রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও প্রসঙ্গ কথা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে গত ৩০ ডিসেম্বর। সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হলেও নির্বাচনে সহিংসতা, ১৬ জন মানুষের মৃত্যু, ড. কামাল হোসেন কর্তৃক এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতায় রেখে গেছে কিছু প্রশ্ন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয় বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতির ইতিহাসে একটি নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। অতীতের কোনো আমলেই আওয়ামী লীগ এত বিপুলসংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়নি। এটা আওয়ামী লীগের জন্য যেমন একটি রেকর্ড, তেমনি শেখ হাসিনার জন্যও একটি রেকর্ড, যিনি জানুয়ারিতে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। দীর্ঘ ১০ বছর পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় নির্বাচনের ব্যাপারে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন সংসদে কোনো শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় একাদশ জাতীয় সংসদ জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবে, সে ব্যাপারেও এরই মধ্যে নানা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিরোধী দলের রাজনীতি নিয়েও আছে নানা প্রশ্ন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যে দলীয় ব্যবস্থার তথা জোটের (আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল, আর বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দল) জন্ম হয়েছিল, এই নির্বাচন তা ভেঙে দিয়েছে। বিএনপির পরিবর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে চ্যালেঞ্জ করে অন্যতম শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বেগম জিয়ার পরিবর্তে রাজনৈতিক ময়দানে ড. কামাল অন্যতম শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হলেও নির্বাচনের পর তাঁর ভূমিকা এখন সংকুচিত হয়ে যাবে। সংসদে ঐক্যফ্রন্টের বিরোধী দলের নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এ দায়িত্ব আবারও পেতে যাচ্ছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে বিজয়ী জাতীয় পার্টি। সংসদে না থাকায় ড. কামালের ভূমিকা এখন গৌণ। সংসদে ঐক্যফ্রন্টের নেতা এখন মির্জা ফখরুল। সুষ্ঠু একটি নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের যে ভূমিকা, তাতে কমিশন শতভাগ সফল হয়েছে বলা যাবে না। মন্ত্রীদের প্রটোকল নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা, জাল ভোট প্রদান ও সহিংসতা রোধে ইসির ব্যর্থতা চোখে লাগার মতো। উপরন্তু নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব ইসির ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সাংবিধানিকভাবে ইসির ওপর যে দায়িত্ব ও কর্তব্য বর্তেছিল, তা ইসি পালন করতে পারেনি। এ দেশে সহিংসতা নির্বাচনী সংস্কৃতির একটি অংশ। কিন্তু এবারে যেন এই সহিংসতার মাত্রাটা একটু বেশি। ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবরই বেশি। তবে কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাঁদের নির্বাচনী ক্যাম্পও আক্রান্ত হয়েছে। এ দেশের রাজনীতিতে এরশাদের জাতীয় পার্টি একটি তৃতীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল। পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনপ্রাপ্তির দিক দিয়ে জাতীয় পার্টি তৃতীয় শক্তি হিসেবে গড়ে ওঠার একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি বিরোধী দলের ভূমিকায় আবির্ভূত হয়। একাদশ জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টি একই ভূমিকা পালন করবে। তবে দলটির আওয়ামী লীগের ওপর নির্ভরতা তার গ্রহণযোগ্যতা হ্রাসের অন্যতম কারণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে এরশাদের ব্যক্তিগত ইমেজ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘তাঁর অসুস্থতা’, সিএমএইচে থাকার সঙ্গে আরো যোগ হয়েছিল তাঁর সিঙ্গাপুরে ‘চিকিৎসাগত কারণে’ অবস্থান। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, দল পরিচালনার ক্ষমতা এরশাদ অনেকটাই হারিয়েছেন! এর ফলে দল বড় ধরনের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। অন্যদিকে দেশে ইসলামিক শক্তিগুলো শক্তিশালী হয়েছে। ইসলামী শাসনতান্ত্রিক আন্দোলনের ৩০০ আসনে একক প্রার্থী দেওয়া, ক্ষমতাসীন জোটে তরিকত ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্তি ও নির্বাচনে দুটি আসন দেওয়া, জামায়াতে ইসলামীর বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ২৬ আসনে অংশ নেওয়া এ কথাই প্রতিধ্বনিত করে। উপরন্তু হেফাজতে ইসলামের মতো একটি ধর্মীয় সংগঠনের সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া, দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়া কিংবা একটি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসলামপন্থীদের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। তবে নির্বাচনে তারা ভালো করেনি।
