রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কী মেসেজ দিয়ে গেল


তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে গত ৩০ জুলাই। এর আগে ১৪ মে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এই ৫টি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
খুলনা ও গাজীপুরের নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের পর ধারণা করা হয়েছিল রাজশাহী, বরিশাল আর সিলেটের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক কম হবে। একটা সম্ভাবনা ছিল আস্থার সম্পর্ক তৈরি হওয়ার। কিন্তু শেষ অব্দি এই তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যা হল, তা আমাদের আশাবাদী হতে সাহায্য করে না।এই তিনটি নির্বাচনের মধ্যে বরিশালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে বেশি।
বরিশালে বাসদ প্রার্থী ‘গরিবের ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত ডা. মনীষা কর্তৃক নিজে ‘নৌকায় সিল মারা ব্যালট উদ্ধার’ (আমাদের সময়, ৩১ জুলাই) এবং তাকে লাঞ্ছিত করা কিংবা ‘বরিশালে প্রায় সব কেন্দ্র দখল করে নৌকায় সিল মারার (যায়যায়দিন) যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা আমাদের আশাবাদী করে না।
রাজশাহী ও সিলেট নিয়েও কোনো ভালো খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়নি। রাজশাহীতে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট ও চিহ্নিত ভোটারদের বাধা, ভোট কেন্দ্রের আশপাশে ধানের শীষের নির্বাচনী ক্যাম্প করতে না দেয়ার বিএনপির অভিযোগ, কিংবা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ৪ ঘণ্টা একটি কেন্দ্রে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করা- এগুলো আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির যে কালো দিক, তাই আবার প্রমাণ হল।
আর সিলেটে উৎসবের ভোটে ছিল ‘কলঙ্কের ছিটা’ (কালের কণ্ঠ)। বিএনপির ‘সান্ত্বনা’ একটাই- সিলেটে শেষ পর্যন্ত বিএনপি প্রার্থী এগিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভাষায় ‘তিন সিটিতে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে’ (যুগান্তর)।
রিজভী আবারও জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ও সিইসির অধীনে কখনই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ভিন্ন- নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করাই বিএনপির মূল টার্গেট। এই নির্বাচনকে যতই ‘তামাশার নির্বাচন’ (মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম) কিংবা ‘তিন সিটিতেই ভোট লুট হয়েছে’ (আ স ম আবদুর রব) বলে আখ্যায়িত করা হোক না কেন, এর একটা ‘প্রভাব’ থাকবেই।
রাজনৈতিক সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কিংবা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে না, এ প্রশ্ন এখন আরও শক্তিশালী হবে। জালভোট প্রদান, ব্যালট ছিনতাই, বিরোধীদলীয় এজেন্টদের বের করে দেয়া, জালভোট দেয়ার দৃশ্য টিভিতে দেখানো- গত ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের যে ‘মডেল’ আমরা দেখলাম, তাতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো কারণ নেই। এতে করে বিএনপিকে আস্থায় নেয়ার পরিবর্তে, বৈরিতা আরও বাড়ল।
এদিকে গত ৩১ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন ৮ আগস্ট পর্যন্ত বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট। গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডাদেশ দিয়ে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে। এর অর্থ পরিষ্কার- খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে যেতে হচ্ছে এবং দুঃখজনক হলেও এটাই বাস্তবতা, তাকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত।
ডিসেম্বরে নির্বাচন। ওই নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রার্থী হতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ)তে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’
খালেদা জিয়ার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে এই ধারাটি একটি অন্তরায়। এই ধারা অনুযায়ী তিনি যোগ্য নন। কিন্তু নিম্ন আদালতের রায়কে পূর্ণাঙ্গ রায় বলে ধরে নেয়া হয় না। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল হবে এবং সেখানেও যদি খালেদা জিয়া ব্যর্থ হন, তিনি যাবেন আপিল বিভাগে। এমনকি নির্বাচন কমিশন যদি তার প্রার্থী পদ অযোগ্য ঘোষণা করে, তারপরও তাকে উচ্চ আদালতে যেতে হবে।
