রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ট্রাম্পের বিদায় বাইডেনের শুরু

ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নিয়েছেন। আর জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিয়েছেন। ২০ জানুয়ারি এ খবর সারা বিশ্বের সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘নতুন একটি দিনের’ সূচনা হয়েছে বটে, কিন্তু রেখে গেছে অনেক প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা। ট্রাম্প বিদায় নিলেও তার ‘লিগেসি’ যুক্তরাষ্ট্র কতদিন বয়ে বেড়াবে কিংবা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বাইডেন ‘ঐক্যের ডাক’ দিলেও এ ঐক্য তিনি আদৌ ধরে রাখতে পারবেন কি না, এ প্রশ্নটি বারবার আলোচিত হতে থাকবে। একজন প্রেসিডেন্টের বিদায়, আরেকজন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ-এটি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিকে ঘিরে রয়েছে কিছু প্রথা, কিছু ‘কনভেনশন’ কিছু নিয়মকানুন। কিন্তু ৪৬তম প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে কিংবা তারও আগে যা ঘটল, তা প্রেসিডেন্সিকে শুধু কলুষিতই করল না বরং একটা ‘কালো দাগ’ রেখে গেল, যা থেকে বেরিয়ে আসা চাট্টিখানি কথা নয়। অত্যন্ত দাম্ভিক, উগ্র মেজাজি, নিয়মকানুন না মানা, প্রেসিডেন্সিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে মনে করা, আইনের ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে হুমকির মুখে রাখা ইত্যাদি একজন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প গেল চার বছর যা করে গেলেন, অতীতের কোনো প্রেসিডেন্ট এমনটা করেননি। প্রথা অনুযায়ী বিদায়ি প্রেসিডেন্ট শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে শুধু যে উপস্থিত থাকেন তা নয়; আগের দিন বিদায়ি প্রেসিডেন্ট নয়া প্রেসিডেন্টকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানান, নয়া প্রেসিডেন্টকে ওয়াশিংটনে আনতে প্রেসিডেন্টের নিজস্ব বিমান (Air Force-one) পাঠান, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের পর একসঙ্গে লাঞ্চ করেন। এবার তেমন কিছুই হলো না। তিনি শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেন না। বিমান পাঠালেন না। যাওয়ার আগে বললেন, তিনি আবার আসবেন। বিদায়ি ভাষণে তিনি যা বললেন, তা ছিল সর্বৈব মিথ্যা। তিনি মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন-তার চার বছরের শাসনকালকে তিনি উল্লেখ করেছেন ‘শ্রেষ্ঠ শাসনকাল’ হিসাবে। ফিরিস্তি দিয়েছেন ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্তনের, যা ছিল সর্বৈব মিথ্যা। পরিসংখ্যানই বলে দেয়, তিনি সত্য বলেননি (Politifact)। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমলে তিনি যতবেশি বিতর্কিত হয়েছেন, অতীতে অন্য কোনো প্রেসিডেন্ট এভাবে বিতর্কিত হননি। কবছর আগেও তার নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা সারা বিশ্ব জেনেছিল। জনৈক বারবনিতার সঙ্গে তার ‘দৈহিক সম্পর্ক’ ও তা সংবাদমাধ্যমে যাতে প্রকাশ না পায়, তার জন্য মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা, একের পর এক শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা, নির্বাচনে বাইরের শক্তির দ্বারা প্রভাব খাটানোর উদ্যোগ, চীনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়ে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা ইত্যাদি ঘটনায় তিনি বারবার আলোচিত হয়েছেন। তার শাসনামলে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হয়েছে, যার কারণে জন্ম হয়েছিল ‘ব্লাক লাইভ ম্যাটারস’ আন্দোলনের। একপর্যায়ে এ আন্দোলন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং যা পরিণত হয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার আন্দোলনের মুখপাত্র হিসাবে। সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত তিনি দুটো কারণে। এক. একজন ধনী ব্যক্তি হয়েও (তার সম্পদের পরিমাণ ২.