নির্বাচনে অবৈধ টাকা লেনদেনের ‘খবর’ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উৎপাটন করেছিল। অভিযোগ করা হয়েছে, ১৫০ কোটি টাকা নির্বাচনের আগে সহিংসতা সৃষ্টির জন্য বিদেশ থেকে এসেছে। এর সত্য-মিথ্যা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা র‌্যাব উদ্ধার করেছে। বিদেশ থেকে টাকা এসেছে—এ দাবি র‌্যাবের। নিঃসন্দেহে এ ধরনের ঘটনা সাধারণ মানুষকে উদ্বিগ্ন করেছিল। সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। সেনাপ্রধান নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ইন এইড টু সিভিলিয়ান পাওয়ারের আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও সহিংসতা বন্ধে সেনাবাহিনীকে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়নি। তবে সেনাবাহিনীর ওপর সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহির্বিশ্বে কিছু উদ্বেগ আমরা লক্ষ করেছি। ‘বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিস্থিতিতে ঘনিষ্ঠ নজর রেখেছিল জাতিসংঘ’—জাতিসংঘের মহাসচিবের বক্তব্য এভাবেই ছাপা হয়েছে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায়। নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে এবং তাদের বাধাহীন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক দল ও বিচারিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল মার্কিন কংগ্রেস। কংগ্রেসে গৃহীত একটি সিদ্ধান্তের খবরও দিয়েছিল কাগজগুলো। এ ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে বহিঃশক্তি, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ছিল। তবে এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় একরকম ‘হস্তক্ষেপ’ কি না—এ প্রশ্নও তোলা যেতে পারে। দুটি বড় দলই একাধিকবার ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের দ্বারস্থ হয়েছিল পরস্পরবিরোধী অভিযোগ করার জন্য। এটা আমাদের রাজনৈতিক দীনতা। বড় দলগুলোর মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের ‘রাজনীতি’ যদি থাকত, তাহলে আমাদের বিদেশিদের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না।
নির্বাচনের আগে আর্থিক বিশৃঙ্খলার বিষয়টি সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতকে ছাড়িয়ে গেলেও (কন্যাশিশুর স্কুলে যাওয়া, মাতৃমৃত্যু হার কমানো), আর্থিক খাতে অনিয়ম চোখে লাগার মতো। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নতুন ৯টি ব্যাংকের চার হাজার ২৭০ কোটি টাকা ঋণখেলাপি হয়ে গেছে। এর মধ্যে সংকটে থাকা ফারমার্স ব্যাংকের খেলাপি ঋণই তিন হাজার ৭০ কোটি টাকা। টিআইবির রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশ থেকে পাচার হয়েছে ছয় লাখ কোটি টাকা, অথচ বিনিয়োগ এসেছে মাত্র এক লাখ কোটি টাকা। বলা হচ্ছে, দুর্নীতির কারণে এটি হয়েছে। পাওয়ার সেক্টরে এক বছরে ১১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে—এটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক। এসব ক্ষেত্রে সরকারের নির্লিপ্ততা চোখে লাগার মতো। গ্রামে নগর সুবিধা সম্প্রসারণের কথা বলছে আওয়ামী লীগ। এটি একটি নতুন দিক। এতে করে যেন গ্রামের যে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, তা ধ্বংস না হয়। গ্রামকে গ্রামের মতোই রাখা উচিত। তবে গ্রামের সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনা দরকার। কৃষিজমি সংরক্ষিত রাখা দরকার। কৃষিজমিতে এখন বাড়িঘর হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে। এর ফলে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট আইন নেই। মানুষ বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্রামে সুদবিহীনভাবে গৃহঋণ দেওয়া যেতে পারে, যাতে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যায়। এর ফলে কৃষিজমিতে বসতবাড়ি করার প্রবণতা কমে যাবে। ব্লু ইকোনমির ধারণাটিও ভালো।