ফলে খালেদা জিয়ার প্রার্থী পদ এখন অনেকটাই আদালতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সময়টা কম। মাত্র পাঁচ মাস। নির্বাচনী সিডিউল ঘোষণা করা হবে আগামী অক্টোবরে। এই স্বল্প সময়ের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া উচ্চ আদালতের রায়ে তার প্রার্থী পদ নিশ্চিত করতে পারবেন কিনা, সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই গেল। উপরন্তু তার বিরুদ্ধে মামলা একাধিক। যে কোনো মমলায় তার ‘দণ্ডাদেশ’ তাকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে অযোগ্য করতে পারে। এটা বিবেচনায় নিয়েই বিএনপিকে এখন স্ট্র্যাটেজি ঠিক করতে হবে।
তাহলে বিএনপি এখন কী করবে? বিএনপির স্থায়ী কমিটি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল : খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এমনকি খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পরও বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলে আসছেন, খালেদা জিয়াকে বাদ রেখে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। আমি মনে করি না এটা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত।
মালয়েশিয়ার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম যখন জেলে ছিলেন, তার দল পিপলস জাস্টিস পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তিনি জেলে থাকায় তার প্রার্থী পদ অযোগ্য ঘোষিত হয়েছিল এবং তার স্ত্রী ওয়ান আজিজা ওয়ান ইসমাইল তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।
নেলসন ম্যান্ডেলা রবেন দ্বীপের নির্জন জেলে কাটিয়েছেন দীর্ঘ ২৭ বছর। কিন্তু তার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস শ্বেতাঙ্গ নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে বর্ণবাদ অবসানের জন্য আলোচনা বন্ধ করেনি। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন (১৯৯৪-১৯৯৯)। বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও তিনি মাত্র এক টার্ম প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ভারতে চৌধুরী চরন সিংয়ের সরকার ইন্দিরা গান্ধীকে গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তিনি অবিসংবাদিত এক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক নেতাদের জেলে যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা। তারা ফিরেও আসেন বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে। খালদা জিয়ার জেলে গমন তাকে আরও শক্তিশালী নেতায় পরিণত করতে পারে। তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে বৈ কমেনি। আইনগতভাবে তিনি যদি চূড়ান্ত বিচারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে না-ও পারেন, তারপরও বিএনপির উচিত নির্বাচনে অংশ নেয়া।
নির্বাচন বয়কট কোনো সমাধান হতে পারে না। অতীতে দেখা গেছে নির্বাচন বয়কট করেও (২০১৪) বিএনপি সরকারের পতন ঘটাতে পারেনি। নির্বাচন ছাড়াই যে সংসদ গঠিত হয়েছিল (দশম জাতীয় সংসদ), সেই সংসদ এখনও টিকে আছে। ফলে নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতির মাধ্যমেই সরকারের পরিবর্তন ঘটাতে হবে- এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বিএনপিকে নিয়ে প্রশ্ন থাকবে অনেক।
বাস্তবতা হচ্ছে বিএনপি বড় দল। এ মুহূর্তে সংসদে না থাকলেও বিএনপিই প্রধান বিরোধী দল। জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসিয়ে সংসদীয় রাজনীতি চালু রয়েছে বটে, তবে মাঠের বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে বিএনপি।
তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, জাতীয় পার্টির একটা সম্ভাবনা ছিল এবং এখনও আছে। কিন্তু এ দলটির চেয়ারম্যানের অনেক ভালো ভালো বক্তব্যের পরও তা প্রকৃত অর্থে বিরোধী দলের জায়গায় যেতে পারেনি। সাধারণ মানুষ এই দলটিকে আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে এখনও দেখছে না। বিকল্প হিসেবে দেখছে বিএনপিকেই। তবে জাতীয় পার্টির জন্য একটা সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়। তাই সবকিছুই নির্ভর করছে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তের ওপর।
আর জাতীয় পার্টিকেও তার ‘রাজনীতি’ স্পষ্ট করতে হবে। হয় সরকারে, নতুবা বিরোধী দলে। জাতীয় পার্টি যদি সরকারে থাকে, তাহলে সরকার শক্তিশালী হবে। সরকারের শরিক অন্যান্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলের চেয়ে জাতীয় পার্টির সারা দেশে অবস্থান ভালো।
