রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

Prof Dr Tareque Shamsur Rehman

In his Office at UGC Bangladesh

'ইটলস'-এ বিজয় ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

তারেক শামসুর রেহমান সমুদ্র আইনবিষয়ক আদালত (ইটলস) ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধে যে রায় দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের বড় 'বিজয়' অর্জিত হলেও, বাংলাদেশকে এখন মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও নিরাপত্তার প্রশ্নে মিয়ানমার একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যেমনি সীমান্ত রয়েছে, ঠিক তেমনি সীমান্ত রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গেও। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতকে আমরা যত বেশি গুরুত্ব দিয়েছি, মিয়ানমারকে সেভাবে গুরুত্ব দিইনি। শুধু তা-ই নয়,...

চার দশকের বৈদেশিক নীতি

ড. তারেক শামসুর রেহমানবাংলাদেশ স্বাধীনতার ৪১ বছরে পা দেবে চলতি মার্চ মাসে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে ২০১২ সালের ২৬ মার্চ_ এই সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক নীতি যদি পর্যালোচনা করা যায়, তাহলে মূলত তিনটি ধারা আমরা লক্ষ করব। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত একটি ধারা। দ্বিতীয় ধারার সূচনা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের আগস্টের পর, যা অব্যাহত থাকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। তৃতীয় ধারার সূচনা হয়েছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। এ তিনটি ধারাতেই কিছু কিছু উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি আমরা লক্ষ করি। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে যে রাষ্ট্রব্যবস্থা...

আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য মরণফাঁদ

ভারতীয় পানি আগ্রাসন যে বাংলাদেশকে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অনেক নদী শুকিয়ে গেছে। বাংলাদেশ যদি আগামী ২০ বছর পরের পরিস্থিতি চিন্তা করে এখনই একটি সুদূরপ্রবাসী পরিকল্পনা গ্রহণ না করে তাহলে এ দেশ ২০৩০ সালের দিকে বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানি সঙ্কট পারমাণবিক সঙ্কটের ভয়াবহতাকেও মস্নান করে দিতে পারে। হিমালয় অঞ্চলের পানি সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সহযোগিতার...

সংঘাতময় পরিস্থিতি দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে

তা রে ক শা ম সু র রে হ মা নস্বাধীনতার এই মাসে দুটি বড় দল পরস্পর পরস্পরের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। ১২ মার্চ চারদলীয় জোট ঢাকায় মহাসমাবেশ করে ১০ জুন সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তাদের দাবি একটাই- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল। অন্যদিকে ১৪ মার্চ সরকার সমর্থিত ১৪ দল পাল্টা একটি জনসভা করে জানিয়ে দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন হবে দলীয় সরকারের আওতায়। দুই জোটের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থান রাজনীতিতে একটি সঙ্কট তৈরি করেছে। সংঘাতের সম্ভাবনা বাড়ছে। রাজনৈতিক সঙ্কট অর্থনীতিকে একটি ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দিয়েছে।...

বাংলাদেশ কি ইমেজ সংকটের মুখে পড়েছে

সৌদি দূতাবাসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা খালাফ আল আলীর হত্যাকাণ্ডের পর মুসলিম বিশ্বের সংবাদপত্র তথা মিডিয়ায় যেভাবে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, তা বাংলাদেশের ইমেজ সংকটের জন্য যথেষ্ট। যদিও আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি কিংবা সৌদি উপরাষ্ট্রদূত জামির আল হিন্দ বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। এটা মূলত 'কূটনৈতিক ভাষা'। কূটনীতিকরা এভাবেই কথা বলেন। সৌদি আরব আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের...

বিদ্যুতের জন্য কি কোনো ভালো খবর অপেক্ষা করছে

গ্রীষ্ম পুরোপুরি শুরু না হলেও তাপমাত্রা বাড়ছে। কিন্তু এরই মধ্যে কোথাও কোথাও লোডশেডিং শুরু হয়েছে। এবার গ্রীষ্ম কেমন কাটবে তা নিয়ে একটা শঙ্কা এখন থেকেই তৈরি হয়েছে। যে হারে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে, সে হারে বিদ্যুত্ উত্পাদন হচ্ছে না। গেল ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল গড়ে ৫ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট, যা আগামি এপ্রিলে গিয়ে দাঁড়াবে ৭ হাজার ১৫৭ মেগাওয়াটে। মার্চে বিদ্যুতের চাহিদা হবে ৬ হাজার ৯৫৮ মেগাওয়াট। ধীরে ধীরে এই চাহিদা বাড়বে। মে-জুন মাসে বিদ্যুতের চাহিদা আরও বাড়বে। কিন্তু সেই চাহিদার কতটুকু পূরণ হবে, সেটা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই গেল। এর ওপরে...

গ্রিসের পরিস্থিতি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যত্

গ্রিসের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। গ্রিসের অর্থনৈতিক সঙ্কটের যে চিত্র ইউরোপীয় সংবাদপত্রে ছাপা হচ্ছে, তাতে করে দেশটির জন্য শুধু দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিই সৃষ্টি করছে না, বরং একক মুদ্রা ইউরোর ভবিষ্যেক একটি বড় প্রশ্নের মাঝে ঠেলে দিয়েছে। এখন অভিন্ন ইউরোপের ধারণাটি কল্পনাতেই থেকে যেতে পারে। ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত অভিন্ন ইউরোপের ধারণাটি কোনো অমূলক ধারণা ছিল না, বরং ১৯৫৭ সালে ইউরোপিয়ান কমিউনিটি সৃষ্টির পর ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ম্যাসট্রিচট চুক্তি ছিল অভিন্ন ইউরোপ গঠনের লক্ষ্যে...

সিল্ক রোড' ধরে যেতে যেতে

যারা সিল্ক রোড সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তারা জানেন, সিল্ক রোডে দুটি রুট ছিল। একটি সড়কপথ, যা অনেক দেশের ওপর দিয়ে গেছে। অপরটি সাগররুট। তবে সড়কপথের সঙ্গে সাগররুটের একটা সংযোগ ছিল। প্রায় ৪ হাজার মাইল বিস্তৃত সিল্ক রোডটি এশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের যোগসূত্র ঘটিয়েছে। ইতিহাসে আছে, চীনের হান রাজবংশের আমলে (খ্রিস্টপূর্ব ২০৬ থেকে ২২০), চীনের ব্যবসায়ীরা এই সড়ক ও সাগরপথ ধরে ব্যবসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তেন। তারা চীন থেকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন চীনের বিখ্যাত সিল্ক কাপড়, শার্টিন, চা ও পোরসেলিনের দ্রব্যাদি। সাগররুটে তারা ভারতে আসতেন। এখান থেকে নিয়ে যেতেন মসলা, হাতির...

তুরস্কের কাছে অনেক কিছু শেখার আছে

ঢাকা থেকে তুরস্কের এরজুরুমের দূরত্ব কতটুকু বলতে পারব না। কিন্তু টার্কিস এয়ারলাইন্সের সহযোগী বিমান সংস্থা ওডুগোলোগোর বিমানে করে যখন সন্ধ্যাবেলায় এরজুরুমের বিমানবন্দরের টারমাকে পা রাখলাম, তখন সেখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি। অথচ আমি ঢাকা ছেড়েছিলাম প্লাস ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নিয়ে। এরজুরুমের আতাতুর্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে সেখানে গেছি। উদ্দেশ্য প্রথম আনাতোলিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়া। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ২৬টি দেশের বিশেষজ্ঞরা। মূল বিষয় ছিল জীববৈচিত্র্য, ভ্রমণ ও পরিবর্তিত বিশ্ব নিয়ে আলোচনা করা। আমি নিজেও একটি প্রবন্ধ পাঠ...

একজন কারসেন ও বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের কিছু কথা

একজন অধ্যাপক কারসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল অতি সম্প্রতি তুরস্কের এক শহরে। আমরা দুজনই একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সেখানে গিয়েছিলাম। আমরা সম্মেলনে কথা বলেছি জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ বিপর্যয় নিয়ে। অধ্যাপক কারসেন মূলত জার্মানের নাগরিক ও বর্তমানে ফ্রান্সের স্যাভয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। পরিবেশ তার বিষয়। জার্মানিতে আমার উচ্চতর ডিগ্রি ও পরিবেশ কূটনীতিতে আমার আগ্রহ ইত্যাদি নানা কারণে অধ্যাপক কারসেনের সঙ্গে আমার সখ্য তৈরি হয়। সম্মেলন চলাকালীন ও অবসরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা জার্মান ভাষায় পরিবেশ নিয়ে কথা বলেছি। আমি অবাক হয়েছি বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়...

এ রায় বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বিজয়

হামবুর্গের এই ট্রাইব্যুনালের রায় আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধারণা করা হয়, গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের এলাকায় ১৮ বিলিয়ন ব্যারেল তেল ও ২০০ ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ রয়েছে। বাংলাদেশ যে বড় ধরনের জ্বালানি সংকটের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে এই রিজার্ভ আমাদের জন্য একটা সমাধান বয়ে আনতে পারে।মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইবুনাল ফর ল’...