রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

একজন শিক্ষকের প্রতিবাদ

Image result for A teachers protest in Rajshahi University on 2 October


একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ছবি ছাপা হয়েছে গত ৩ অক্টোবর দৈনিক দেশ রূপান্তরের পাতায়। হাতে লেখা একটি প্ল্যাকার্ড, তাতে লেখা ‘দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই। শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে থাকতে চাই।’ তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. ফরিদ খান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো জবাবও তিনি দেননি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনি মাটির দিকে তাকিয়ে আছেন এক ধরনের নীরব প্রতিবাদ! সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের দুর্নীতি, নিয়োগ-বাণিজ্য, কোটি টাকার ঈদ-সালামি, নারী কেলেঙ্কারি ইত্যাদি নিয়ে যখন পত্রিকার পাতাগুলো সরগরম, তখন ড. ফরিদ খানের এই নীরব প্রতিবাদ আমাকে অবাক করেনি। কেননা, আমি জানি এই নীরব প্রতিবাদ আদৌ কোনো ফল বয়ে আনবে না। ড. ফরিদ যখন নীরব প্রতিবাদ জানান, তখন একই সময় একাধিক ভিসি সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় নেতিবাচক সংবাদ ছাপা হয়েছে। খোদ রাবির উপ-উপাচার্য সম্পর্কে নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ে তার একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে, যেখানে উপ-উপাচার্যকে বলতে শোনা গেছে, ‘তোমরা কয় টাকা দেওয়ার জন্য রেডি এই বাক্যটি। উপ-উপাচার্য কথা বলছিলেন চাকরিপ্রত্যাশী জনৈক প্রার্থীর স্ত্রীর সঙ্গে। একটি সংবাদপত্র আমাদের জানাচ্ছে, ‘দুই লাখ টাকার ব্যাংক রসিদ উপ-উপাচার্যের ভাগনেকে পাঠান উক্ত চাকরিপ্রত্যাশী’ (আমাদের সময়, ৩ অক্টোবর)। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ করার অভিযোগ তুলেছেবিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। তাদের অভিযোগ, উপাচার্য অবলীলায় ভর্তি-বাণিজ্যের কালিমা লেপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ ঢাকায় হস্তান্তর করেছেন এমন অভিযোগ শিক্ষক সমিতির (ডেইলি ক্যাম্পাস, ৩ অক্টোবর)। সিলেটের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে একটি শ্বতপত্র প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে ৫৩টি। নানা বিতর্ক, অভিযোগ ও ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদত্যাগ করেছেন এ খবর কিছুটা পুরনো। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতাদের দুই কোটি টাকা ঈদ-সালামির অভিযোগ থাকলেও তা প্রমাণ করার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অভিযোগটি অভিযোগ আকারেই রয়ে গেছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী ১৪ জন ভিসির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে ইউজিসি (জাগো নিউজ, ২২ সেপ্টেম্বর)। এর মধ্যে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা, রোকেয়া ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী দেখে এদের মনোনয়ন দিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়েছিল? এদের আয়-সম্পত্তির হিসাব কী এনবিআর খতিয়ে দেখবে? যুবলীগ নেতাদের যদি আমলনামা নেওয়া হয়, যদি তাদের ব্যাংক হিসাব চাওয়া হয়, তাহলে অভিযুক্ত ভিসিদের ব্যাংক হিসাব চাওয়া হবে না কেন? দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। কাউকে তিনি ছাড় দেবেন না। একজন প্রধানমন্ত্রী কত সাহসী হলে নিজ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে র‌্যাবকে নির্দেশ দেন। অন্যায় আর দুর্নীতি, যারা যারা করবে তাদের কারও মাফ নেই। এই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সর্বত্র পরিচালিত হোক। যারা ব্যাংকের টাকা মেরে দিয়ে, দলের নাম ভাঙিয়ে দিব্যি আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন, তাদেরও আনা হোক আইনের আওতায়। আওয়ামী লীগ এই দুর্নীতিবাজদের ধারণ করতে পারে না। ব্যাংকার, ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সবাই আজ অভিযোগের কাঠগড়ায়। ব্যাংকের টাকা মেরে দিয়ে মালয়েশিয়ায় ‘দ্বিতীয় হোম’ বানাবেন, ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হয়ে ঢাকায় বসে গার্মেন্ট ব্যবসা করবেন, এনজিও চালাবেন, সকালের ফ্লাইটে ক্যাম্পাসে গিয়ে বিকেলের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসবেন এগুলোও অন্যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ ধরনের অন্যায় করবেন, এটা সত্যিই দুঃখজনক। রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ দিলে, এরা এভাবেই পার পেয়ে যান। দুঃখ লাগে যখন দেখি দু-একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ছাড়া অধিকাংশবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাই উপাচার্যদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তেমন একটা সোচ্চার নন। শিক্ষকরা পদোন্নতির নীতিমালা নিয়ে যতটুকু সোচ্চার হয়েছেন, উপাচার্যদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা তেমন সোচ্চার হননি। শিক্ষকরা জাতীয় আদর্শ। তারা যদি তাদের সহকর্মীদের (উপাচার্যরা তো তাদের সহকর্মীই) বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার না হন, তাহলে ভবিষ্যতে তারা আর কোনো সম্মান নিয়ে সমাজে বাস করতে পারবেন না। দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবলিক) সংখ্যা এখন ৪৫টি। শিক্ষামন্ত্রী তার নিজ জেলা চাঁদপুরে একটি বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছেন। মন্ত্রিসভায় তা অনুমোদিত হয়েছে। আমার নিজের জেলা পিরোজপুরেও একটি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন জেলার মন্ত্রী। এসব বিশ্ববিদ্যালয় আদৌ শিক্ষার মান ধরে রাখতে পারবে কি না এটা একটা বড় প্রশ্ন এখন। তবে ভয়টা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ তথা নির্মাণকাজে যে দুর্নীতি হয়, তা আমরা বন্ধ করব কীভাবে? বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এখন শতকোটি নয়, হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। সরকার এ ক্ষেত্রে উদার। সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না। কিন্তু  বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষক ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য হিসেবে আমি কিছু সুপারিশ রাখতে চাই, যা  বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে দুর্নীতি কমাতে সাহায্য করবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় ও দলীয় কর্মকাণ্ডে যিনি সম্পৃক্ত তাদের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে নিরপেক্ষ ও যোগ্য শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি উপাচার্য প্যানেল তৈরি করবে। সেখান থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। উপাচার্যরা হবেন শুধু এক টার্মের জন্য। নিজ বিশ^বিদ্যালয় থেকে উপাচার্য নিয়োগের অলিখিত বিধান বদলাতে হবে। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতি করেই শিক্ষকরা উপাচার্য হন। ফলে শিক্ষক রাজনীতি করতে গিয়ে তারা একটা ‘বলয়’ তৈরি করেন। আর ওই বলয়ের কারণেই উপাচার্য ‘বিশেষ গোষ্ঠীর’ কাছে ‘জিম্মি’ হয়ে যান এবং ওই সুবিধাভোগীদের স্বার্থে কাজ করেন। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএসসির মতো একটি কমিশন গঠন করতে হবে। তিন পর্বের নিয়োগ প্রক্রিয়া সমর্থনযোগ্য। নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা বোর্ড গঠন করতে হবে। ওই বোর্ডে একাধিক বিশেষজ্ঞ থাকবেন। এই কমিশন ইউজিসির বাইরে কাজ করবে। অথবা ইউজিসির অংশ হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ই-টেন্ডার পেতে হবে। ওই প্রক্রিয়ায় কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকতে পারবেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি থাকা মানেই হচ্ছে একটি স্বার্থান্বেষী গ্রুপের পক্ষ হয়ে কাজ করা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা কিছু শিখতে পারি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
