রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

খোলা জানালা: ডেঙ্গু, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও বাংলাদেশ



খোলা জানালা: ডেঙ্গু, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও বাংলাদেশ



দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না। গত বুধবারের (১৪ আগস্ট) খবর- দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আবারও বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ হাজার ৮৯০ জন, আর জুলাই মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৬ হাজার ২৫৩ জন। ডেঙ্গুতে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসরকারি হিসাবে মারা গেছেন ৬৩ জন (যুগান্তর, ১৬ আগস্ট)। চলতি বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৮ হাজার ২২০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু (যুগান্তর)। এ পরিসংখ্যানই আমাদের বলে দেয় ডেঙ্গু পরিস্থিতি আমরা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না।
যদিও প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে ৪৮ হাজার নারী-পুরুষের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়া জনসংখ্যার তুলনায় খুব বেশি নয়। তবে আমাদের সচেতনতার অভাব ছিল এটা বলতেই হবে। কেননা বছরের সারাটা সময় ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে না। মূলত তিন মাস (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এ রোগের প্রকোপ থাকে। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই যে, জুলাই মাস শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত এ রোগ প্রতিরোধের সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন- বিশেষ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিটি কর্পোরেশনগুলো- তাদের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনা চরমে উঠেছিল।
সংকটের সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর ছুটিতে বিদেশে থাকা, দুটি কোম্পানির কাছে মশা মারার ওষুধ আমদানির বিষয়টি ‘জিম্মি’ থাকা, এ খাতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের দুই মেয়রের নির্লিপ্ততা, কোনো কোনো মন্ত্রী ও মেয়রের অসংলগ্ন কথাবার্তা আমাদের এক ধরনের হতাশার মাঝে ফেলে দিয়েছিল। মিডিয়ার কারণে আমাদের সবার মাঝে সচেতনতা কিছুটা বেড়েছে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকলই- চলতি বছরের ডেঙ্গুর এই প্রকোপ আমাদের কি আদৌ কোনো শিক্ষা দিয়ে যাবে? আদৌ কি আমরা কিছু শিখব?
একটা কথা বলে রাখা ভালো, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি অনেকটা বৈশ্বিক। অর্থাৎ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই ডেঙ্গুর প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির ব্যাপারটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের রোগব্যাধি বৃদ্ধি পাবে।
বিশেষ করে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ইয়োলো ফিভার, রিফ্ট ভ্যালি ফিভার, গোদ রোগ ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে বলে গবেষকরা অনেক আগেই ধারণা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধারণা সত্য বলেই প্রমাণিত হল। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এখন আর ধারণা নয়, বরং এটা বাস্তব সত্য। এ নিয়ে শত শত গবেষণা হয়েছে। প্রতিটি গবেষণায় বলা হয়েছে, পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া।
আমি গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করি। এখনও আমি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছি। কিন্তু এবার এই নিউইয়র্ক শহরে যত গরম পড়েছে, অতীতে কখনও এরকম গরম পড়েনি। গত শীতে নিউইয়র্কে যত ঠাণ্ডা পড়েছিল, অতীতে কখনও এত ঠাণ্ডা পড়েনি। কেউ কেউ এখানে এমন আশঙ্কাও করেছেন যে, একসময় নিউইয়র্ক বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যেতে পারে। এগুলো সবই বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফল। কোথাও কোথাও উষ্ণতা বাড়ছে। কোথাও বাড়ছে শীত। আর উষ্ণতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে মশাবাহিত নানা রোগ।
এই নিউইয়র্ক শহরেও এখন মশার প্রকোপ। বদলে যাচ্ছে পরিবেশ। বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া। আর গবেষণাগুলো সত্য বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। গবেষণায় বলা হয়েছিল, রোগ-বালাই বাড়বে। বাড়ছেও তাই। বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ এর প্রমাণ। শুধু বাংলাদেশ বলি কেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনেও ডেঙ্গুর প্রবণতা বেড়েছে। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কিংবা থাইল্যান্ডে ডেঙ্গুর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও বাংলাদেশে এবার এটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। অতীতে এরকমটি হয়নি কখনও। এ নিয়ে এখন নানা কথাবার্তা হচ্ছে।
সরকার কিংবা ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের দুর্বলতা ছিল, সন্দেহ নেই তাতে। দুর্নীতিও আছে। এখন কীভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এটা নিয়ে সবাই চিন্তাভাবনা করছে। টনক নড়েছে সবার। কিন্তু মূল কথা একটাই- বৈশ্বিক উষ্ণতা যদি রোধ করা না যায়, তাহলে এর ফলে যে ক্ষতি হবে, তার একটি হচ্ছে রোগবালাই বিস্তার। বিভিন্ন ধরনের মশাবাহিত রোগ বিস্তার লাভ করবে এবং তা একসময় মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে যারা বিশ্ব মিডিয়ার মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন, তারা জানেন বৈশ্বিক উষ্ণতা এখন কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। এবং এই উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ডেঙ্গু রোগের বিস্তার ঘটতে পারে, এমন আভাস দেয়া হয়েছিল। জুন মাসের ১০ তারিখে (২০১৯) নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল- How Dengue, a Deadly Mosquito-Borne Disease, Could Spread in a Warming World। গবেষণা ম্যাগাজিন Nature Microbiology-র উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বলেছিল, ডেঙ্গুর পাশাপাশি জিকা ও চিকুনগুনিয়া রোগের (যা মশাবাহিত) প্রাদুর্ভাব ঘটবে এবং তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যাবে।
