রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

তিনি এলেন, কিন্তু জয় করতে পারলেন না

 তিনি এলেন, কিন্তু জয় করতে পারলেন না। তিনি অং সান সু চি, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, এক সময়ের গণতন্ত্রের নেত্রী। তিনি এসেছিলেন দ্য হেগে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস বা আইসিজেতে।
কোনো সাক্ষ্য দিতে নয়, বরং মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটে যে গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছিল এবং সেখানে ওইসব ‘কর্মকাণ্ডের’ জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি এসেছিলেন তাদের পক্ষে কথা বলার জন্য। সত্যকে স্বীকার করার জন্য অপর আটজন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী যখন তাকে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তখন নির্লজ্জের মতো কোর্টে মিথ্যাচার করে গেলেন তিনি।
একজন মানুষ, যিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, সংসারের সুখ পাননি, বছরের পর বছর দুই পুত্রসন্তানের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, ভালোবেসে যাকে বিয়ে করেছিলেন সেই মাইকেল এরিসের মৃত্যুশয্যায়ও (১৯৯৯) তার পাশে থাকতে পারেননি, তিনি, অং সান সু চি মিথ্যাচার করে গেলেন দ্য হেগে।
অথচ আজ থেকে ২৯ বছর আগে ১৯৯১ সালের ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের অসলোতে তার অবর্তমানে তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। ওই সময় তিনি ছিলেন গৃহবন্দি। ২৯ বছর আগে নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান সু চির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন। কী বৈসাদৃশ্য!
২৯ বছর পর ঠিক এই দিনে, ১০ ডিসেম্বর তিনি এসেছিলেন আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে। আর তার ঠিক পরদিন তিনি নগ্নভাবে মিথ্যাচার করে গেলেন। ১০ ডিসেম্বর সু চি যখন আইসিজের আদালতে এসেছিলেন, তিনি ছিলেন ভাবলেশহীন; পাথরের মূর্তির মতো বসে ছিলেন। আর শুনছিলেন গাম্বিয়ার আইনজীবীদের বক্তব্য।
তারা বলছিলেন, সু চির দফতরের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে রোহিঙ্গা ধর্ষণের অভিযোগকে মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তার দফতর থেকে ‘ফেক রেপ’ (ভুয়া ধর্ষণ) নামে একটি ফেসবুক পেজ খোলা হয়েছে।
এর কোনো জবাব ছিল না সু চির কাছে। তিনি কি ইতিহাসের আরেক ‘খলনায়কে’ পরিণত হলেন? সেনাবাহিনীর বর্বরতার পক্ষে অবস্থান নেয়া সু চি নিজের নামের প্রতি সম্মান দেখাতে পারলেন না।
তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন কারা অন্তরালে। এই সেনাবাহিনীই তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিল। দীর্ঘদিন বিদেশে বসবাস করা এবং ১৯৭২ সালে এক বিদেশিকে বিয়ে করার পর ১৯৮৮ সালে দেশে ফিরে এসেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল অসুস্থ মাকে দেখাশোনা করা। এরপরই তিনি রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন।
মিয়ানমারে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে তার একক সংগ্রাম এবং মিয়ানমারকে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে তার ভূমিকা প্রশংসিত হলেও রোহিঙ্গা গণহত্যায় নির্লিপ্ত থাকা এবং সেনাবাহিনীর পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে তিনি বিতর্কিত হন। যেখানে শান্তির জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন, সেখানে নিজ দেশে তিনি শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হন। এমনকি দ্য হেগে তিনি যখন সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গান, তখন তার ‘সব অর্জন’ ম্লান হয়ে যায়। তিনি পরিণত হন নিন্দা ও ধিক্কারের পাত্রে।
তিনি আদালতে বলেছেন, রাখাইনে সামরিক বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছিল এবং ‘কিছু লোক’ কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে! কী ভয়ংকর মিথ্যাচার! সত্য হল, সামরিক বাহিনীর ওপর কোনো হামলা হয়নি। কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ির ওপর আরসা নামের একটি জঙ্গি গোষ্ঠীর হামলার খবর মিয়ানমারের সরকারি মিডিয়া থেকে প্রচার করা হয়েছিল।
বাস্তবতা হচ্ছে, অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা মুসলমানদের তাদের ঘরবাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা যে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, এ ছবি স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা হয়েছিল। এখনও এসব ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।
সুতরাং তিনি যখন ‘সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা দেশত্যাগ করেছেন’ বলে মন্তব্য করেন, তখন তার সেই যুক্তি ধোপে টেকে না। আদালতে তিনি বলেছেন, ‘রাখাইনের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের (রোহিঙ্গা শব্দটি তিনি ব্যবহার করেননি) বিতাড়নের বিষয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধ হলেও গণহত্যা নয়। এটিও মিথ্যা কথা।
কারণ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ৪৪৪ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। তাতে বলা হয়, হত্যা, গণধর্ষণ, শারীরিক লাঞ্ছনার ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যাবিষয়ক বিচারের আওতায় পড়ে।
শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ করে তদন্ত ও বিচারের কথা বলা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে। সু চি এখন সেই প্রতিবেদনকেও অস্বীকার করলেন! এটি মিথ্যাচার এবং সত্যকে অস্বীকার করার শামিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, যুক্তরাষ্ট্র সরকার সম্প্রতি চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের চার জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
সু চি আদালতকে এ কথাও বলেছেন যে, মিয়ানমারে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিচার হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদে মিয়ানমারের বিচার প্রযোজ্য নয়। এটিও ভুল ব্যাখ্যা ও মিথ্যাচার। মিয়ানমারে গণহত্যা হয়েছে এবং জাতিসংঘের অনুসন্ধানে তা প্রমাণিত হয়েছে।
সুতরাং ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন এখানে প্রযোজ্য। কনভেনশনের ৩নং অনুচ্ছেদে কোন ধরনের অপরাধ শাস্তিযোগ্য তা উল্লেখ করা হয়েছে। অনুচ্ছেদ ২-এ উল্লেখিত ‘অপরাধের’ ব্যাখ্যাও দেয়া হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৩-এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘গণহত্যা’, ‘ষড়যন্ত্র করে হত্যা’, ‘উত্তেজনা সৃষ্টি করে হত্যা’, কিংবা ‘কু-কর্মের সহযোগিতায় হত্যা’ ইত্যাদি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং ‘জেনোসাইড কনভেনশনের’ ১নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সুতরাং রাখাইনে যে ‘অপরাধ’ সংঘটিত হয়েছে তা সু চি অস্বীকার করেন কীভাবে?
সু চি আদালতকে আরও বলেছেন, রাখাইনের সংঘাতকে আরও গভীর করতে পারে এমন কিছু আইসিজের করা উচিত নয়। এ বক্তব্য আদালতের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের শামিল। আদালত ব্যক্তি বা রাষ্ট্রের কথায় চলে না। আদালত চলে সত্য ঘটনার ওপর। রাখাইনে গণহত্যা হয়েছে। ধর্ষণ হয়েছে। বড় ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। তদন্তে তা প্রমাণিতও হয়েছে। ‘জেনোসাইড কনভেনশন’ অনুযায়ী তাই বিচার হচ্ছে।
সু চি আরেকটি মিথ্যাচার করেছেন, যখন তিনি আদালতকে বলেন, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে! কী চরম মিথ্যাচার!
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রশ্নে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে বটে; কিন্তু তা লোক দেখানো। বিভ্রান্তিকর। একজন লোকও ওই ‘প্রত্যাবাসন চুক্তি’ অনুযায়ী মিয়ানমারে ফেরত যায়নি। উপরন্তু নানা ফন্দি-ফিকির করে এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে। প্রত্যাবাসনের জন্য যে ‘ফরম’ সরবরাহ করা হয়েছে, তা বিভ্রান্তিকর ও জটিল। রোহিঙ্গারা এই ‘ফরম’ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে তারা ফেরত যেতে চাচ্ছেন না।
অথচ সু চি আদালতকে বললেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ রাজি হয়েছে! এটি ভুল তথ্য। চুক্তি হয়েছে বটে, তবে নিজ নাগরিকদের ফেরত নেয়ার দায়িত্ব মিয়ানমারের। বলা ভালো, গাম্বিয়া আইসিজেতে যে মামলা করেছে তাতে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে অভিযুক্ত করা হয়নি। অভিযোগ আনা হয়েছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।
গাম্বিয়া প্রাথমিকভাবে যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে, তাতে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। ১. সেখানে, অর্থাৎ রাখাইন স্টেটে, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া; ২. সেনাবাহিনী কিংবা কোনো প্যারামিলিশিয়া বাহিনী সেখানে যাতে আর গণহত্যা না চালায়, তার ব্যবস্থা নেয়া; ৩. রাখাইনে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, সেই গণহত্যা সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ নষ্ট না করা; ৪. বর্তমান পরিস্থিতি আরও যাতে জটিল না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখা।
গাম্বিয়া এ ব্যাপারে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ চেয়েছে। সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যাবে, এর কোনো একটির ব্যাপারেও মিয়ানমার সরকারের আপত্তি থাকার কথা নয়। রাখাইনে ব্যাপক গণহত্যা হয়েছে, এটা মিয়ানমার স্বীকার না করলেও সেখানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, এটা তারা স্বীকার করে।
সু চি কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার বিচারের কথা বলে পরোক্ষভাবে গণহত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি পরোক্ষভাবে আদালতে এটা বলার চেষ্টা করেছেন যে, সেখানে হত্যা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এ কথা বলে আইসিজের বিচার বন্ধ করা যায় না। ২০১৭ সালের আগস্টের পর বড় ধরনের কোনো গণহত্যা হয়নি, এর আভাস দিয়েছেন সু চি।
গণহত্যার প্রমাণ ধ্বংস না করার কথা আবেদনে বলা হয়েছে। কিন্তু এটা কি অনেক দেরি হয়ে গেল না? মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তো সব প্রমাণ ইতিমধ্যে ধ্বংস করে ফেলেছে। রোহিঙ্গাদের আদি বাড়িঘরের কোনো অস্তিত্ব নেই। বুলডোজার দিয়ে তা ধ্বংস করা হয়েছে। ওইসব অঞ্চল এখন বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
সুতরাং সু চি আদালতে কী বলবেন, তা সবারই জানা। কেউ তদন্ত করতে গেলেও সেখানে কোনো আলামত খুঁজে পাবে না। তবে সু চি আদালতকে আশ্বস্ত করেননি যে এ ধরনের ‘ঘটনা’ আর ঘটবে না। এ ক্ষেত্রে আইসিজের কিছু করার থাকবে কিনা, সেটাও একটা প্রশ্ন।
আইসিজেতে করা মামলার রায় কী হবে আমরা তা জানি না। মামলা করার সঙ্গে সঙ্গেই যে রায় পাওয়া যাবে তেমনটি নয়। চূড়ান্ত রায় পেতে আমাদের অনেক সময় লাগবে। তবে স্পষ্টতই এই মামলার রায় যাই হোক, এ মুহূর্তে আমাদের আশাবাদী হওয়ার মতো তেমন কিছু ঘটবে না। আইসিজে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত নিতে বলতে পারে না। তাদের কর্মপরিধিতে এমনটি নেই। উপরন্তু গাম্বিয়ার উপস্থাপনায়ও এমনটি নেই।
দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারে ১৯৮২ সালে যে আইনটি পাস হয়েছে (1982 Citizenship Low), এর মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করা হয়েছে। সংঘাতের মূল সমাধান এখানে নিহিত। কিন্তু আইসিজে এ ব্যাপারে কোনো মতামত দিতে পারে না। সব মিলিয়ে মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রশ্নে এক ধরনের ‘চাপে’ আছে।
অং সান সু চি নিজে দ্য হেগের আদালতে উপস্থিত থেকে এই ‘চাপ’ কমাতে পারেননি। বরং বিতর্কিত হলেন। তিনি অত্যন্ত ক্ষমতাবান জেনারেল মিন আউং হ্লাইংয়ের স্বার্থরক্ষা করে ২০২০ সালের নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চাচ্ছেন বটে; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মিয়ানমারের সংবিধান সংশোধনীতে সেনাবাহিনী সায় দেবে না এবং তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্তির সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
গাম্বিয়ার প্রতিনিধি আদালতকে ওই সময়কার রোহিঙ্গা হত্যা ও নির্যাতনের কথা আদালতকে বলেছেন। আদালতের ১৭ জন বিচারপতি এসব বিষয়ে অবগত আছেন। রায়ে যাই বলা হোক না কেন, আইসিজের একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আইসিজে নিজে কোনো ‘রায়’ বাস্তবায়ন করতে পারে না। রায় বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিতে হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে। ফলে আইসিজেতে যে মামলাটি হয়েছে, তার রায় আমাদের সন্তুষ্ট নাও করতে পারে।
তবে নিঃসন্দেহে এটা বলা যায়, মামলা করার মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার আজ ‘অপরাধী’। আন্তর্জাতিকভাবে ধিকৃত ও শাস্তিযোগ্য অপরাধে অপরাধী মিয়ানমারের জেনারেলদের পক্ষাবলম্বন করায় অং সান সু চি আজ নিজেও অপরাধী। তার জন্য একটি ‘সুযোগ’ তৈরি হয়েছিল। তা তিনি নিতে পারলেন না।
Jugantor
14.12.2019

0 comments:

Post a Comment