কিছু কিছু শিক্ষক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো গবেষক প্রতিষ্ঠানে এবং টিভিতে, ‘পূর্ণকালীন’ কাজ করেন। পৃথিবীর কোথাও এমনটি চিন্তা করা য্বিশ বিশ্ববিশববিদ্যালয় আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে তারা এ কাজটি করেন। জাবির উপাচার্য সম্প্রতি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপ-উপাচার্য  বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ও জ্বালানি ব্যবহার করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন এবং বেশি সময় দেন। এটা তিনি পারেন না। এটা নৈতিকতার প্রশ্ন। এটা তদন্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
বিশ্ববিদ্যালয়েরগুলো এক ধরনের ‘সংকটের’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনিয়ম ও ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার একটি কমিশন গঠন করতে পারে, যারা সরকারকে সুপারিশ করবে। ইউজিসির পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রপতি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। তিনি একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারেন। একজন সাবেক বিচারপতি এর নেতৃত্ব দেবেন। সাবেক উপাচার্য অথবা মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানরা এর সদস্য হতে পারেন। শিক্ষামন্ত্রীর একটি বক্তব্য ছাপা হয়েছে তাতে তিনি সততা ও নৈতিকতা নিয়ে কাজ করার জন্য উপাচার্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যে অনুষ্ঠানে এই বক্ত ব্য দেন ওই অনুষ্ঠানে এমন একজন উপাচার্য বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যার বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা দিয়ে ধানমণ্ডিতে জমি কিনে উপাচার্য ভবন নির্মাণ করার দুর্নীতির অভিযোগে আছে। সরকারের অডিট আপত্তি উঠেছে বলে দৈনিক বণিক বার্তা আমাদের জানিয়েছিল। উপাচার্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের নানা অভিযোগ ড. ফরিদকে বিক্ষুব্ধ করে তুলবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি সবার মতো বক্তৃতা দিয়ে মাঠ গরম করেননি। আমার অবাক লাগল, যখন দেখলাম তার সহকর্মীরা কেউই তার পাশে এসে দাঁড়ালেন না! শিক্ষকরা নিজেদের মানমর্যাদা নিয়ে যখন সচেতন হন না, তখন এর চেয়ে আর দুঃখ কিছু থাকতে পারে না। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের একটি বক্তব্য ছাপা হয়েছে মিডিয়ায়। তার মতে, ‘আলোর পরিবর্তে অন্ধকার নামছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়’ (দেশ-বিদেশে, ২৯ সেপ্টেম্বর)। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি শিক্ষক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। প্রধানমন্ত্রী তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন। তার এই বক্তব্য ধরে প্রধানমন্ত্রী কী কোনো উদ্যোগ নেবেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে? যেসব উপাচার্য আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেবেন? দলীয় কর্মীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে (ক্যাসিনোর ঘটনায়) তিনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। অতীতে কেউ এমনটি করেননি। এখন সব উপাচার্যের অনিয়ম তদন্তের নির্দেশ দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন।
এভাবে অভিযুক্ত ভিসিরা যদি পার পেয়ে যান, তাহলে আগামী দিনের ভিসিরাও এ ধরনের অন্যায় কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবেন। একটি অন্যায় আরেকটি অন্যায়কে ডেকে আনবে। এদিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, ‘জাবি ভিসির বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হচ্ছে না’ (ভোরের কাগজ, ৩ অক্টোবর)। যেখানে ভিসি নিজে চাচ্ছেন একটি তদন্ত কমিটি করে তাকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক, কিংবা যেখানে শিক্ষকরা তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে তার অপসারণ দাবি করেছেন, সেখানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। উপাচার্যের ব্যক্তিগত স্বার্থে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এটি করা উচিত। তার বিরুদ্ধে আদৌ কোনো ষড়যন্ত্র হয়েছে কি না এটাও আমাদের জানা দরকার
Daily Desh Rupantor
10.10.2019

0 comments:

Post a Comment