অন্যদিকে বিএনপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের। আওয়ামী লীগ বলছে, তারা ক্ষমতায় গেলে জিডিপি ১০ শতাংশে উন্নীত করবে। এই সিদ্ধান্তটি ভালো। কিন্তু এর জন্য এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বব্যাপী এক তরুণ প্রজন্মের উত্থান ঘটেছে, যাদের বলা হচ্ছে Generation-z (যারা বিশ্বের জনগোষ্ঠীর ৩২ শতাংশ)। এই প্রজন্ম আধুনিক প্রযুক্তিমনস্ক ও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে দেশে দেশে পরিবর্তন আনছে। বাংলাদেশে এবার আড়াই কোটি ভোটার (মোট ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার) নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে। এরাই Generation-z-এর প্রতিনিধি, যাদের জন্ম মধ্য-নব্বই ও মধ্য-২০০০ সালের মধ্যে, তারাই Generation-z নামে পরিচিত (অন্যদিকে Generation-y-এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে তারাই, যাদের জন্ম ১৯৮০ থেকে ১৯৯৪-এর মধ্যে। Generation-x ১৯৬৫ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী)। এই Generation-z বাংলাদেশে একটি ফ্যাক্টর। এদের ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। যে সরকারই এখন ক্ষমতায় যাবে, তারা ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করবে। বাংলাদেশ এরই মধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকা থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ভিশন-২০২১ তৈরি করেছে, যেখানে দারিদ্র্যসীমার মাত্রা ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। Generation-z-কে তাই আস্থায় নিতে হবে। Generation-z-ই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। নয়া সরকারকে এখন এ ব্যাপারে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। নির্বাচন না হলে দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন বয়কট কোনো সমাধান হতে পারে না। ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে কোনো ‘সুবিধা’ ঘরে তুলতে পারেনি। তাই বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। এটিই গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। আমাদের সংবিধানে বলা আছে জনগণই রাষ্ট্রের ‘মালিক’। তাই নির্বাচনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মালিকরা তাদের প্রতিনিধিদেরই নির্বাচিত করেছে। তবে স্পষ্টতই দেখা গেছে, এবার নির্বাচনটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি। শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির অনেক প্রার্থী মহাজোটের বাইরে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং কোথাও কোথাও বিজয়ী হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসনে বিজয়ী হওয়ায় জাতীয় পার্টি আবারও বিরোধী দলে থাকবে বলেই আমার ধারণা। এ ক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি এবার মন্ত্রিসভায় থাকবে কি না, কিংবা এরশাদের ভূমিকা এবার কী হবে, সেটাও দেখার বিষয়। সত্যিকার অর্থে জাতীয় পার্টি যদি বিরোধী দলে থাকে, সেটা গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৭ ডিসেম্বর এক টেলিকনফারেন্সে বলেছিলেন, নির্বাচনে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে হবে। কিন্তু নির্বাচনের দিন বিশৃঙ্খলা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের বক্তব্য আমরা দেখেছি, যেখানে তাঁরা বলেছেন তাঁরা নিজেদের ভোট দিতে পারেননি। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা রোধ করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল নির্লিপ্ত।
নির্বাচনে যা-ই ঘটুক না কেন, এখন তাকাতে হবে সামনের  দিকে। বিরোধী দলের সঙ্গে একটা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। সংসদে যখন সরকারি দল বেশি আসন পায়, তখন সর্বত্র সরকারি দলের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়। এটা সব সময় ভালো হয় না। একাদশ সংসদে বিরোধী দলের, বিশেষ করে বিএনপির আসন কম। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিরোধী দলকে আস্থায় নেওয়ার নামই গণতন্ত্র। আওয়ামী লীগ এই কাজটি করুক, সংসদে বিরোধী দল কথা বলুক, সংসদীয় রাজনীতি আরো বিকশিত হোক—এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

0 comments:

Post a Comment