রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা কতটুকু দূর



এটা মোটামুটিভাবে একরকম নিশ্চিত, চলতি বছরের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছিল ১২ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারির ৯০ দিন আগে যে-কোনো একদিন এই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হচ্ছে বিএনপির মতো একটি বড় দল কি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে? বিএনপি নির্বাচন করতে চায়; কিন্তু তাদের দাবি একটি সহায়ক সরকার। আর সরকারের বক্তব্য, নির্বাচন হবে সংবিধান মোতাবেক, যেখানে বলা আছেÑ ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই একটি সরকার থাকবে, যারা তিন মাস ‘রুটিন ওয়ার্ক’ করবেন। বিএনপির আপত্তি এখানেই। বিএনপি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোনো নির্বাচনে যেতে চাচ্ছে না। আবার এখন পর্যন্ত কোনো সহায়ক সরকারের ধারণাও উপস্থাপন করছে না। তবে মিডিয়ায় তারা বলছেন, প্রয়োজনের সময় তারা এই ধারণা দেবেন। তবে কবে দেবেন, তা বলেননি। চলতি বছরটি শুরু হলো একধরনের অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল, যা ছিল সংবিধানসম্মত। কিন্তু নির্বাচনের পরদিন এবং নির্বাচন কেন্দ্র করে দেশজুড়ে যে সহিংস ঘটনা জাতি প্রত্যক্ষ করেছিল, সেই বিএনপির রাজনীতিকে তা একটা বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছিল। বিএনপি একধরনের ইমেজ-সংকটের মুখে পড়েছিল। সেই থেকে দুটি বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ৫ জানুয়ারিকে ভিন্ন ভিন্নভাবে পালন করে আসছেÑ যেখানে আওয়ামী লীগ পালন করে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে; বিএনপি পালন করে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতেও আমরা এটা প্রত্যক্ষ করলাম। এতে একধরনের অনিশ্চয়তা থাকলইÑ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর চলমান রাজনীতি এখন কোন দিকে মোড় নেবে? এটা সত্য, সাধারণ মানুষ সহিংসতা পছন্দ করে না। সহিংস আন্দোলন করে যে সরকারের পতন ঘটানো যায় না, সরকারের চার বছর ক্ষমতায় টিকে থাকা এর বড় প্রমাণ। সরকারপ্রধান তার চার বছরের কর্মকা-ের একটা ফিরিস্তি দিয়েছেন গত ১২ জানুয়ারির ভাষণে। তিনি উন্নয়ন কর্মকা-ের কথা বলেছেন। বুঝতে বাকি থাকে না, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ উন্নয়নের এই কর্মকা- একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রাক্কালে সম্পন্ন করবে। কিন্তু বছরের শুরুতে নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে দুটি বড় দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থান সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নে একটি হতাশার জায়গা তৈরি করেছে। প্রধানমন্ত্রী যেমন ‘নির্বাচনকালীন সরকারের’ ব্যাখ্যা দেননি, তেমনই বিএনপিও ‘নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের’ কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি। ধারণা করা যায়, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের’ সময় একটি ছোট মন্ত্রিসভা থাকবে। ওই মন্ত্রিসভায় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর প্রতিনিধি থাকবে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সদস্যদের নিয়ে একটি ছোট মন্ত্রিসভা থাকবে। যদিও প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলেননি; তবে এটা ভালো হয়, যারাই মন্ত্রিসভায় থাকবেন তারা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এতে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত হবে। বিএনপি সহায়ক সরকারের কোনো রূপরেখা দেয়নি। এটা বিএনপি দিক। ফলে আলোচনার পরিসর আরও বাড়বে। এর মধ্য দিয়ে জট খুলতে পারে। যদিও সিনিয়র মন্ত্রীরা বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপের কোনো সুযোগ নেই, তারপরও ‘পর্দার অন্তরালে’ একধরনের ‘সংলাপ’ হতে পারে। এমনকি নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারে। বিষয়টি নির্ভর করছে সংবিধান ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর।মূল কথা হচ্ছে, আমরা একটি ভালো জাতীয় নির্বাচন চাই। আর এর জন্য প্রয়োজন সব দলের অংশগ্রহণ। ২০১৪ সালে জানুয়ারির নির্বাচনের মতো আগামী নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ যদি নিশ্চিত না হয়, তাহলে তা আমাদের জন্য খুব ভালো খবর নয়। সরকারের জন্যও এটি কোনো ভালো সংবাদ বয়ে আনবে না। আরও একটি কথাÑ সিল মারা কিংবা ভোটকেন্দ্র দখলের যে সংস্কৃতি আমরা বারবার প্রত্যক্ষ করে আসছি কিংবা বিরোধী দলের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেওয়ার যে ‘রাজনীতি’ আমরা দেখেছি, এই প্রবণতা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায়। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব তাই অনেক বেশি। ইসিকে প্রমাণ করতে হবে তারা নির্বাচনের আগে ‘সবার জন্য সমান সুযোগ’ দেবেন; নির্বাচনে মাস্তানতন্ত্র বন্ধ করবেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছে। কোনোখানেই কোনো সহিংসতা হয়নি। সব দল এই নির্বাচন দুটির ফলাফল মেনে নিয়েছে। ফলে কিছুটা হলেও একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। কিন্তু ইসি সংবিধানপ্রদত্ত ক্ষমতাবলে কতটুকু ক্ষমতা প্রয়োগ করবে, প্রশ্ন সেখানেই। আমরা বারবার বলে আসছি, সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে, ক্ষমতা প্রয়োগ করতে নির্বাচন কমিশন ‘নিষ্ক্রিয়’ থাকে। সংবিধানের ১১৮(৪) ধারা নিয়ে একটি ব্যাখ্যা আছে। এই ধারায় বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনে স্বাধীন’ এবং সংবিধানের ১২৬ ধারায় বলা আছে, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে।’ এটাই হচ্ছে আসল কথা। নির্বাচনের তিন মাস আগে সব প্রশাসন চলে যায় নির্বাচন কমিশনের হাতে। অর্থাৎ ডিসি, এসপি, ওসিরা থাকেন নির্বাচন কমিশনের আওতায়। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে তা কী বলে? জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ কর্মকর্তা কিংবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা থাকেন জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন নয়। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়। কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে, আর জেলা প্রশাসকরা নিয়ন্ত্রিত হন মন্ত্রণালয় থেকে। এক্ষেত্রে প্রায়ই সরকারের ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রতিফলিত হয়। আরও একটা কথাÑ সংসদ বিলুপ্ত না করেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর অর্থ কী? সংসদ সদস্যরা নিজেদের অবস্থান ঠিক রেখেই প্রার্থী হবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অর্থাৎ যিনি এখনও এমপি, তিনি প্রার্থী হবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার একটা অভিযোগ থেকেই যাবে। স্থানীয় প্রশাসন একজন এমপিকে অস্বীকার করতে পারে না। এমপিকে তারা সমীহ করে। এমপি স্থানীয় রাজনীতির প্রধান ব্যক্তি। এমপির কথাকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন অন্য কোনো ভূমিকা পালন করতে পারে না। এক্ষেত্রে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে! পৃথিবীর সব দেশে সাধারণত নিজেদের জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েই নির্বাচনটি হয়। ভারত এর বড় উদাহরণ। সংসদ বহাল রেখে কোনো নির্বাচনই হয় না। এটা অবশ্য ঠিক, ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকেন; কিন্তু তার কোনো ‘নির্বাহী কর্তৃত্ব’ থাকে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সংবিধানের এই ধারা নিয়ে বিতর্ক আছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবস্থান পরস্পরবিরোধী।চলতি বছরটি এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে থাকবে বারবার। দুটি বড় দলই তাদের নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। এক্ষেত্রে জট কীভাবে খুলবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এক্ষেত্রে জরুরি হচ্ছে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই আস্থার সম্পর্কটি এখন তলানিতে অবস্থান করছে। আস্থার সম্পর্কটি জরুরি এ কারণে যে, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন অনেক অংশে দুই দল নির্ভর হয়ে পড়েছে। একদলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে এর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে থাকে। আওয়ামী লীগ বড় দল। ইউনিয়ন পর্যায়ে এই দলটির সাংগঠনিক ভিত্তি আছে। অপরদিকে বিএনপি আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। তৃতীয় শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টির একটা সম্ভাবনা ছিল; কিন্তু নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্ত আর সুবিধাবাদিতার রাজনীতির কারণে জাতীয় পার্টি একটি অঞ্চলভিত্তিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। পাঠক লক্ষ করলে