২০৮০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন অর্থাৎ ২২০ কোটি মানুষ মশাবাহিত এসব রোগে আক্রান্ত হবে। যদিও নিউইয়র্ক টাইমসে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশ। এটা আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য তথা পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের এ ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন ছিল। তারা কিছুই করেননি।
বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ করার জন্য বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা কি আদৌ কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করেছি? বাংলাদেশে দু’জন মন্ত্রী আছেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে। একজন পূর্ণমন্ত্রী, অপরজন ডেপুটি। তাদের কোনো কর্মকাণ্ড কি আমাদের চোখে ধরা পড়ে? বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধকল্পে অনেক ছোট ছোট দেশ সাধারণ অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। আমার আগের এক লেখায় (৩ আগস্ট) আমি ইথিওপিয়ার কথা উল্লেখ করেছিলাম। ইথিওপিয়া একদিনে ৩৫ কোটি গাছ লাগিয়েছিল।
গত ৯ আগস্ট সংবাদ সংস্থা এপির একটি খবর- ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্য একদিনে ২২ কোটি গাছ লাগিয়েছে। ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত। এখন তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের মোট এলাকার তিন ভাগের একভাগে তারা বনায়ন করবে। আরেকটি খবর রাজস্থানের। স্নাতক হতে গেলে লাগাতে হবে গাছ (নিউজপোল, ১০ জুলাই, ২০১৯)। ভারতের রাজ্য সরকার চলতি শিক্ষাবছর থেকেই গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
শুধু গাছ লাগানোই এ প্রকল্পের শেষ কথা নয়, যতদিন না তারা স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করছে, ততদিন পর্যন্ত সেই গাছের যত্ন নেয়ার দায়িত্বও তাদের। কী দারুণ একটি সংবাদ। পরিবেশ রক্ষার জন্য, উষ্ণতা রোধ করার জন্য ছোট্ট এই উদ্যোগটি যে কত বড় একটি সংবাদ, পরিবেশবিদরা এটা ভালো করেই জানেন। প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে এ ধরনের উদ্যোগ কই?
আমাদের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে যারা আছেন কিংবা বন অধিদফতরে যারা আছেন, তাদের কাছে এ ধরনের সংবাদ কোনো আবেদন সৃষ্টি করতে পারে কিনা আমি জানি না। তাদের আগ্রহটা বেশি বিদেশে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে। সেখানে অংশ নিয়ে তারা কী ‘জ্ঞান’ অর্জন করেন, এটা শুধু তারাই বলতে পারেন। অদক্ষতা আর দুর্নীতি এ দুটি মন্ত্রণালয়ের একটি স্বাভাবিক চিত্র।
তাই ডেঙ্গুর প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে, কিংবা কোনো কোনো দেশ (যেমন ব্রাজিল, যেখানে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক ডেঙ্গু রোগী) কীভাবে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ করছে, সে ব্যাপারে আগ্রহ থাকবে কম, এটাই স্বাভাবিক। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধকল্পে IPCC-এর সর্বশেষ রিপোর্টে (World Resources Institute, ৮ আগস্ট, ২০১৯) সাতটি বিষয় উল্লেখ করেছিল। আমাদের কর্তাব্যক্তিরা এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে পারেন। সেই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নে যে দুর্নীতি হয়, তা কমানো দরকার। দুর্নীতি আজ সমাজের প্রতিটি স্তরে।
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম সম্প্রতি বলেছেন, ‘দুর্নীতির মহাপ্লাবন’ চলছে। তিনি বলেছেন, ‘আইন দিয়ে কখনই দুর্নীতি বন্ধ করা যায় না। জেল দিয়েও দুর্নীতি বন্ধ করা যায় না। দুর্নীতি হচ্ছে মানুষের ও সমাজের মূল্যবোধের বিষয়।’ ৩ আগস্ট ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। মিথ্যা বলেননি ব্যারিস্টার আমীর। যে দেশে একজন ডিআইজি প্রিজন পার্থ গোপাল বণিকের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে অর্জিত ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়, কিংবা জেলার সোহেল রানার ব্যাংকে ১৫ কোটি টাকা পাওয়া যায়, সেখানে ‘দুর্নীতির মহাপ্লাবন’-এর বক্তব্যটি সত্য বলেই মনে হয়। দুই ডিআইজির কাহিনী তো সবার মুখে মুখে। তাই ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ৫০ কোটি টাকার ওষুধ কেনা নিয়ে ‘নয়-ছয়’ হবে এটাই স্বাভাবিক!
ডেঙ্গু নিয়ে যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে, তা যেন থেমে না যায়। আমরা যেন এটা বুঝতে চেষ্টা করি যে, ডেঙ্গুর সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সম্পর্কটি জড়িত। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য যে ক’টি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ তার একটি। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য যেসব ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়তে পারে, তার একটি হচ্ছে মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি। ডেঙ্গুর প্রকোপ এর বড় প্রমাণ। ডেঙ্গুর পর ম্যালেরিয়াসহ আরও বেশকিছু মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে। আমাদের প্রস্তুতিটা যেন থাকে, প্রত্যাশা এটাই।
পুনশ্চ : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- বিশ্বে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ‘হামের’ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে (Council on Foreign Relations, Daily Brief, ১৪ আগস্ট ২০১৯)। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত হামে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিশ্বে ৩ লাখ ৬৪ হাজার (২০১৮ সালে ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার)। একসময় হাম নিয়ন্ত্রিত ছিল বলে বলা হতো। কিন্তু হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে আবার। আমাদের স্বাস্থ্য অধিদফতর কি এ ব্যাপারে সচেতন আছে?

১৭ আগস্ট ২০১৯
তারেক শামসুর রেহমান : প্রফেসর ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
tsrahmanbd@yahoo.com

0 comments:

Post a Comment