রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

সোনিয়া গান্ধীর সফর ও আমাদের প্রত্যাশা

সোনিয়া গান্ধী ঢাকায় আসলেন। দেখলেন। চলেও গেলেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন এসপিজির (স্পেশাল প্রটেকশন গ্রুপ) একটি গ্রুপ। সেটা খুব অস্বাভাবিক ছিল না। তার শাশুড়ি ইন্দিরা গান্ধী নিজ দেহরক্ষীদের দ্বারা মারা গিয়েছিলেন। স্বামী রাজীব গান্ধীকে হত্যা করেছিল তামিল টাইগাররা। সুতরাং তার সঙ্গে এসপিজি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তিনি ঢাকায় এসেছিলেন অটিজমের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে। তিনি ভারতের অটিজম সম্পর্কিত একটি ন্যাশনাল কমিটির উপদেষ্টা। বাংলাদেশে এ ধরনের একটি সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কানাডা প্রবাসী মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। নিঃসন্দেহে উদ্যোগটি ভালো। কিন্তু সোনিয়া গান্ধীর ঢাকা সফর নিয়ে সংবাদপত্রগুলো যেভাবে ‘উচ্ছ্বাসের ফুলকি’ ছড়িয়েছিল, তাতে আমি অবাকই হয়েছি। এমনকি আমাদের তথাকথিত বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত যেভাবে বলার চেষ্টা করেছেন যে ‘সোনিয়া গান্ধী সমস্যার সমাধান দিয়ে যাবেন’, তাতে আমি বিস্মিত না হয়ে পারিনি। প্রধানত সোনিয়া গান্ধী সরকারে নেই। হতে পারে তিনি কংগ্রেসের সভাপতি ও ক্ষমতাসীন জোটের (ইউপিএ) প্রধান; কিন্তু আমরা বোধকরি ভুলে গিয়েছিলাম সরকার চালান মনমোহন সিং। ব্যক্তির ইচ্ছা এখানে মুখ্য নয়, মুখ্য রাষ্ট্রীয় নীতি। বাংলাদেশের ব্যাপারে তাদের একটা স্পষ্ট নীতি আছে। ওই নীতির বাইরে সোনিয়া কেন, মনমোহন সিং যেতে পারেন না বা যান না। দ্বিতীয়ত, ভারত বহুপাক্ষিকতার আলোকে সম্পর্ক তৈরি করে না। সম্পর্ক তৈরি করে দ্বিপাক্ষিকতার ভিত্তিতে। এখানে বহুপাক্ষিকতার কোনো সুযোগ নেই। তাই এ সফর থেকে যে বেশি কিছু পাওয়া যাবে না, এটা ছিল খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। আমি এতে অবাক হইনি। অবাক হয়েছিলাম যখন আমাদের পত্রিকাগুলো মন্তব্য করেছিল, অনেকটা এভাবে যে, বাংলাদেশ-ভারত মধ্যকার সমস্যার সমাধান সোনিয়া গান্ধীর হাতে রয়েছে। ভারতের বাইরে গিয়েও সোনিয়া গান্ধী খুব একটা মন্তব্য কখনও করেননি। বাংলাদেশে এসেও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে খুব একটা মন্তব্য করলেন না। অটিজম সম্মেলনে কিংবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর তার তথ্যসচিব সংবাদমাধ্যমকে যা জানালেন, তাতে আমরা কয়েকটি বিষয় খুঁজে পাই। এক. জঙ্গি এবং সন্ত্রাস দমনে সমন্বিত পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ ও ভারত, দুই. সোনিয়া-হাসিনা আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতা, উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে স্থান পায়, তিন. ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় আলোচনা হয়, চার. স্বাস্থ্য ও সামাজিক ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন সোনিয়া গান্ধী। সোনিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে মুখোমুখি হননি। দুই নেত্রীর আলোচনার বিবরণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সচিব। যদিও একান্তে কোনো সহকারী ছাড়াই সোনিয়া-হাসিনা যে আলোচনা হয়, তার বিবরণ তথ্যসচিব দেননি। তাহলে প্রশ্ন এসে যায়, সোনিয়ার এই সফর থেকে আমরা কী পেলাম? ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ও সোনিয়া গান্ধীর শাশুড়ি ইন্দিরা গান্ধীকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা দিয়েছে। বাংলাদেশ যে ‘বন্ধুকে’ সম্মান জানাতে জানে, এটা বাংলাদেশ আবারও প্রমাণ করল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ব্যক্তি ইন্দিরা গান্ধীর একটি বড় ভূমিকা রয়েছে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। ইন্দিরা গান্ধী নিজে সেই ১৯৭১ সালে বিভিন্ন দেশ সফর করেছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সংগ্রহ করতে। ওই সময়ে ভারত যদি আমাদের পাশে না থাকত, তাহলে হয়তো মুক্তিযুদ্ধ আরও প্রলম্বিত হতো। তাই ইন্দিরা গান্ধীকে যখন বাংলাদেশ মরণোত্তর স্বাধীনতা সম্মাননা দেয়, এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু সোনিয়া গান্ধীর ঢাকায় উপস্থিতির সময় যখন লালমনিরহাটের পাটগ্রামের রফিকুল ইসলামকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে সনিয়াজান নদীতে ভাসিয়ে দেয় (যার ছবিও পত্রিকায় ছাপা হয়েছে), তখন ভারতের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকে বৈকি! আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বিএসএফের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সোনিয়া-হাসিনা আলোচনায় এ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়নি। সন্ত্রাস দমনে যৌথ উদ্যোগ কেন? সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। যদি সার্কভুক্ত দেশগুলো সন্ত্রাস দমনে একটি চুক্তির আওতায় আসত, তাহলে ভালো হতো। ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সমস্যা প্রচুর (ছিটমহল, বাণিজ্য, বাংলাদেশী পণ্যের প্রবেশাধিকার, সীমান্ত ইত্যাদি)। এর একটি ক্ষেত্রেও যদি সোনিয়া গান্ধী আমাদের আশ্বাসের বাণী শোনাতেন, আমরা খুশি হতাম। কিন্তু সেই আশ্বাসের বাণী নেই।
 
বস্তুত ভারত তার স্বার্থ একের পর এক আদায় করে নিচ্ছে। আমরা আমাদের সুবিধা পাচ্ছি না। ট্রানজিট আমরা দিলাম। এখন আসবে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবহারের দাবি। চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আমাদের নিজেদেরই সমস্যা। আমাদের আমদানি-রফতানি বাড়ছে। ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন কার্গো (২০০৪ সালে এর পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৯৪ লাখ ১৩ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন)। ২০০৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ৪২ লাখ ৩৬ হাজার ২৬১ মেট্রিক টনে। একই সময় রফতানির পরিমাণ ছিল ২৪ লাখ ৫৭ হাজার ৫৫৪ মেট্রিক টন (২০০৩) থেকে ৩৩ লাখ ৯২ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন (২০০৭)। ২০০৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর মোট হ্যান্ডলিং করেছে ২ কোটি ১৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৮৯ মেট্রিক টন পণ্য। ২০০৭ সালে তা হয়েছে ২ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার ২৩৫ মেট্রিক টন। জাহাজ ভিড়েছে ১৭২০টি থেকে (২০০৩) ১৯৪৫টি (২০০৭)। প্রতিবছর শতকরা ১৪ ভাগ হারে কনটেইনার পরিবহন বাড়ছে। এই যে পরিসংখ্যান, এই পরিসংখ্যান আমাদের কী বলে? পরিসংখ্যানই বলে দেয় আগামী ৫ বছরে এই বন্দরের কনটেইনার পরিবহন আরও বাড়বে। তাই বর্তমান অবকাঠামো বজায় রেখে অন্যকোনো দেশকে ওই বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া যায় না। গভীর সমুদ্রে বন্দর নির্মিত হলে তা বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, আমাদের নিরাপত্তার জন্য এই বন্দরের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের সামুদ্রিক পরিবহনের ৯২ ভাগ পরিচালিত হয় এই বন্দর দিয়ে। এখন ভারতের ‘সাত বোন’ রাজ্যগুলোর