রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কতদূর যেতে পারবেন জো বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০ জানুয়ারি শপথ নিয়েছেন জো বাইডেন। কিন্তু যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে তিনি শপথ নিলেন এবং যে পরিস্থিতির তিনি মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন, আগামী দিনগুলোয় তা যে কোনো বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একটি বিভক্ত সমাজ, উগ্র শ্বেতাঙ্গ রাজনীতির উত্থান, কোভিড ১৯-এ বিধ্বস্ত মার্কিন সমাজ, ভঙ্গুর অর্থনীতি কিংবা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো- এসব বিষয় মোকাবিলা ও নানাবিধ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা জো বাইডেনকে ২০২১ সালে যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখবে, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অভিজ্ঞ (তিনি দীর্ঘদিন সিনেটের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও মেম্বার ছিলেন) জো বাইডেনের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকবে অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো- স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতি। বুধবার তিনি যখন শপথ নেন, তখন যুক্তরাষ্টে কোভিড ১৯-এ মৃতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে (২০ জানুয়ারি) ৪ লাখ ১১ হাজার ৪৪০ আর আক্রান্ত ২ কোটি ৪৮ লাখ ৪ হাজার ৭৩৯ জন। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা থেকে বাইডেন প্রশাসন শিক্ষা নিয়েছে। ১ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা তিনি দিয়েছেন (ভ্যাকসিন প্রোগ্রামের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলার, কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য জাতীয় পর্যায়ে ৫০ বিলিয়ন, উপজাতির কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য ২০ বিলিয়ন, স্কুল চালুর জন্য ১৩০ বিলিয়ন, পিপিই সরবরাহের জন্য ২৫ বিলিয়ন)। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারে এ সেক্টরকে তিনি অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছেন। শত শত মানুষ চাকরি হারিয়েছে। উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। বেকারত্বের হার শতকরা ১৫ ভাগে থাকলেও এখন তা নেমে এসেছে ৭.৯ শতাংশে। শেয়ারবাজারের নিম্নগতি এখনো লক্ষণীয়। দরিদ্রতার গড় হার ১০.৫ শতাংশ (কৃষ্ণাঙ্গ ১৮.৮ শতাংশ, শ্বেতাঙ্গ ৭.৫ শতাংশ)। গড় প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ বাড়ছে, সেপ্টেম্বর (২০২০) পর্যন্ত এর পরিমাণ ২৬.৯৫ ট্রিলিয়ন ডলার। জাপান ও চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের পরিমাণ যথাক্রমে ১.২৯ ট্রিলিয়ন ও ১০.০৭ ট্রিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বড় অর্থনীতি, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু এ অর্থনীতি এখন ঝুঁকির মুখে। ফলে অর্থনীতি একটি বড় সেক্টর- যেখানে জো বাইডেনকে হাত দিতে হবে। আশার কথা, অর্থনীতিকে তিনি অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছেন। অর্থনীতিকে যে তিনি কত গুরুত্ব দেবেন, এর বড় প্রমাণ সাবেক ফেডারেল রিজার্ভের প্রধান জানেট ইয়েলেনকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগদান। ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। অর্থনীতি ভালো বোঝেন। সঙ্গত কারণেই তার মনোনয়ন প্রশংসিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই প্রথম একজন মহিলা অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। বাইডেনের শপথগ্রহণের পর ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে, তা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাপারে জো বাইডেনের ভূমিকা কী হবে? দক্ষিণ এশিয়া, ভারত মহাসাগর ও দক্ষিণ চীন সাগর- এই তিন অঞ্চল ঘিরে আগামী দিনের বিশ্ব রাজনীতি আবর্তিত হবে। এ তিনটি অঞ্চল- একটির সঙ্গে অন্যটির যোগসূত্র আছে এবং এই অঞ্চলে উত্তেজনা আছে। বৃহৎ শক্তির মধ্যকার ‘প্রভাববলয় বিস্তার’-এ প্রতিযোগিতাও আছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এ অঞ্চল ঘিরে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি’ রচিত হয়েছিল। এই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ভারত। ভারত কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন যে নীতি প্রণয়ন করেছিল, এতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণও চেয়েছিল ওই প্রশাসন। ওই স্ট্র্যাটেজির উদ্দেশ্য একটাই- চীনকে ঘিরে ফেলা। এ স্ট্র্যাটেজি পুরনো ঈড়হঃধরহসবহঃ চড়ষরপু-এর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়- যখন যুক্তরাষ্ট্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঘিরে ফেলার স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী রচিত স্ট্র্যাটেজির সফল বাস্তবায়ন আমরা দেখেছি ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্যে দিয়ে। অর্থাৎ সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতন ছিল লক্ষ্য। এখনো সেই Containtment Policy
