রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ভারতে দলিত আন্দোলন ও ভবিষ্যৎ রাজনীতি

ভারতে দলিত আন্দোলন নতুন একটি মাত্রা পেয়েছে চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে। দলিত, যারা ভারতের অবহেলিত জনগোষ্ঠী, তাদের ডাকা ‘ভারত বন্্ধ’-এ ১০ জন দলিত শ্রেণির মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। এর মাঝে পাঁচজনই মারা গেছে মধ্যপ্রদেশে। গত ২ এপ্রিল ভারতজুড়ে যে ‘বন্্ধ’-এর ডাক দেওয়া হয়েছিল, তা সহিংসতায় রূপ নিয়েছিল। দলিত বিক্ষোভকারীরা ভারতজুড়ে রেলপথ, রাজপথ বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতের এই দলিত ক্ষোভে চাপে রয়েছে বিজেপি সরকার। ভারতের দলিতদের ক্ষোভের কারণ হচ্ছে সুপ্রিমকোর্টের একটি রায়। দলিতদের ওপর নিগ্রহ রুখতে ১৯৮৯ সালে ‘এসসি/এসটি প্রিভেনশন অব অ্যাট্রোসিটি অ্যাক্ট’ নামের একটি আইন তৈরি করা হয়েছিল তৎকালীন রাজীব গান্ধী সরকারের আমলে। ২০১৫ সালে সেই আইনের সংশোধনী আনা হয়। সেখানে ওই আইনেক আরও সক্রিয় করা হয়েছিল। উচ্চবর্ণের কেউ যদি তফসিলি জাতি-উপজাতি সম্প্রদায়ের কারও মাথা বা গোঁফ কমিয়ে দেন, কাউকে যদি দলিত বলে অপমান করেন, সে ঘটনাকেও জামিন-অযোগ্য অপরাধের আওতায় আনা হয় ওই সংশোধনীতে। কিন্তু সম্প্রতি ওই তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন রোধ আইন নিয়ে একটি রায় দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট। সুপ্রিমকোর্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এ সংক্রান্ত কোনো মামলা করার আগেই প্রাথমিক তদন্ত করতে হবে। এমনকি এ সংক্রান্ত কোনো মামলা হলে অভিযুক্তকে আগাম জামিনও দেওয়া যেতে পারে। আর এ রায়ে কংগ্রেস এবং ভারতের বিরোধী দলসহ বিজেপির দলিত নেতারাও ক্ষুব্ধ। তাদের মতে, দলিতদের হাতে আগে যে অধিকার ছিল, শীর্ষ আদালতের রায়ে সেটা খর্ব হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছে। 
সাম্প্রতিক সময়গুলোয় অন্ধ্রপ্রদেশে দলিত ছাত্রনেতা রোহিত ভেমুলার অস্বাভাবিক মৃত্যু, গুজরাটের উনা বা সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের ভিমা কোরেগাঁওয়ে একের পর এক দলিত নির্যাতনের ঘটনায় ভারতে ফুঁসে উঠেছে দলিত শ্রেণি। বেশ কিছুদিন ধরে নৃশংসতা প্রতিরোধ আইনের (এসসি/এসটি) অপ্রয়োগের ব্যাপারে সোচ্চার ছিল উচ্চবর্ণের কিছু সংগঠন। ক্ষমতাসীন বিজেপির কিছু উচ্চবর্ণের নেতার ইন্ধন ছিল এতে। এরপর রায়টি এলো, যা নিঃসন্দেহে ক্ষতিগ্রস্ত করবে দলিতদের। প্রতিবাদটা সেখান থেকে শুরু। শুধু তা-ই নয়, দলিত নেতা ও গুজরাটের বিধায়ক জিগ্নেশ মেওয়ানি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘দলিতদের কাছে ক্ষমতা চেয়ে নিক মোদি, নইলে আমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করব।’ (বাংলা ৯ এপ্রিল ২০১৮)। এরই মধ্যে জিগ্নেশের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। অভিযোগ ‘মানুষের মধ্যে অস্থিরতা’ সৃষ্টি! ভারতীয় দ-বিধির ১৫৩, ১৮৮, ১১৭ এবং ৩৪ ধারায় জিগ্নেশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। 
ভারত স্বাধীন হওয়ার এত বছর পরও দলিত অর্থাৎ নিম্নশ্রেণি একধরনের শঙ্কায় আছে। শুধু দলিত শ্রেণি কেন বলি, ভারতের মুসলমানরাও একধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছেন। আসামে প্রায় ৫০ লাখ বাঙালি মুসলমান এখন ‘পুশব্যাক’-এর ঝুঁকির মধ্যে আছেন। সেখানে নাগরিকত্ব চিহ্নিত করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে এই ৫০ লাখ মুসলমান ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তারা বাংলাদেশ থেকে গেছেন, এমন অভিযোগে তোলা হয়েছে! বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধর্মীয় কোর্সগুলো বাতিলের একটি উদ্যোগের খবরও মিডিয়ায় ছাপা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আলিয়া ইউনিভার্সিটির থিওলজির ১১টি স্টাডি সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। (বাংলা, ৯ এপ্রিল ২০১৮)। এতে সেখানকার মুসলিম সমাজে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ৭১ বছরের এই যে ভারত, এই ভারতকে নিয়ে আমরা কতটুকু আশাবাদী হতে পারব? গণপিটুনিতে মৃত্যু, কুসংস্কারবিরোধিতাকারীদের মৃত্যু, ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে কৃষকের আত্মহত্যা কিংবা ‘ঘর ওয়াপসি’ (ঘরে ফেরা, হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে যারা অন্য ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন, তাদের ফের হিন্দু ধর্মে প্রত্যাবর্তন)Ñ এসব ঘটনা ভারতীয় মূল্যবোধের পতনের উদাহরণ। মোদি এর আগে নিজে বলেছেন, অবৈধ মুসলমানদের (?) ভারত থেকে বের করে দেওয়ার। টার্গেট করা হচ্ছে ভারতীয় মুসলমানদের। ভারতীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে শতকরা ২৪.৬৪ ভাগ হচ্ছেন মুসলমান, ১৮৯ মিলিয়ন, মোট জনগোষ্ঠীর ১৩৪ কোটি। ২০৫০ সালে মুসলমানদের সংখ্যা দাঁড়াবে ৩১০ মিলিয়ন, যা বিশ্বের মুসলমান জনগোষ্ঠীর ১১ ভাগ। অথচ এই মুসলমানরাই আজ নির্যাতনের শিকার। মোদির এই হিন্দুত্ববাদের দর্শনে উৎসাহিত হয়ে উত্তরপ্রদেশের এক সংসদ সদস্য সুরেন্দ্র সিং প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হবে, মুসলমানদের হিন্দু বানানো হবে।’ একুশ শতকে এসে মানুষ দেখছে ভারতীয় গণতন্ত্রের এক রূপ!
