রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সমঝোতা চুক্তি হয়েছে, কিন্তু রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে তো?

গেল বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত এ সমঝোতা স্মারক সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না জানায় একটা বড় প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সব রোহিঙ্গা শেষ পর্যন্ত নিজ বাসভূমে ফেরত যাবে কিনা? আর যদি ফিরে যায়, তাহলে কবে নাগাদ তারা ফিরে যাবে? কবে থেকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার নেপিডোয় চুক্তি স্বাক্ষরের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলার চেষ্টা করেন। তিনি যে জবাব দিয়েছেন, তা আশাব্যঞ্জক নয়। চুক্তি সম্পর্কে বলা হলে তিনি জানান, ‘রোহিঙ্গারা ফেরত যাবে। সেখানকার (রাখাইনে) বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাড়িঘর তৈরি করতে হবে।’ তিনি নিশ্চিত করে বলেননি কত দিনের মধ্যে এ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শেষ হবে, কিংবা কবে নাগাদ তা শুরু হবে। অবশ্য তিনি জানিয়েছেন, চুক্তির বিষয়গুলো ঢাকায় এসে তিনি জানাবেন। একটা আশঙ্কা তাই থেকেই গেল শেষ পর্যন্ত শুধু চুক্তির জন্য একটা চুক্তি করা হলো কিনা।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সঙ্গে অনেক প্রশ্ন জড়িত। এক. প্রত্যাবাসনের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের প্রশ্নটি জড়িত। মিয়ানমার এদের আদৌ তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নেবে কিনা? সমঝোতা স্মারকে যদি ‘মিয়ানমারের নাগরিক’ কথাটা লেখা না থাকে, তাহলে তাদের প্রত্যাবাসন অর্থহীন। বলা ভালো, মিয়ানমার এসব রোহিঙ্গাকে নিজেদের নাগরিক হিসেবেও স্বীকার করে না। এমনকি তারা রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করতেও নারাজ। তারা এদের মুসলমান নৃগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করে। তবে মিয়ানমারে যে ১২৫টির মতো নৃগোষ্ঠী রয়েছে, সেখানে রোহিঙ্গা তথা মুসলমান জনগোষ্ঠীর নাম নেই। দুই. রোহিঙ্গারা কী তাদের নিজ নিজ বাসভূমে থাকতে পারবে? সমঝোতা স্মারকে কি এ সম্পর্কে সুষ্ঠুভাবে কিছু বলা আছে? নাকি শুধু প্রত্যাবাসনের কথা বলা হয়েছে? এক্ষেত্রে আমরা মিয়ানমারের তৈরি করা ফাঁদে পা দিতে পারি। মিয়ানমারের সুস্পষ্ট একটা পরিকল্পনা আছে, রোহিঙ্গাদের অন্যত্র শত শত ক্যাম্প তৈরি করে সেখানে তাদের পুনর্বাসন করা। এতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার স্বার্থ রক্ষিত হবে। তারা একটি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় রোহিঙ্গাদের রাখবে। এতে মিয়ানমারের নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী মনোভাবের দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার সাতটি হোমল্যান্ড তৈরি করে কৃষাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে সেখানে যেতে বাধ্য করেছিল। মিয়ানমারের স্ট্র্যাটেজি অনেকটা সে রকম। এতে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সেখানে আরও খারাপ হবে। তিন. সমঝোতা স্মারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা, বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর’কে যদি জড়িত না করি, তাহলে নানা জটিলতা তৈরি হবে। অবশ্যই আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থাকে জড়িত করতে হবে, যা মিয়ানমার চায় না। এটা জরুরি এ কারণ যে, এতে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং রোহিঙ্গারা এক ধরনের স্বস্তিতে থাকবে। এরই মধ্যে মিয়ানমারের সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে যে, মিয়ানমার সরকার তিনটি এলাকায় (মংডু, বুথিয়াডং ও রাথেডং) একাধিক টাউনশিপ নির্মাণ করছে, যেখানে কিছু রোহিঙ্গার স্থান করে দেয়া হবে। এজন্য স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি একটি কমিটিও গঠন করেছেন, যার নাম Union Enterprise for Humanitation Assistance, Betterment and Development in Rakhine (UEHRD)। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এসব টাউনশিপ নির্মাণে রাখাইন রাজ্য সরকারকে সম্পৃক্ত তথা তাদের জড়িত করা হয়নি। এ নিয়ে রাখাইন রাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্যদের ক্ষোভ প্রকাশের খবরও সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। The Irrawaddy পত্রিকার গেল ২৩ নভেম্বর রাজ্য পার্লামেন্টের দুই সদস্য উ মং অন(U maung ohn) ও উ খা উইনের (U Kyaw Win) বক্তব্য ছাপা হয়েছে। তারা সরকারের কাছে এর ব্যাখ্যাও চেয়েছেন। এর অর্থ যাদের আগামীতে ‘ফেরত’ নেয়া হবে, তাদের সেসব টাউনশিপে রাখা হবে। তারা তাদের নিজ বাসভূমে ফেরত যেতে পারবে না। অথচ কফি আনান কমিশন তাদের (রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে) নাগরিকত্বসহ তাদের নিজ নিজ বাসভূমে পুনর্বাসনের প্রস্তাব করেছিলেন। মিয়ানমার সরকার এখন যদি টাউনশিপগুলোয় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসিত করে, তাহলে সু চি তার আগের দেয়া প্রতিশ্রুতিও ভঙ্গ করবেন। তিনি কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ করার সময় বলেছিলেন, তার সরকার আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করবে। এতে আমরা যে নিরাপত্তার কথা বলছি, সে সম্ভাবনাও থাকল। চার. সমঝোতা চুক্তিতে সদ্য আগত প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গার কথা হয়েছে, নাকি ‘শব্দ চয়নে’ কিছু মুসলমানদের (রোহিঙ্গা শব্দ যেহেতু তারা ব্যবহার করে না) ফেরত নেয়ার কথা বলছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। এখানে পাঠকদের স্মরণ করিয়ে দিই, মিয়ানমারের কাছে কূটনৈতিক সৌজন্যবোধ বলতে কিছু নেই। তারা মিথ্যা কথাও বলেন। অতীতে মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনে দুই-দুইটি চুক্তি হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে ও ১৯৯২ সালে। যতদূর জানা যায়, ৪ লাখ ৭৬ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত গেছে। কিন্তু তারপরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বৈধ ও অবৈধভাবে কক্সবাজারে রয়ে গেছে। এদের একটা অংশ বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে গেছে। একটা অংশ বাংলাদেশী পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। অনেক দিন আগে থেকেই ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের দেখভাল করছে। তাদের হিসাবে বৈধ রোহিঙ্গাদের সংখ্যা মাত্র কয়েক হাজার। অবৈধ অর্থাৎ রেজিস্টারবিহীন রোহিঙ্গা নাগরিকের সংখ্যা এর কয়েকগুণ বেশি। তারা অবৈধভাবে ক্যাম্প করে বসবাস করছে। এখন যোগ হলো আরও প্রায় ৭ লাখ। এদের মাঝে থেকে কতজনকে মিয়ানমার ফেরত নেবে, সে প্রশ্ন থাকলই। পাঁচ. মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের অফিস থেকে বলা হয়েছে, ১৯৯২ সালের চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা হবে। সমঝোতা চুক্তিতে এ ১৯৯২ সালের চুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা একটা বড় ধরনের ফাঁদ। আমরা সম্ভবত সে ফাঁদে পা দিতে যাচ্ছি। ১৯৯২ সালের চুক্তিতে Certification ’ শব্দটা আছে। অর্থাৎ যেসব রোহিঙ্গার নাম দেয়া হয়েছে, মিয়ানমার তাদের নাম, ঠিকানা ইত্যাদি যাচাই করবে। অতীতে এ ধরনের নামের একটি তালিকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু মিয়ানমার এর কোনো জবাব দেয়নি। এবারও সে ফাঁদে আটকে যাবে বাংলাদেশ! Certification এর নামে সময়ক্ষেপণ করবে। লোকদেখানো কিছু রোহিঙ্গাকে তারা ফেরত নিতে পারে। কিন্তু একটা বড় অংশকেই তথাকথিত Certification -এর নামে আর ফেরত নেবে না। এটাই মিয়ানমারের স্ট্র্যাটেজি। যেহেতু মিয়ানমারের ওপর একটি আন্তর্জাতিক ‘চাপ’ আছে, তাই তারা রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি হয়েছে। এটাও বিশ্ববাসীকে দেখানো যে, তারা তাদের নাগরিকদের ফেরত নিচ্ছে। কিন্তু নেবে না। তারা সময়ক্ষেপণ করবে। ছয়. ৫০ থেকে ৬০ হাজার নারী রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এরা সবাই অন্তঃসত্ত্বা। এদের সন্তান এখন জন্ম নেবে বাংলাদেশে। জন্মসূত্রে ওইসব সন্তান হবে বাংলাদেশী নাগরিক। মিয়ানমার ওইসব সন্তান ফেরত নেবে না। সন্তান না গেলে মায়েরাও যেতে চাইবে না। ফলে এক বিশাল জনগোষ্ঠীর এ দেশে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শরণার্থীসংক্রান্ত যে আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে, তাতে কোনো শরণার্থীকে ‘জোর করে’ ফেরত পাঠানো যাবে না। আর ইউএনএইচসিআর দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, এদের জোর করে ফেরত না পাঠানোর। ফলে আগামীতে এক্ষেত্রে একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। সাত. বলা হচ্ছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এখানে শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এটা প্রাথমিক স্টেজ। অর্থাৎ দুই পক্ষ বসবে। নীতিমালা ঠিক করবে। কীভাবে, কোন প্রসেসে ‘কাজটি’ শুরু হবে, তা নির্ধারণ করবে। অর্থাৎ দুই মাসের মধ্যেই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই সে রকম একটি আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বাড়িঘর করতে সময় লাগবে! তার কথা থেকেই বোঝা যায়, পুরোপুরি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে সময় লাগবে। ভয়টা হচ্ছে, দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা দীর্ঘ হতে পারে। বছরের পর বছর লেগে যেতে পারে। এতে লাভ হবে মিয়ানমারের। আমাদের কোনো লাভ নেই। মিয়ানমারের একগুঁয়েমির কারণে আমরা তাদের কিছু দাবি মেনে নিয়েছি। কিন্তু তারপরও তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে বলে মনে হয় না। তাদের একগুঁয়েমি মনোভাব আজকের নয়। পাঠক নিশ্চয়ই স্মরণ করতে পারেন, অতীতে মিয়ানমার জাতিসংঘ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। আন্তর্জাতিক আইন, প্রচলিত বিধিবিধান তারা মানে না। সেনাবাহিনীর কথায় এখন চলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে অং সান সু চি বহির্বিশ্বে তার জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের নিয়ে তারা একের পর এক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ট করছে। এটা আমরা বিবেচনায় নিতে পারি না; কিন্তু মুখ্য করতে পারি। কূটনৈতিক চ্যানেলে এখন আমাদের তৎপরতা বাড়াতে হবে। দক্ষ কূটনৈতিকদের প্রয়োজনে নিয়োগ দিতে হবে। কয়েকটি দেশে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, রাশিয়া এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। এসব দেশের সিভিল সোসাইটির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। আইনপ্রণেতাদের সঙ্গেও সম্পর্ক বাড়াতে হবে। চীন ও রাশিয়ার বাংলাদেশে বড় বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে। এ বাণিজ্যিক স্বার্থের বিষয়টি আমরা আমাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারি। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। কিন্তু আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীনে যাননি। এমনকি রাশিয়ায়ও যাননি। এ ধরনের একটি সংকট হলে সাধারণত সরকারের বিশেষ দূত, নিদেনপক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশ সফর করেন। নিজ দেশের অবস্থা বিদেশে তুলে ধরেন। জনমত সৃষ্টি করেন। কিন্তু আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে অনেকটাই নীরব। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মানবাধিকারবিষয়ক কমিটিতে ভোটাভুটিতে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখানেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো ভূমিকা নেই। ওআইসি প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল। ১৩৫টি রাষ্ট্র প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ১০টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। সেসব দেশের মাঝে আমাদের পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ রয়েছে। এখানেও আমাদের ব্যর্থতা আমরা সার্কভুক্ত দেশগুলোয়ও রোহিঙ্গা প্রশ্নে সমর্থন আদায় করতে পারিনি। একমাত্র পাকিস্তান ও মালদ্বীপকে আমরা আমাদের পাশে পেয়েছি।
অতিসম্প্রতি টিলারসনের একটি বক্তব্যে আশাবাদী হওয়ার মতো কারণ রয়েছে। টিলারসন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, মিয়ানমারে ‘জাতিগত নিধন’ এর মতো ঘটনা ঘটেছে। কিছুটা হলেও সত্য যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন স্বীকার করে নিচ্ছে যে, মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত উচ্ছেদ অভিযান চলছে। আমরা এ বক্তব্য আমাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারি। আমরা বারবার বলে আসছি, যারা রোহিঙ্গা হত্যা আর অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হোক। যারা বিভিন্ন দেশে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হচ্ছে। সুতরাং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচারের দাবি করলে মিয়ানমার একটা ‘চাপ’ এর মুখে থাকবে। সুতরাং একদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুততর করা, অন্যদিকে গণহত্যার বিচার দাবি করতে পারে বাংলাদেশ। মনে রাখতে হবে, মিয়ানমারের স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে সময়ক্ষেপণ করা। সুতরাং আমরা তাদের পাতা ফাঁদে যেন পা না দিই, এটা সবসময় বিবেচনায় নিতে হবে।

Daily Alokito Bangladesh
26.11.2017

0 comments:

Post a Comment