রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বাইডেন ও দক্ষিণ এশিয়া

জো বাইডেন যখন আগামী ২০ জানুয়ারি (২০২১) যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন, তখন একটি প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে, তা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে জো বাইডেনের ভূমিকা কী হবে। দক্ষিণ এশিয়া, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগর এই তিন অঞ্চল ঘিরে আগামী দিনের বিশ্বরাজনীতি আবর্তিত হবে। এই তিনটি অঞ্চল একটির সঙ্গে অপরটির যোগসূত্র আছে এবং এ অঞ্চলে উত্তেজনা আছে। বৃহৎ শক্তির মধ্যকার ‘প্রভাব বলয় বিস্তারের’ প্রতিযোগিতাও আছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এ অঞ্চলকে ঘিরে ‘ইন্দো প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি’ রচিত হয়েছিল। এই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ভারত। ভারতকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন যে নীতি প্রণয়ন করেছিল, তাতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণও চেয়েছিল ওই প্রশাসন। এই স্ট্র্যাটেজির উদ্দেশ্য একটাই চীনকে ঘিরে ফেলা। এই স্ট্র্যাটেজি পুরনো Containment policy-এর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়, যখন যুক্তরাষ্ট্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘিরে ফেলার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে রচিত স্ট্র্যাটেজির সফল বাস্তবায়ন আমরা দেখেছি ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতন ছিল লক্ষ্য। এখনো সেই Containment policy নতুন করে সাজানো হচ্ছে। এবারের টার্গেট চীন। চীনকে দুর্বল করা, চীনকে ঘিরে ফেলা, চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকে দেওয়া এসবই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশ। আর তাই আমরা দেখি QUAD--কে সক্রিয় হতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে, কিংবা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের উপস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করতে। এসব কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে চীন-ভারত উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে একদিকে, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুযোগ পেয়েছে এ অঞ্চলে তার সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে তার কর্তৃত্ব ও উপস্থিতি বাড়াতে নতুন একটি নৌ-ফ্লিট গঠন করতে চাচ্ছে। নেভি সচিব কেনেথ ব্রেইটথওয়েইটের কথায় এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। জাপানের ইয়েকোসুকা বন্দরে অবস্থানরত সপ্তম ফ্লিট দিয়ে ভারত মহাসাগরের পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন আর একটি ফ্লিট গঠিত হলে ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি আরও শক্তিশালী হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ভারত মহাসাগরকেন্দ্রিক রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হবে। অথচ ভারত মহাসাগরভুক্ত দেশগুলো ভারত মহাসাগরকে একটি শান্তির এলাকা হিসেবেই দেখতে চায়। শ্রীলঙ্কার নয়া সরকার গত ১২ অক্টোবর দায়িত্ব নিয়ে এই আহ্বন জানাল। ১৯৭১ সালে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে ভারত মহাসাগরকে শান্তির এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর পাঁচ দশক পর প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকার পুনরায় এ আহ্বান জানাল। তিনি এই আহ্বানটি জানালেন এমন একসময় যখন চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা এখনো রয়েছে। লাদাখে যখন উত্তেজনা হ্রাস পায়নি, তখন ভারত দক্ষিণ চীন সাগরে তার নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের কর্তৃত্ব নিয়ে চীনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর দ্বন্দ্ব চলছে। এই অঞ্চলের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ রয়েছে। সেখানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিয়মিত