রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ইয়েমেনের পরিস্থিতি এখন কোন দিকে


ইয়েমেনের বিদ্রোহী হুথি গ্রুপের হাতে ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহ নিহত হওয়ার পর যে প্রশ্নটি উঠেছে, তা হচ্ছেÑ ইয়েমেনের পরিস্থিতি এখন কোন দিকে গড়াবে? সেখানে কি আদৌ স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে? গৃহযুদ্ধ কি সেখানে বন্ধ হবে? সিরিয়া থেকে আইএস উৎখাতের পর ইয়েমেনে কি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ সম্প্রসারিত হতে যাচ্ছে? ইয়েমেন সংকটকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব আর ইরানের মধ্যে এক ধরনের ‘প্রক্সি-যুদ্ধ’ চলে আসছিল। এখন কি তা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে যাচ্ছে? আলী আবদুল্লাহ সালেহ নিহত হওয়ার পর এসব প্রশ্ন এখন উঠেছে এবং কোনো একটি প্রশ্নেই সুস্পষ্ট করে কোনো জবাব পাওয়া যাচ্ছে না।
কয়েক বছর ধরে ইয়েমেন আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষ করে ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা সেখানে সরকার উৎখাতের আন্দোলন করে আসছে। এক পর্যায়ে হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানায় প্রেসিডেন্ট ভবন পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিল। এক পর্যায়ে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরব প্রকাশ্যে ‘যুদ্ধ’ পর্যন্ত শুরু করে। গেল এক বছরের উপরে সৌদি বিমানবাহিনী নিয়মিত হুথি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। কিন্তু তারপরও হুথি বিদ্রোহীদের দমন করা যায়নি; বরং হুথিরা দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়েছে। এখানে বলা ভালো, ২০১১ সালে তিউনেশিয়ায় উচ্চশিক্ষিত এক ফলবিক্রেতা (যিনি আইটিতে ডিগ্রি নিয়েও চাকরি পাননি। ফল বিক্রি করে জীবনযাপন করতেন) বোউয়াজিজি পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে আত্মহত্যা করেছিলেন। তার আত্মহত্যায় ফুলকির মতো আন্দোলন আরববিশ্বে ছড়িয়ে যায় এবং একে একে পতন ঘটে স্বৈরশাসকদের, যারা দীর্ঘদিন ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন। তিউনেশিয়ায় পদত্যাগ করেছিলেন জইন আল আবেদিন, যিনি দীর্ঘ ২৩ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। সেখানে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির কোনো চিহ্ন ছিল না। সেখানে জইন আল আবেদিনের উৎখাতের মধ্য দিয়ে জেসমিন বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছিল। এর রেশ ধরে মিসরে হোসনি মোবারক (১৯৮১ সাল থেকে), মুয়াম্মার গাদ্দাফি (১৯৬৯ সাল থেকে) ও ইয়েমেনে আলী আবদুল্লাহ সালেহ (১৯৭৮ সাল থেকে ক্ষমতায়) সরকারের পতন ঘটেছিল। স্বৈরাচারী শাসকদের উৎখাতের মধ্য দিয়ে সেখানে ‘আরব বসন্ত’র সূচনা হয়েছিল। যদিও আরব বসন্ত তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। মিসরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট (ড. মুরসি) সামরিক অভ্যুত্থানে উৎখাত হয়েছিলেন। গাদ্দাফির মৃত্যু লিবিয়াকে একটি সন্ত্রাসীদের রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তিউনেশিয়ায় কিছুটা স্থিতিশীলতা থাকলেও ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে।
এখানে ইয়েমেনের ইতিহাস নিয়ে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। আজকের যে ইয়েমেন, তা একসময় দুই ভাগে বিভক্ত ছিলÑ উত্তর ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইয়েমেন। উত্তর ইয়েমেন ট্র্যাডিশনালি স্বাধীন। ধরা হয়, উত্তর ইয়েমেন স্বাধীন হয়েছে ১৯১৮ সালের ১ নভেম্বর (আর দক্ষিণ ইয়েমেন স্বাধীন হয় ১৯৬৭ সালের ৩০ নভেম্বর)। দুই ইয়েমেনের মধ্যে বৈরিতা ও যুদ্ধের ইতিহাসও আছে। আজকের ইয়েমেনের যে পরিস্থিতি, তার সঙ্গে অতীত ইতিহাসের একটা যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া যায়। ১৯৬২ সালে উত্তর ইয়েমেনের শাসক ইমাম আহমেদ বিন ইয়াহিয়া মারা গেলে তার ছেলে ক্ষমতাসীন হন। কিন্তু সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করতে চাইলে সেখানে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। ওই গৃহযুদ্ধে সৌদি আরব, ব্রিটেন এবং জর্ডান ক্ষমতাসীনদের পক্ষে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে মিসরের সেনাবাহিনী অবস্থান নেয় সেনাবাহিনীর পক্ষে। মিসর সেখানে সেনাবাহিনীও পাঠায় ১৯৬২ সালে। দীর্ঘ ৬ বছরের গৃহযুদ্ধের পর বিদ্রোহী সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে এবং ইয়েমেন আরব রিপাবলিক (উত্তর ইয়েমেন) হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করে। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন আবদুল্লাহ আল সাল্লাল। এরপর ক্ষমতাসীন হন আলী আবদুল্লাহ সালেহ। অন্যদিকে দক্ষিণ ইয়েমেনে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজনীতির সমর্থকদের প্রভাব বাড়তে থাকে। ১৯৬৭ সালে ৩০ নভেম্বর তথাকথিত মার্কসবাদীরা সেখানে ক্ষমতাসীন হন এবং নিজেদের পিপলস ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক হিসেবে ঘোষণা করেন। সমাজতান্ত্রিক মডেলে গড়া সমাজ ব্যবস্থায় পার্টিপ্রধানই ছিলেন সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। প্রথমে আবদুল ফাত্তাহ ইসমাইল ও পরে আলী নাসির মোহাম্মদ ক্ষমতা পরিচালনা করেন। শেষের দিকে ক্ষমতা পান আলী সালিম আল বেইদেহ। দুই ইয়েমেনের মধ্যে সম্পর্ক কখনও উষ্ণ ছিল না। ১৯৭২ সালে দুই ইয়েমেন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল। উত্তর ইয়েমেনের অভিযোগ ছিল যে, দক্ষিণ ইয়েমেন বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় তাদের দেশটি দখল করতে চায়। তাদের স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল সৌদি আরবের দিকে। তারপরও দুই ইয়েমেন ১৯৯০ সালের ২২ মে একত্রিত হয়। একত্রীকরণের পর আলী আবদুল্লাহ সালেহ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন। আর দক্ষিণ ইয়েমেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আলী সালিম বেইদেহ যুক্ত ইয়েমেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। তারপর থেকে উৎখাতের আগ পর্যন্ত সালেহ এককভাবে ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছিলেন। ২০১১ সালের আরব বসন্তর ঢেউ এসে লাগে ইয়েমেনেও। আন্দোলনের মুখে ২০১১ সালের নভেম্বরে সালেহ সৌদি আরব পালিয়ে যান। এর আগে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর হাদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। হাদি পরবর্তী সময় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিজয়ী হলেও সেখানে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তা সমাধানে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি সৌদি আরবে পালিয়ে পর্যন্ত গিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে সৌদি আরব হুথি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা শুরু করে, যা আজো অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধ কার্যত দেশটিকে একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীর মাঝে বিভক্ত করে রেখেছে। রাজধানী সানা মূলত নিয়ন্ত্রণ করে হুথি বিদ্রোহী গ্রুপ কর্তৃক পরিচালিত সুপ্রিম পলিটিক্যাল কাউন্সিল। একটা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে হাদি সরকার ও তার সমর্থকরা। আল কায়দা সমর্থিত আনসার আল সারিয়ার নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে একটা বড় অংশ। আবার আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীনেও রয়েছে একটি এলাকা। ২০১৫ সালের পর থেকেই কার্যত ইয়েমেনে কোনো সরকার নেই। হুথি ও হাদি সরকার পারস্পরিক যুদ্ধে লিপ্ত। ২০১৫ সালের পর থেকে এখন অবধি সৌদি বিমানবাহিনী হুথি অবস্থানের ওপর বিমান হামলা অব্যাহত রেখে আসছে।
ইয়েমেনের সংকটকে কেন্দ্র করে হুথিদের বাস সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। হুথিরা মূলত শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত। বলা হয়, ইয়েমেনের জাইদি গোত্রভুক্ত হচ্ছে এ হুথিরা। তবে তাদের সঙ্গে সুন্নিরাও যোগ দিয়েছে, বলা হচ্ছে। ২০১১ সালের নভেম্বরে আন্দোলনের মুখে আলী আবদুল্লাহ সালেহ পদত্যাগ করেছিলেন। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর হাদি। পরবর্তী সময় ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐকমত্যের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। ইয়েমেনে বিভিন্ন দল ও গোত্রের সঙ্গে ‘ন্যাশনাল ডায়ালগ কনফারেন্স’ এর ব্যানারে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে এলেও একটি সংবিধান প্রণয়ন করা সম্ভব হয়নি। হাদি ঐকমত্যের প্রার্থী হলেও তিনিও ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। তিনি সৌদি আরবে পালিয়ে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে হুথি বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে রাজধানী সানা দখল করে নিয়েছিলেন সালেহ ও তার বাহিনী। দুঃখজনক হলেও সত্য, হুথি বিদ্রোহীদের হাতেই শেষ পর্যন্ত সালেহর মৃত্যু হলো। তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, তিনি হঠাৎ করেই বর্তমান মিত্র হুথিদের ত্যাগ করে প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদি ও সৌদি জোটের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার ওই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিল সৌদি জোট ও প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মনসুর হাদি গং। কিন্তু হুথি বিদ্রোহীরা এটা পছন্দ করেনি। তারা এটাকে আখ্যায়িত করেছিল এক ধরনের ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে।