কনটেইনার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিবহনের সুযোগ দিলে চট্টগ্রাম বন্দরে জট সৃষ্টি হবে। বিঘ্নিত হবে আমাদের পণ্য রফতানি। মনে রাখতে হবে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমরা ১৪ লাখ ৪২ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন গার্মেন্ট পণ্য (তৈরি পোশাক) রফতানি করেছি, যা ছিল রফতানির তালিকায় শীর্ষে। এখন এ খাতে রফতানি বিঘ্নিত হওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে খাদ্যদ্রব্য ও বিভিন্ন কাঁচামাল মূলত আমদানি হয় এই বন্দর দিয়েই। খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। ভারত থেকে খাদ্য আমদানি করার সম্ভাবনা (ট্রেনে) দিনে দিনে কমে আসছে। কেননা সেখানে উত্পাদন হ্রাস পাচ্ছে খরার কারণে। চলতি বছর ভারতকে খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। সুতরাং সমুদ্র পথেই আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভরসা ওই চট্টগ্রাম বন্দর। কিন্তু ভারতকে এই বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ায় এখন চীনও এই বন্দর ব্যবহার করতে চাইবে। কেননা চীনের উত্তরাঞ্চলের প্রদেশগুলোর (ইউনানসহ) সঙ্গে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। এ অঞ্চলে রয়েছে চীনের বেশ কয়েকটি প্রদেশ-ইউনান, গুইজু, গুয়ানজি ইত্যাদি। শুধু গুয়ানজি প্রদেশ দক্ষিণ চীন সাগর ঘেঁষে থাকায় এখানে পোর্ট রয়েছে। তবে তা আন্তর্জাতিক মানের নয়। এবং কুনমিং (ইউনানের রাজধানী) থেকে বেশ দূরে। পণ্য পরিবহনে তাই খরচ বেড়ে যায়। কুনমিংয়ের সঙ্গে চট্টগ্রামের বিমান দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টার। চীনের তাই আগ্রহ রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপারে। আগামীতে চীনের সঙ্গে সড়ক পথে চট্টগ্রামের (মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে) একটা যোগসূত্র স্থাপিত হতে পারে। এখন ভারতকে আমরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে দিলাম। আগামীতে চীনকেও দিতে হবে। একই সঙ্গে চীনকে এই বন্দর ব্যবহার করে আমদানি করারও সুযোগ দিতে হবে। আমরা কি বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছি কী পরিমাণ কনটেইনার তখন চট্টগ্রাম বন্দরে আসবে? ‘কানেকটিভি’র আওতায় ভুটান ও নেপালকে মংলা বন্দর ব্যবহার করতে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মংলা বন্দর তো এক কথায় অচল। পলি পড়ে সমুদ্রের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। বড় জাহাজ সেখানে খুব একটা প্রবেশ করতে পারে না। অতীতে কোনো সরকারই মংলাকে সচল করার উদ্যোগ নেয়নি। কেননা ড্রেজিংয়ে অনেক খরচ। উপরন্তু ড্রেজিং করেও দেখা গেছে অতিদ্রুত পলি এসে তা আবার ভরাট করে দেয়। এ অঞ্চলের রাস্তাঘাটও প্রশস্ত নয়। হেভি ট্রাক চলাচলের জন্য অনুপযুক্ত। যুক্তির খাতিরে ভুটান ও নেপালের কথা বলা হলেও বাস্তব ক্ষেত্রেই তারা এটা ব্যবহার করবে না। ভারতের আগ্রহ নেই মংলা বন্দরের ব্যাপারে। মূলত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘সাত বোন’ রাজ্যগুলোর জন্যই চট্টগ্রাম বন্দরের এই গুরুত্ব। ভারতের সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের ঋণসহায়তার কথা স্মরণ করতে চাই। ওই ঋণ ব্যবহার হবে আবার সড়ক ও রেলপথ উন্নয়নে। এতে করে তো লাভবান হবে ভারত। বাংলাদেশের ভেতরকার রাস্তা প্রশস্ত হবে, বেশকিছু কৃষিজমি তাতে নষ্ট হবে। কিন্তু উন্নয়ন হবে ভারতের ‘সাত বোন’ রাজ্যের। চট্টগ্রাম থেকে আগরতলার দূরত্ব ২৪৮ কিমি, আইজলের দূরত্ব ৬৫৫ কিমি, শিলংয়ের দূরত্ব ৬৭৫ কিমি আর কোহিমা রয়েছে ৮৮০ কিমি