এই গণতন্ত্র উগ্র হিন্দুত্ববাদকে উসকে দেয়; কিন্তু কৃষকের ঋণ পেিশাধে সহায়তা করতে পারে না। এই গণতন্ত্র ভারতে শত শত হাজার কোটিপতি সৃষ্টি করেছে; কিন্তু ধর্ষণ বন্ধ করতে পারেনি। ইন্ডিয়া টুডে সাময়িকীর মতে, প্রতিদিন অন্তত তিনজন দলিত নারী ধর্ষণের শিকার হন। অথচ এরা জনগোষ্ঠীর ৫ ভাগের মাত্র ১ ভাগ। জাতপাতের সমস্যা ভারতে অনেক বেশি। ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে আমরা গর্ব করি। কিন্তু এই গণতন্ত্র হায়দরাবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পারেনি। দলিত শ্রেণির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন বটে; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ‘সন্ত্রাসী ও ভারতবিদ্বেষী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছিল। প্রতিবাদে রোহিত আত্মহত্যা করেছিল। ভারতে গণতন্ত্র ধনীদের আরও ধনী করেছে। কিন্তু জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী ৬০ কোটি মানুষের সেখানে কোনো ‘টয়লেট’ নেই। সেই টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারেনি। ২ দশমিক ৩০৮ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ভারতের (পিপিপিতে ৭ দশমিক ৯৯৬ ট্রিলিয়ন ডলার); কিন্তু কৃষক ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করে।
ভারতে কৃষক আত্মহত্যার ‘কাহিনি’ নতুন নয়। খরা কিংবা প্রচুর বৃষ্টি ইত্যাদি কারণে প্রচুর কৃষক আত্মহত্যা করে থাকে। মোদি যখন ২০১৪ সালের মে মাসে ভারতের বিধানসভার নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন, তখন তিনি এক স্বপ্নের কথা শুনিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে ৪৭৭টি জনসভায় বক্তৃতা করেছিলেন। ৩ লাখ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছিলেন। ৫ হাজার ১৮৭টি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। ৩৯ লাখ অনুসারী তার টুইটারে। আর ফেসবুকে নির্বাচনের আগে তার ‘লাইক’-এর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৩০ লাখ। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি খুব কমই গ্রামে গেছেন। তবে ২৯ দেশ সফর করে এরই মধ্যে বিশ্বনেতাদের কাতারে তার নামকে স্থান দিতে পেরেছেন। কী পরিমাণ বদলে গেছেন মোদি, তার বড় প্রমাণ ১০ লাখ রুপির স্যুট পরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে নয়াদিল্লিতে আমন্ত্রণ। একসময় ট্রেনে ট্রেনে চা বিক্রি করে যিনি কৈশোরে জীবিকা নির্বাহ করতেন, সেই মোদি কৃষক লাল সিংয়ের জন্য গত এক বছরে কোনো আশার বাণী নিয়ে আসেননি। গরিব ঘরের সন্তান হয়েও মোদি এখন অভিজাততন্ত্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন। জাতপাতে বিভক্ত ভারতীয় সমাজের জন্য তিনি কোনো ‘মডেল’ হতে পারেননি এখনও। জমি অধিগ্রহণ বিল নিয়েও একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে ভারতে। কংগ্রেস এটাকে পুঁজি করে ভারতব্যাপী একটা জনমত গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেও তাতে তারা খুব লাভবান হয়েছে, তা বলা যাবে না। কিন্তু ভারতের জন্য যে সমস্যাটা প্রকট, অর্থাৎ সমাজে অসংগতি, তা মোদি দূর করতে পারেননি।
নিঃসন্দেহে গত তিন বছরে মোদি নিজেকে একজন উদ্যমী ও শক্তিশালী নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। দলে আদভানির (যিনি প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন) শত নেতাকে পাশে সরিয়ে রেখে তিনি তার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছেন; কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি বড়, তা হচ্ছে তিনি ‘গরিব দেশের ধনী প্রধানমন্ত্রী’। প্রেসিডেন্ট ওবামাকে স্বাগত জানাতে (জানুয়ারি ২০১৫) তিনি ১০ লাখ রুপির স্যুট পরিধান করে তিনি প্রমাণ করেছিলেন আসলে ধনী শ্রেণিরই প্রতিনিধি! একসময় যে নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি কৈশোরে ট্রেনের কামরায় কামরায় চা বিক্রি করতেন, মা পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালাতেন (মে মাসের ২০১৫ টাইম সাময়িকীর প্রতিবেকের কাছে তা তিনি স্বীকারও করেছেন), সেই মোদির সঙ্গে এখন করপোরেট জগতের বাসিন্দাদের সম্পর্ক বেশি। ট্রেনে চা বিক্রেতাদের মতো সাধারণ ভারতীয়দের কাছে এখন তিনি ‘অনেক দূরের মানুষ’। তিনি যখন বিদেশ যান, তখন তার সঙ্গে যান ব্যবসায়ীরা, যান করপোরেট হাউজের প্রতিনিধিরা। কিন্তু গত তিন বছরে তার শরীরে দশ লাখ রুপির স্যুট উঠেছে সত্য; কিন্তু দরিদ্র ভারতের চেহারা তিনি পরিবর্তন করতে পারেননি। কৃষকের আত্মহত্যার প্রবণতা তিনি দূর করতে পারেননি। ইন্টারন্যাশনাল কম্পারিজন প্রোগ্রামের মতে, জাপানকে হটিয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে ভারত। ২০০৫ সালে ভারত দশম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ছিল, আজ তৃতীয় অবস্থানে (সাধারণ নিয়মে এই অবস্থান সপ্তম)। আর গত বছর জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ভারতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি চীনের চেয়ে বেশি হবে। যেখানে চীনের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২ ভাগ, সেখানে ভারতের হবে ৭ দশমিক ৭ ভাগ। নরেন্দ্র মোদি এই ভারতকেই প্রতিনিধিত্ব করছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভারতের জনগোষ্ঠীর ৩৭ ভাগ মানুষ এখনও গরিব। ৫৩ ভাগ জনগোষ্ঠীর কোনো টয়লেট নেই, যারা প্রকাশ্যেই এই কাজটি নিত্য সমাধান করেন। পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষের বাস ভারতে, যাদের দৈনিক আয় বিশ্বব্যাংক নির্ধারিত ১ দশমিক ২৫ সেন্টের নিচে। চিন্তা করা যায়, প্রতিদিন ভারতে ৫ হাজার শিশু মারা যায় ক্ষুধা ও অপুষ্টির কারণে (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০)! সাত বছর আগে এই পরিসংখ্যানে খুব পরিবর্তন এসেছে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। শুধু দরিদ্রতা কেন বলি, প্রায় ৮০ কোটি লোকের দৈনিক আয় ২ দশমিক ৫০ ডলার; ৭০ ভাগ লোক গ্রামে বসবাস করে। নারী-পুরুষের পার্থক্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেখানে অবস্থান (জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ১৮৬-কে হিসাবে ধরে) ১৪৬, ভারতের সেখানে ১৩৬। নারী নির্যাতন আর নারী ধর্ষণ এত ঘটনা ঘটার পরও বন্ধ হয়নি। নারী নির্যাতনের কাহিনি নিয়ে তৈরি ছবির (যা বাস্তব ঘটনার ওপর ভিত্তি করে তৈরি) গুলাব গ্যাং (উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখ-ে গ্রামের সত্য কাহিনি) কথা নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। মোদি গত ৩ বছরে এদের জন্য কী করেছেন? যদিও মাত্র তিন বছরে দরিদ্রতা কমানো সম্ভব নয় কিংবা বিপুল তরুণ প্রজন্মের চাকরির ব্যবস্থাও তিনি করতে পারেননি; জাতপাতের যে সমস্যা, তারও কোনো সমাধান হয়নি। মোদির ‘গেরুয়া বিপ্লব’ এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ আমরা দেখলাম ভারতের ‘সাতবোন’ রাজ্যগুলোয়। ত্রিপুরাসহ এখানে বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপি বড় জয় পেয়েছে। কিন্তু দলিতদের অসন্তোষ যদি অব্যাহত থাকে, যদি মুসলমানরা একধরনের অনিশ্চয়তায় থাকেন, তাহলে মোদির জন্য তো বটেই, গণতান্ত্রিক ভারতের জন্য কোনো ভালো খবর নয়। ভারত বড় দেশ। সেখানে এত বছর পরও জাতপাতের বৈষম্য থাকবে, তা কাম্য হতে পারে না। 
দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ ১৬ মার্চ ২০১৮

0 comments:

Post a Comment