৫ বিলিয়ন ডলার) তিনি কর পরিশোধ করেছেন মাত্র ৭৫০ ডলার (২০১৭)। দুই. নির্বাচনে হেরে গেলে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছিলেন না। একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, তিনি ফন্দিফিকিরের আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে পারেন। সেটা তিনি করেছিলেনও! প্রথমে আইনগতভাবে তিনি জো বাইডেনের বিজয়কে ঠেকাতে চান। ভোট গণনাকে চ্যালেঞ্জ করে মোট ৬৩টি মামলা হয়েছিল। তাতে মাত্র একটিতে তিনি আদালতের রায় পেয়েছিলেন। আদালতের রায় পেতে ব্যর্থ হয়ে তিনি উসকে দেন তার সমর্থকদের ‘ক্যাপিটল হিল’ (সংসদ ভবন) দখল করতে। সেটি ছিল কলঙ্কজনক একটি ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে ক্যাপিটল হিলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার (প্রথমবারে ব্রিটিশ সেনা কর্তৃক ১৮১৪ সালের ২৪ আগস্ট) ঘটনা ঘটেছে সত্য, কিন্তু উগ্রবাদীদের দ্বারা তা দখল করে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। ওই ঘটনাকে অভিহিত করা হয়েছিল ‘সিভিলিয়ান সামরিক অভ্যুত্থান’ (৬ জানুয়ারি, ২০২১) হিসাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইন, সমাজ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি তাকে এটা করতে দেয়নি। এখন তিনি বলছেন, তিনি ফিরে আসবেন! কিন্তু কীভাবে? তৃতীয় একটি দল তিনি গঠন করবেন? তার মতো আরেকজন ধনী ব্যবসায়ী রস পেঁরো চেষ্টা করেছিলেন ১৯৯২ সালে। গঠন করেছিলেন ‘আমেরিকান ইনডিপেনডেন্ট’ নামে একটি দল, যার কোনো অস্তিত্ব এখন আর নেই। একসময় উইগ পার্টির পক্ষ থেকে কেউ কেউ প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত নির্বাচিত হয়েছিলেন (উইলিয়াম হ্যারিসন ১৮৪১, জন টেলর ১৮৪১, জেচারি টেলর ১৮৪৯, মিলার্ড ফিলমোর ১৮৫০)। এখন আর উইগ পার্টির কোনো অস্তিত্ব নেই। ফলে একজন ‘উন্মাদ’ ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘ফিরে আসার’ হুমকি শুধু কাগজে কলমেই থেকে যাবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জো বাইডেন কতদূর যেতে পারবেন? ট্রাম্প একটি বিভক্ত সমাজকে রেখে গেছেন। গণতন্ত্রের ‘মৃত্যু’ ঘটিয়ে তিনি বিদায় নিয়েছেন। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কোভিড-১৯-এ মৃত্যুর সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি করেছেন। এখান থেকে সমাজকে একত্রিত রাখা, সবাইকে আস্থায় নিয়ে ‘নতুন এক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’ গড়ার কাজটি নয়া প্রেসিডেন্টের জন্য সহজ নয়। তবে তিনি যে সিরিয়াস, তা প্রথম দিনেই প্রমাণ করেছেন। প্রথম দিনেই ১৭টি প্রশাসনিক আদেশ জারি করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় আবার যোগ দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২১ চুক্তিতে (প্যারিসে স্বাক্ষরিত) আবার যোগদান, শিশু ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত উঅঈঅ আইন (Deferred Action for Childhood Arrivals) বাতিল করা, মাস্ক পরা, সাতটি মুসলিম দেশের অধিবাসীদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত ঋণ মওকুফ করারও একটি উদ্যোগ তিনি নিতে যাচ্ছেন। এসব আদেশের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আবার বহুপাক্ষিকতায় ফিরে গেল। কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও বিশ্বের উষ্ণতা হ্রাস করতে হলে বহুপাক্ষিকতা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জো বাইডেনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। প্রথমত, তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে আমরা জিএসপি সুবিধা চাই। যুক্তরাষ্ট্র কিছু কিছু ক্ষেত্রে জিএসপি সুবিধা দিলেও তৈরি পোশাকে এ সুবিধা দেয় না। শতকরা ১৫ দশমিক ৬২ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। জিএসপি সুবিধা পেলে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের তৈরি পোশাকের বাজার আরও সম্প্রসারিত হবে। একই সঙ্গে বিশাল নারী কর্মীদের কাজের একটা সংস্থান হবে। যুক্তরাষ্ট্র নারীর অধিকারের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। সুতরাং জিএসপি সুবিধা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশের নারী জনগোষ্ঠীর প্রতি সম্মান জানাতে পারে জো বাইডেনের প্রশাসন। দ্বিতীয়ত, বিদায়ি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও বাংলাদেশে ‘আল কায়দার ঘাটি আছে’ এ ধরনের একটি মিথ্যা ও অসত্য দাবি তুলে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন। দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞ অ্যান্টনি ক্লিনকেন নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। আমাদের প্রত্যাশা-জঙ্গিবাদবিরোধী বাংলাদেশের যে অবস্থান, ক্লিনকেন তা সমর্থন করবেন। তৃতীয়ত, রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাস্তবমুখী একটি সমর্থন প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশ চায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা তাদের নিজ বাসভূমে ফিরে যাবে, তাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা হবে এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানো হবে। এক্ষেত্রে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা যায় কি না, যুক্তরাষ্ট্র তা ভেবে দেখতে পারে। চতুর্থত, জো বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তিতে (কপ-২১, ২০১৫) ফিরে যাওয়ার দলিলে স্বাক্ষর করেছেন। বাংলাদেশের জন্য এটা একটা প্লাস পয়েন্ট। এর মধ্য দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা মোকাবিলার জন্য ৯.