রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

অসম্ভবকে সম্ভব করলেন মাহাথির



অসম্ভবকে সম্ভব করলেন মাহাথির মোহাম্মদ। ইতিহাসের খাতায় নাম লেখালেন তিনি। ৯২ বছর বয়সে তিনি আবারও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন। এ কাজটি তার জন্য সহজ ছিল না। চার-চারবার জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে শুধু মালয়েশিয়ার জন্যই নয়, বরং মুসলিমবিশ্বের কাছে তিনি ছিলেন একটি অবিস্মরণীয় নাম। একসময় জাতীয় রাজনীতি থেকে বিদায়ও নিয়েছিলেন। জাতীয় রাজনীতিতে তার আর ফিরে আসার কথাও ছিল না। ১৯৮১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। স্বেচ্ছায় তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১৫ বছরের মতো তিনি ছিলেন পর্দার আড়ালে। গত ক’বছর তাকে আবার সক্রিয় হতে দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের ব্যক্তিগত দুর্নীতি নিয়ে তিনি কথা বলেন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় হন। রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে নিজের পুরানো দল উমনোতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। এই উমনোতেই ১৯৪৬ সালে যোগদান করে তিনি মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। উমনোতে যোগ দিতে না পেরে তিনি আলাদা একটি দলও গঠন করেছিলেন। কিন্তু ওই দলের অনুমোদন তিনি পাননি প্রথম দিকে। পরে পেয়েছিলেন এবং তিনি আনোয়ার ইবরাহিমের নেতৃত্বাধীন বিরোধীদলীয় জোট পাকাতন হারাপানে যোগ দেন। তার নেতৃত্বাধীন এই জোট গত ৯ মে মালয়েশিয়ার চর্তুদশ সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়। দীর্ঘ ৬০ বছরের উপরে ক্ষমতায় থাকা বারিসোআ নাসিওনাল জোট পরাজিত হয়। নির্বাচনের ফলে দেখা গেছে, মাহাথির মোহাম্মদ নেতৃত্বাধীন পাকাতান হারপান জোট ২২২ আসনের সংসদে ১২২টি আসন পেয়েছে। আর নাজিব রাজাকের নেতৃত্বাধীন বারিসোআ নাসিওনাল পেয়েছে ৭৯টি আসন। ইসলামি দল পাস পেয়েছে ১৮টি আসন। বাকি তিনটি আসন পেয়েছে অন্যরা। বলা ভালো, পাকাতন হারপানের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আনোয়ার ইবরাহিম, যিনি এখন সমকামিতার অভিযোগে জেলে এবং সম্পর্কে তিনি মাহাথিরের শ্যালিকা ডা. আজিজানের স্বামী। ডা. আজিজান এখন উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। পাকাতন হারাপান মূলত বিরোধী দলের একটি জোট। এই জোটে আছে আনোয়ার ইবরাহিমের পিকেআর, তাদের আসন ৪৯, কিয়াকের ডিএপি ৪২, মাহাথিরের পিপিবিএম ১২, ম্যাট সাবুরের আসানাহ ১০, শফি আবদালের ওয়ারিসান ৮ আসন পেয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি রাজ্যগুলোয়ও স্থানীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে দেখা যায় জহুর মালাক্কা, কেদাহ, পেনাং, সেলাঙ্গার, নেগেরি সেম্বিলান, পোরাক রাজ্যে পাকাতন সরকার গঠন করতে পারবে। সাবাহতে সরকার গঠনের জন্য স্বতন্ত্র দুই সদস্যের এবং পেরাকে সরকার গঠনের জন্য পাসের সমর্থন প্রয়োজন হবে।
মাহাথির মোহাম্মদের এই বিজয় নিঃসন্দেহে মালয়েশিয়ার রাজনীতির জন্য একটি বড় ঘটনা। তবে তার প্রধান কাজ এখন পিকেআর-প্রধান আনোয়ার ইবরাহিমকে জেল থেকে বের করে আনা। এজন্য রাজার ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর করার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ধারণা করা হচ্ছে, আনোয়ার ইবরাহিমই হবেন ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী। আনোয়ার ইবরাহিম জেল থেকে মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত মাহাথির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাবেন। অথচ মাহাথির যখন এর আগে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে তিনি আনোয়ার ইবরাহিমের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। সমকামিতার অভিযোগ এনে তাকে তিনি জেলেও পাঠিয়েছিলেন। সেই আনোয়ারই কিনা এখন তার শত্রু থেকে মিত্র। আনোয়ারই জেলে থাকা অবস্থায় পাকাতান হারপানের নেতৃত্বে দেওয়ার জন্য মাহাথির মোহাম্মদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। একসময় আনোয়ার ইবরাহিম মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন সরকারে উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।
মাহাথির মোহাম্মদ এই ৯২ বছর বয়সে এসেও যে ‘সাহস’ দেখিয়েছেন, তাতে অবাক না হয়ে পারা যায় না। তিনি নিজেই বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকার সময় কিছু ভুল করেছিলেন। এই ভুল শোধরানো ও মালয়েশিয়াকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্যই তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বটি নিতে চান। তিনি ভুল করেছেনÑ এই যে স্বীকারোক্তি, এই স্বীকারোক্তিকে মানুষ সম্মান দেখিয়েছে। তার প্রতি মানুষ আস্থা রেখেছে। তার ফল নির্বাচনে তার জোটের বিজয়। তার জন্য বিষয়টা সহজ ছিল না। কেননা মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে বারিসোআ নাসিওনালের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। দীর্ঘ ৬০ বছরের উপরে এই জোট ক্ষমতায়। উপরন্তু পুরানো সব দলই এই জোটে আছে। যেমন উমনো বা ইউনাইটেড ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের পাশাপাশি রয়েছে মালয়েশিয়ান চাইনিজ অর্গানাইজেশন, মালয়েশিয়ান ইন্ডিয়ান কংগ্রেস, সারওয়াক ইউনাইটেড পিপলস পার্টি, সাবাহ ইউনাইটেড পার্টি। চীনা ও ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে স্বাধীনতার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এদের সহযোগিতা নিয়েই উমনো দীর্ঘ ৬০ বছর একটি জোট বা ফ্রন্ট গঠন করে ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছিল। এরা যে নির্বাচনে হেরে যাবে, এটা ছিল অকল্পনীয় ব্যাপার। কিন্তু মাহাথির মোহাম্মদ এই অসম্ভব কাজটি সম্ভব করলেন। 
পাঠকদের বোঝার সুবিধার্থে আমরা ২০১৩ সালের ৫ মে যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তার একটি ফল দিলাম। পাঠকরা মিলিয়ে দেখতে পারেন ২০১৩ সালে বারিসোআ নাসিওনালের কী অবস্থান ছিল। ওই নির্বাচনে বারিসোআ নাসিওনাল পেয়েছিল ১৩৩ আসন (মোট আসন ২২২)। এর মাঝে উমনো ৮৮, মালয়েশিয়ান চাইনিজ অ্যাসোসিয়েশন ৭, মালয়েশিয়ান ইন্ডিয়ান কংগ্রেস ৪, ভূমিপুত্র পার্টি ১৪, পিপলস মুভমেন্ট ১, ইউনাইটেড সাবাহ পার্টি ৪, সারওয়াক পিপলস পার্টি ৭, সারওয়াক ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ৪, পাসোকমমগুন মুরুট অর্গানাইজেশন ৩, ইউনাইটেড সাবাহ পিপলস পার্টি ১টি আসন পেয়েছিল। আর বিরোধী পাকাতান রাকায়েত জোট পেয়েছিল ৮৯ আসন। এর মাঝে ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন পার্টি ৩৮, পিপলস জাস্টিস পার্টি ৩০, প্যান-মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি ২১ আসন পেয়েছে। এই জোটে অন্য ছোট ছোট দল ওই নির্বাচন কোনো আসন পায়নি। 
মালয়েশিয়ায় এই যে পরিবর্তন, এই পরিবর্তনকে অনেকে ‘রাজনৈতিক সুনামি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। অনেক প্রশ্ন এখন সামনে আছে। কী হতে পারে মালয়েশিয়ায় এখন কিংবা মাহাথির কি আবারও তার আগের ক্যারিশমা দেখাতে পারবেন? প্রথমত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মাহাথির যে ডাক দিয়েছিলেন, তা সাধারণ মানুষ গ্রহণ করেছে। মানুষ বিশ্বাস করেছে, ক্ষমতার শীর্ষপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী (নাজিব রাজাক) নিজে দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন। 1 Malaysian Development Berhad নামে একটি বিনিয়োগ সংস্থা গঠন করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। ওই বিনিয়োগ সংস্থা থেকে ৭০০ মিলিয়ন ডলার নাজিব রাজাকের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বরাতে এই দুর্নীতির তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছিল। এই তথ্য নাজিব রাজাককে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে ফেলে দেয়। তিনি এর জবাব দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, এই অর্থ এক সৌদি যুবরাজ তাকে দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ এটা বিশ্বাস করেনি। একসময় নাজিব রাজাক ছিলেন মাহাথিরের ভাবশিষ্য। ২০০৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। একসময় রাজাক যাকে গুরু মানতেন, সেই মাহাথির মোহাম্মদই তার পতন ডেকে আনেন। দ্বিতীয়ত, এখন কি মাহাথির দুর্নীতির অভিযোগে নাজিব রাজাককে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাবেন? এ প্রশ্নটি উঠেছে এরই মধ্যে। মাহাথির বলেছেন, তিনি কোনো প্রতিশোধ নেবেন না। তবে তিনি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। এর অর্থ পরিষ্কার। নাজিব রাজাককে এখন ওই ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে হবে। মাহাথির মোহাম্মদকে এই বিষয়টির ফয়সালা করতেই হবে। কেননা তিনি নির্বাচনি প্রচারে এই দুর্নীতির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। তৃতীয়ত, আনোয়ার ইবরাহিমের সঙ্গে তার সম্পর্ক কোন পর্যায়ে উন্নীত হয়, সেটাও দেখার বিষয়। আনোয়ার ইবরাহিমকে জেল থেকে মুক্তি, তার জন্য সংসদে একটি আসন দেওয়া অর্থাৎ একটি উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সংসদে আসাÑ এসবই এখন মাহাথিরকে করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, সংসদে মাহাথিরের নিজ দলের আসনসংখ্যা কম। তাকে সরকার পরিচালনায় আনোয়ার ইবরাহিমের দলের ওপর নির্ভর করতে হবে। চূড়ান্ত বিচারে আনোয়ার ইবরাহিমের সঙ্গে তিনি যদি কোনো বিষয়ে ‘বিবাদে’ জড়িয়ে যান, তাহলে তা তার জন্য ভালো কোনো সংবাদ বয়ে আনবে না। তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। আগের মতো কর্মক্ষম নন তিনি। অনেকেই ধারণা করছেন, তিনি হয়তো আনোয়ার ইবরাহিমের হাতে ক্ষমতা দিয়ে ফের ‘অবসরে’ যাবেন। তিনি যদি এদিকে অগ্রসর হন, তার নিজের জন্যও তা ভালো। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, তৃতীয় বিশ্বের অনেক নেতাই ক্ষমতা ধরে রাখতে চান শেষ বয়সে এসেও (জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবে)। এখন মাহাথির এটি করবেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়। চতুর্থত, সংসদের বর্তমান বিরোধী জোট হচ্ছে বারিসোআ নাসিওনাল। সুষ্ঠু সংসদ পরিচালনার জন্য মাহাথিরকে বারিসোআ নাসিওনাল অথবা তার আগের দল উমনোর সঙ্গে একটা আস্থার সম্পর্কে যেতে হবে। এই দুটি বড় জোটের সঙ্গে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক না থাকলে তিনি সরকার পরিচালনা করতে পারবেন না। পঞ্চমত, দীর্ঘ ৬০ বছর যে দলটি অথবা জোট রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, প্রশাসনের সর্বত্র তার একটি সমর্থক শ্রেণি তৈরি হয়েছে। মাহাথিরকে এদের আস্থা অর্জন করতে হবে। কাজটি মাহাথিরের জন্য খুব সহজ নয়। ষষ্ঠত, মালয়েশিয়ার অর্থনীতি আর আগের অবস্থানে নেই। অর্থনীতিকে আগের জায়গায় নিয়ে যেতে হলে সেখানে একটি সুষ্ঠু নীতি ও স্থিতিশীলতা দরকার। মাহাথিরের একটা প্লাসপয়েন্ট হচ্ছে, তিনি তার সঙ্গে তার পুরানো অনেক সহকর্মীকে পেয়েছেন, যারা যোগ্য। ফলে সরকার পরিচালনায় নতুনদের পাশাপাশি পুরানোদের সহযোগিতাও তিনি পাবেন। সপ্তমত, মালয়েশিয়ার এই নির্বাচন প্রমাণ করল, নেতৃত্ব যদি সৎ হয়, তাহলে পরিবর্তন সম্ভব। এক্ষেত্রে বয়স কোনো ফ্যাক্টর নয়। মাহাথির সেটা দেখিয়ে দিলেন। 
আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার হচ্ছেন মাহাথির মোহাম্মদ। দীর্ঘ ১৫ বছর পর তিনি আবার দায়িত্ব পেলেন সরকার পরিচালনার। তবে এই ১৫ বছরে তার নিজের যেমন পরিবর্তন হয়েছে, ঠিক তেমনই পরিবর্তন এসেছে দেশটিতেও। তার বিরুদ্ধেও অভিযোগে ছিল কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের। তার দুই ছেলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ ছিল দুর্নীতির। তিনি নিজে স্বীকার করেছেন, তিনি কিছু ভুল করেছিলেন। ১৫ বছর পর সেই আগের শক্তি, স্পিরিট তার আর নেই। এই ৯২ বছর বয়সে এসে তার কিছু পাওয়ারও নেই। এখন মানুষের প্রত্যাশা তিনি কতটুকু পূরণ করবেনÑ সেটাই বড় প্রশ্ন। 
ডালাস, যুক্তরাষ্ট্র
পুনশ্চ : 
পিকেআর : পিপলস জাস্টিস পার্টি
ডিএপি : ডেমোক্র্যাটিক অ্যাকশন পার্টি
পিপিবিএম : মালয়েশিয়ান ইউনাইটেড ইনডিজেনিয়াস পার্টি
আমানাহ : ন্যাশনাল ট্রাস্ট পার্টি
ওয়ারিসান : সাবাহ হেরিটেজ পার্টি
জিএস : গাসাসান সেজাহ্টেরা (জোট)
পাস : মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি
Daily Alokito Bangladesh
13.05.2018

0 comments:

Post a Comment