দেখবেন, এই দলটির জন্মের পর থেকে যতবার ভাঙনের মুখে পড়েছে, অন্য কোনো দল এতবার ভাঙনের মুখে পড়েনি। অতীতে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নাজিউর রহমান কিংবা কাজী জাফর আহমেদÑ যারাই দল থেকে (জাতীয় পার্টি) বেরিয়ে গেছেন, তারা রাজনীতির প্রশ্নের চেয়ে সুবিধাবাদিতার কারণেই দল থেকে বেরিয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মূল ধারা ধরে রেখেছেন বটে; কিন্তু তার অবর্তমানে দল কয় টুকরায় বিভক্ত হয়, সেটাই দেখার বিষয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপিতে ভাঙন এসেছে। তবে তারা কেউই সুবিধা করতে পারেননি। আবদুর রাজ্জাকের মতো নেতা আওয়ামী লীগের বাইরে গিয়ে বাকশাল নিয়ে সংগঠিত হতে চেষ্টা করেছিলেন; পারেননি। মূলধারায় ফিরে এসেছিলেন। বিএনপির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ওবায়দুর রহমান কিংবা মান্নান ভূঁইয়া চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু সফল হননি। আর নাজমুল হুদা একবার বেরিয়ে গেছেন, আবার ফিরে গেছেন, এখন আবার দলের বাইরে। তার গ্রহণযোগ্যতা কিংবা ক্যারিশমা কোনোটাই নেই। ফলে মুজিব কিংবা জিয়া পরিবারের বাইরে গিয়ে কেউই সফল হবেন না।আরও একটা কথাÑ তা হচ্ছে তৃতীয় শক্তি গড়ে ওঠার ব্যর্থতা। বারবার চেষ্টা করা হয়েছে; কিন্তু সফলতা আসেনি। আমরা যদি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের (১৯৯১) থেকে নবম জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখব জাতীয় সংসদ নির্বাচন দুটি বড় দল নির্ভর হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের এটাই সৌন্দর্য। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। সাধারণ মানুষের সমর্থন যদি না থাকত, তাহলে এত দীর্ঘ সময় দলটি ক্ষমতায় থাকতে পারত না। আবার গত ৯ বছর বিএনপির মতো একটি বড় দল ক্ষমতার বাইরে। ক্ষমতার বাইরে থাকা সত্ত্বেও দলটি পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েনি। দলের অনেক শীর্ষ নেতা বয়সের ভারে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেনÑ এটা সত্য। এক্ষেত্রে ‘নয়া নেতৃত্ব’ও আসছে না। তবে ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে দলটি ভেঙে যেতে পারে! নির্বাচন বয়কট কোনো রাজনীতি হতে পারে না। সুতরাং দলটি নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাবেÑ এটাই সবার প্রত্যাশা। চলতি বছর নির্বাচনী বছর। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন স্থগিত হয়ে গেছে। কিন্তু আরও কয়েকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ফলে সব দলের মাঝে একটা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। এই আস্থার সম্পর্কই একটা সুষ্ঠু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারে। এটাই বাস্তবতা।আমরা চাই, জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হোক। বিএনপিসহ প্রতিটি নিবন্ধিত দল আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেÑ এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। তাই সংগত কারণেই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দায়দায়িত্ব অনেক বেশি। ৫ জানুয়ারির (২০১৪) মতো পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, এ ব্যাপারে বর্তমান সিইসিকে পালন করতে হবে একটি বড় দায়িত্ব। সেই ‘দায়িত্ব’ সিইসি কীভাবে পালন করেন, আমরা তার অপেক্ষায় থাকলাম। তবে একটা বিষয়ে বোধহয় আমাদের সবার ঐকমত্যে উপনীত হওয়া প্রয়োজনÑ আর তা হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার। সরকারের বহু মন্ত্রী বারবার বলছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই নির্বাচন হবে। অর্থাৎ নির্বাচনের তিন মাস আগে যে সরকার থাকবে, তার নেতৃত্ব দেবেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা সংবিধানসম্মতভাবেই নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রে ‘সব দলের অংশগ্রহণে’ নির্বাচনটি যদি সম্পন্ন করতে হয়, তাহলে সব দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য একটি মন্ত্রিসভা থাকা ভালো। বিএনপি বড় দল। দলটিকে আস্থায় নেওয়া প্রয়োজন। না হলে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। আমরা বারবার রাজনীতিবিদদের কাছে ফিরে যাই। তাদের দূরদর্শিতা, মেধা, জ্ঞান আমাদের আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ‘উপহার’ দেবেÑ এ প্রত্যাশা আমাদের।
Daily Alokito Bangladesh
21.1.2018

0 comments:

Post a Comment