হীরকজয়ন্তীর প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই
20:05
No comments
বাংলাদেশ এখন স্বাধীনতার ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ পালন করছে; ২০৩১ সালে পালন করবে ‘হীরকজয়ন্তী’। সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এখনই। ২০৩১ সালে বাংলাদেশের বয়স দাঁড়াবে ৬০ বছর। তখন বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়বে, মানুষের চাহিদা বাড়বে এবং এক ‘নতুন পৃথিবী’ দেখতে পাব আমরা। করোনাভাইরাস এক ‘নতুন পৃথিবীর’ জন্ম দিতে যাচ্ছে। ওই নতুন পৃথিবীতে মানুষের চাহিদার ধরন পাল্টে যাবে।
সনাতন শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আসবে। সুতরাং এসব পরিবর্তন সামনে রেখে নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের অর্জন অনেক। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যখন ২০৩১ সালে ‘হীরকজয়ন্তী’ উদযাপন করবে, তার মাত্র চার বছরের মাথায় ২০৩৫ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৫তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান হবে দ্বিতীয়। ভারত থাকবে শীর্ষে। যেখানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২৫তম, তখন পাকিস্তানের অবস্থান ৩৬, শ্রীলংকার ৬৭, নেপালের ৯৫, আফগানিস্তানের ১২৯, মালদ্বীপের ১৫০ আর ভুটানের অবস্থান ১৬৪তম। এর আগেই ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ৩৪তম, আর ২০৩০ সালে ২৮তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে।
সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে-স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি মিলবে। এক্ষেত্রে একটি ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলে রপ্তানি আয় ৮ থেকে ১০ শতাংশ কমে যেতে পারে। একইসঙ্গে ঋণপ্রাপ্তিতে জটিলতা, ইউরোপ ও কানাডায় পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহার ইত্যাদি ঝুঁকিও তৈরি হবে। ফলে ওইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য এখন থেকেই নিতে হবে মহাপরিকল্পনা। ইতোমধ্যে ভারত ‘কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট’র (সেপা) প্রস্তাব করেছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবিধার ধরন কী হবে, তা নির্ণয় করাই হচ্ছে ‘সেপা’র লক্ষ্য। গোল্ডম্যান স্যাকস-পরবর্তী উঠতি যে ১১টি শক্তিশালী অর্থনীতির দেশের কথা বলেছেন (এন-১১), বাংলাদেশ রয়েছে তার শীর্ষে। বাংলাদেশের অবস্থান উঠতি অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া কিংবা মেক্সিকোর সঙ্গে। ফলে বাংলাদেশকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, কীভাবে অর্থনৈতিক এ অগ্রগতি ধরে রাখা যায়। আমাদের রিজার্ভের পরিমাণ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। অথচ পাকিস্তানের রিজার্ভের পরিমাণ ২০.৫১২ বিলিয়ন ডলার; অর্থাৎ বাংলাদেশের অর্ধেকেরও কম। যদিও ভারতের রিজার্ভের পরিমাণ অনেক বেশি; ৫৮১ বিলিয়ন ডলার। গেল ১০ বছরে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৪১ ভাগ হারে বেড়েছে। বাংলাদেশের যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে ১১ মাসের আমদানি দায় মেটানো সম্ভব।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে যে জনসংখ্যা ছিল, গেল ৫০ বছরে তা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, যেখানে ১৯৭২-৭৩ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার, ২০১৯-২০ সালে তা বেড়েছে ২০৭৯ ডলারে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ২.৭৫ ভাগ (১৯৭২-৭৩), সেখানে ২০১৮-১৯ সময়সীমায় উন্নীত হয়েছিল ৮.১৫ ভাগে। তবে করোনাকালীন পৃথিবীর সব দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও শ্লথগতি আসে। এডিবির মতে, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালে প্রাক্কলন করা হয়েছিলা ৫.২ ভাগ আর ২০২১ সালে ৬.৮ ভাগ। অথচ এডিবিই বলছে, ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে ভারতে মাইনাস ৯ ভাগ, শ্রীলংকায় মাইনাস ৫.৫ ভাগ, আফগানিস্তানে মাইনাস ৫ ভাগ আর পাকিস্তানে মাইনাস ০.৪ ভাগ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫.২ ভাগ বলে দেয় করোকালেও বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে ছিল।
