রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বিদায়ী বছরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ


 

চলতি বছর বাংলাদেশ সংক্রান্ত কয়েকটি সংবাদ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি সংবাদ হচ্ছে- ১. দ্য হেগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার ব্যাপারে বিচার শুরু হওয়া এবং ২. বেশ কয়েক বছরের মতো এবারও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, তা উঠে আসা।

সেই সঙ্গে বছরের শেষদিকে এসে ভারতের তথাকথিত নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি এবং সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে খোদ ভারতে যে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তার কিছুটা আঁচও এসে লাগে বাংলাদেশে। এ সমস্যাগুলোর বাইরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রশংসার যোগ্য। আগামীতে যে ১১টি দেশ অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে, বাংলাদেশ তার অন্যতম।
বলা হচ্ছে, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। ২০১৮ সালে এ হার ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। মাথাপিছু গড় আয় এখন ১৯০৯ ডলার। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। খাদ্য ও এনার্জিতে একরকম স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এশিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম।
১৬ কোটি জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সংখ্যা প্রায় ১৫ কোটি এবং ৯ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে (প্রধানমন্ত্রীর স্বীকারোক্তি, সিএফআর, নিউইয়র্ক, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯)। আর এ মানুষেরাই অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনতে পেরেছেন।
সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে, যা ইতিপূর্বে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনও স্বীকার করেছেন। বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও শীর্ষে, যা বহির্বিশ্বে দেশের অবস্থানকে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে।
তবে বলতেই হয়, সমস্যাও আছে। রোহিঙ্গা সংকটে এক ধরনের ঝুঁকির মুখে আছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এজন্য সারা বিশ্ব প্রশংসা করেছে বাংলাদেশের। কিন্তু দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় (বাংলাদেশ-মিয়ানমার) বাংলাদেশ সব ক্ষেত্রে সফল হয়েছে, তা বলা যাবে না। আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এখন দেখার পালা আইসিজেতে কী রায় আসে। আরেকটা শঙ্কার জায়গা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। বাংলাদেশ বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী না হলেও যে ক’টি দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। সম্প্রতি গ্লোবাল ক্লাইমেট ইনডেক্স-২০২০ প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। তালিকার শীর্ষে রয়েছে পুয়ের্তোরিকো।
পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে গেলে সাগর-মহাসাগরের পানি বেড়ে যাবে। এতে বাংলাদেশের মতো সাগরপাড়ের দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা দীর্ঘদিন ধরেই বলা হচ্ছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে অর্থায়নের ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে পেরেছে, তা বলা যাবে না।
এজন্য পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে একটি দক্ষ আমলা শ্রেণি তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আমরা তা পারিনি। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতেই (‘কপ’ সম্মেলনসমূহ) আগ্রহ দেখা যায় বেশি।
আন্তর্জাতিকভাবে বহুপাক্ষিক আলোচনায় বাংলাদেশ কখনই শক্ত অবস্থানে যেতে পেরেছে বলে মনে হয় না। ঠিক একই অবস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনায়ও। বাণিজ্য সংক্রান্ত আইন-কানুন বেশ জটিল। এখানে দরকার দক্ষ আলোচক, দক্ষ জ্ঞানসম্পন্ন বাণিজ্য কর্মকর্তা, যা আমাদের নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও যথেষ্ট দুর্বল।
ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় আমরা আমাদের ‘অবস্থান’ ধরে রাখতে পারিনি। কয়েকশ’ কোটি টাকা খরচ করে আমলাদের হার্ভার্ডে পাঠিয়ে তাদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা পারব না। এটা হবে এক ধরনের ‘প্রমোদ ভ্রমণ’। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে যখন বাংলাদেশের অর্জন নিয়ে প্রশংসা করা হয়, তখন দেশের অর্থনীতিকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমাদের দরকার একটি দক্ষ আমলা শ্রেণি।
বর্তমান কাঠামোয় দক্ষ আমলা শ্রেণি আমরা পাচ্ছি না, যারা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার যে ‘স্বপ্ন’, তা বাস্তবে রূপ দেয়ার উদ্যোগ নেবে। এক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টান্ত আমরা অনুসরণ করতে পারি, যেখানে বেসরকারি খাত থেকে দক্ষ জনশক্তি নিয়ে প্রশাসন পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসেও আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সচল হতে দেখেছি।
এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের অবদান সবচেয়ে বেশি। মনে রাখতে হবে, ২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের ‘তকমা’ ছেড়ে বেরিয়ে যাবে। বিশ্বের শীর্ষ ২৪টি অর্থনীতির দেশের একটিতে পরিণত হবে তখন।
আইসিটি খাতকে বাংলাদেশ গুরুত্ব দিয়েছে। ১২০টি কোম্পানি বর্তমানে ৩৫টি দেশে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত প্রযুক্তি রফতানি করছে। এর পরিমাণ বছরে ১ বিলিয়ন ডলার, যা কিনা বাংলাদেশ ২০২১ সালে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায়। বাংলাদেশ আইসিটিতে বিশ্বে বড় ভূমিকা রাখতে চায়।
২০২১ সালের মধ্যেই ডিজিটাল অর্থনীতিতে পরিণত হতে চায় দেশটি। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউটের মতে, বর্তমানে বিশ্বের অনলাইনে যে জনশক্তি নিয়োজিত, তাতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এখানে একটি বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
এ সেক্টরটিও গার্মেন্টের মতো যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশ এ সেক্টরকে গুরুত্ব দিয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ শতকরা একশ’ ভাগ ‘ইন্টারনেট কানেকটিভিটি’ অর্জন করতে চায়। কিন্তু কিছু নীতিগত ত্রুটি থাকার কারণে লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ ব্যর্থ হতে পারে।