নতুন করে সাজানো হচ্ছে। এবারের টার্গেট চীন। চীনকে দুর্বল করা, চীনকে ঘিরে ফেলা, চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকে দেওয়া- এসবই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির অংশ। তাই আমরা দেখি ছটঅউ-কে সক্রিয় হতে, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তি সাক্ষরিত হতে কিংবা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের উপস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করতে। এসব কর্মকা-ের মধ্য দিয়ে চীন-ভারত উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে একদিকে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সুযোগ পেয়েছে এ অঞ্চলে তার সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরে তার কর্তৃত্ব ও উপস্থিতি বাড়াতে নতুন একটি নৌফ্লিট গঠন করতে চাচ্ছে। বিদায়ী নেভি সচিব কেনেথ ব্রেইটথওয়েইটের কথায় এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। জাপানের ইয়োকোসুকা বন্দরে অবস্থানরত সপ্তম ফ্লিট দিয়ে ভারত মহাসাগরে পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন আরেকটি ফ্লিট গঠিত হলে ভারত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের নেভি আরও শক্তিশালী হবে। যুক্তরাষ্ট্রের এ পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়িত হয়, তা হলে ভারত মহাসাগরকেন্দ্রিক রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হবে। অথচ ভারত মহাসাগরভুক্ত দেশগুলো ভারত মহাসাগরকে একটি শান্তির এলাকা হিসেবেই দেখতে চায়। শ্রীলংকার নয়া সরকার গত ২২ অক্টোবর দায়িত্ব নিয়ে এ আহ্বান জানায়। ১৯৭১ সালে শ্রীলংকার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে ভারত মহাসাগরকে শান্তির এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এর পাঁচ দশক পর প্রেসিডেন্ট গোতবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকার পুনরায় এ আহ্বান জানায়। তিনি এ আহ্বানটি জানালেন এমন এক সময় যখন চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা এখনো রয়েছে। লাদাখে যখন উত্তেজনা হ্রাস পায়নি, তখন ভারত দক্ষিণ চীন সাগরে তার নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরের কর্তৃত্ব নিয়ে চীনের সঙ্গে পার্শ¦বর্তী দেশগুলোর দ্বন্দ্ব চলছে। এ অঞ্চলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থ রয়েছে। সেখানে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ নিয়মিত টহল দেয়। চীন সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি নৌবাহিনীর মহড়া সম্পন্ন করেছে। ভারত মহাসাগর নিয়ে চীন-ভারত উত্তেজনা রয়েছে। চীনা স্বার্থকে চ্যালেঞ্জ করছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘চীনা স্বার্থকে’ চ্যালেঞ্জ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন আনছে। এখানে ভারত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম পার্টনার। এদিকে ২০২০-এর ৬ অক্টোবর জাপানের টোকিওতে ছটঅউ ছঁধফৎরষধঃবৎধষ ঝবপঁৎরঃু উরধষড়মঁব-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ছটঅউ-এর সদস্য। ছটঅউ-এর উদ্যোগে এর আগে একটি নৌমহড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারত-চীন সীমান্ত সমস্যার, বিশেষ করে লাদাখ অঞ্চলের সমস্যার কোনো সমাধান এখনো হয়নি। এ ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি কী- সেটি একটি প্রশ্ন। জলবায়ু পরিবর্তন এই শতাব্দীর অন্যতম আলোচিত একটি বিষয়। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাগর-মহাসাগরের পানির উচ্চতা বাড়ছে মরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ায়। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের উষ্ণতা বাড়ছে। এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটি বিশ্বাস করতেন না। বিশ্বের উষ্ণতা রোধকল্পে প্যারিস কপ-২১ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২০১৫ সালে। তৎকালীন মার্কিন প্রশাসন ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। পরে ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল জাতিসংঘের সদর দপ্তরে কপ-২১ চুক্তিটি অনুমোদিত হয়েছিল। ১৭০টি দেশ ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তা আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত করেছিল। অথচ ট্রাম্প প্রশাসন এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। কপ ২১-এ বিশ্বের ১৯৫টি দেশ রাজি হয়েছিল ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখবে। জো বাইডেন বলেছেন, তিনি কপ-২১ চুক্তিতে ফিরে যাবেন। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে বিকল্প জ্বালানি উদ্ভাবন ও ব্যবহারের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন বাইডেন। তা বিশ্বে তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। advertisement ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে পশ্চিম ইউরোপ তথা ন্যাটোভুক্ত দেশ ও মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। তিনি জার্মানি থেকে সেনা প্রত্যাহার করার কথা বলেছেন। ন্যাটোর দেশগুলোকে ন্যাটোয় দেওয়া অনুদানের পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলেছেন। তার মুসলমান বিদ্বেষের কারণে কয়েকটি মুসলমান দেশের নাগরিকের যুক্তরাষ্ট্রে যাতায়াত নিষিদ্ধ করেছে। ইরানের সঙ্গে ৬ জাতি সমঝোতা থেকে ট্রাম্প বেরিয়ে গেছেন। এতে মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক ঝুঁকি কমেনি, বরং বেড়েছে। তার প্রো-ইসরায়েলি নীতি ফিলিস্তিনি সংকটকে আরও গভীরে নিয়ে গিয়েছিল। ফিলিস্তিন সংকট সমাধানের ব্যাপার ট্রাম্প প্রশাসন কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। Amader Somoy 21.1.2021
advertisement মোদ্দা কথা- ট্রাম্প গেল চার বছরে বিশ্বকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন, তা থেকে বেরিয়ে না এলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব আসরে একা হয়ে যাবে। গত ১৫ নভেম্বর (২০২০) চীনের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের বড় বাণিজ্যিক জোট-কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ বা আরসিইপি। এখানে যুক্তরাষ্ট্র নেই। একুশ শতক হচ্ছে চীনের। অংরধহ ঈবহঃঁৎু-এর কথা বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। ঊনিশ শতক ছিল ব্রিটেনের। বিশ শতক ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। আর একুশ শতক হবে এশিয়ার। এশিয়ার তিনটি বড় অর্থনীতি- চীন, ভারত ও জাপান আগামী দিনের বিশ্ব রাজনীতি নির্ধারণ করবে। ১৯৫০ সালে বিশ্বে যত মানুষ বসবাস করত, এর অর্ধেক বাস করত এশিয়ায়। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতির মাত্র ২০ শতাংশ ছিল তাদের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু ২০২০ সালে এসে ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে (পিপিপি) এশিয়ার মোট অর্থনীতি বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের মোট অর্থনীতির চেয়ে বেশি। ফলে বাইডেনের আগামী চার বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে চীনসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল। আশার কথা, বাইডেন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের নয়া মার্কিন নীতি প্রণয়নের জন্য একজন ঝানু কূটনৈতিক কুর্ট ক্যাম্পবেলকে নিয়োগ দিয়েছেন। বাইডেন নিজে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অভিজ্ঞ। সুতরাং তার চার বছরের শাসনামলে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল যে গুরুত্ব পাবে, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। তবে প্রশ্ন তো আছেই। হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার আগে বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প একজন ‘নয়া প্রেসিডেন্ট’কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বটে কিন্তু জো বাইডেনকে ব্যক্তিগতভাবে শুভেচ্ছা জানাননি। তার নামও উল্লেখ করেননি। এমনকি প্রথা অনুযায়ী তিনি বাইডেন দম্পতিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানাননি এবং শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিতও ছিলেন না। এটি একটা বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। বিদায়ী ভাষণে তিনি আবারও কোভিড ১৯-কে ‘চীনা ভাইরাস’ হিসেবে উল্লেখ করে চীনের ব্যাপারে তার বিতৃষ্ণা আবারও প্রকাশ করলেন। মার্কিন ইতিহাসে তিনিই একমাত্র প্রেসিডেন্ট- যিনি দুই-দুইবার অভিশংসনের মুখোমুখি হয়েছিলেন। একজন বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প বিদায় নিলেন। একই সঙ্গে জো বাইডেন আজ শপথ নিলেন বিশাল এক সম্ভাবনা জাগিয়ে। তাই আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

1 comments:

  1. Sir, in this perspective, what strategy Bangladesh can follow?

    ReplyDelete