অর্থনীতির ক্ষেত্রে আরও কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে আমরা বোঝাতে পারব-আমাদের অর্জন গেল ৫০ বছরে অনেক দেশের চেয়ে বেশি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৪.৭ ভাগ, ডলার প্রতি বিনিময় মূল্য ছিল ৭.৩০ টাকা, রপ্তানি আয় ছিল ৩৩ কোটি টাকা, আমদানি ব্যয় ছিল ২৮.৭৩ কোটি টাকা, রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ০.৮৩ কোটি ডলার। সেখানে প্রায় ৫০ বছরের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি ৫.৫ ভাগে, ৮৬ টাকা ডলার প্রতি মূল্য, রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩৬০০ কোটি ডলারে, আবার আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে ৫৪০০ কোটি ডলারে। রেমিটেন্সের পরিমাণও বেড়েছে ৪৫০০ কোটি ডলারে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দুই বা তিনটি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল আমাদের রপ্তানি খাত। বিশেষ করে পাটজাত দ্রব্য, চা ও চামড়া-চামড়াজাত পণ্যের বদলে এখন স্থান করে নিয়েছে তৈরি পোশাক ও জনশক্তি। ওষুধ শিল্পও বিকশিত হচ্ছে। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তথ্য মতে, (২০১৯-২০২০) বাংলাদেশ ১১৮টি দেশে তৈরি ওষুধ রপ্তানি করেছে। স্বাধীনতার আগে আমাদের খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল কম-বেশি এক কোটি টন। তখন লোকসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি। সর্বশেষ তথ্য বলছে, আমাদের মোট খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ সাড়ে চার কোটি টন। উৎপাদনের পরিমাণ গড়ে চারগুণেরও বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে আমরা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি।
গত ৫০ বছরে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেবাখাতে যেসব উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, তার একটি চিত্র আমরা পাব হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স-এইচডিআই (ইউএনডিপি কর্তৃক প্রণীত) এ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে (শিশু শিক্ষা, মাতৃমৃত্যু) আমাদের অগ্রগতি ভারতের চেয়েও ভালো-এ কথা স্বীকার করেছেন স্বয়ং অমর্ত্য সেন। প্রাপ্ত তথ্য মতে, এইচডিআই সূচকে ২০০০ সালে বাংলাদেশের অবস্থান যেখানে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫, সেখানে ২০১৭ সালে তা উন্নীত হয় শূন্য দশমিক ৬১-এ। ২০১৯ সালে অবস্থান ছিল ০.৬৩-এ (প্রথম অবস্থান নরওয়ের (০.৯৫৭)। ভারতের স্কোর (০.৬৪৫, ১৮৯টি দেশের মাঝে ১৩১, আর বাংলাদেশের ১৩৩)। প্রাথমিক শিক্ষায় নিট ভর্তির সংখ্যা এখন ৯৭.৯ ভাগ। মাতৃমৃত্যুর হার এখন মাত্র ১৬.৫ ভাগ। ৭০ বছরের ওপরে বয়স্ক নাগরিকদের সাক্ষরতার হার এখন শতভাগ। ২০০৬ সালে গড় আয়ুকাল যেখানে ছিল ৬৪.৪, ২০১৯ সালে তা বেড়েছে ৭২.৪ ভাগে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০.৫-এ কমে এলেও (বিবিএস রিপোর্ট) করোনার কারণে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের গবেষণা অনুযায়ী, সার্বিক দারিদ্র্যের হার বেড়ে এখন ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। টেকসই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে বাংলাদেশ (জিএসসিআই-২০২০) ১৭ ধাপ এগিয়ে (১৮০ দেশের মাঝে ১১৫তম, বাংলাদেশের স্কোর ৪৩.৩, ভারতের অবস্থান ১২৭তম; অর্থাৎ ভারত পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের চেয়ে) গেলেও বৈষম্য গত ৫০ বছরে আমরা দূর করতে পারিনি। বৈষম্য মাপা হয় ‘গিনি সহগ’ দিয়ে। ২০১৬ সালের আমাদের ‘গিনি সহগ’ ছিল শূন্য দশমিক ৪৮৩। শূন্য দশমিক ৫ হলেই অতি উচ্চ বৈষম্যের দেশ হয়ে যায়।