ইয়েমেনের এ সংকটের সঙ্গে ট্র্যাডিশনালি সৌদি-ইরান দ্বন্দ্বের একটা যোগসূত্র আছে। সৌদি আরবে সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উত্থান ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোট গঠনের পরপরই সৌদি-ইরান দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এ অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ দ্বন্দ্বের জন্ম। সৌদি আরবের অভিযোগে ইরান ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছে, যা সৌদি আরবের নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। এ কারণেই ২ বছর ধরে সৌদি বিমান ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহী ঘাঁটির ওপর অনবরত বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। পাঠক লক্ষ করে থাকবেন, সিরিয়া ও ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস যখন তার সব ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পতনের দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখন লেবানন আর ইয়েমেনকে ঘিরে সৌদি রাজতন্ত্র ও ইরানি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র এক তাগুত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। প্রতিযোগিতা হচ্ছে এ এলাকা কাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা নিয়ে। সৌদি আরব লেবানন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল যে, লেবানন সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে! লেবাননের ইরান সমর্থিত শিয়া হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগে ছিল, তারা সৌদি আরবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করছে। একজন সৌদি মন্ত্রী থামের আল সাবহান আল আরাবিয়া টিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছিলেনÑ হিজবুল্লাহ এ অঞ্চলের প্রত্যেকটি সন্ত্রাসী কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত, যা সৌদি আরবকে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে! ক’দিন আগে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি ‘নিরাপত্তার অজুহাতে’ সৌদি আরব পালিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও পরবর্তী সময় হারিরি আবার লেবানন ফিরে গিয়েছিলেন। স্পষ্টই হারিরির অভিযোগটি ছিল হিজবুল্লাহর দিকে, যাদের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে ইরান। তিনি পদত্যাগ করে পরে পদত্যাগ প্রত্যাহারও করে নিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষকরা লক্ষ করে আসছেন, এ অঞ্চলের রাজনীতির উত্থান-পতনে সৌদি আরব ও ইরান প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। সৌদি আরব ইয়েমেনে হাদি সরকার, লেবাননে প্রধানমন্ত্রী হারিরি, সিরিয়ার দামেস্কে বিভিন্ন উপদল এবং ইরাকে সরকারের সঙ্গে যারা জোটে আছে, তাদের সমর্থন জুগিয়ে আসছে। অন্যদিকে ইরান ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের, লেবাননে হিজবুল্লাহকে, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদকে, বাগদাদে শিয়া গোষ্ঠীকে সমর্থন জুগিয়ে আসছে। সৌদি আরব ও ইরানের অবস্থান পরস্পরবিরোধী। সৌদি আরব ও ইরানের দ্বন্দ্বের কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। ব্যারেলপ্রতি তেলের দাম এখন ৬৪ দশমিক ৩২ ডলার। এ দাম আরও বাড়তে পারে। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই এলো সাবেক ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর মৃত্যুর খবর। এর মধ্য দিয়ে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ আরও ছড়িয়ে পড়বে। এরই মধ্যে ইয়েমেনের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে সংঘর্ষ। সালেহ হত্যার বদলা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তার নির্বাসিত ছেলে আহমেদ আলী সালেহ। তিনি বর্তমানে আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। মৃত্যুর একদিন আগে সালেহ সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করে ইয়েমেনে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এখন সেখানে অনিশ্চয়তা এলো। সৌদি আরব সেখানে বিমান হামলার পরিধি বাড়িয়েছে। এর অর্থ খুব সহসাই সেখানে গৃহযুদ্ধ থামছে না। এরই মধ্যে সেখানে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার শিশু চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে। হাসপাতালগুলোয় কার্যত এখন আর কোনো সেবা পাওয়া যায় না। অস্ত্র এখন ইয়েমেনের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে ইয়েমেনের পরিস্থিতি কোন দিকে, বলা সত্যিই কঠিন। তবে সেখানে গৃহযুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
Daily Alokito Baangladesh
10.12.2017

0 comments:

Post a Comment