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য ক্ষুদ্র দল নিয়ে ‘মালয়েশিয়ান মডেলে’ একটি কোয়ালিশন সরকার গঠিত হতেই পারে। আবার বিরোধী দলে থাকলে তাদের সত্যিকার অর্থেই বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে হবে। একটি ‘ছায়া মন্ত্রিসভা’ গঠন করতে হবে। সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের ভুল-ত্র“টিগুলো উল্লেখ করে সংসদে প্রকৃত অর্থেই প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে হবে। এর মাধ্যমে জাতীয় পার্টির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো সম্ভব।
আওয়ামী লীগ অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিয়েছে। দেশে আওয়ামী লীগের অবস্থান ভালো। প্রচুর উন্নয়নের কাজ করছে আওয়ামী লীগ। সরকারের এসব কর্মকাণ্ডকেই পুঁজি করবে আওয়ামী লীগ।
তবে এটাও সত্য, একটি ‘অংশীদারিত্বমূলক’ নির্বাচনের জন্য সরকারের বড় উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে না গেলে দলটির ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা অমূলক নয়। ইতিমধ্যে এর আলামত পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে খুব সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি ভেঙে গেলে এর দায় বর্তাবে সরকারের ওপর।
মামলা-মোকদ্দমায় জর্জরিত বিএনপির নেতাকর্মীরা। দু’একজন সিনিয়র নেতা ছাড়া স্থায়ী পরিষদের সদস্যরা ‘আন্দোলনে’ নেই। কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলেও নেতাদের নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে। সুযোগসন্ধানীরা দল ভাঙতে পারে। কেউ কেউ এমপি হতে চাইবেন- এটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘ধানের শীষের’ প্রতীক তারা পাবেন বলে মনে হয় না। ফলে ‘খালেদা জিয়া মাইনাস’ সেই বিএনপির কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না।
এখন প্রথমে দুটি ও পরে তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে যা ঘটল, তা অনাকাঙ্ক্ষিত। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয় না। বরং যদি একটা ভালো নির্বাচন আমরা পেতাম, তাহলে ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য তা একটি ‘মাইলফলক’ হয়ে থাকত। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে যে ভালো নির্বাচন সম্ভব- এটা সরকার প্রমাণ করতে পারত।
বরিশালে ডা. মনীষার ‘বিজয়ী’ হওয়ার আদৌ কোনো সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু একজন নারী, একজন ডাক্তার হয়েও তাকে লাঞ্ছিত হতে হল। যারা তাকে লাঞ্ছিত করল, তাদের কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন কি দেখেছে একটি টিভি চ্যানেলে (যে চ্যানেলটি সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত) ‘লাইভ’ দেখাচ্ছিল কীভাবে নৌকা প্রতীকে সিল মারা হচ্ছে? এর কোনো বক্তব্য ইসি থেকে পাওয়া যায়নি।
রাজশাহীতে বৃষ্টিতে ভিজলেন মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। প্রতিবাদে ভোটও দিলেন না। কেন দুপুরের মধ্যেই ব্যালট শেষ হয়ে যাবে- এ প্রশ্ন তো সঙ্গত। এর জবাব কি নির্বাচন কমিশনের কাছে আছে? কোনো জবাব নেই। বরং সিইসি বললেন, এই নির্বাচনে তিনি সন্তুষ্ট। যখন প্রকাশ্যে জালভোট দেয়া হয়, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ব্যালট বাক্সভর্তি হয়ে যায়, অথচ সিইসি বলেন তিনি নির্বাচনে সন্তুষ্ট, তখন আর বলার কিছু থাকে না। বরং তার এ বক্তব্য বিএনপিকে সুযোগ করে দিল তার অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার একটি শক্ত অবস্থানে যেতে।
বিতর্কিত এই নির্বাচন সাদিক আবদুল্লাহকে বরিশালে আর খায়রুজ্জামান লিটনকে রাজশাহীতে ‘নগরপিতা’ বানালেও সর্বজন গ্রহণযোগ্য ‘নগরপিতা’ তারা হতে পারবেন না। আস্থার সম্পর্কের যে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়তে পারে। সিলেটে জামায়াত প্রার্থী (স্বতন্ত্র) অংশ নিয়েছিলেন বটে; কিন্তু তিনি সুবিধা করতে পারেননি। তার এই অংশগ্রহণ বিএনপি জোটে তাদের অবস্থান দুর্বল করবে।
নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাগুলো ঘটতে দিয়ে আওয়ামী লীগ খুব ‘লাভবান’ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য এটা একটা ‘বাজে দৃষ্টান্ত’ হয়ে রইল
Daily Jugantor
03.08.2018

0 comments:

Post a Comment