রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ভারতের নির্বাচন থেকে যেসব প্রশ্নের জবাব মেলে না

ভারতে লোকসভা নির্বাচন শেষে ‘এক্সিট পোল’ বা বুথ ফেরত ভোটারদের মনোভাব শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদিকেই এগিয়ে রাখল। এতদিন ধরে বিভিন্ন জরিপে বিজেপি তথা এনডিএ জোট এগিয়ে থাকলেও বুথ ফেরত ভোটারদের ওপর পরিচালিত জরিপে তা আরও স্পষ্ট হল। সোমবার এনডিটিভি, টাইমস নাও, সিএনএন-আইবিএনসহ ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোয় প্রচারিত এক্সিট পোলে এনডিএ জোট ২৮৯ আসন (মোট আসন ৫৪৩) পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও কংগ্রেস এই এক্সিট পোলে অংশ নেয়নি। তাদের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন, ২০০৪ ও ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন শেষে বুথ জরিপ ফলাফল সত্য প্রমাণিত হয়নি। এবার বুথ জরিপের ফলাফল যদি সত্য হয়, তাহলে ১৯৮৪ সালে লোকসভায় মাত্র ২টি আসন পাওয়া বিজেপি এবার সর্বোচ্চ আসনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। তবে ১৯৯৬ সালে একাদশ লোকসভা নির্বাচনের পর বিজেপি প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেছিল। মাত্র ১৩ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন অটল বিহারি বাজপেয়ি। তিনি ১৬ মে সরকার গঠন করে ১ জুন পদত্যাগ করেছিলেন। বিজেপি দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ, দ্বাদশ লোকসভা নির্বাচনের পর। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ লোকসভায় মোট ৬ বছর ৬৪ দিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বাজপেয়ি। পরবর্তী চতুর্দশ ও পঞ্চদশ লোকসভায় কংগ্রেস বিজয়ী হয়ে ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে গেলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ১২ মে শেষ হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের শেষ পর্ব। ফলাফল ঘোষণা করা হবে ১৬ মে। নানা কারণে এবারের নির্বাচন বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে শেষ হল। প্রথমত, এত বিপুলসংখ্যক ভোটার পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনে এর আগে অংশ নেননি। ভোটারদের নিয়ম-শৃংখলার মধ্যে আনা একটা কঠিন কাজ। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন সেই কাজটি অত্যন্ত সূচারুভাবেই সম্পন্ন করেছে। অথচ ভারতে নির্বাচন কমিশনারের সংখ্যা মাত্র ৩। একটা ভয় ছিল, মাওবাদীরা কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদীরা নির্বাচন চলাকালীন বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। সেটা ব্যাপকভাবে হয়নি। এমনকি বেশ ক’জন মাওবাদী নেতা এবার নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন (যেমন ঝাড়খণ্ডে কামেশ্বর বৈঠা, রঞ্জন যাদব প্রমুখ)। দ্বিতীয়ত, লোকসভা নির্বাচনে প্রায় প্রতিটি দলই সিনেমার নায়িকাদের প্রার্থী করেছে এবং নির্বাচনী প্রচারণায় এদের নিয়ে নেতারা অংশ নিয়েছেন। মজার ব্যাপার হল, নায়িকারা এবার বিজেপির দিকেই বেশি ঝুঁকেছেন। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, নায়িকারা যেখানে প্রার্থী হয়েছেন সেটা তার নিজের বা তার স্বামীর এলাকা নয়। তৃতীয়ত, এই নির্বাচনে বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে। একটি গবেষণা সংস্থার মতে, এর পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি রুপির উপরে। খোদ বিজেপির নির্বাচনী বাজেট ১০ হাজার কোটি রুপি। বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যে দলগুলোকে চাঁদা দিয়েছে, তার হিসাবও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। চতুর্থত, এই প্রথমবারের মতো প্রার্থী তালিকায় কোটিপতির সংখ্যা আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ২০০৯ সালের নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থী ছিল মোট প্রার্থীর ১৭ শতাংশ। এবার তা বেড়েছে ২৭ শতাংশে। পঞ্চমত, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মোদি নির্বাচনী ভ্রমণ করেছেন তিন লাখ কিলোমিটার। অতীতে এমনটা কেউ করেননি। মোদির এ সফর শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীদের ভ্রমণের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। ষষ্ঠত, এ নির্বাচনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ বারবার এসেছে, যা অতীতের কোনো নির্বাচনে দেখা যায়নি।শেষ দফা নির্বাচনের আগেও নরেন্দ্র মোদি কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ভারতে বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে (?) মন্তব্য করেছেন। মোদি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের আর্থিক উন্নয়নে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক- সব দিক থেকে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। তাই বলে অনুপ্রবেশকারী আর বিদেশী নাগরিকদের রেশন কার্ড দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে দেয়া হবে না।’ এ ধরনের কথাবার্তা তিনি যে এই প্রথম বললেন, তা নয়। আগেও তিনি ‘অনুপ্রবেশকারী’ ও ‘শরণার্থী’- দু’ভাগে ভাগ করে তার ভাষায় বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছিলেন। তার এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।একজন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী যখন এ ধরনের বাংলাদেশবিরোধী কথাবার্তা বলেন, তখন সঙ্গত কারণেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নানা জটিলতায় আটকে আছে। সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ভারতের পঞ্চম বৃহৎ বাজারে পরিণত হয়েছে। সুতরাং ভারতের একটা বড় স্বার্থ রয়েছে এ দেশের ব্যাপারে। দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে মূল বিষয় একটিই- ভারতের ‘মাইন্ড সেটআপ’। অর্থাৎ বলা যেতে পারে, ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের মানসিকতায় যদি পরিবর্তন না আসে, তাহলে এ দুই দেশের মাঝে সম্পর্ক উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এটা কংগ্রেস কিংবা বিজেপি উভয় সরকারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ভারতে বিজেপি কেন, একটি ‘তৃতীয় শক্তি’ও যদি ক্ষমতায় আসে (আঞ্চলিক দলগুলোর নেতৃত্বে), তাহলেও বাংলাদেশকে ‘সমমর্যাদা না দেয়ার’ যে মানসিকতা, তাতে পরিবর্তন আসবে না। এমনকি একটি বড় দেশের পাশে একটি ছোট দেশ থাকলে, মেদভেদেভের (রাশিয়ার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী) ‘জোন অব প্রিভিলেজ ইন্টারেস্ট’-এর যে তত্ত্ব, সে ব্যাপারেও ভারতীয় মনোভাবে কোনো পরিবর্তন আসবে না। বাংলাদেশের বেশ ক’জন সিনিয়র কূটনীতিক রয়েছেন, যারা এখন ঢাকায় অবসর জীবনযাপন করছেন। কেউ কেউ নিয়মিত কলাম লিখছেন। তাদের অনেকে ভারতে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের প্রায় সবারই মতামত, ভারত যদি তার মানসিকতায় পরিবর্তন না আনে, তাহলে দু’দেশের মাঝে সম্পর্ক উন্নত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে একটা ভয়ের কারণ রয়েছে বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে। নির্বাচনী ইশতেহারে রামমন্দির (বাবরি মসজিদের জায়গায়) পুনর্নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। এটা বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের একটা ভুল মেসেজ দিতে পারে। উগ্রবাদীরা এটাকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে। বাংলাদেশে এদের সংখ্যা অনেক। যদিও প্রখ্যাত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার বলেছেন, ‘মোদি প্রধানমন্ত্রী হলেও তা বাংলাদেশের জন্য ঝুঁকির কারণ হবে না’, কিন্তু তার এ বক্তব্য বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।বাংলাদেশে বিশ্লেষকদের সবাই মোদির বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তবে এটিও বলা প্রয়োজন, ভারতে কেউ বাংলা ভাষায় কথা বললেই সে বাংলাদেশী নয়। তারা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি। বাংলা ভাষাভাষীদের বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা যাবে না। ঢাকায় এক সেমিনারে কূলদীপ নায়ার ‘দক্ষিণ এশিয়ায় অভিন্ন বাজার’ চালুর কথা বলেছেন। কিন্তু ‘সাফটা’ আজও কার্যকর হয়নি। সার্কের অনুন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার কথা, তা বাংলাদেশ ভারতে পায় না। ট্যারিফ আর প্যারা-ট্যারিফের কারণে বাংলাদেশী পণ্য ভারতে বাজার পাচ্ছে না। অথচ চাহিদা আছে প্রচুর। এখন ‘অভিন্ন বাজার’ বা দক্ষিণ এশীয় ইউনিয়ন হলে বাংলাদেশসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতীয় পণ্যের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগিতায় আমরা আমাদের পণ্য নিয়ে দাঁড়াতে পারব না। ঢাকার কোনো কোনো বিশ্লেষক দু’দেশের সম্পর্ককে ‘শর্ট টার্ম, লং টার্ম ও মিডিয়াম টার্মে’ ভাগ করার কথা বলেছেন! অথচ তারা ভুলে গেছেন, সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘সীমিত’ বা ‘দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত’ বলে কিছু নেই। আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমাদের অবস্থান স্থায়ী। এখানে মধ্যবর্তী কোনো সমাধান নেই।ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলাদেশী অভিবাসীদের প্রসঙ্গটি এনেছে। অথচ ভারতীয় গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছিল, বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ (জনান্তিকে ১০ লাখ) ভারতীয় অবৈধভাবে কাজ করেন (গার্মেন্ট, টেক্সটাইল, আইটি সেক্টরে)। তারা বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা পাঠান, তাও অবৈধভাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ১৬২টি ছিটমহলের বাসিন্দারা (১১১টি ভারতীয় যা বাংলাদেশে, ৫১টি বাংলাদেশী যা ভারতে অবস্থিত) মানবেতর জীবনযাপন করছেন এবং ভারতীয় মন্ত্রিসভায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া অনুমোদিত হলেও শুধু বিজেপির বিরোধিতার কারণে তা ভারতীয় সংবিধানের অংশ হতে পারেনি। এ ‘মানবাধিকার লংঘনের’ বিষয়টিও নির্বাচনী প্রচারণায় উচ্চারিত হল না। উল্লেখ্য, ভারত বর্তমানে জাপানকে হটিয়ে দিয়ে বিশ্বের তৃতীয় অর্থনৈতিক শক্তি (২০১১)। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ভারত দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে। তখন দেশটির মাথাপিছু আয় গিয়ে দাঁড়াবে ২২ হাজার ডলার (বর্তমানে ৯৪০ ডলার)। বিশ্ব অর্থনীতিতে তখন ভারত অবদান রাখবে শতকরা ১৭ ভাগ। এ থেকে আমরাও উপকৃত হতে পারি। এ কথাটাও আমরা যেন ভুলে না যাই। ভারতে দরিদ্রতা একটা প্রধান সমস্যা। ২০১০ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩৭.০৫ ভাগ, অথচ ২০০৪ সালে ছিল ২৭.৫০ ভাগ। অর্থাৎ দারিদ্র্য বেড়েছে। সুতরাং বাংলাদেশীদের সেদেশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না কাজের জন্য।তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি বহুল আলোচিত। ফারাক্কা নিয়েও পুনঃআলোচনার সময় এসেছে। মোদি ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে তার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। টিপাইমুখ ও ফুলেরতল ব্যারাজ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। কোনো একটি ক্ষেত্রেও আমরা পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারিনি। ভারতীয় নেতারা আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। সেই আশ্বাস আশ্বাসই থেকে গেছে। বাস্তবতায় আমরা দেখেছি ভিন্ন জিনিস। সুতরাং সম্ভাব্য বিজেপি সরকার এই নীতিতে পরিবর্তন আনবে বলে মনে হয় না।
নিঃসন্দেহে ভারতের নতুন সরকারের দিকে দৃষ্টি থাকবে অনেকের। মোদি সরকার গঠন করতে পারবেন না (কূলদীপ নায়ার)- এ কথার পেছনে যেমন কিছু হলেও যুক্তি রয়েছে, ঠিক তেমনি ভোল পাল্টে মমতা ব্যানার্জি (পশ্চিমবঙ্গের জন্য বিশেষ প্যাকেজের প্রস্তাব দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিং) কিংবা জয়ললিতা যে মোদিকে সমর্থন করবেন না- এটাও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। তাই দু’দেশের বিশ্লেষকরা যখন বলেন, ‘পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও আলোচনার মধ্য দিয়ে সম্পর্ক জোরদার করা যেতে পারে’, ‘তিস্তা সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত’, ‘রাজনৈতিক অবিশ্বাস রয়েছে’, ‘নিজের স্বার্থেই বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে ভারতকে’, তখন এটা দিব্যি দিয়েই বলা যায়, এসব বক্তব্য কাগজ-কলমেই থেকে যাবে। ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা আমাদের সব সময় আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি কিছুই। মনমোহন সিংয়ের মতো প্রধানমন্ত্রী ‘কোনো সীমান্ত হত্যা হবে না’- এ আশ্বাস দেয়ার পরও সে কথার প্রতি সম্মান দেখায়নি বিএসএফ। ভারতীয় রাজনীতিকরা চাইলেও(?) ভারতীয় আমলারা বাংলাদেশকে সমমর্যাদার দৃষ্টিতে দেখেন না। তারা বাংলাদেশ থেকে কীভাবে সুবিধা আদায় করে নেয়া যায়, সেদিকেই দৃষ্টি দেন বেশি। অথচ ভারতের উন্নয়ন থেকে আমরাও উপকৃত হতে পারি। আমরাও হতে পারি ভারতের উন্নয়নের অংশীদার। কিন্তু ভারতের মানসিকতায় যদি পরিবর্তন না আসে তাহলে মোদি কেন, তৃতীয় শক্তি হিসেবে মমতা, জয়ললিতা, মুলায়ম সিং যিনিই প্রধানমন্ত্রী হোন না কেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতীয় নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না। কোনো একটি ক্ষেত্রে সমাধান হবে- এ আস্থাটা রাখতে পারছি না।ভারতের এ নির্বাচন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই। অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি নয়াদিল্লির দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসবে, যদি সেখানে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। সরকার পরিবর্তন হলেও নীতির পরিবর্তন হয় না। অর্থাৎ বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতীয় যে নীতি, তাতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিগত পাঁচ-ছয় বছর ভারত যে সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে কিংবা যে নীতি তারা অবলম্বন করেছে, তা অব্যাহত থাকবে। Daily JUGANTOR 14.05.14

0 comments:

Post a Comment