রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ফিলিস্তিন সঙ্কটের মাত্রা

গাজায় শেষ পর্যন্ত আবারো একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। মিসরের মধ্যস্থতায় কায়রোয় বেশ কিছু দিন ধরেই একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। প্রথম দফা ৭২ ঘণ্টার একটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছিল উভয় পক্ষ। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা শেষ হওয়ার পরপরই ওই যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ে। এরপর আবার একটি যুদ্ধবিরতিতে গেছে উভয় পক্ষ। কিন্তু আদৌ এ যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। কেননা হামাস চায় দীর্ঘস্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হোক। তবে তার আগে ইসরাইলকে গাজা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিতে হবে। সেই সঙ্গে গাজার বিমান ও সমুদ্র বন্দর খুলে দিতে হবে। কিন্তু ইসরাইলের কোনো সম্মতি এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না এবং এটা ঠিক ইসরাইলের সম্মতি পাওয়া না গেলে যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়বে এবং গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়বে। গাজায় যে যুদ্ধ গত এক মাসের ওপর চলে আসছিল তা ছিল একটি অসম যুদ্ধ, একতরফা যুদ্ধ। ইসরাইলি সেনারা নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করে শিশু ও নারীদের হত্যা করেছে। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব তথা জাতিসংঘ এ ব্যাপারে ছিল নীরব। ইসরাইলি নেতারা গাজায় গণহত্যার জন্য আজ অভিযুক্ত। এ হত্যাযজ্ঞকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নাভি পিল্লাই যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সেনানায়কদের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার হবে, এটা চিন্তা করাও যায় না। আদৌ কোনো দিন এ বিচার হবে না। একাধিক কারণে এ বিচার করা যাবে না। এটা করতে হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় গণহত্যা বা এ ধরনের কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা অনুসন্ধান করতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এ সম্মতি এখনো দেননি। গেল সপ্তাহে ১৭টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ) একটি খোলা চিঠিতে এ অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। মনে রাখতে হবে, আইসিসির চার্টারে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার কোনো ক্ষমতা নেই। সুতরাং আইসিসি চাইলেও নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে না। উল্লেখ্য, ১২২টি দেশ আইসিসির সদস্য। ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র, সুদান, রোম চার্টারে (যার মধ্যে দিয়ে আইসিসির জন্ম) ২০০০ সালে স্বাক্ষর করলেও পরে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। ফলে আইসিসির সদস্য নয় এমন রাষ্ট্রে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না তা দেখা কিংবা ওই রাষ্ট্রের কোনো ব্যক্তিকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর কাজটি খুব সহজ হবে না। আইনগত জটিলতা তৈরি হতে পারে। কেননা আইসিসি সদস্যরাষ্ট্রের যে সংজ্ঞা দিয়েছে, তাতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ওই সংজ্ঞায় পড়ে না। যদিও ২০১২ সালে জাতিসংঘ পিএলওকে 'নন মেম্বার অবজারভার' স্ট্যাটাস দিয়েছে। এখন যদি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আইসিসিতে যোগ দেয় তাহলেই সম্ভব গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত করা। তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এ ধরনের গণহত্যার বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য আইসিসিকে নির্দেশ দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ইহুদি লবির কারণে ওটা চাইবে না, এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং আজকে নাভি পিল্লাই 'যুদ্ধাপরাধে'র যে কথা বলেছেন তা কাগজ-কলমেই থেকে যাবে এবং প্রমাণিত হবে আইসিসি পশ্চিমাদের স্বার্থেই কাজ করে। সার্বিয়ার যুদ্ধবাজ নেতা মিলোসেভিচের বিচার হয়েছিল হেগে। বিচার হয়েছিল লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট, যুদ্ধবাজ চার্লস টেলরের। এমনকি রুয়ান্ডায় হুতু-তুতসি হত্যাকা-ে যারা অভিযুক্ত হয়েছিল তাদেরও বিচার হচ্ছে। কঙ্গোর গৃহযুদ্ধে যারা জড়িত তাদেরও বিচার হচ্ছে। এমনকি ২০০৮ সালে কেনিয়ায় নির্বাচন-পূর্বকালে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল তারও বিচার হচ্ছে। আর তাতে অভিযুক্ত হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট কেনিয়াত্তা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট। ভাইস প্রেসিডেন্টের বিচার শুরু হয়েছে আর প্রেসিডেন্টের বিচার শুরু হওয়ার কথা আগামী মার্চে। কিন্তু ইসরাইলি নেতাদের বিচার হবে তা শুধু অসম্ভবই নয়, বরং অকল্পনীয়ও বটে। গাজায় সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি পর্যন্ত সেখানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০০ জনে। গাজা এখন এক বিধ্বস্ত নগরী। হাসপাতাল, স্কুল এমনকি জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত আশ্রয়স্থলগুলোও ইসরাইলের হামলায় পরিপূর্ণভাবে বিধ্বস্ত। ইতোমধ্যে গাজার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করেছে ইসরাইল। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইসরাইলি হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে সিভিলিয়ানের সংখ্যা শতকরা ৭৪ ভাগ। ১৮ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত গাজায় হামাস সদস্যের সংখ্যা মাত্র ১৫ হাজার। অথচ এ গাজা থেকে হামাস নেতাদের উৎখাত করতে ইসরাইল অতীতে দুবার সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছিল, একবার শীতকালে ২০০৮-০৯ সময়সীমায় আর দ্বিতীয়বার ২০১২ সালের নভেম্বরে। কেননা আল ফাতাহ নয়, বরং হামাসকেই এখন ইসরাইলি নেতারা নিজেদের জন্য 'বড় হুমকি' বলে মনে করেন। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের সংসদ নির্বাচনে হামাস বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু ইসরাইল কোনো দিনই হামাস প্রতিনিধিকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নেয়নি। বরং আল ফাতাহ আর হামাসের মধ্যকার দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে হামাসকে উৎখাত করার উদ্যোগ নিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার। আর সময়টা তিনি বেছে নিয়েছেন এখন, যখন ২০১৪ সালের এপ্রিলে আল ফাতাহ ও হামাস একটি ঐকমত্যের সরকার গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল। এ সরকার যাতে গঠিত না হয় সে জন্যই এ সামরিক আগ্রাসন। ইসরাইলের এ সামরিক আগ্রাসন, গাজায় নিরীহ মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের হত্যা সব আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ। কোনো একটি যুক্তিতেই এ স্থল আক্রমণ গ্রহণযোগ্য নয়। ইসরাইলের যুক্তি ছিল ইসরাইল যা করছে তা তার নিরাপত্তা ও আত্মরক্ষার স্বার্থে এবং এ 'অধিকার' তারা রাখে। এ যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা গাজা অনেক দিন থেকেই একটি ইসরাইলি অবরুদ্ধ ও অধিকৃত অঞ্চল। ২০০৬ সালে হামাসের নির্বাচনে বিজয়ের পরপরই ইসরাইল গাজা অঞ্চলকে ঘেরাও করে রাখে। পানি, বিদ্যুৎ, ওষুধ সরবরাহ সবকিছু ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে। আর বিশ্ব সংস্থা অনেক আগেই জানিয়েছিল ইসরাইলের এ 'নিয়ন্ত্রণ' যদি অব্যাহত থাকে তাহলে গাজা ২০২০ সালের মধ্যে বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে। জাতিসংঘ সনদের ৫১ নাম্বার ধারায় 'আত্মরক্ষা'র সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার রাষ্ট্রকে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এটা শুধু কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেহেতু গাজা একটি ইসরাইল কর্তৃক 'নিয়ন্ত্রিত' এলাকা এবং গাজার কোনো সার্বভৌমত্ব স্বীকৃত নয় তাই জাতিসংঘের ৫১ ধারা এ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। গাজার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে অধিকৃত অঞ্চলসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন। ওই আইনে বলা হয়েছে_ অধিকৃত অঞ্চলে বসবাসকারী নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে দখলকৃত রাষ্ট্র। এ ক্ষেত্রে ইসরাইলের দায়িত্ব গাজার নাগরিকদের নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু উল্টো ইসরাইলি সেনাবাহিনী সাধারণ নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে। হেগ কনভেনশনের ৪৭ নাম্বার ধারাও ইসরাইল লঙ্ঘন করেছে। এ ধারা অনুযায়ী অধিকৃত অঞ্চলের আকাশ, জলসীমা নিয়ন্ত্রণ ও সেই সঙ্গে জনসংখ্যা চলাচল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মুভমেন্ট অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার রাখে ইসরাইল। তিনজন ইসরাইলি যুবকের হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে ইসরাইলি ওই অভিযানও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কেননা স্বয়ং ইসরাইলি পুলিশপ্রধান বলেছেন, ওই হত্যাকা-ের সঙ্গে হামাস