রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

Prof Dr Tareque Shamsur Rehman

In his Office at UGC Bangladesh

Prof Dr Tareque Shamsur Rahman

During his stay in Germany

Prof Dr Tareque Shamsur Rahman

At Fatih University, Turkey during his recent visit.

Prof Dr Tareque Shamsur Rehman

In front of an Ethnic Mud House in Mexico

করোনা মহামারি থেকে আমরা কি আদৌ কোনো শিক্ষা নিয়েছি?

গত সোমবার দেশে আবার ‘লকডাউন’ দেওয়া হলেও করোনা নিয়ন্ত্রণে তা তেমন কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারেনি। দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়ছে। এ ‘লকডাউনে’র সময় অন্তত দুটি ছবি ও সংবাদ আমাদের জানিয়ে দিল ২০২০ সালের করোনাভাইরাস থেকে আমরা আদৌ কোনো শিক্ষা নেইনি। একটি ছবি সম্ভবত ঢাকার মুগদা হাসপাতালের সামনে থেকে তোলা। এতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি শুয়ে আছেন ফ্লোরে, মুখে অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগানো, পাশে আত্মীয়স্বজন। হাসপাতালে কোনো ‘সিট’ খালি নেই। সম্ভবত অপেক্ষা করছেন ‘সিট’ পাওয়ার আশায়। আমি জানি না নাম না জানা ওই ভদ্রলোকের পরিণতি পরে কী হয়েছিল। তিনি তথাকথিত ভিআইপি নন, তাই সংবাদকর্মীরা তার ‘ফলোআপ’ স্টোরি করেননি। গেল বছর ব্রাজিলে আমরা এ ধরনের দৃশ্য দেখেছিলাম। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ পড়ে আছে রাস্তায়, মৃতদেহগুলো কবর দেওয়ার লোকও পাওয়া যায়নি তখন। আরেকটি ছবি ও সংবাদ সমকালে ছাপা হয়েছে ৬ এপ্রিল। চৌধুরী মহিদুল হকের একটি ছবি। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক। সংবাদের শিরোনাম- ‘আইসিইউ খালি নেই : রাস্তাতেই মৃত্যু হলো সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার’। মহিদুল মুক্তিযোদ্ধা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা একসঙ্গে পড়েছি। আমাদের বন্ধু। রাতে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন সাপোর্টের জন্য তাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছোটেন তার আত্মীয়স্বজনরা। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে বিনা চিকিৎসায় মারা গেল আমাদের মহিদুল। মহিদুল ছিল দেশের শীর্ষ ব্যাংকারদের একজন। প্রচলিত অর্থে ভিআইপি। একজন ভিআইপি হাসপাতালে কোনো ‘সিট’ পেলেন না, প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পেলেন না! এর চেয়ে আর দুঃখজনক কী থাকতে পারে? এ সংবাদ দুটি অনেক সংবাদের দুটি মাত্র। করোনাভাইরাসের নতুন একটি ‘ধরন’ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আঘাত করেছে। দেশে মৃত্যুর সংখ্যা হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। ৯ এপ্রিল মৃত্যুর সংখ্যা ৬৩, আর শনাক্ত ৭৪৬২ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯৫৮৪ জনের। সরকার ‘লকডাউন’ দিয়ে রাজধানীসহ সিটি করপোরেশনগুলোতে গণপরিবহণ বন্ধ ঘোষণা করলেও গেল বুধবার তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। সরকারের ‘লকডাউন’ ঘোষণা ছিল যৌক্তিক। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন ‘লকডাউন’ ও ‘সামাজিক দূরত্বের’ বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার কথা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশে এটা কেউ মানতে চাইছে না। এত মৃত্যুর পরও মানুষের সচেতনতা বাড়েনি। মানুষ কোনো নির্দেশই মানতে চাইছে না। গাদাগাদি করে ফেরিতে যাওয়া যেন স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। কোভিড-১৯-এর পেছনে রয়েছে SARS-COV-2 ভাইরাস। শরীরে যদি দীর্ঘস্থায়ী ‘ইমিউন’ সিস্টেম শক্তিশালী হয়, তাহলে তা ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধকারী শক্তি হিসাবে