দেশে সম্ভাবনাময় একটি তরুণ প্রজন্ম থাকা সত্ত্বেও তাদের আমরা দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারিনি। এ তরুণ প্রজন্মকে আমরা ‘জেনারেশন জেড’ বলছি (Generation Z)। যাদের জন্ম ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে তাদেরই ‘জেনারেশন জেড’ নামে অভিহিত করা হয়।
এ ‘জেনারেশন জেড’ চীনকে বদলে দিয়েছে। বাংলাদেশে এ ‘জেনারেশন জেড’ গ্রুপের একটি বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও আমাদের ভ্রান্ত রীতির কারণে এদের আমরা যুগোপযোগী শ্রমশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। দেশে বর্তমানে মাস্টার্স পাস করা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে শতকরা ৩৪ জনই বেকার। প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে আসছে, যারা অদক্ষ।
অথচ আইটি সেক্টরে এদের যোগ্য করে গড়ে তুলে আমরা বিদেশি বাজারের জন্য গড়ে তুলতে পারতাম। কিন্তু আমরা তা পারিনি। নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। অথচ বহির্বিশ্বে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও আইটি সেক্টরের যে চাহিদা, সেদিকে আমাদের কারোরই নজর নেই। তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে নতুন নতুন যেসব প্রযুক্তি- The Internet of Things, Blockchain, Artificial Intelligence, Big Data & Analytics- এসব প্রযুক্তিকে আমরা ‘জেনারেশন জেড’ প্রজন্মের সঙ্গে ব্যাপকভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে পারিনি।
অথচ এসব প্রযুক্তিতে যারা জড়িত ও দক্ষ, তাদের যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চাকরির বাজারে একটি বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। যারা আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নেতৃত্ব দেবেন, তাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়িয়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না। চলতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত শিক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কিন্তু আগামী ৫০ বছর পর্যন্ত বাংলাদেশে কোন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা প্রয়োজন সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কমই। তবে আশার কথা, বহির্বিশ্বে কোনো কোনো গবেষকের লেখায় বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় জনশক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উচিত এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো।
আলোচনার শুরুতে আমরা দুটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছিলাম, যা কিনা বহির্বিশ্বে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। এ দুটি হচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা। এ সমস্যা দুটি ২০২০ সালেও আলোচিত হতে থাকবে বারবার। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থায়নের ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ কপ-২৫ সম্মেলনও শেষ হল কোনোরকম অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি ছাড়াই। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বড় সমস্যা।
অক্সফার্মের একটি রিপোর্টে একটি উদ্বেগজনক সংবাদ ছাপা হয়েছিল ক’দিন আগে। তাতে বলা হয়েছে, প্রতি দুই সেকেন্ডে একজন মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। এটি একটি উদ্বেগের বিষয়। বাংলাদেশ বারবার ‘কপ’ সম্মেলনে এই বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ব্যাপারে তার উদ্বেগের কথা বিশ্ব সম্প্রদায়কে জানিয়ে আসছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর শত শত মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়ে রাজধানীতে বস্তিবাসী হচ্ছে।
সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় তারা গৃহহীন হয়েছে। এদের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল বাংলাদেশ। স্পেনে প্রধানমন্ত্রী আবারও সেই আহ্বান জানিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এটাই হচ্ছে আসল কথা।
যুক্তরাষ্ট্র মূল ধারায় না থাকলেও আজ বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। কপ-২১ সম্মেলনে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত আজ বিশ্ববাসীর। বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে বাংলাদেশের একার পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়।
তবে বাংলাদেশ কতগুলো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ২০ কোটি গাছ লাগানো, সোলার এনার্জি বাধ্যতামূলক করা, নবায়নযোগ্য এনার্জির ব্যবহার বাড়ানো, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার স্বার্থে যানবাহন চলাচল সীমিত করা এবং রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে ‘দিল্লি মডেল’ অনুসরণ করা ইত্যাদি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। দুঃখজনক হলেও সত্য, পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো নয়।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আইসিজের একটি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ। আমরা জানি না সিদ্ধান্তটি কী হবে? তবে সেই সিদ্ধান্ত যে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে এ মুহূর্তে কোনো সাহায্য করবে না, তা বলাই যায়। এ সমস্যার সমাধান নিহিত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দানের মধ্যে।
১৯৮২ সালে মিয়ানমার যে আইন প্রণয়ন করেছিল, তাতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়। গেল প্রায় তিন বছর রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি। এক্ষেত্রে আমরাও বহির্বিশ্বে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো শক্ত অবস্থানে যেতে পারিনি। মিয়ানমারকে ‘চাপে’ রাখতে দেশটির ওপর অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশকে এ লক্ষ্যেই কাজ করে যেতে হবে।
ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিশেষ করে আসামে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি এবং পরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের যেভাবে ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে, তাতে করে বাংলাদেশে একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম হয়েছে। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্টের বিরোধী।
এর আগে তিনি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে ‘স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক’ বলে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। বছরের শেষদিকে এসে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ‘নানা প্রশ্ন’ উঠলেও এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা যথোপযুক্ত ছিল না। আগামী বছরেও এর যে একটি প্রভাব থাকবে, তা বলাই বাহুল্য।
Daily Jugantor
28.12.2019

0 comments:

Post a Comment