জড়িত নয়। এমনকি হামাসের রকেট হামলা নিয়েও প্রশ্ন আছে। দেখা গেছে, ইসরাইলি রকেট হামলা হয়েছে প্রথমে। প্রতিটি ইসরাইলি হামলা, বিশেষ করে চলতি গাজা অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের চরম বরখেলাপ। ইসরাইলি সেনাবাহিনী মূলত 'দাহিয়া ডকট্রিন (উধযরু উড়পঃৎরহব) অনুসরণ করে জনবসতি ধ্বংস করছে যা তারা লেবাননেও করেছিল। এ 'দাহিয়া ডকট্রিন'-এর প্রবক্তা হচ্ছেন মেজর জেনারেল গাদি আইজেনকট। তিনি শীর্ষ ইসরাইলি সেনা স্ট্রাটেজিস্ট। এখন অবসরে। এ মতবাদের মূল বিষয় হচ্ছে যেখান থেকে রকেট হামলা হবে সেখানের পুরো এলাকা ধ্বংস করে দেয়া। ২০০৬ সালে ইসরাইল এ তত্ত্ব লেবাননে ব্যবহার করেছিল। হিজবুল্লাহর সদস্যরা জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে রকেট নিক্ষেপ করত। ইসরাইল ওই এলাকাকে 'সেনা নিয়ন্ত্রিত' এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে শত্রু এলাকা ঘোষণা করে ওই এলাকা ধ্বংস করে দিত। এ মতবাদের কারণে লেবাননে প্রচুর সিভিলিয়ান এলাকা ইসরাইল সেনাবাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছিল। এর আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় ২০০৯ সালে জাতিসংঘ লেবাননে বিচারপতি গোল্ডস্টোনের (দক্ষিণ আমেরিকা) নেতৃত্বে একটি 'তথ্য অনুসন্ধান' কমিটি প্রেরণ করেছিল। ওই কমিটি, যা গোল্ডস্টোন কমিটি নামে পরিচিত, ইসরাইলকে সিভিলিয়ান এলাকা ধ্বংসের জন্য দায়ী করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কারণে ইসরাইলের কোনো বিচার হয়নি। হামাসের বিরুদ্ধে 'মানবঢাল' ব্যবহারের যে অভিযোগ রয়েছে, তারও কোনো সত্যতা নেই। সিভিলিয়ান এলাকায় অস্ত্র রক্ষায় হামাসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, সে অভিযোগের কোনো সত্যতা পায়নি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ফলে দেখা যায়, প্রতিটি ক্ষেত্রে অপরাধ করেও ইসরাইল পার পেয়ে যাচ্ছে। লেবাননে গণহত্যা চালালেও কোনো ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তার বিচার হয়নি। আজও যখন গাজায় দীর্ঘ প্রায় পাঁচ সপ্তাহ ধরে ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার হবে_ এ আস্থাটা রাখতে পারছি না। ইতিহাস বলে, ফিলিস্তিনে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পিএলও নেতারা অনেক ছাড় দিয়েছেন। ১৯৮৮ সালে পিএলও আলজিয়ার্স সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ পরিত্যাগের কথা ঘোষণা করে। ১৯৯৩ সালে পরস্পরকে স্বীকৃতি দিয়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্ম দিলেও শান্তি আজও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। সেখানে আজও রক্ত ঝরছে। নিরীহ শিশুদের হত্যা করে ইসরাইলি নেতারা কোনো দিনই সাধারণ ফিলিস্তিনিদের মন পাবে না। এ শিশুরাই বড় হয়ে একেকজন 'বিদ্রোহী' হয়ে ওঠে। হামাসের জন্ম ও গ্রহণযোগ্যতা এভাবেই বেড়েছে। ইসরাইল মূলত নতুন একটি 'মতবাদ' নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। এ মতবাদের মূল বিষয় হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীকে, বিশেষ করে গাজায় যারা বসবাস করেন, তাদের নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধ রেখে সেখানে তাদের বসবাস করতে বাধ্য করা। অনেকটা দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ যুগের সময়কার মতো, যখন মূল কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে বড় বড় শহর থেকে বের করে দিয়ে তাদের জন্য ১০টি হোমল্যান্ড তৈরি করা হয়েছিল এবং হোমল্যান্ডে কৃষ্ণাঙ্গদের বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছিল। আজ অবশ্য ওই হোমল্যান্ডগুলোর কোনো অস্তিত্ব নেই। তাই ইসরাইল গাজাবাসীদের অবরোধ করে তাদের এক ধরনের 'বস্তিজীবনে' বসবাস করতে বাধ্য করলেও চূড়ান্ত বিচারে ইসরাইল তা পারবে না। একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তিচুক্তি যেমনি হামাসের জন্য মঙ্গল, তেমনি মঙ্গল ইসরাইলের জন্যও। যুদ্ধ কোনো সমাধান বয়ে আনবে না। তবে গাজাবাসীদের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়ার জন্য ইসরাইলের নেতাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচার হওয়া উচিত। না হলে এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটতে থাকবে এবং সাধারণ মানুষ তাতে মারা যেতে থাকবে। বিশ্বসম্প্রদায় এ ক্ষেত্রে চুপ করে বসে থাকতে পারে না। তাদের দায়িত্ব শুধু এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতাই নিশ্চিত করা নয়, বরং অপরাধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। Daily JAI JAI DIN 18.08.14

0 comments:

Post a Comment