রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির একটি উপেক্ষিত দিক

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়াকে গুরুত্ব দেয়া হলেও দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পায়নি। অথচ ঐতিহাসিকভাবেই এ দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। বছর দুয়েক আগে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধান শ্রীলঙ্কা সফর করেননি। কিংবা মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো সফরের খবরও আমাদের জানা নেই। অথচ শ্রীলঙ্কাকে এশিয়ার দুটি দেশ চীন ও জাপান যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়। দীর্ঘদিন শ্রীলঙ্কা অস্থিতিশীল থাকলেও বেশ ক'বছর ধরে সেখানে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। ফলে বিশ্ব আসরে শ্রীলঙ্কার গুরুত্ব বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করে গেলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ থেকেই ছুটে গিয়েছিলেন কলম্বোয়। এর আগে চীনা প্রেসিডেন্টও দেশটি সফর করে গেছেন। সেখানে এই দুটো দেশেরই বিনিয়োগ বেড়েছে। বিশেষ করে চীনের রয়েছে বিশাল এক বিনিয়োগ। বিশাল এক সম্ভাবনার দেশ শ্রীলঙ্কা। আমরা শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারি। শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের পুরনো বন্ধু। যে ক'টি দেশ প্রথমদিকে (১৯৭২) বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা তার মাঝে অন্যতম। তবে ইতিহাস বলে, ওই অঞ্চলটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হাজার বছরের পুরনো। ইতিহাস থেকে জানা যায়, শ্রীলঙ্কার আদি রাজা ভিজয়ার (ঠরলধুধ) পূর্ব পুরুষ ছিল এ অঞ্চলের মানুষ। এক সময় বাংলাদেশের বিক্রমপুর, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ এবং পশ্চিম বাংলার একটি অংশ নিয়ে গড়ে উঠেছিল ভাংগা সাম্রাজ্য (অথবা বাংগা) বা ঠধহমধ করহমফড়স (ইধহমধ)। রাজা ভিজয়ার আদি পুরুষের জন্ম এই ভাংগা সাম্রাজ্যে। এক সময় এ অঞ্চল ও শ্রীলঙ্কা ব্রিটেনের কলোনি ছিল। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত দেশটির পরিচিতি ছিল সিলোন হিসেবে। শুধু ব্রিটিশরাই ওই দেশটি দখল করেনি। পর্তুগিজরাও এসেছিল সেই ১৫০৫ সালের দিকে। গ্রিকরাও এসেছিল। তারা এর নামকরণ করেছিল ঞড়ঢ়ৎড়নধহব. আরব বণিকরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাণিজ্য করতে এসে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটিয়েছিল। তারা শ্রীলঙ্কায়ও এসেছিল। তারা শ্রীলঙ্কার নামকরণ করেছিল ঝবৎবহফরন. পর্তুগিজরা এ অঞ্চলটির নামকরণ করেছিল ঈবরষধড়, যা ইংরেজিতে অনুবাদ করলে দাঁড়ায় ঈবুষড়হ. অর্থাৎ ব্রিটিশরা পর্তুগিজদের দেয়া নামই রেখে দিয়েছিল। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের তথা বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের সম্পর্কের আরেকটা কারণ বৌদ্ধ ধর্ম। মহারাজা অশোকের পুত্র ভিসু মাহিন্দ বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারের জন্য ওই অঞ্চল অর্থাৎ আজকের শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন। ওই সময়ের এক রাজা দেভানাম (উবাধহধস) বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। সেই থেকে শুরু। শ্রীলঙ্কার জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭০ ভাগ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মুসলমানরাও সেখানে আছেন। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যোগসূত্র থাকলেও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সম্পর্ক যে খুব উন্নত, তা বলা যাবে না। প্রায় ৪২ বছর আগে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হলেও মাত্র ২০০৮ সালে দু'দেশের মাঝে সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যও খুব আশাব্যঞ্জক নয়। ২০০০-২০০১ অর্থবছরে বাংলাদেশ যেখানে রফতানি করেছিল ১৪ কোটি ২৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকার পণ্য, সেখানে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ কোটি ৩৭ লাখ ২৪ হাজার টাকায়। এর চেয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি রফতানি করে তাইওয়ান, থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরে। আমরা যদি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমদানির পরিসংখ্যান দেখি, তাহলে দেখব যেখানে ২০০০-২০০১ সালে আমদানি হয়েছে ৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকার পণ্য, সেখানে ২০০৬-২০০৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৩ কোটি ১১ লাখ টাকায়। এর চেয়েও অনেক বেশি পণ্য আমরা আমদানি করি থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুর থেকে। সুতরাং বাণিজ্য বাড়ানো দরকার। বাংলাদেশ তার পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চাইতে পারে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের চামড়াজাত দ্রব্য, মেলামাইন ও প্লাস্টিক সামগ্রী, নিটওয়্যার, সাবান ও সিরামিক সামগ্রীর চাহিদা রয়েছে শ্রীলঙ্কায়। যদি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়, তাহলে বাংলাদেশী পণ্যের একটি বড় বাজার হতে পারে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশী তৈরি পোশাক, চামড়া ও ওষুধ শিল্পে বিনিয়োগ করতে পারে। আশার কথা, রাজাপাকসের সফরের সময় ওইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কায় জাতিগত দ্বন্দ্ব ছিল। সংখ্যালঘু তামিলরা ১৯৮৪-৮৫ সালের পর থেকে স্বাধীন একটি তামিল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে আসছিল, যার নেতৃত্বে ছিল তামিল টাইগাররা। তামিল টাইগাররা একটি দুর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনীতে পরিণত হয়েছিল। যদিও তাদের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের জন্য তারা বিতর্কিত ছিল। ১৯৮৫ সালের পর থেকে কোনো সরকারই তামিল টাইগারদের সঙ্গে যুদ্ধে বিজয়ী হতে পারেনি। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন মাহেন্দ্র রাজাপাকসে। ২০০৯ সালের মে মাসে তামিলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। এর আগে তিনি তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ পরিচালনা করেন। ওই যুদ্ধে টাইগার নেতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ নিহত হন। টাইগারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়াটা প্রয়োজন ছিল। কেননা গৃহযুদ্ধের কারণে সব ধরনের উন্নয়ন সেখানে বন্ধ হয়েছিল। এমনকি একসময় শ্রীলঙ্কা পোশাক শিল্পের নেতৃত্বে ছিল। তারা দক্ষ জনশক্তি তৈরি করেছিল এ খাতে। পোশাক শিল্পের অনেক বিশেষজ্ঞ শ্রীলঙ্কার নাগরিক এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন পোশাক তৈরি কারখানায় কাজ করেন। যুদ্ধের পর সেখানে এক ধরনের স্থিতিশীলতা এসেছে। সেখানে বিনিয়োগ বেড়েছে। বাংলাদেশ এ সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে। যৌথ উদ্যোগে সেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা সম্ভব। বলতে দ্বিধা নেই, সমসাময়িক শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে রাজাপাকসের জনপ্রিয়তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পেঁৗছেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কিংবা তামিল যুদ্ধের নায়ক জেনারেল ফনসেকার সঙ্গে তার বিরোধ তাকে কিছুটা বিতর্কিত করলেও টাইগারদের পরাজিত করায় সাধারণ সিংহলির মধ্যে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ২০০৫ সালে তিনি প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি দ্বিতীয়বারের মতোও বিজয়ী হয়েছেন। ছয় বছর পর পর সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরই মধ্যে সেখানে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে এবং রাজাপাকসের জন্য তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্টের পথ প্রশস্ত হয়েছে। রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার ফ্রিডম পার্টির নেতা। এ দলটি দীর্ঘদিন শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করে আসছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গাও ছিলেন এ দলটির নেতা। রাজাপাকসে দীর্ঘদিন ধরে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকলেও বাংলাদেশে এর আগে আর আসেননি। বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানও ওই দেশে যাননি। রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মাঝে কোনো বিরোধ নেই। বরং বেশ কিছু ইস্যুতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অবস্থান এক ও অভিন্ন। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, আঞ্চলিক সহযোগিতা ইত্যাদি নানা ইস্যুতে দু'দেশের অবস্থান এক। দুটো দেশই চায় আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হোক। দরিদ্রতা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমস্যা। দরিদ্রতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে কলম্বো সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিশন ১৯৯২ সালে তাদের খসড়া রিপোর্ট উপস্থাপন করেছিল। পরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সপ্তম সার্ক সম্মেলনে ওই ঘোষণা অনুমোদিত হয়েছিল। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, দক্ষিণ এশিয়ার শতকরা ৭৪ জন গ্রামে বাস করে। আর এদের মাঝে শতকরা ৮২ জনই দরিদ্র। এ দরিদ্রতা শ্রীলঙ্কায় যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে বাংলাদেশেও। দেশ দুটি এখন দারিদ্র বিমোচনে কাজ করে যেতে পারে। শ্রীলঙ্কা একটি ছোট দেশ, বাংলাদেশের আয়তনের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের যে অর্জন, তা বিশ্বমানের। শুধু ক্রিকেট নিয়েই যে শ্রীলঙ্কা বিশ্ব জয় করেছে তা নয়, শ্রীলঙ্কা একটি শিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তুলেছে। শ্রীলঙ্কার গ্রাজুয়েটরা আজ অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে এবং ইউরোপের সর্বত্র বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত। দেশটির শিক্ষার হার প্রায় ৮৮ ভাগ। শিশুমৃত্যুর হার তারা কমিয়ে এনেছে। উচ্চশিক্ষায় তারা একটা মান অনুসরণ করে আসছে। ঢালাওভাবে তারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেনি। একটি দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সেবিকাগোষ্ঠী (নার্স) রয়েছে শ্রীলঙ্কায়, যাদের যথেষ্ট চাহিদা আছে বিদেশে। আমরা এ সেক্টরে শ্রীলঙ্কার সহযোগিতা নিতে পারি। উচ্চশিক্ষার মডেলও আমরা গ্রহণ করতে পারি। ঢালাওভাবে সার্টিফিকেট বাণিজ্য না করে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বাংলাদেশ যদি তৈরি করতে পারে, তাহলে শ্রীলঙ্কার মতো এ জনশক্তি হবে বাংলাদেশের সম্পদ। এটা সত্যিই দুঃখজনক যে, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির প্রণেতারা এ দেশটিকে কখনও বিবেচনায় আনেননি। যে কারণে বাংলাদেশের চার দশকের পররাষ্ট্রনীতিতে উপেক্ষিত থেকেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা। ১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে সার্কের যাত্রা শুরু হয়েছিল এই ঢাকা থেকেই। এরপর পর্যায়ক্রমে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শ্রীলঙ্কাতেও একাধিকবার সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তাতে করে শ্রীলঙ্কার নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নেতাদের পরিচয় রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্পর্কের যে গভীরতা, তা তৈরি হয়নি। এমনকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়নি। অথচ আমরা পূর্বমুখী পররাষ্ট্রনীতির যে কথা বলছি, সেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হচ্ছে আমাদের মূল টার্গেট। সেখানে এক বিশাল মুক্তবাজার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর ফলে আমাদের পণ্যের বিশাল এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে পারে। ভারত এরই মধ্যে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে একটি 'মুক্তবাজার' চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভারত আসিয়ানের পূর্ণ সদস্যও হতে চায়। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি অনেক। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের প্রবেশদ্বারকে আরও সহজ করতে পারে। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হয়েছে। আমরা এ সমুদ্রবন্দরটি ব্যবহার করতে পারি। এতে করে সিঙ্গাপুরের বিকল্প হতে পারে হাম্বানটোটা। সময় ও অর্থ সাশ্রয়ও হবে এতে। শুধু তাই নয়, হাম্বানটোটার গভীর সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগাতে পারি। চীন এ সমুদ্রবন্দরটি নির্মাণ করে দিয়েছে। সোনাদিয়ায় আমরা একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চীন এ বন্দর নির্মাণে আগ্রহ দেখালেও প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সময় এ সংক্রান্ত কোনো চুক্তি হয়নি। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে আসবেন। ধারণা করছি, তখন চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হতে পারে। এ সময়সীমার মধ্যে আমরা হাম্বানটোটার গভীর সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা এবং ভারতের মাদানি গ্রুপের প্রস্তাব স্টাডি করতে পারি। অর্থনীতিতে এখন আঞ্চলিক সহযোগিতা গুরুত্ব পাচ্ছে। আঞ্চলিক সহযোগিতাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে বিভিন্ন আঞ্চলিক সহযোগিতা। সদ্য শেষ হওয়া জেসিসির সভায় (নয়াদিলি্ল) চেন্নাই-মংলা-চট্টগ্রাম সমুদ্রপথ চালু ও তা সিঙ্গাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করার একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা এ সমুদ্রপথে কলম্বো অথবা হাম্বানটোটাকেও যোগ করতে পারি। মূল কথা হচ্ছে, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির প্রণেতারা বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারেন। Daily Alokito Bangladesh 29.09.14

1 comments:

  1. স্যার, এটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। একাডেমিক দিক থেকে কাজে লাগবে।

    ReplyDelete