রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আর বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলন

গেল সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র যখন 'সন্ত্রাসের রিরুদ্ধে যুদ্ধ' এর দশ বছর পালন করছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ প্রত্যক্ষ করছে এক নতুন ধরনের আন্দোলন। অতীতে এমনটা কখনোই হয়নি। হাজার হাজার মানুষ একত্রিত হয়ে নিউইয়র্কে আন্দোলন করছে অসমতা আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে। তারা এর নামকরণ করেছে 'অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট' আন্দোলন। অর্থাৎ 'ওয়াল স্ট্রিট' দখল কর। কেননা ওয়াল স্ট্রিট হচ্ছে পুঁজিবাদের একটি প্রতীক। এখানে রয়েছে স্টক একচেঞ্জ ভবন, সেই সঙ্গে অনেকগুলো কর্পোরেট হাউসের সদর দফতর। কর্পোরেট হাউসগুলো ব্যবসা বোঝে। যুক্তরাষ্ট্রে দরিদ্রতা তাদের কাছে কখনও বড় হয়ে দেখা দেয়নি। তাদের কাছে মুনাফাটা প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। তারা চায় যুদ্ধ। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলেই তাদের ব্যবসা বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১-এর ঘটনার পর তাদের জন্য একটা দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধের প্রয়োজন ছিল। তাই তথাকথিত 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' প্রলম্বিত হয়েছে। ৯/১১-এর ঘটনার সূত্র ধরে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান দখল করে নেয়। তারপর দখল করে ইরাক। এই 'যুদ্ধ' এর দশ বছর পার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে সেই যুদ্ধে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ হয়নি। এরই মাঝে যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ায় 'তৃতীয় যুদ্ধ' শুরু করেছে। গাদ্দাফিকে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে 'তৃতীয় যুদ্ধ' এর একটা পর্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে বটে; কিন্তু লিবিয়ায় 'যুদ্ধ' দীর্ঘায়িত হবে। এরপর 'যুদ্ধ' শুরু হবে সিরিয়া আর ইয়েমেনে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে স্ট্র্যাটেজি, তাতে করে এ অঞ্চলে উত্তেজনা থাকবে এবং নতুন নতুন 'যুদ্ধ' এর ক্ষেত্র তৈরি হবে। এতে করে উপকৃত হবে কর্পোরেট হাউসগুলো, যারা পুনর্গঠনের নামে ব্যবসা বাগিয়ে নেবে, যেমনটি তারা নিয়েছিল ইরাকে। ইরাক অতিরিক্ত তেল উত্তোলন করে পুনর্গঠনের বিল পরিশোধ করেছিল। লিবিয়ায় ঠিক এমনটিই ঘটবে। কিন্তু নিউইয়র্কের জুকোটি পার্কে যারা দিনের পর দিন বিক্ষোভ করছে, তাদের জন্য এটা কোনো সুসংবাদ নয়। কর্পোরেট হাউসগুলোর মুনাফা বৃদ্ধি ঘটলেও, তাদের জন্য চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৬ জনের মাঝে ১ জন দরিদ্র। ৫টি শিশুর মাঝে ১টি শিশু দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। কৃষ্ণাঙ্গদের মাঝে শতকরা ৫৪ জনই দরিদ্র। এশিয়ান-আমেরিকানদের মাঝে দরিদ্রতার হার ১২ দশমিক ১ ভাগ। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তথাকথিত যুদ্ধ' তাই তাদের জন্য কোনো আবেদন সৃষ্টি করতে পারেনি। কর্পোরেট হাউসগুলোর স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান আক্রমণ করেছিল ২০০১ সালে, টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পরপরই।
আফগানিস্তানের পাশাপাশি ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র দখল করে নিয়েছিল ইরাক। অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র (ডগউ) রয়েছে এই অভিযোগ তুলে দেশটি দখল করে নিয়েছিল। ২০১০ সালে এসে সেখান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে সত্য (৫০ হাজার সৈন্য রয়ে গেছে প্রশিক্ষণের জন্য); কিন্তু ইরাকি সম্পদ (তেল) চলে গেছে মার্কিন কোম্পানিগুলোর হাতে। ইরাকি তেলের পয়সায় এখন মার্কিন কোম্পানিগুলো বিধ্বস্ত ইরাকের পুনর্গঠনের কাজে নিয়াজিত। ২০১০ সালে এসে সারা আরব বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে এক ধরনের গণআন্দোলন, যাকে বলা হচ্ছে 'আরব বসন্ত'। এই 'আরব বসন্ত' কার জন্য, কিসের জন্য, এটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। দীর্ঘদিনের ক্ষমতায় থাকা শাসকরা (বেন আলী, হোসনি মুবারক, মুয়াম্মার গাদ্দাফি) উৎখাত হয়েছেন বটে; কিন্তু ক্ষমতা সাধারণ মানুষের কাছে ফিরে আসেনি। সর্বশেষ গাদ্দাফিরও পতন হয়েছে। লিবিয়াকে বলা হয় উত্তর আফ্রিকায় যাওয়ার দরজা বা এধঃবধিু। লিবিয়া যদি নিয়ন্ত্রিত থাকে, তাহলে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর (নাইজার, সাদ, গিনি, বিসাউ) দেশগুলোকেও নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। আফ্রিকায় ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে অভৎরপড়স, আফ্রিকান কমান্ড। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব করার যে মানসিকতা, তাকে সামনে রেখেই পতন ঘটানো হল গাদ্দাফি সরকারের।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তথাকথিত 'যুদ্ধ' শুরু করেছিল বুশ প্রশাসন। শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়ে ওবামা সেই 'যুদ্ধ' বন্ধ করেননি। মার্কিন সমরাস্ত্র কারখানাগুলোতে উৎপাদন বেড়েছে। বিশ্বের সর্বত্র, বিশেষ করে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে ইরান_ সর্বত্রই আমেরিকার কোম্পানিগুলোর রমরমা ব্যবসা। নাইন-ইলেভেন এই ব্যবসার একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ফিনিয়ান কানিংহামের প্রবন্ধ '৯/১১ চধাবফ ঃযব ধিু ভড়ৎ অসবৎরপধ্থং চবৎসধহবহঃ ধিৎ ড়ভ অমমাবংংড়হ_ এ কথাই বলা আছে। আর মিসেল চসুডোভস্ক্রি তো স্পষ্ট করেই বলেছেন, ্তুধষষবমবফ লরযধফর ঢ়ষড়ঃঃবৎং বিৎব ঃযব ঢ়ৎড়ফঁপঃ ড়ভ ঁং ংঃধঃব ঃবৎৎড়ৎরংস্থ। অনলাইনে চমস্ক্রির এই ৯/১১ : ডধং ঃযবৎব ধহ অষঃবৎহধঃরাব (ংবাবহ ঝঃড়ৎরবং ঢ়ৎবংং) কেউ পড়ে দেখতে পারেন। তাই 'নাইন-ইলেভেন' নিয়ে যে অসংখ্য প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা, দশ বছর পার হয়ে যাওয়ার পরও আমরা এর পূর্ণ জবাব খুঁজে পেলাম না। জবাব পেলাম না লাদেনের উত্থান ও মৃত্যু নিয়েও। লাদেনের মৃত্যু নিয়েও নানা কথা আছে। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু হয়েছে সত্য; কিন্তু আল-কায়েদা ধ্বংস হয়ে যায়নি। তারা তাদের স্ট্র্যাটেজিতে পরিবর্তন এনেছে। অঞ্চল ভিত্তিতে আল-কায়েদা এখন সংগঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে। যেমন সৌদি আরবভিত্তিক অষ-ছধবফধ রহ অৎধনরধহ চবহরহংঁষধ (অছঅচ), রিয়াদে ২০০৩ সালে হামলার জন্য যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। ২০০৪ সালে ইরাকে সংগঠিত হয়েছে অছও বা অষ-ছধবফধ রহ ওৎধয়। ২০০৭ সালে জন্ম হয়েছে অষ-ছধবফধ রহ ওংষধসরপ গধমৎবন (অছওগ)। ছোট ছোট সেলে বিভক্ত হয়ে তারা এখন সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করছে, যাকে বলা হচ্ছে ্তুঝঢ়রফবৎ ডবন্থ। মাকড়সার জালের মত সংগঠিত হচ্ছে, আবার তারা ধ্বংসও হচ্ছে। এরপর অন্য এক জায়গায় নিয়ে তারা সন্ত্রাসের জাল বুনছে, মাকড়সারা যেমনটি করে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে একরকম যোগাযোগ ছাড়াই এই জিহাদি কর্মকা- পরিচালনার তত্ত্ব দিয়েছেন আল-কায়েদার একজন তাত্তি্বক আবু মুসাব আল সুরি (ঞযব এষড়নধষ ওংষধসরপ জবংরংঃধহপব)। নোয়াম চমস্ক্রি তাই লিখেছেন, ঞযব ঔরযধফর সড়াবসবহঃ পড়ঁষফ যধাব নববহ ংঢ়ষরঃ ধহফ ঁহফবৎসরহবফ ধভঃবৎ ৯/১১ রভ ঃযব ্তুপৎরসব ধমধরহংঃ যঁসধহরঃু্থ যধফ নববহ ধঢ়ঢ়ৎড়ধপযবফ ধং ধ পৎরসব (ধিং ধিৎ ড়হষু ধহংবিৎ ঃড় ৯/১১? ঘধঃরড়হ ড়ভ পযধহমব, ৫ ঝবঢ়ঃবসনবৎ, ২০১১)। এটাই হচ্ছে মোদ্দাকথা। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কর্মকা-কে সত্যিকার অর্থেই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ'কে ব্যবহার করা হয়েছে গোষ্ঠীস্বার্থে তথা ব্যবসায়িক স্বার্থে। ইরাক তার বড় প্রমাণ (ইরাকের তেলের পয়সায় এখন সেখানে পুনর্গঠনের কাজ চলছে। আর এককভাবে কাজ পেয়েছে মার্কিন কোম্পানিগুলো)। একই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে এখন লিবিয়ায়। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' একটি জনগোষ্ঠীকে টার্গেট করা হয়েছিল। বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিভিন্ন চোখে দেখা হত। এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের 'নাইন-ইলেভেন' এর পূর্বকার অবস্থায় আর ফিরে যায়নি। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' একটি কালো অধ্যায়। দীর্ঘ দশ বছর ধরে চলা এই 'যুদ্ধ' প্রকারন্তরে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব করার প্রয়াসেই রচিত। 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ' এর মধ্যে দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকা- বন্ধ করা যায়নি। বরং তা আরও বেড়েছে। সারাবিশ্ব যখন টুইন-টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার দশম বর্ষ পালন করছে, তখন কাবুলের কূটনৈতিক পাড়ায় তালেবানদের হামলা (১৩ সেপ্টেম্বর) এ কথাটাই প্রমাণ করল আবার। কিন্তু যে প্রশ্নটি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচিত তা হচ্ছে, এই দশ বছরে কোটি কোটি ডলার যুদ্ধের পেছনে ব্যয় না করে যুক্তরাষ্ট্র যদি নিজ দেশের সামাজিক উন্নয়নের খাতে ব্যয় করত, তাহলে 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলনের জন্ম হত না। মার্কিন অন-লাইন সংবাদপত্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রের যে সামাজিক অবস্থা তুলে ধরেছে, তা দেখে রীতিমত অাঁতকে উঠতে হয়। ৯ দশমিক ১ ভাগ লোকের কোনো চাকরি নেই। যুক্তরাষ্ট্রের মোট সম্পদের ৫ ভাগের ১ ভাগ মালিক হচ্ছে জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ ভাগ মানুষ। ১৯৭০ সালে ধনী হিসেবে পরিচিতদের হাতে মোট আয়ের ৮ থেকে ৯ ভাগ অর্থ সঞ্চিত হত। ২০১১ সালে এই পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৫ ভাগে। আমেরিকান ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা কি না যুক্তরাষ্ট্রের গরিব জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের মোট সম্পদের চেয়েও বেশি। অর্থাৎ ১৫৫ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর চেয়েও বেশি। এই যে পরিসংখ্যান, এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় সেখানে কী বড় ধরনের বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আর এই বৈষম্যের কারণেই 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলনের জন্ম। এই আন্দোলন ছড়িয়ে গেছে এক শহর থেকে আরেক শহরে। এমনকি এর ঢেউ গিয়ে লেগেছে আটলান্টিকের ওপারেও, লন্ডন থেকে ফ্রাংকফুটে। প্রশান্ত মহাসাগরের ওপারের দেশগুলোও এই আন্দোলন থেকে পিছিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রে একটি পরিবর্তন তাই আসন্ন। এই পরিবর্তনটুকু কীভাবে হবে, কেমনভাবে হবে, সেটা এক ভিন্ন প্রশ্ন। কিন্তু একুশ শতকের শুরুতে সারাবিশ্ব যে গণজাগরণ প্রত্যক্ষ করল, ইতিহাসে তা লালকালির আখরে লেখা থাকবে।
২০১২ সালে সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ওবামা আবারও প্রার্থী হয়েছেন। তবে তাঁকে এবার অনেক প্রশ্নেরই জবাব দিতে হবে। সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হচ্ছে যুদ্ধ বন্ধ, আর সামাজিক খাতে অর্থ বাড়াও। ইরাক থেকে সৈন্য প্রত্যাহার আর ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের কথা বললেও, লিবিয়ায় নতুন করে যুদ্ধের আরেকটি ফ্রন্ট 'ওপেন' করেছেন তিনি। তাই তার বিজয়টা খুব সহজ হবে না এবার। 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলন সত্যিকার অর্থেই একটি বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে মার্কিন সমাজে।
লেখক : অধ্যাপক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দৈনিক ডেসটিনি ১ নভেম্বর,  ২০১১ 
ড. তারেক শামসুর রেহমান
অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য,
tsrahmanbd@yahoo.com 
 

0 comments:

Post a Comment