৮ বিলিয়ন ডলারের যে Green Climate Fund গঠিত হয়েছে; সেখান থেকে অর্থ সাহায্যের পথ প্রশস্ত হতে পারে। পঞ্চম, ট্রাম্প প্রশাসন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের নৌ উপস্থিতি ও তৎপরতা বৃদ্ধি করেছিল। এটা অনেকটাই ছিল চীনবিরোধী একটি তৎপরতা। এ কারণে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সামরিক চুক্তি করেছিল। বাংলাদেশ চীনবিরোধী যে কোনো তৎপরতায় শরিক হতে পারে না। ষষ্ঠ, ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ একটি Strategic dialogue চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। প্রতিবছর একবার করে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে আসছে, বাংলাদেশ ‘সোফা’ ও ‘আকসা’ চুক্তি করুক। সোফা অর্থাৎ ‘স্ট্যাটাস অব ফোর্সেস অ্যাগ্রিমেন্ট ও আকসা অর্থাৎ ‘অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসিং অ্যাগ্রিমেন্ট-এ উভয় চুক্তির ধরন সামরিক। বাইডেন প্রশাসন এ দুই চুক্তি নিয়ে এগিয়ে যাবে না, বাংলাদেশ এটা প্রত্যাশা করে। সপ্তম, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগ দিতে যাচ্ছে। আমরা চাই কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যে ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়েছে, তা বাংলাদেশসহ গরিব দেশগুলো বিনামূল্যে পাক-এটি বাইডেন প্রশাসন নিশ্চিত করুক। আশার কথা, বাইডেন ‘COVAX’ এ যোগ দিতে যাচ্ছেন, যাদের মাধ্যমে গরিব দেশগুলো ভ্যাকসিন পেতে পারে। অষ্টম, বলা হচ্ছে-বাইডেন প্রশাসন ইমিগ্রেন্টদের ব্যাপারে আরও নমনীয় হবে এবং ১ কোটি ১০ লাখ লোককে নাগরিকত্ব দেবে। বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য এটা একটা শুভ সংবাদ। জো বাইডেন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন এটা গণতন্ত্রের দিন; ইতিহাস ও আশার একটি দিন। এ মুহূর্তে গণতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে এবং গণতন্ত্র বিরাজমান। তার ঐক্য ও গণতন্ত্র সংহত করার ডাক একটি ভালো উদ্যোগ বলে সবাই স্বাগত জানিয়েছেন। ৭৮ বছর বয়সে এসে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন। ইতিহাসে এর আগে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসাবে হোয়াইট হাউজে প্রবেশ করেছিলেন রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮১ সালে, ৬৯ বছর বয়সে। বাইডেনকে তার বয়স নিয়ে নির্বাচনকালীনও কথা শুনতে হয়েছে। এর জবাবে তিনি একবার বলেছিলেন, I am an adult and I will bring back normalcy and I will bring back a sense of decency and demonstrate maturity (NYT, Jan 18, 2021)। বয়স্ক মানুষ শোভনতা ও পরিপক্কতা প্রদর্শন করতে পারে- এটাই তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন। ৪ বছর পর ২০২৪ সালের নভেম্বরে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তার বয়স দাঁড়াবে ৮২। ৮২ বছর বয়সেও নির্বাচন করা সম্ভব। রানী এলিজাবেথ ৯৪ বছর বয়সে, কিউবার রাউল কাস্ত্রো ৮৯ বছর বয়সে, ক্যামেরুনের পল বিয়া ৮৮ বছর বয়সে, সৌদি রাজা সালমান বিন আবদুল আজিজ ৮৫ বছর বয়সেও রাষ্ট্রপরিচালনা করে গেছেন। সুতরাং, বাইডেন নয় কেন? তবে সবার দৃষ্টি থাকবে কমলা হ্যারিসের দিকে। একজন ভাইস প্রেসিডেন্ট, নারী, ইমিগ্রেন্টের সন্তান (বাবা জামাইকান, মা ভারতীয়), ৫৬ বছর বয়স যার-তিনি কি তৈরি হচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদের জন্য। যদিও জো বাইডেন সেই অর্থে ইমিগ্রেন্ট। তার দাদা-পরদাদারাও এসেছিলেন আয়ারল্যান্ড থেকে। তবে পার্থক্য হলো গায়ের রঙে-কমলা কৃষ্ণাঙ্গ ও নারী। একজন নারী ও কৃষ্ণাঙ্গকে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ প্রেসিডেন্ট হিসাবে এখনো মেনে নেবে বলে মনে হয় না; যে কারণে জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও হিলারি ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট হতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্র একটি ‘নতুন যুগে’ প্রবেশ করল। এখন দেখার পালা, জো বাইডেন কতটুকু পরিবর্তন আনেন? Jugantor 24.1.2021

1 comments:

  1. খুবই সুন্দর বিশ্লেষণ

    ReplyDelete