রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আসল কথাটি বলে ফেলেছেন সুষমা স্বরাজ



আসল কথাটি বলে ফেলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। মোদি সরকারের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে তার বাৎসরিক সংবাদ সম্মেলনে সুষমা স্বরাজ বলেছেন, বহু প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের প্রশ্নে দিল্লি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মতামতকে অগ্রাহ্য করে কিছুতেই এগিয়ে যাবে না।
সুষমা স্বরাজ আরও বলেছেন, গেল বছর শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় মমতা ব্যানার্জি তিস্তার বিকল্প হিসেবে অন্য দু’-তিনটি নদীর জল ভাগাভাগির যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, সেটা কতটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব, তা এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
‘বিবিসি বাংলা’ আমাদের এ খবরটি দিয়েছে। সুষমা স্বরাজ আরও বলেছেন, ‘তিস্তা চুক্তি ইস্যু ভারত আর বাংলাদেশ এ দুই সরকারের বিষয় নয়- পশ্চিমবঙ্গও সেখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার। সে কারণে আমরা বারবার মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে আলোচনার কথা বলছি।’
সুষমা স্বরাজের কথায় মমতা ব্যানার্জির কথার সুর খুঁজে পাওয়া যায়, যখন তিনি বলেন, ‘তিস্তা বাদ দিয়ে অন্য দু’-তিনটি নদী (ধরলা, জলঢাকা, শিলতোর্সা) থেকে একই পরিমাণ জল বাংলাদেশে পাঠালে বাংলাদেশ জলও পাবে, তিস্তাও বাঁচবে।’
সুষমা স্বরাজের যুক্তি- ‘তৃতীয় স্টেকহোল্ডার পশ্চিমবঙ্গের সম্মতি না নিয়ে আপনি চুক্তি করে ফেললে এর বাস্তবায়ন করবেন কীভাবে? তিস্তার জল তো পশ্চিমবঙ্গ থেকেই যাবে। আমাদের অভিজ্ঞতাও বলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মত নিয়ে সমঝোতা হলে তবেই সেটা টেকসই হয়।’
সুষমা স্বরাজ মোদি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। আসল কথাটাই তিনি বলেছেন। অর্থাৎ মমতাকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবে না।
আর সুষমা এ কথাটা বললেন এমন এক সময় যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গ সফর শেষ করে ঢাকায় ফিরে এসেছেন। যদিও শেখ হাসিনার ওই সফর কোনো রাষ্ট্রীয় সফর ছিল না।
কিন্তু তারপরও তিনি নরেন্দ্র মোদি ও মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে কথা বলেছেন। শেখ হাসিনার এই সফর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কেননা বাংলাদেশ বারবার তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার ব্যাপারে সোচ্চার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার এ কথাটাই বলে আসছেন।
এমনকি প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরের সময় (২০১৭ সালের এপ্রিলে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, তার এবং শেখ হাসিনার সময়সীমায়ই তিস্তা চুক্তি হবে।
শেখ হাসিনার বর্তমান মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। মোদির মেয়াদও শেষ হবে ২০১৯ সালের প্রথমদিকে। সুতরাং বাংলাদেশের মানুষ বারবার প্রত্যাশা করে আসছে, বাংলাদেশ শিগগিরই তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী যখন এবার কলকাতায় গেলেন, তখনও বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করেছিল শেখ হাসিনা এবার মোদির কাছ থেকে একটা সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি আদায় করে আনবেন। কিন্তু সেরকম কিছুই হয়নি। তার এ সফর নিয়ে খোদ পশ্চিমবঙ্গেও কোনো আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়নি।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, ‘দিল্লির পাশে থেকেছে ঢাকা, মোদির কাছে প্রতিদান চান হাসিনা’। বক্তব্য অনেকটা এরকম : বাংলাদেশ অনেক দিয়েছে। এবার দিল্লির কাছে তার ‘প্রতিদান’ চান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। মিথ্যা বলেনি আনন্দবাজার।
বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশ ভারতকে অনেক কিছু দিয়েছে- বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ফেরত দেয়া থেকে শুরু করে ট্রানজিট পর্যন্ত। কিন্তু সে তুলনায় বাংলাদেশের প্রাপ্তিটা একেবারেই কম। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তিনি কোনো প্রতিদান চান না।
অনলাইন সংবাদপত্র ‘এবেলা’ বলেছে, তিস্তা নয়, মমতা উদ্যোগী অন্য ‘উপহার’ নিয়ে। এবেলার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘শনিবার কলকাতায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তা প্রসঙ্গের উল্লেখ না করলেও জানিয়ে দেন, ওপার বাংলার সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এসেছে মুজিবুর রহমানের একটি মিউজিয়াম করা হোক থিয়েটার রোডে (২৬ মে)। সেই মিউজিয়াম তৈরি করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার যে উদ্যোগী হবে তা জানিয়ে দিলেন মমতা।’
অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সময় থিয়েটার রোডের যে বাড়ি (অরবিন্দ ভবন) থেকে প্রবাসী সরকার পরিচালিত হতো, সেই ভবনটিতে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করতে চায় বাংলাদেশ।
বিষয়টি আমি বাংলাদেশের কোনো কাগজে দেখিনি। এমনকি অতীতে এ নিয়ে ঢাকায় তেমন কোনো আলোচনা হয়েছে, এটাও আমার জানা নেই। নিঃসন্দেহে অরবিন্দ ভবন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের একটা অংশ।
অনেক দেরিতে হলেও এ প্রস্তাবটি এখন এলো। এবং এটি একটি ভালো প্রস্তাব। আমাদের স্বার্থেই আমরা এই ঐতিহাসিক ভবনটি সংরক্ষণ করব। তবে এর সঙ্গে আমরা তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি মেলাতে পারি না। তিস্তা আমাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার।
শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করতে কলকাতায় গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে বক্তৃতাও করেন (২৫ মে)। অনলাইনভিত্তিক জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ‘সাউথ এশিয়া
মনিটর’ আমাদের জানাচ্ছে, ওই অনুষ্ঠানে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার প্রতিটি কথায় উঠে এসেছে ভারতের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসার কথা। এদিনের অনুষ্ঠানে কথা বলার মাঝে একবারও তিস্তা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি শেখ হাসিনা।
ওই অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদিও বক্তব্য রাখেন। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন মোদি। সব পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশের পাশে থাকার আরও একবার আশ্বাস দেন মোদি (২৬ মে’র রিপোর্ট, ‘ভারতের প্রতি কেবলই কৃতজ্ঞতার সুর হাসিনার গলায়, কৌশলে এড়ালেন তিস্তা প্রসঙ্গ’)।
সব মিলিয়ে ব্যাপারটা কী দাঁড়াল? শেখ হাসিনা তার এ সফরে মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকারে তিস্তা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেননি। এমনকি মমতাও এ প্রসঙ্গ আনেননি। তবে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তিস্তা প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলেও ভিন্নভাবে প্রসঙ্গটি এনেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘হ্যাঁ, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্যা থাকতে পারে। আমরা কিন্তু সমস্যাগুলো একে একে সমাধান করে ফেলেছি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘হয়তো কিছু যা বাকি, আমি সেই প্রসঙ্গে কথা বলে আমাদের এই চমৎকার অনুষ্ঠান নষ্ট করতে চাই না।
কিন্তু আমি আশা করি যে কোনো সমস্যা আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের মাধ্যমেই সমাধান করতে পারব’ (এবেলা)। তিস্তা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, তিনি কারও ওপর ভরসা করেন না।
তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়নি, এটা সত্য। আবার এটাও সত্য, এটা কোনো রাষ্ট্রীয় সফর না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনারও সুযোগ ছিল কম। তবে প্রধানমন্ত্রী এটা ভালো করেই জানেন তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি বাংলাদেশের মানুষ, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য যথেষ্ট স্পর্শকাতর। তিস্তা শুকিয়ে যাচ্ছে। পানি নেই।
এ প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে একদিন উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে। ভুলে গেলে চলবে না, এক সময় সাহারা মরুভূমিতেও পানি ছিল। ধীরে ধীরে ওই এলাকা পানিশূন্য হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেচ কাজের জন্য পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলেও পানি দরকার।
কিন্তু তা নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে উপেক্ষা করে নয়। আর মমতা ঢাকায় আসার আগে যা বলেছিলেন কিংবা এখন সুষমা স্বরাজ যা বললেন (ধরলা, জলঢাকা, শিলতোর্সা থেকে পানি দেয়া), তার সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টিকে মেলানো যাবে না। দুটি ভিন্ন বিষয়। পশ্চিমবঙ্গ এককভাবে তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার করে নিতে পারে না।
এটা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। মমতাকে আন্তর্জাতিক আইন মানতে হবে। জোর করে তিনি পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এটি অন্যায়।