টহল দেয়। চীন সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি নৌবাহিনীর মহড়া সম্পন্ন করেছে। ভারত মহাসাগর নিয়ে চীন-ভারত উত্তেজনা রয়েছে। চীনা স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘চীনা স্বার্থকে’ চ্যালেঞ্জ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনছে। এখানে ভারত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম পার্টনার। এদিকে গত ৬ অক্টোবর জাপানের টোকিওতে QUAD-বা Quadrilateral Security Dialogue-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া QUAD-এর সদস্য। QUAD-এর উদ্যোগে এর আগে একটি নৌ-মহড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে। একদিকে ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যার বিশেষ করে লাদাখ অঞ্চলের সমস্যার যখন কোনো সমাধান হয়নি, ঠিক তখনই শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে ভারত মহাসাগরকে শান্তির অঞ্চল হিসেবে ঘোষণার দাবি জানানো হলো। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে লাদাখে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বারবার আন্তর্জাতিক সংবাদের জন্ম দিচ্ছে। গত ১৫ জুনের পর থেকেই লাদাখ অঞ্চলে উত্তেজনা বজায় রয়েছে। লাদাখ ছিল একসময় ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের একটি অংশ। কিন্তু গেল বছর লাদাখকে কাশ্মীর থেকে আলাদা করে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়। লাদাখে চীনের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে ভারতের। গত ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীন ও ভারতের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং তাতে ২০ জন ভারতীয় সেনা মারা যান। সাম্প্রতিক সময়ে এটা ছিল একটা বড় ধরনের ঘটনা, যাতে প্রচলিত যুদ্ধ না হয়েও এতজন ভারতীয় সেনাকে প্রাণ দিতে হলো। এরপর থেকেই গালওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভারতীয় সেনাপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ওই অঞ্চল সফর করেছেন। দুপক্ষই সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। ভারত ফ্রান্স থেকে অত্যাধুনিক ছয়টি রাফায়েল যুদ্ধ বিমান উড়িয়ে এনে তা এই এলাকার কাছাকাছি হরিয়ানার আমবালা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন করেছে। এই বিমানগুলোর অর্ডার অনেক আগেই দিয়েছিল ভারত। এই উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ সেপ্টেম্বর মস্কোতে ভারত ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা’ বজায় রাখার স্বার্থে একটি ঐকমত্যে উপনীত হয়েছিল। সেই ঐকমত্য ভেঙে গেছে। এক ধরনের শক্তি প্রদর্শনে লিপ্ত হয়েছে দেশ দুটি। গালওয়ান উপত্যকায় যখন উত্তেজনা বাড়ছে, তখনই দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল। দক্ষিণ চীন সাগরের কর্তৃত্ব নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক ধরনের ‘স্নায়বিক যুদ্ধ’ চলছে। এমনি এক পরিস্থিতিতে সেখানে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ পাঠানো চীন খুব সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। শুধু তা-ই নয়, গালওয়ান উপত্যকায় উত্তেজনার পর ভারত আন্দামান-নিকোবরের কাছে মালাক্কা প্রণালীতেও নৌবহর পাঠিয়েছে। ভারতের উদ্দেশ্য একটাই দক্ষিণ চীন ও মালাক্কা প্রণালীতে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে চীনকে এক ধরনের ‘চাপ’-এ রাখা, যাতে চীন গালওয়ান উপত্যকা থেকে সরে যায় এবং সেখানে উত্তেজনা হ্রাস পায়। এই যখন পরিস্থিতি, ঠিক তখনই ট্রাম্প প্রশাসনের দুজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, পররাষ্ট্র ও দেশরক্ষামন্ত্রী (পরে বরখাস্তকৃত) নয়াদিল্লি ছুটে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই চীন-ভারত দ্বন্দ্বে ভারতের পাশে থাকা। ইতিমধ্যে বাইডেনের নির্বাচনে বিজয়ীর পর মোদি-বাইডেন ফোনালাপ হয়েছে। প্রশ্ন এখানেই, চীন-ভারত দ্বন্দ্ব যদি আরও বেড়ে যায় কিংবা লাদাখে যদি সীমিত যুদ্ধ শুরু হয়, তখন বাইডেন প্রশাসনের ভূমিকা কী হবে? একটি ‘সীমিত যুদ্ধ’-এর সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেননা লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) চীনের ভূখ-ের দাবিকে ভারত সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্প্রতি চীনের সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন, লাদাখ কোনো দিনই ভারতের অংশ ছিল না। লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করে ভারত চুক্তির শর্ত ভেঙেছে বলেও দাবি করা হয়। চীন দাবি করছে, তারা ১৯৫৯ সালের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অনুসরণ করছে। ফলে আগামীতে সেনা কমান্ডারদের বৈঠক আদৌ কোনো ফল দেবে বলে মনে হয় না। এদিকে চীনের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার যে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে চীন-শ্রীলঙ্কা বাণিজ্য চুক্তিতে চীন বেশি সুযোগ পেয়েছে। শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এলাইনা বি টেপলিজ শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এই অভিমত পোষণ করেন। সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান ও পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমার সফর করেছেন। এর মধ্য দিয়ে চীনকে রুখতে মিয়ানমারকে কাছে টানছে ভারত এমন একটি মূল্যায়নপত্র পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সেই সঙ্গে আছে অনেকগুলো সংবাদ ভারত চীনের সঙ্গে সীমান্তকে সামরিকায়ন করছে। QUAD-এ যোগ দিতে শ্রীলঙ্কার ওপর ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপ রয়েছে। রাশিয়া থেকে ফাইটার জেট আনছে ভারত। ভারতের বিমানবাহিনী প্রধান ঘোষণা করেছেন, শিগগিরই ভারতের এয়ার ডিফেন্স কমান্ড ঘোষণা দেওয়া হবে। গত ৩ অক্টোবর নরেন্দ্র মোদি হিমাচল প্রদেশের রোহতাংয়ে ১০০০০ ফুট উচ্চতায় অতল টানেল বা সুড়ঙ্গপথের উদ্বোধন করেছেন। এই টানেল নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সামরিক। এই টানেল উদ্বোধনের ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্রুত সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করা যাবে। চীনকে টার্গেট করেই এই টানেল নির্মাণ। এর ফলে ভারতের অন্য অংশ থেকে লাদাখের লেহ-তে যাতায়াতের সময় কমে আসবে। সুতরাং এই এলাকায় পরিস্থিতি যখন এখনো শান্তিপূর্ণ নয়, তখন ভারত মহাসাগরকে শান্তির অঞ্চলে পরিণত করার শ্রীলঙ্কার আহ্বান কতটুকু কার্যকর হবে, তা একটা মৌলিক প্রশ্ন। এ ধরনের কর্মকা- প্রমাণ করে ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চলসমূহে এক ধরনের উত্তেজনা থেকে যাবে। ফলে বাইডেন প্রশাসন এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়, এটা লক্ষ করার বিষয়। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে সেখানকার ‘ডিপ স্টেট’-এর ভূমিকা অনেক বড় ও ব্যাপক। এরা অনেক সময় সরকারের ভেতরে আরেকটি সরকার হিসেবে কাজ করে। সরকার কখনো কোনো নীতি গ্রহণ করলেও, এই ‘ডিপ স্টেট’-এর কারণে অন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। সুতরাং বাইডেন চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা কিংবা ভারত মহাসাগরে উত্তেজনা হ্রাস করার উদ্যোগ নিতে চাইলেও, এই ‘ডিপ স্টেট’ তা চাইবে কি না, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। এই ‘ডিপ স্টেট’ যুদ্ধবাজ জেনারেল, অস্ত্র ব্যবসায়ী, তথা করপোরেট হাউজগুলোর স্বার্থে কাজ করে। অনেক কংগ্রেস সদস্যও তাদের স্বার্থে কাজ করেন। ফলে ‘ডিপ স্টেট’ যা চায়, কংগ্রেস সদস্যরা সে মতে আইনপ্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করেন এবং সরকারকে বাধ্য করেন তাদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে। দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিনি স্বার্থ রয়েছে। এই স্বার্থের পেছনে কাজ করছে চীনবিরোধী মনোভাব। ট্রাম্প এই রাজনীতি উসকে দিয়েছিলেন। এখন বাইডেন এই রাজনীতি কতটুকু ধারণ করবেন সেটাই দেখার বিষয়। Desh Rupantor 25.11.2020

1 comments: