া। ইমরান খান ভুল করেছেন। খুব দ্রুত সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সব দলের ঐক্য তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি। নিশ্চয়ই এ 'আন্দোলন' থেকে সবাই শিখবেন। ইমরান খানের যেমনি শেখার আছে, ঠিক তেমনি শেখার আছে নওয়াজ শরিফেরও।
Daily Jai Jai Din01.09.14

0 comments:

Post a Comment