সদ্য শেষ হওয়া আসেম সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন তিন দফার একটি প্রস্তাব দিয়েছে। গত ২১ নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট আসেমের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শেষ হয়েছে।
ওই সম্মেলন শুরু হওয়ার আগের দিন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এক সংবাদ সম্মেলনে এই তিন দফা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এর আগে তিনি নেপিডোতে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর বা সরকারপ্রধান অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট তিন কিয়াউ ও ক্ষমতাবান সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল সিন অং থ্লইংয়ের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। এর আগে তিনি ঢাকা ঘুরে যান। ঢাকায় তিনি এমন আভাস দিয়েছিলেন যে চীন প্রয়োজনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘মধ্যস্থতা’ করবে। এখন তিনি মিয়ানমারের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তাঁর তিন দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন। এই তিন দফা পরিকল্পনায় রয়েছে : ১. অস্ত্রবিরতি ও শান্তি-স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, যাতে রাখাইন থেকে লোকজন না পালায় এবং শান্তিতে থাকে; ২. মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্যের ভিত্তিতে আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের উপায় খোঁজা; ৩. রাখাইন রাজ্যের উন্নয়নে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, চীন বিশ্বাস করে সংলাপের মধ্য দিয়েই প্রতিবেশী দুই দেশ রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করতে পারে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এটাও মনে করেন, রোহিঙ্গা সংকটের মূলে রাখাইনের দারিদ্র্য দায়ী। প্রশ্ন হচ্ছে, চীনের এই তিন দফা পরিকল্পনা কি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আদৌ সহায়ক হবে? যেখানে নাগরিকত্ব মূল ইস্যু, সেখানে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের ব্যাপারে চীনের কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই। এ থেকে এটা স্পষ্ট হলো যে চীন সরাসরিভাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো অবস্থান নেয়নি। মিয়ানমারে চীনের বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে। সেই বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হোক, এটা চীন চায় না। চীন রাখাইনের সমুদ্র উপকূলে ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে। ২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে রাখাইনের গভীর সমুদ্রে তেল ও গ্যাস উত্তোলনে। এই তেল ও গ্যাস উত্তোলন গত এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এবং চীন পাইপলাইনের মাধ্যমে তা নিয়ে যাচ্ছে ইউনান প্রদেশে। চীন চায় না, তার এই বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। তবে রোহিঙ্গা প্রশ্নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। চারজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী (জাপান, জার্মানি, সুইডেন ও ইইউ) ঢাকা সফর করে গেছেন। ঢাকা সফর করে গেছেন চারজন মার্কিন আইন প্রণেতা। মার্কিন কংগ্রেসের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটিতে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সম্প্রতি। এতে মিয়ানমারের রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হয়েছে। রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের অবস্থান আশাব্যঞ্জক নয়। অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের নেতারা মিথ্যাচারের আশ্রয় নিচ্ছেন বারবার। ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত আসিয়ানের ৩১তম সম্মেলনে সু চি বলেছিলেন, সমঝোতা চুক্তি হলে তিন সপ্তাহের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে মিয়ানমার! এটা সময়ক্ষেপণ করার একটা কৌশল। এর আগে অক্টোবরে সু চি বলেছিলেন, রোহিঙ্গারা ফিরতে চায় না। তিনি একবার এমন কথাও বলেছেন যে মুসলমানরা কেন চলে যাচ্ছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। গেল সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় এসেছিলেন মিয়ানমারের বিশেষ দূত কিউ টিন। কিন্তু ফলাফল শূন্য। ফলে একাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বাংলাদেশ সফর, এমনকি আসেম শীর্ষ সম্মেলনও আমাদের জন্য একটি সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছিল। আমরা ওই সম্মেলন থেকে খুব বেশি কিছু পাইনি। তবে প্রত্যাশা ছিল। এই নভেম্বরেই আসছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বাংলাদেশে এসে মিয়ানমারেও যাবেন। আমরাও এই