রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সম্ভাব্য ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কি বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো?


আগামী ১৬ জুলাই ফিনল্যান্ডের হেলসিংকিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে যাচ্ছে। পরিবর্তিত বিশ্বরাজনীতি, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার ‘অবৈধ’ হস্তক্ষেপ এবং কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনার পর দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে এ বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি।
গেল মাসে কানাডায় জি-৭-এর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সম্মেলনে ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, জি-৭-এ রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এক সময় রাশিয়ার অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়েই শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৮-এর জন্ম হয়েছিল। কিন্তু ক্রিমিয়াকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তির পর জি-৮ থেকে রাশিয়াকে বহিষ্কার করা হয়।
সেই থেকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। এর মধ্যে চীনের সঙ্গে রাশিয়ার এক ধরনের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ঐক্য অনেক ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া বিভিন্ন ইস্যুতে পরস্পরবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে (২০১৬) রাশিয়ার পরোক্ষ হস্তক্ষেপ, সিরিয়ায় রাশিয়া কর্তৃক আসাদের পক্ষ অবলম্বন ইত্যাদি কারণে দেশ দুটোর মাঝে বড় ধরনের আস্থাহীনতার সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষুদ্র আকারের পরমাণু বোমা তৈরি করার, যা কিনা বিশ্বে পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে উসকে দেয়ার একটা আশঙ্কা তৈরি করেছে। এই যখন পরিস্থিতি তখন ব্রিটেন প্রথমে ২৩ রুশ কূটনীতিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।
অভিযোগে ছিল ব্রিটেনে বসবাসরত এক সময়ের রুশ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সের্গেই স্ক্রিপালকে হত্যার! স্ক্রিপাল ছিলেন ডাবল এজেন্ট। তিনি রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করলেও একই সঙ্গে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাকেও তথ্য সরবরাহ করতেন। তাই স্ক্রিপালকে যখন নার্ভ গ্যাস প্রয়োগ করে হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়, তখন অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে।
ব্রিটেনের এ সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ১৩৯ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে রাশিয়া বহিষ্কার করে ১৫০ জন পশ্চিমা কূটনীতিককে, যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের কূটনীতিকরাও ছিলেন।
এ বহিষ্কার ও পাল্টা বহিষ্কারের মধ্য দিয়ে নতুন করে দু’দেশের মাঝে (যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া) উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, এর মধ্য দিয়ে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের সূচনা হতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধের অবসান হয়েছে আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মধ্য দিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের অবসান হয়।
একটা সময় ছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন ইউরোপে প্রভাব বিস্তারের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে দুই পরাশক্তির মধ্যে এক ধরনের ‘যুদ্ধের’ আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। ওই পরিস্থিতি বহাল ছিল দীর্ঘ সময় পর্যন্ত, যা ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে আছে স্নায়ুযুদ্ধ হিসেবে। কিন্তু স্নায়ুযুদ্ধকালীন এ দীর্ঘ সময়ে একাধিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল দুই পরাশক্তির কাছে যে পারমাণবিক অস্ত্র ছিল, তা কমিয়ে আনার জন্য।