দূরত্বে। এখন এই অঞ্চলগুলো ব্যবহার করে কলকাতা বন্দর। দূরত্বটা লক্ষ্য করুন : কলকাতা থেকে আগরতলা (ত্রিপুরা) ১৬৮০ কিমি, কলকাতা-আইজল (মিজোরাম) ১৫৫০ কিমি, কলকাতা-শিলং (মেঘালয়) ১১৮০ কিমি ও কলকাতা-কোহিমা (নাগাল্যান্ড) ১৪২০ কিমি। অংকের হিসেবেই বলে দেয় চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যাপারে ভারতের আগ্রহ কেন? প্রশ্ন আসতেই পারে—বিনিময়ে আমরা কী পেলাম? কিছু অশুল্ক বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি (কোন কোন পণ্য? যা সম্ভবত বাংলাদেশ উত্পাদন করে না!)! ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ (কবে থেকে তাও আমরা জানি না)। আমাদের এজেন্ডা তো অনেক। টিপাইমুখ, তিস্তা, সীমান্ত চিহ্নিতকরণ, সমুদ্রসীমা, বাণিজ্য ভারসাম্য কমানো, বিএসএফ হত্যা বন্ধ, ছিটমহল, দক্ষিণ তালপট্টি ইত্যাদি। প্রতিটি বিষয়ের সঙ্গে আমাদের জাতীয় স্বার্থ জড়িত। এই জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে না। সোনিয়া-হাসিনা আলোচনায়ও উপেক্ষিত থাকল জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো। আমি খুশি হতাম যদি সরকারপ্রধান সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার আগে বিরোধী দলের মতামত বা তাদের সঙ্গে কথা বলতেন। আমরা তো এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে তৈরি করতে পারিনি। ভারত কিন্তু তা করে। জাতীয় ইস্যুতে বিরোধী দলের মতামত নেয়। ইউরোপের কথা না হয় নাই বা বললাম। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টও বিরোধী দলের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা তা করছি না। জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার দলটির বা প্রধানমন্ত্রীর রয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট তার রয়েছে। কিন্তু যেখানে রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত, সেখানে বিরোধী দলের পরামর্শ নেয়া ক্ষতির কিছু ছিল না। বরং তাতে করে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান আরও শক্তিশালী হতো। তারপরও ডিবেট হোক। বিএনপি সংসদে গিয়ে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করুক। তাদের সমালোচনা সংসদেই হোক। তারা তাদের প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করুক। শুধু একটা অনুরোধ রাখব সরকারি দলের সংসদ সদস্যের প্রতি, তারা সংসদে অসংলগ্ন আচরণ করবেন না, অতীত ইতিহাস টেনে সংসদে অযথা উত্তাপ ছড়াবেন না। তারা বিরোধী দলের বক্তব্যের জবাব দেবেন। কিন্তু তা যেন হয় মার্জিত এবং তথ্যনির্ভর। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম সেই বিতর্কের জন্য। বিএনপিকে সংসদে আসতে সুযোগ দেয়া হোক। জাতীয় ইস্যুগুলো আলোচিত হোক। ডিবেট হোক। প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক। শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় (জানুয়ারি ২০১০) যেসব চুক্তি হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ জানাটা জরুরি। এখন সোনিয়া গান্ধী বাংলাদেশের জনগণের ভালোবাসা নিয়ে দিল্লি ফিরে গেলেন। কিন্তু আমরা কী পেলাম? 
ড. তা রে ক শা ম সু র রে হ মা ন
অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
www.tsrahmanbd.blogspot.com

1 comments:

  1. oops!!!!Bangali!When you will arise?Really sir ,i dont understand why sheikh hasina perform thus type of work.Actually she is surrounded by leftist like America(surrounded by Ehodi).He Allah amader ke ei jalim janapath theke ber kore nao.......AAmin.

    ReplyDelete