গড়ে উঠবে। তাই শরীরের ‘ইমিউন’ সিস্টেম শক্তিশালী হলে মৃত্যুহার কমে যাবে। দ্বিতীয়ত, সংক্রমণ কমাতে ‘সামাজিক দূরত্বের’ বিষয়টি কঠোরভাবে পালন করতে হবে। হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক জোসেফ উ’র (Joseph Wu) মতে, The future will very much depend on how much social mixing resumes, and what kind of prevention we do (Nature, 5 August 2020)। মহামারির ধরন ও ‘মডেল’ নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের মাঝে জোসেফ উ অন্যতম। তিনি মডেলের মাধ্যমে দেখানোর চেষ্টা করেছেন কোভিড-১৯ কতদিন পর্যন্ত বজায় থাকবে। তবে করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরন পৃথিবীতে আসবে এবং ২০২৫ সাল পর্যন্ত তা বিশ্বকে ঝুঁকির মুখে রাখবে। চীন, নিউজিল্যান্ড ও রুয়ান্ডা এ ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে পেরেছে। এর কারণ হচ্ছে, ভাইরাসটি যাতে সংক্রমিত হতে না পারে সে জন্য লকডাউনের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ। সেই সঙ্গে ‘সামাজিক দূরত্বের’ বিষয়টি তারা কঠোরভাবে মেনে চলেছেন। ফলে মৃত্যুহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পেরেছেন তারা (Nature)। এটাই হচ্ছে আসল কথা। ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এই চিত্র ছিল ভিন্ন। সেখানে ‘লকডাউন’ আর সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়নি। ৭ এপ্রিল (২০২১) ব্রাজিলে একদিনেই মারা গেছে চার হাজার মানুষ। ‘সামাজিক দূরত্ব’ আর ‘ঘরে থাকার’ কথা বারবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। ফ্লোরিডা আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক Hakan Yilmazkuday তার এক গবেষণায় (Stay-at-Home Works to Fight against Covid-19: International Evidence from Google Mobility Data) দেখিয়েছেন (১৩০টি দেশের তথ্য নিয়ে), সাধারণ মানুষের কম Mobility বা সক্রিয়তা (গ্রোসারি শপ, পার্ক, কাজে কিংবা বাইরে না যাওয়া) দ্বারা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেশও অনেকটা তেমনই-ঘরে থাকা, বাড়িতে বসে কাজ করা, বেশি মানুষের সংস্পর্শে না যাওয়া। নিউইয়র্কে বেশি মানুষের মৃত্যুর (বাঙালিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য) কারণ ছিল একটাই-সেখানে প্রচুর মানুষ বাস করে এবং মানুষের মাঝে ‘মোবিলিটি’ বেশি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা এর ব্যাখ্যা কী দেব? পোশাক শিল্প মালিকদের ‘অর্ডার বাতিল’ হওয়ার অজুহাতে গত বছর হাজার হাজার মানুষকে প্রথমবার ঢাকায় আনা এবং দ্বিতীয়বার পোশাক শিল্প চালু রাখা, গাদাগাদি করে ফেরিতে পার হওয়া এবং জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির দিকে বিদেশফেরতদের নজরদারিতে না রাখা ইত্যাদি পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে নিয়ে যায়। সম্ভবত বাংলাদেশ ‘হার্ড ইমিউনিটির’ দিকে গিয়েছিল! অর্থাৎ বেশিরভাগ জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রাকৃতিকভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা (ইমিউনিটি) গড়ে তোলা যায় কিনা, তা নিয়ে কিছুটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে বাংলাদেশ। এতে প্রথমবার সফলও হয়েছে। তবে সব দেশ এ ‘হার্ড ইমিউনিটিতে’ গেছে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। যেমন সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুর ‘হার্ড ইমিউনিটি’র প্রস্তাব বাতিল করেছিল। এ জন্য ‘সামাজিক দূরত্ব’ মেনে চলার বিষয়টি যথেষ্ট কার্যকর। তাই Medical News Today-তে ড. মারিয়া কোহুট (Maria Cohut) তার প্রবন্ধে (Why social distancing is key in containing the new coronavirus, March 24, 