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে ১৯৪৫ সালের ১৬ জুলাই নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে ভোর হওয়ার আগে ‘ট্রিনিটি’ নামের বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করেছিল। পরে ওই বছরের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় ও ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে দুটি পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ দুই বোমাই জাপানের আত্মসমর্পণ এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের অবসানকে ত্বরান্বিত করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে ১৯৪৯ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ১৯৬০ সালে ফ্রান্স, ১৯৪৯ সালে ব্রিটেন এবং ১৯৬৪ সালে চীন পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হিসেবে বিশ্ব আসরে নাম লেখায়। পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে ১৯৬৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে আংশিক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৬৯ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়মিত কৌশলগত অস্ত্র সীমিতকরণ আলোচনা (সল্ট) শুরু করে। নতুন করে আর যাতে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার না ঘটে, সে লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের মার্চে পরমাণু বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭৯ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সল্ট চুক্তি স্বাক্ষর করে।
১৯৯১ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পারমাণবিক অস্ত্রের বিলোপ সাধনে দেশ দুটির তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বুশ ও গর্বাচেভ কৌশলগত অস্ত্র চুক্তি (স্টার্ট) স্বাক্ষর করেন। ১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত হয় স্টার্ট-২ চুক্তি।
ওই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া তাদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের দুই-তৃতীয়াংশ হ্রাস করে। ১৯৯৫ সালে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তিকে ২৫ বছরের জন্য স্থায়ী রূপ দিতে জাতিসংঘে একটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এখানে আরও একটি কথা বলা প্রয়োজন। ভারত ১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো এবং ১৯৯৮ সালে দ্বিতীয়বারের মতো, পাকিস্তান ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো, আর উত্তর কোরিয়া ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর ক্লাবে যোগ দেয়। এর বাইরে ইসরাইলের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও ইসরাইলের এ ব্যাপারে কোনো স্বীকারোক্তি নেই।
বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের সর্বশেষ যে তথ্য (২০১৭) আমরা পাই, তাতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ৬৮০০, রাশিয়ার কাছে ৭০০০, যুক্তরাজ্যের কাছে ২১৫, ফ্রান্সের কাছে ৩০০, চীনের কাছে ২৭০, ভারতের কাছে ১২০-১৩০, পাকিস্তানের কাছে ১৩০-১৪০, উত্তর কোরিয়ার কাছে ১০-২০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। একটি ওয়ারহেড একাধিক পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করতে পারে।
আরও একটি কথা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ১২২টি দেশ পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এখন ৫০টি দেশ চুক্তিটি অনুমোদন করলেই ৯০ দিন পর এটি কার্যকর হওয়ার কথা। তবে এ চুক্তি বয়কট করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। পরমাণু যুদ্ধ এড়াতে সাত দশকের প্রচেষ্টার পর প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করতে বৈশ্বিক ওই চুক্তিটি হয়।
জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ দেশের আলোচকরা ১০ পাতার চুক্তিটি চূড়ান্ত করেন। চুক্তির পক্ষে পড়ে ১২২টি ভোট। একটি ভোট পড়ে বিপক্ষে। দেশটি হচ্ছে নেদারল্যান্ডস। সিঙ্গাপুর ভোটদানে বিরত ছিল। পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ছিল না। এখন ট্রাম্প-পুতিন আলোচনায় এ প্রশ্নটি উঠবে।
‘ভক্স নিউজ’ আমাদের জানাচ্ছে (৫ জুলাই) শীর্ষ বৈঠকে নিউ স্টার্ট চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণে দু’পক্ষ স্টার্ট চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ২০১১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। ওই চুক্তিতে দু’পক্ষের পারমাণবিক অস্ত্র পরিদর্শনের সুযোগ ছিল। যদিও ওই চুক্তিটি ২০২১ সাল পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে, তবে তা আরও ৫ বছর বাড়ানোর সুযোগ আছে।
কিন্তু ২০১৭ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে ট্রাম্প অভিযোগ করেন ওই চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে ছিল এবং তিনি আর তা নবায়ন করবেন না। ফলে ট্রাম্প-পুতিন আলোচনায় নিউ স্টার্ট চুক্তি নিয়ে দুই পক্ষ আদৌ কোনো সমঝোতায় উপনীত হবেন কিনা সে প্রশ্ন থাকলই।
এখন যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ছোট ছোট পারমাণবিক বোমা বানানোর সিদ্ধান্ত কি শেষ পর্যন্ত একুশ শতকের তৃতীয় দশকে নতুন করে এক ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্ম দেবে? এ মুহূর্তে হয়তো এটা আঁচ করা যাবে না। কিন্তু নিশ্চিত করেই বলা যায় চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া একটা পাল্টা কর্মসূচি গ্রহণ করবে। উত্তর কোরিয়া অনেক দিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে সীমিত পাল্লার পারমাণবিক হামলার কথা বলে আসছে।
সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-উন বৈঠকের পর পরিস্থিতির খুব উন্নতি হয়েছে তা বলা যাবে না। গত ২৪ জানুয়ারি দ্য নেশন পত্রিকায় অ্যালিস স্লটারের একটি নিবন্ধ ছাপা হয়েছে। সেখানে তিনি বলেছেন, পৃথিবীর ৮০টি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। আর সেনাবাহিনী মোতায়েন করা আছে ১ লাখ ৩৮ হাজার। অন্যদিকে ৯টি দেশে রাশিয়ার ২৬ থেকে ৪০টি ঘাঁটি রয়েছে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী রাশিয়া কম্বোডিয়ার ৩টি সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করার জন্য কম্বোডিয়া সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে যাচ্ছে। পাঠক, সিরিয়ার পরিস্থিতি স্মরণ করতে পারেন। সিরিয়ায় কুর্দি অঞ্চলে এক সময় রাশিয়ার ঘাঁটি ছিল। পরবর্তীকালে তুরস্কের সামরিক আগ্রাসনের আগেই সেই ঘাঁটি প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি এখনও আছে।
সিরিয়ায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটি আছে। সিরিয়ার তারতাস ও লাতকিয়া সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে রাশিয়ার নৌবাহিনী। ফলে পরিবর্তিত বিশ্বরাজনীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া এক ধরনের ‘প্রতিযোগিতায়’ লিপ্ত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য পরিষ্কার- দেশ দুটি তাদের প্রভাব বাড়াতে চায়।
এর বাইরে রয়েছে ইউক্রেন পরিস্থিতি। ইউক্রেন নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে এক ধরনের ঠাণ্ডা লড়াই চলছে। ইউক্রেনে ইয়ানোকোভিচ সরকারের পতন ঘটে ২০১৪ সালে। অভিযোগ আছে, ইয়ানোকোভিচ, যিনি ছিলেন মস্কো ঘেঁষা, তার পতন তথা উৎখাতের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ভূমিকা ছিল। রাশিয়া এখন পূর্ব ইউক্রেনে তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করছে এবং ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরাশেঙ্কোকে উৎখাতের উদ্যোগ নিতে পারে।
একই সঙ্গে চীন-রাশিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধি ট্রাম্পের জন্য চিন্তার কারণ। সের্গেই স্ক্রিপালের হত্যার ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্ব যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, চীন তার সমালোচনা করেছিল। চীন কোনো মার্কিন কূটনীতিককে বহিষ্কার করেনি সত্য, কিন্তু নৈতিকভাবে রাশিয়ার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।
রুশ-মার্কিন সম্পর্কের অবনতি কারও জন্যই কোনো ভালো খবর নয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্ষমতায় থাকবেন ২০২৪ সাল পর্যন্ত। সুতরাং ট্রাম্প পুতিনকে আস্থায় নিলেই বিশ্বে স্থিতিশীলতা আসবে। পারমাণবিক ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে। আস্থাহীনতার সম্পর্ক বৃদ্ধি পেলে তা বিশ্বে উত্তেজনা ছড়াবে মাত্র। স্নায়ুযুদ্ধ বিশ্বে কোনো মঙ্গল ডেকে আনেনি।
সুতরাং নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধের জন্ম হলে তাও কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ট্রাম্পকে নিয়ে। তিনি এক ধরনের আগ্রাসী নীতি নিয়ে চলতে পছন্দ করেন। ট্রাম্প-উন শীর্ষ বৈঠক আয়োজনে চীনের একটি বড় ভূমিকা থাকলেও চীনের সঙ্গে এ ধরনের ‘বাণিজ্য যুদ্ধে’ তিনি জড়িয়ে গেছেন।
কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও তিনি একই ধরনের আচরণ করছেন। এ ক্ষেত্রে তিনি খুব স্বাভাবিকভাবেই মস্কোকে কাছে পেতে চাইবেন। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার উদ্যোগ যদি তিনি না নেন, যদি মস্কোর সঙ্গে এক ধরনের সহাবস্থানে না যান (সিরিয়া, ইউক্রেন ও পারমাণবিক অস্ত্র প্রশ্নে), তাহলে দু’পক্ষের মাঝে উত্তেজনা বাড়বেই। এর ফলে চীন-রাশিয়া ঐক্য আরও শক্তিশালী হবে এবং দ্বিতীয় স্নায়ুযুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়বে।
Daily Jugantor
08.07.2018

0 comments:

Post a Comment