সুযোগ আমাদের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারি। মোদ্দা কথা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে আছে। এখন দরকার কূটনৈতিক যোগাযোগ আরো শক্তিশালী করা। দুঃখজনক হলেও আমরা তা পারিনি। চার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আসেম সম্মেলনে যোগদানের আগে ঢাকা সফর করে গিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের দেখাও হয়েছিল। নিশ্চয় বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরেছে। আসেম সম্মেলনে বাংলাদেশের জন্য আরেকটি সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। মঙ্গলবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে এই শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়েছে। আসেম (ASEM-ASIA-EUROPE Meeting) একটি বড় সংগঠন। বর্তমানে ৫১টি দেশ ও দুটি আঞ্চলিক সংস্থা আসেমের সদস্য। ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ (ভারতসহ) এবং চীন আসেমের সদস্য। ফলে আসেম সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে বাংলাদেশ একটি সুযোগ পেয়েছিল রোহিঙ্গা সমস্যা তুলে ধরার। আসিয়ান সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রশ্নে কোনো আলোচনা হয়নি বটে, তবে আসিয়ানভুক্ত অনেক দেশ এ সংকট সম্পর্কে অবগত। আমাদের উচিত ছিল ওই সব দেশের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রশ্নে একটি যৌথ অবস্থানে যাওয়া। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া কিংবা থাইল্যান্ড বরাবরই রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমারের ভূমিকার সমালোচনা করে আসছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত একটি বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব পর্যন্ত দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের কোনো প্রতিনিধি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী কেউ এসব দেশে গেছেন, এটা আমার জানা নেই। ২০১২ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হলে, শত শত রোহিঙ্গা যখন সাগরে দিনের পর দিন ভাসছিল তখন থাইল্যান্ড একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল ব্যাংককে। এরপর মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের বের করে দেওয়ার প্রবণতা কমেছিল। এর পর থেকে আমরা কিন্তু রোহিঙ্গাদের প্রশ্নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। এর রেশ ধরেই আবারও সৃষ্টি হয়েছে এই সংকট। তাহলে এর সমাধান হবে কিভাবে? বাকি রোহিঙ্গারা এভাবেই ক্যাম্পে থেকে মানবেতর জীবন যাপন করবে? সুতরাং রোহিঙ্গা প্রশ্নে সমাধানটা জরুরি। এ ক্ষেত্রে চীনের প্রস্তাব আদৌ কি কোনো জট খুলতে সাহায্য করবে? চীন বলছে অস্ত্রবিরতির কথা। রাখাইন থেকে রোহিঙ্গারা আসছে বটে; কিন্তু সহিংসতার খবর তেমন একটা পাওয়া যায় না। জঙ্গিগোষ্ঠী রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির খবরও তেমন একটা নেই। কারা স্যালভেশন আর্মি তৈরি করেছে, এটা নিয়েও মানুষের মাঝে সন্দেহ আছে। চীন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সংলাপের কথা বলছে। শুধু সংলাপ সংবাদপত্রের জন্য আগ্রহ সৃষ্টি করতে পারে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু তা কোনো সমাধান বয়ে আনবে না। সমাধানের জন্য চাই বিশ্বাস ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করা। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ছয় লাখ ৩১ হাজার রোহিঙ্গা আদৌ তাদের নাগরিক কি না, সে ব্যাপারে মিয়ানমারের কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই। এরা বাঙালি, এ কথা তারা বারবার বলে আসছে। সেই অবস্থান থেকে মিয়ানমার এক চুলও সরে আসেনি। খুব কম রোহিঙ্গার কাছেই নাগরিকত্ব প্রমাণসংক্রান্ত কাগজপত্র আছে। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার কারণে সব কাগজ নষ্ট হয়ে গেছে। তাহলে তারা কিভাবে নাগরিকত্ব প্রমাণ করবে? সুতরাং সংলাপে নাগরিকত্ব প্রশ্নে সমাধানের সম্ভাবনা ক্ষীণ। রাখাইন রাজ্যের উন্নয়নের কথা বলছে চীন। সেখানকার মানুষ দরিদ্র। এটাও সত্য কথা। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কোনো যোগসূত্র নেই। চীনের বক্তব্য আরো স্পষ্ট হলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু তা নেই। নাগরিকত্ব প্রমাণ করাই হচ্ছে মূল সমস্যা। উপরন্তু তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নটিও আছে। তাদের বাড়িঘর তৈরি করা, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া—এ বিষয় তো মিয়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নিবারক কূটনীতি বলে একটা কথা আছে। বিশ্বরাজনীতিতে যে পরিবর্তন এসেছে, সেই পরিবর্তন সামনে রেখে এবং শান্তি নিশ্চিত করতে অনেক রাষ্ট্র নিবারক কূটনীতি বা ‘প্রিভেনটিভ ডিপ্লোম্যাসি’ প্রয়োগ করে। নিবারক কূটনীতির মূলকথা হচ্ছে দুটি দেশ যাতে কোনো বিপদ বা বিতর্কে জড়িয়ে না যায়, যাতে এ বিপদ সংঘর্ষ পর্যায়ে উপনীত না হয় এবং যাতে সব ধরনের বিপদকে নিষ্পত্তি করার জন্য পারস্পরিক বিশ্বাসের আবহাওয়া সৃষ্টি করা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া। রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ এই নিবারক কূটনীতি প্রয়োগ করে আসছে। এর পরও কথা থেকে যায়। সদ্য আগত ছয় লাখ ৩১ হাজারসহ মোট ১০ লাখের ওপরে রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে হবে মিয়ানমারকে। এরা মিয়ানমারের নাগরিক। চীনের ‘প্রস্তাব’ এবং উদ্যোগ নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি। এরই মধ্যে আসেম সম্মেলন শেষে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি; যদিও বুধবার পর্যন্ত এ সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত জানা যায়নি। এটা ভুলে গেলে চলবে না, এর সঙ্গে আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নটি জড়িত। রোহিঙ্গারা যদি এ দেশে ‘স্থায়ী’ হয়ে যায়, তাহলে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তাদের বিবাদ ও সংঘর্ষ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে। একটি ‘ফিলিস্তিনি সংকটে’র মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কাকে আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না। স্থানীয় বাঙালিরা এরই মধ্যে উখিয়ায় সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের কারণে শুধু পরিবেশগত সমস্যাই নয়, বরং নিরাপত্তা সংকটও সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের দৃষ্টি এখন রোহিঙ্গাদের দিকে। তারা সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করতে চায়। কোনো কোনো পুঁজিবাদী রাষ্ট্রও পরোক্ষভাবে এসব সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে উৎসাহ দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। এ এলাকাজুড়ে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করা। অস্থিরতা সৃষ্টি হলে এর সুযোগ নেবে ওই সব রাষ্ট্র। সিরিয়ায় আইএসের পতন হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও রাশিয়ার গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গেছে, রাকা (আইএসের অলিখিত রাজধানী) থেকে আইএস সদস্যদের পালাতে সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। তাহলে প্রশ্ন জাগে, আইএসের জঙ্গিরা গেল কোথায়? ফিলিপাইনে আইএসের একটি শক্ত ঘাঁটির পতন ঘটেছে। অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক বলার চেষ্টা করছেন, আইএস জঙ্গিরা রাখাইনে প্রবেশ করতে পারে।
এসব কারণেই আমাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরো শক্তিশালী করা প্রয়োজন। একদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা, অন্যদিকে মিয়ানমারের ওপর ‘চাপ’—দুইভাবে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। আন্তর্জাতিক মহল আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। লাখ লাখ মানুষ, শুধু ধর্মের কারণে দেশান্তরিত হবে, এই একুশ শতকে এসে তা চিন্তা করা যায় না। আজকে রোহিঙ্গারা যদি ইসলাম ধর্মাবলম্বী না হতো, তাহলে সম্ভবত তাদের দেশ ত্যাগ করতে হতো না! শুধু মুসলমান হওয়ার কারণে তাদের ওপর নেমে এসেছে অত্যাচার আর নির্যাতন। সিরীয় ও ইরাকি শরণার্থীদের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়নি, যা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ক্ষেত্রে হয়েছে। সিরীয় ও ইরাকি শরণার্থীরা সমুদ্রপথে দেশ ত্যাগ করেছে। কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমানদের হত্যা করা হয়েছে। শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। হিটলার যেভাবে ইহুদিদের হত্যা করেছিল, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা অনেকটা সেভাবেই হত্যা করছে রোহিঙ্গাদের। এ বক্তব্য বাংলাদেশ উপস্থাপন করেনি। একজন শীর্ষস্থানীয় জাতিসংঘের কর্মকর্তা বলেছেন মিয়ানমারে ‘গণহত্যা’ হয়েছে। অতি সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেছে মার্কিন সিনেটর জেফ মার্কেলের নেতৃত্বে একটি কংগ্রেশনাল প্রতিনিধিদল। তারা স্বীকার করেছে ‘রাখাইনে যুদ্ধাপরাধের মতো ঘটনা ঘটেছে। এ প্রশ্নেও চীনের কোনো বক্তব্য নেই। এর পরও আমি মনে করি, চীন একটি প্রস্তাব দিয়েছে। মিয়ানমার অসন্তুষ্ট হবে, মনঃক্ষুণ্ন হবে, এটা চীন বিবেচনায় নিয়েই প্রস্তাব দিয়েছে। এখন এটাকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রশ্নে আলোচনা শুরু করেছে। এ আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান বের করা সম্ভব। বৈরিতা অব্যাহত রেখে সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না।
Daily Kalerkontho
28.11.2017