2020) সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারে তার যুক্তি তুলে ধরেছেন। একই বিষয়ে Nature Communications-এ একটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ লিখেছেন Michael te Vrugt, Jens Bickmann এবং Raphael Wittkowski (Effects or social distancing and isolation on epidemic spreading model via dynamical density functional theory, 4 November 2020)। তাদের মন্তব্য- 'Controlling the spread of infections, such as the Plague or the Spanish flu, has been an important topic throughout history'। তারা মিথ্যা বলেননি, ইতিহাস তাই বলে-মহামারি বারবার ফিরে আসে। স্প্যানিশ ফ্লুর কথা আমরা জানি। স্প্যানিশ ফ্লু স্থায়ী হয়েছিল ১৯১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ১৯২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত, ৩৬ মাস। ওই সময় ৫০ কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছিল, যা ছিল ওই সময়ে বিশ্বের জনগোষ্ঠীর প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ। মৃত্যুর সংখ্যা ধরা হয় ১৭ মিলিয়ন থেকে ৫০ মিলিয়ন। বলা হয়, সমসাময়িককালের সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি ছিল সেটি। এর ১০০ বছর আগে অটোমান সাম্রাজ্যের সময় ১৮১২-১৮১৯ সময়সীমায় প্লেগে মারা গিয়েছিল ৩ লাখ মানুষ। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ১৯৫৭-১৯৫৮ সালে এশিয়ার ফ্লু’র কথাও আমরা জানি, যখন বিশ্বব্যাপী এ মহামারি ইনফ্লুয়েঞ্জায় (এইচ২এন২) মারা গিয়েছিল ১ থেকে ৪ মিলিয়ন মানুষ। ২০০৯-২০১০ সালে আরেক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জার (এইচ১এন১) খবরও আমরা জানি, যা মহামারি আকারে বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল এবং তাতে মারা গিয়েছিল ৫ লাখের উপর মানুষ। এর অর্থ হচ্ছে, প্রকৃতিতে এ ধরনের ভাইরাস বারবার ফিরে আসে। কিন্তু এবারের করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ব্যতিক্রমধর্মী, ছড়িয়ে গেছে বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে। এ কারণে কয়েকটি বিষয় আমাদের বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। এক. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল হবে না (আল জাজিরা); অর্থাৎ সাময়িকভাবে এ ভাইরাসটি ‘নিয়ন্ত্রণে’ এলেও তা থেকে যাবে এবং ফিরে আসবে। যেমন উহানে (চীন) আবার ফিরে এসেছিল। দুই. ব্লুমবার্গ গবেষকদের মতে, ‘করোনাভাইরাসের পরবর্তী সংকট তৈরি হবে ব্যাপক আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে (The Next Covid Crisis could be a wave of suicides, May 8, 2020)। মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে মানুষ আত্মহত্যা করবে, যাকে ব্লুমবার্গ বলছে ‘death of despair’। তিন. করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী ২৬ কোটি মানুষ ক্ষুধার কারণে মারা যেতে পারে (PBS News, April 22, 2020)। এ বক্তব্য বিশ্ব খাদ্য সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলের। সুতরাং করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্য দিয়ে যে সংকট শুরু হয়েছে, তা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে মনে করার কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদি প্রস্তুতি নিতে হবে। সেই প্রস্তুতি বাংলাদেশ কতটুকু নিতে পেরেছে, আমি নিশ্চিত নই। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউ যখন ইউরোপে আঘাত করেছে, তখন আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা কতটুকু সচেতন ছিলেন, আমি হলফ করে তা বলতে পারব না। উচিত ছিল গত এক বছরে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা। আমরা তা করতে পারিনি। এ কারণে ঢাকার হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ বাড়ছে। উচিত ছিল প্রতিটি হাসপাতালে আইসিইউ বেড বাড়ানো এবং দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা। তা হয়েছে বলে মনে হয় না। আমাদের বিশেষায়িত রোগের জন্য চিকিৎসক, দক্ষ নার্স ও টেকনিশিয়ান দরকার। হাসপাতালগুলোতে ‘ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ’ বাড়ানো দরকার। চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনা জরুরি ছিল, আমরা তা করিনি। চীন প্রশিক্ষণের ব্যাপারে আমাদের সহায়তা করবে বলে জানিয়েছিল। এ ব্যাপারে খুব একটা অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে হয় না। বিষয়টিকে আমরা সিরিয়াসলি নেইনি। ঢাকায় আরও হাসপাতাল দরকার। উত্তরায় বিশাল এলাকা পড়ে রয়েছে। এখানে বিএসএমএমইউ’র মতো একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায়। পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত জেল এলাকায়ও একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা যায়। আসলে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবা দরকার। আরও একটা কথা-কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য কিছু বিশেষ হাসপাতাল নির্দিষ্ট না করে প্রতিটি হাসপাতালেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত। একজন সাধারণ রোগী আইসিইউ বেডের অভাবে জরুরি বিভাগের বারান্দায় অথবা রাস্তায় পড়ে থাকবেন, একজন শীর্ষ ব্যাংক কর্মকর্তা চিকিৎসার জন্য, অক্সিজেনের জন্য এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে যাওয়ার পথে রাস্তায়ই মারা যাবেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে আমরা নিশ্চয়ই এটা প্রত্যাশা করি না। করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে গেল। জানি না এ থেকে আমরা কতটুকু শিখব। Jugantor 11.4.2021

দৃষ্টি এখন পশ্চিমবঙ্গের দিকে

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচন নিয়ে ভারতব্যাপী আলোচনা এখন তুঙ্গে। এ নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন হচ্ছে নন্দীগ্রাম। মমতা ব্যানার্জি এ আসনের প্রার্থী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারী, যিনি এক সময় মমতার কাছের মানুষ ছিলেন, কিন্তু এখন দলবদল করে চলে গেছেন বিজেপিতে। ফলে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি তো বটেই, দিল্লিও এখন সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে শুভেন্দুকে জিতিয়ে আনতে। এ কারণেই মোদি থেকে শুরু করে অমিত শাহ নাড্ডা (বিজেপি সভাপতি) পর্যন্ত ছুটে গেছেন নন্দীগ্রামে। বিজেপির জন্য এটি একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে তৃণমূলকে হারানো চাট্টিখানি কথা নয়। এটা তৃণমূলের সিট। ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে এ আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তখন তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিআই প্রার্থী আবদুল কবির শেখ। ভোটের পার্থক্য ছিল ৮১ হাজারের উপরে। ওই সময় বিজেপিও প্রার্থী দিয়েছিল (বিজন কুমার দাস)। তিনি পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার ভোট। ২০১১ সালের বিধানসভার নির্বাচনেও তৃণমূল প্রার্থী ফিরোজা বিবি বিজয়ী হয়েছিলেন। ২০০১ ও ২০০৬ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল সিপিআই। এর আগে এ আসন ছিল কংগ্রেসের। কিন্তু এবারের দৃশ্যপট ভিন্ন। আগেই বলা হয়েছে, তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি এবার প্রার্থী। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারই এক সময়ের শিষ্য শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। যদিও ধরে নেওয়া হচ্ছে, মমতাই শেষ পর্যন্ত এ আসনে বিজয়ী হবেন। গত ১ এপ্রিল এখানে নির্বাচন হয়ে গেল। এ আসনের নির্বাচন নিয়ে ‘জল’ কম ঘোলা হয়নি। জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে পায়ে আঘাত পান মমতা। পায়ে প্লাস্টার নিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপির বহিরাগত গুণ্ডারা তাকে আঘাত করেছে। যদিও প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সমর্থকদের চাপে গাড়ির দরজা লাগাতে গিয়ে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। খোদ অমিত শাহ পর্যন্ত এ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। বলা ভালো, গত ২৭ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচন শুরু হয়েছে। প্রথম দফায় ৩০ আসনে এবং ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায়ও ভোট হয়েছে ৩০ আসনে। ছয় পর্যায়ে ভোট শেষ হবে ২৯ এপ্রিল। ফলাফল জানা যাবে ২ মে। ইতোমধ্যে নন্দীগ্রামের নির্বাচন নিয়ে বড় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মমতা ব্যানার্জিকে ‘বেগম’ হিসাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। সেখানে সংঘর্ষ হয়েছে। মানুষ মারা গেছে। মমতা নিজে অভিযোগ করেছেন, ভোটকেন্দ্র দখল করে ‘সিল’ মারা হয়েছে ব্যালটে। মোদি ঘোষণা করেছেন, মমতার দিন শেষ। আর শুভেন্দু বলেছেন, তিনি নন্দীগ্রামে বিজয়ী হয়েছেন এবং মমতা ব্যানার্জি ২ মে পদত্যাগ করবেন। নন্দীগ্রামের পরিস্থিতিই বলে দেয় রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিরোধ, দ্বন্দ্ব ও সংঘাত কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। নন্দীগ্রাম হচ্ছে এমন একটি এলাকা, যা আজ থেকে ১০ বছর আগে বদলে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি, সেই সঙ্গে ভারতের রাজনীতিও। ২০১১ সালে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম রাজনীতির অবসান ঘটিয়ে অবিসংবাদিত নেত্রীরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ছোটখাটো একজন মানুষ, অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করা একজন মানুষ মমতা ব্যানার্জির ‘রাজনৈতিকভাবেই’ জন্ম হয়েছিল এ নন্দীগ্রামে। বলতে দ্বিধা নেই, পশ্চিমবঙ্গের বাম শাসনের বিরুদ্ধে একাকী লড়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। ২০০৬ সালে হুগলির সিন্দুরে মোটর কারখানা গড়ার বিরুদ্ধে তিনি কৃষকদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে কৃষি জমি অধিগ্রহণ করার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ২০০৭ সালে এ নন্দীগ্রামে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যখন কৃষি জমিতে কেমিক্যাল কারখানা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছিল, তখন তিনি এর প্রতিবাদ করে সেখানে কৃষকদের সংগঠিত করেছিলেন। নন্দীগ্রামে পুলিশ গুলি চালিয়ে ১৪ জন কৃষককে হত্যা করেছিল। তিনি দীর্ঘ ২৬ দিন সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামের ঘটনার প্রতিবাদে অনশন পর্যন্ত করেছিলেন। ‘আজীবন প্রতিবাদী’ ও ‘পাশের বাড়ির মেয়েটি’র মতো মমতা ব্যানার্জি একটি ইমেজ গড়ে তুলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। এ রাজ্যের মানুষ মমতা ও তৃণমূল কংগ্রেসের মাঝে সিপিআই (এম)-এর বিকল্প একটি ‘শক্তি’ খুঁজে পেয়েছিল। তার রাজনীতিতে উত্থান কংগ্রেসের রাজনীতির মধ্য দিয়ে। তিনি ছিলেন সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি। কিন্তু কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গেও তিনি থাকতে পারেননি। কংগ্রেসের সঙ্গে দীর্ঘ ২৬ বছরের সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৮ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও এখন অবধি তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় একটি জাতীয় দল হিসাবে স্বীকৃতি পায়নি। ৫৪৩ আসনের লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের আসন (কংগ্রেসের মাত্র ৫২) ২০, আর ২৪৫টি রাজ্যসভার আসনে তৃণমূলের আসন ১২। লোকসভায় ২০১৪ সালে দলটির আসন ছিল ৩৪। এর মধ্য দিয়ে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মমতা ব্যানার্জি তার প্রয়োজনীয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়েছিলেন। ২০১১ সালে তিনি যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন, তখন কিন্তু তিনি বিধানসভার সদস্য ছিলেন না। ছিলেন কেন্দ্রের রেলমন্ত্রী। সেখান থেকে পদত্যাগ করে তিনি ছয় মাসের মধ্যে বিধানসভার উপনির্বাচনে বিজয়ী হন। তৃণমূল গঠিত হওয়ার পর দলটি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতেই নিজেদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রেখেছে। পরিসংখ্যান বলে, ২০০১ সালে বিধানসভায় তৃণমূলের আসন ছিল ৬০ (মোট আসন ২৯৪), ২০০৬ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৩০-এ। কিন্তু দৃশ্যপট বদলে যায় ২০১১ সালে, যখন তৃণমূল ১৮৪ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। ২০১৬ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে তৃণমূল পেয়েছিল ২১১ আসন। কিন্তু ২০২১ সালে পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। বিজেপি মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূলকে পরাজিত করতে। তাই বিজেপির শীর্ষ নেতাদের প্রায় সবাই পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন এবং এখনও নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মিঠুন চক্রবর্তী এবং ফিল্মের অনেক নায়ক-নায়িকাকে ভিড় করিয়েছে বিজেপি। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল মিঠুন চক্রবর্তীর বিজেপিতে যোগদান। মোদির উপস্থিতিতে কলকাতার প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মিঠুন চক্রবর্তী বিজেপিতে যোগ দেন। এক সময় স্বঘোষিত নকশাল, পরবর্তী সময়ে বাম রাজনীতির সমর্থক এবং এক সময় তৃণমূলে যোগ দিয়ে রাজ্যসভার সদস্য- সেই মিঠুনই কিনা সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপিতে যোগদান করলেন নির্বাচনের আগে, এটা ছিল অবাক করার মতো ঘটনা। তখন থেকেই মিঠুনকে নিয়ে গুজবের ডালপালা গজাতে থাকে। এমন কথাও বলা হয়, মিঠুন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী! কিন্তু প্রার্থী তালিকায় তার নাম না থাকায় জল্পনা-কল্পনা থেমে যায়। মিঠুনের বিজেপিতে যোগদানের পর যতগুলো টিভি সাক্ষাৎকার দেখেছি, প্রতিটিতে বলেছেন তিনি রাজনীতি করেন না। মমতা ব্যানার্জি এখনও তার বোন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং একটি পরিবর্তন তিনি চাচ্ছেন। তবে এটা ঠিক, মমতা সম্পর্কে তিনি কোনো খারাপ মন্তব্য করেননি। শুধু মিঠুন চক্রবর্তী কেন, তৃণমূলের অনেক নেতা, বর্তমান ও সাবেক বিধানসভার সদস্য বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং নির্বাচন করছেন। এখানে রাজনীতির চেয়ে এক ধরনের সুবিধাবাদ কাজ করছে। বর্তমানে এ সুবিধাবাদের প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। সমাজে যারা বিশিষ্ট ব্যক্তি, ক্রীড়াঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তি, তাদের সবাইকে মোদি-অমিত শাহ জুটি চাচ্ছেন বিজেপির ব্যানারে নিয়ে আসতে। অতীতে ছবিপাড়ার ব্যক্তিরা এভাবে গণহারে রাজনীতিতে আসেননি। ‘দিদি’ অর্থাৎ মমতা ব্যানার্জি প্রথম তাদের অনেককে তৃণমূলের ব্যানারে নিয়ে আসেন। মোদি-অমিত শাহরা একই পথে গেছেন। তবে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে নতুন একটি ‘শক্তি’র উত্থান ঘটেছে; আর তা হচ্ছে হুগলির ফুরফুরা শরীফের পীরের ছেলে আব্বাস সিদ্দিকীর নেতৃত্বে নতুন একটি ‘ফ্রন্ট’-‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টে’র (আইএসএফ) আত্মপ্রকাশ। আইএসএফ ইতোমধ্যে কংগ্রেস ও বামদের (সিপিআই-সিপিএম) সঙ্গে এক ধরনের নির্বাচনী আঁতাত করেছে। যদিও প্রার্থী মনোনয়নের প্রশ্নে তাদের মাঝে দ্বিমত রয়ে গেছে। আব্বাস সিদ্দিকী পীরের বংশধর, তার একটি ব্যাপক আবেদন আছে। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়। প্যারেড গ্রাউন্ডের (কলকাতা) অনুষ্ঠানে তার বক্তৃতা মানুষ শুনেছে। ৯ কোটি ১২ লাখ মানুষের বাস পশ্চিমবঙ্গে। এর মধ্যে ৬ কোটি ৪ লাখ (শতকরা ৭০ দশমিক ৫৪ ভাগ) মানুষ সনাতন ধর্মাবলম্বী। আর ২ কোটি ৪ লাখ, অর্থাৎ জনগোষ্ঠীর ২৭ ভাগ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। মুসলমানরা সবাই যে আইএসএফকে সমর্থন করবে, এর কোনো গ্যারান্টি নেই। অনেক মুসলমান তৃণমূলের সমর্থক। তবে আব্বাস সিদ্দিকীর উত্থান নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করেছেন, এ ফ্রন্ট বিজেপির ‘দ্বিতীয় ফ্রন্ট’ হিসাবে কাজ করবে। আইএসএফ-কংগ্রেস-বাম ‘ঐক্য’ নিঃসন্দেহে একটি ‘শক্তি’। নির্বাচনে তাদের বড় প্রভাব না থাকলেও তারা ভোট কাটবে তৃণমূলের। মমতা ব্যানার্জির রাজনীতির একটি ব্যর্থতা এখানেই যে, তিনি সাম্প্রদায়িকবিরোধী এ তিন শক্তির সঙ্গে কোনো ‘ঐক্য’ করতে পারেননি। এর অর্থ হচ্ছে, এই তিন শক্তি যেখানেই নির্বাচন করবে, সেখানেই ভোট কাটবে তৃণমূলের। আর তাতে করে লাভবান হবে বিজেপি। ২৯৪ আসনের বিধানসভার নির্বাচনে সরকার গঠন করার জন্য দরকার ১৪৮ আসন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিধানসভার আসন বিন্যাস ছিল এরূপ : তৃণমূল কংগ্রেস ২১১ আসন, বিজেপি ৩৫, কংগ্রেস ২৩, সিপিআই(এম) ১৯, রেভ্যুলেশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি ২, ফরোয়ার্ড ব্লক ২, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চ্চা ২, নিরপেক্ষ ১। তৃণমূলের সঙ্গে আছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চ্চা। বিজেপি বিরোধী দলে নেই। কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট (মোট আসন ৪৬) বিরোধী দল বা ফ্রন্ট হিসাবে স্বীকৃত। এ আসন বিন্যাসে এখন পরিবর্তন আসবে। ধারণা করা হচ্ছে তৃণমূলের আসন কমবে, আর বিজেপির আসন বাড়বে। তবে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে না। এটাই পর্যবেক্ষকদের ধারণা। তবে এটা বলতেই হবে, মোদির জন্য পশ্চিমবঙ্গের এ নির্বাচন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপি সরকার গঠন করতে না পারলেও মমতা ব্যানার্জি একটা ‘চাপে’ থাকবেন। বিধানসভায় বিজেপির আসন বাড়লে এবং দলটি প্রধান বিরোধী দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলে মমতা ব্যানার্জির পক্ষে অনেক কিছু করা সম্ভব হবে না। দ্বিতীয়ত, ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে ভারতে লোকসভার নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের এ নির্বাচনের ফলাফল লোকসভা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। তৃতীয়ত, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার নির্বাচনের আগে মমতা ব্যানার্জি সর্বভারতীয় অবিজেপি নেতা-নেত্রীকে এক মঞ্চে থাকার জন্য একটি পত্র লিখেছিলেন। মমতার অভিযোগ, বিজেপি ভারতে একদলীয় একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। বিধানসভার নির্বাচনের পর এক মঞ্চ গড়ার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হতে পারে। চতুর্থত, তৃণমূল বিজয়ী হলে তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা আরও পিছিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে চীনা অর্থায়নে তিস্তা পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিকল্প কিছু থাকবে না। তাই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। Jugantor 4.4.2021