তবে সুষমা স্বরাজের কথার মধ্যে কিছুটা সত্যতা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে তিনি সত্য বলেননি। মমতাকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র কিছু করবে না- সুষমার এ বক্তব্যের মধ্যে সত্যতা আছে। এটাই বাস্তববাদী নীতি। মমতা ভারতীয় রাজনীতিতে একটি ফ্যাক্টর। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি অনুঘটক হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন।
কর্নাটক নির্বাচনে তার কারণেই সোনিয়া-রাহুল গান্ধী সেখানে জনতা দলের (সেক্যুলার) নেতৃত্বে একটি সরকার মেনে নিয়েছেন। মমতা ব্যানার্জির কারণেই বিজেপিবিরোধী সব শক্তি কংগ্রেসের সঙ্গে একধরনের ‘ঐক্য’ করতে রাজি হয়েছে। কংগ্রেসবিরোধী অনেক আঞ্চলিক দল, যারা একসময় তৃতীয় শক্তির কথা বলত, তারা এখন কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে চায়।
এ ক্ষেত্রে সম্মিলিত শক্তি যদি কংগ্রেসের বাইরে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়ন দেয় এবং বৃহত্তর স্বার্থে সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সমর্থন যদি তাতে থাকে, তাহলে নরেন্দ্র মোদির জন্য আগামী লোকসভা নির্বাচন অত সহজ হবে না।
এ স্ট্র্যাটেজির মূল নায়ক মমতা। তার উদ্যোগেই সব আঞ্চলিক দলের নেতা কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মোদি এটা বোঝেন। তিনি মমতাকে আবার এনডিএ জোটে ফিরিয়েও নিতে পারেন! যদিও এ সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ বলে মনে হয়।
এ মুহূর্তে বিজেপির টার্গেট পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল শাসনের অবসান। তিস্তার পানি বণ্টন সেখানে একটি ফ্যাক্টর, নির্বাচনী ফ্যাক্টর। সুতরাং মোদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল করতে চাইবে না।
মোদি ভালো করেই জানেন, তিস্তার পানি বণ্টন পশ্চিমবঙ্গে একটা রাজনৈতিক ইস্যু। সুষমা স্বরাজও এটা ভালো করে জানেন ও বোঝেন। মমতা এটাকে ইস্যু করুক, মোদি সরকার তা চাইবে না। এটাই স্বাভাবিক।
তিস্তা চুক্তিটি যে হচ্ছে না, এটাই জানান দিলেন সুষমা স্বরাজ। তার বক্তব্যে একটি বিভ্রান্তি আছে। তিস্তার পানি বণ্টনে পশ্চিমবঙ্গ একটি স্টেকহোল্ডার এবং এজন্য তারা বারবার মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে কথা বলতে বলেছেন- সুষমা স্বরাজের এ বক্তব্যে কিছুটা ‘অসত্য’ আছে।
চুক্তি হবে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে। আন্তর্জাতিক কোনো চুক্তি একটি দেশ অন্য কোনো দেশের রাজ্য সরকারের সঙ্গে করে না। এ ক্ষেত্রে চুক্তিটি হতে হবে বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে, যেমনটি হয়েছিল দেব গৌড়ার সময় গঙ্গা চুক্তি, বাংলাদেশ আর ভারতের মাঝে।
ওই সময় ভারত কোনো রাজ্য সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশকে কথা বলতে বলেনি। আন্তর্জাতিক কোনো নদীর ক্ষেত্রে কোনো রাজ্য সরকারের ভূমিকা থাকতে পারে না। এ ক্ষেত্রে কোনো বিরোধ যদি সৃষ্টি হয়, তাহলে ভারতীয় সংবিধান কেন্দ্রকে এককভাবে দায়িত্ব দিয়েছে এ ধরনের চুক্তি করার। এর ব্যাখ্যাও আছে। প্রশ্ন হচ্ছে সদিচ্ছার।
সংবিধান মতে মোদি সরকার পশ্চিমবঙ্গের দাবি উপেক্ষা করে বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তর পানি বণ্টন চুক্তি করতে পারে। কিন্তু সেই সদিচ্ছাটা বর্তমান মোদি সরকারের নেই। প্রশ্নটা সেখানেই। এর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুকে মেলানো যাবে না।
আমরা ভারতকে যথেষ্ট দিয়েছি। বাংলাদেশও ভারত থেকে পাচ্ছে। সর্বশেষ আমরা বিদ্যুৎ আমদানি করছি। মোদি তার পররাষ্ট্রনীতিতে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতিবেশীদের প্রতি অগ্রাধিকার। তার শাসনামলে
বিবিআইএন জোট বিকশিত হচ্ছে। এটা উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা। এ উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তি আরও শক্তিশালী হবে যদি মোদি সরকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা বিরাজমান, তা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। তিস্তার পানি বণ্টন অন্যতম একটি সমস্যা, যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশে নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচনে তিস্তা ইস্যুটি আসবে। ভারতের ভূমিকাও উচ্চারিত হবে বারবার। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে মোদি সরকার তিস্তার পানি বণ্টনের উদ্যোগ নেবে, এটাই কাম্য।
ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র
Daily Jugantor
02.06.2018

0 comments:

Post a Comment