মাথাপিছু ঋণের বোঝা বাড়ছে-এটি আমরা কমাতে পারিনি। ২০১৫ সালের শেষ দিকে মাথাপিছু ঋণ ছিল ১৩ হাজার ১৬০ টাকা, এখন তার পরিমাণ অর্থনীতি সমিতির মতে, প্রায় ৭৯ হাজার টাকা। সাম্প্রতিককালে আমাদের অর্থনীতির জন্য দুটো খারাপ খবর-এক. বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার আর দুই. খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি। ২০২০ সালে এ খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন সাড়ে ৪৪ হাজার কোটি টাকা (যুগান্তর, ৬ ডিসেম্বর ২০২০)। যে কোনো বিবেচনায় আমাদের জন্য এটি খারাপ সংবাদ। World Happiness Report 2021 সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যায়, বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় (মোট ১৪৯ দেশ) বাংলাদেশের অবস্থান ১০১। অথচ ভারতের অবস্থান (১৩৯)। অর্থাৎ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ বেশি সুখী। বলা ভালো, সুখী দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ফিনল্যান্ড। UN Sustainable Development Solutions Network এ তালিকা প্রণয়ন করেছে।
বাংলাদেশে মানুষের অনেক সমস্যা রয়েছে। দুর্নীতি, ব্যাংকের টাকা লুট, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার কিংবা একজন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পিয়নের কাছে যখন অবৈধ শত কোটি টাকা থাকে, তখন এসব নেতিবাচক সংবাদের পাশে বাংলাদেশের মানুষ ভারত ও পাকিস্তানের জনগণের চেয়েও সুখী-এটাই একটা ভালো সংবাদ। এই ‘সংবাদ’ ধরে রাখতে হবে। এজন্যই প্রয়োজন মহাপরিকল্পনা। মহাপরিকল্পনা না নিলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব না। তবে বলতেই হবে, আমাদের সব অর্জন ম্লান হয়ে যাবে, যদি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম ইস্যুতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত না হয়। এটাই এই মুহূর্তের অগ্রাধিকার। এখন থেকেই আমাদের দীর্ঘ পরিকল্পনা করা প্রয়োজন-কীভাবে আমরা হীরকজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সমস্যাগুলো ও যুগের চাহিদা মোকাবিলা করব।
বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের গুরুত্ব ও চাহিদা বাড়ছে। ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার বেড়েছে। কোভিড-১৯-এর কারণে সারা বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে গেল, তখন ইন্টারনেটের দুনিয়া একটা বিশাল সম্ভাবনা তৈরি করল। ইন্টারনেট পুরো ব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা আমেরিকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারব। শিল্পে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের চাহিদা বেড়েছে। এ প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি আমাদের গড়ে তুলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ঢেলে সাজাতে হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সম্ভাবনা কাজে লাগতে হবে। Generation Z, যারা তরুণ প্রজন্ম, তাদের দক্ষ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। সনাতন সিলেবাসের পরিবর্তে প্রযুক্তি তথা আইটিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এটি করতে আমরা যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
আমাদের আছে এক তরুণ প্রজন্ম। এরা আমাদের শক্তি। এই শক্তি কাজে লাগাতে হবে। এজন্য দরকার যোগ্য নেতৃত্ব। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে অদক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি করার চেয়ে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে দরকার শিক্ষাক্ষেত্রে যোগ্য নেতৃত্ব। উপাচার্যদের নানা কাহিনি আমাদের আহত করে। দলীয় বিবেচনায় উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে যোগ্য ও মেধাবী নেতৃত্ব যদি শিক্ষাক্ষেত্রে আনা না যায়, তাহলে হীরকজয়ন্তীতে আমরা জাতিকে কোনো ভালো খবর শোনাতে পারব না। সুবর্ণজয়ন্তীতে এটাই আমাদের শিক্ষা। আমাদের যেতে হবে অনেক দূর। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে একটা ঝড়ভঃ ঢ়ড়বিৎ হিসাবে বিশ্বে পরিচিত করতে প্রস্তুতি নিতে হবে এখন থেকেই। তাই ঐকমত্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। একটা দুর্নীতিমুক্ত সমাজ যদি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তাহলে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হব। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তাই এখনই।
Daily Jugantor
28.3.2021
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment