রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে শঙ্কা থেকেই গেল

গত ১৭ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে দুটি সংবাদ ছাপা হয়েছে। একটিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তার নয় বছরের ইরাক আগ্রাসনের অবসান ঘটিয়েছে। আর দ্বিতীয়টিতে বলা হয়েছে, চাকচিক্যের দেশ আমেরিকায় প্রতি দুজনে একজন চরম গরিব। এই দুটো সংবাদের একটির সঙ্গে অপরটির আদৌ কোনো মিল নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী যে একটা 'মিল' তৈরি হয়েছিল, তা অবসান হতে বাধ্য। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আগ্রাসন চালিয়ে দেশটি দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু এই দখলি স্বত্ব তাদের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনেনি। একসময়ের ঐতিহ্যম-িত ইরাক এখন ধ্বংসের নগরী। মৃত্যুর সংখ্যা ১১০৬৫৩ থেকে ১১৯৩৮০ জন। এর মাঝে আমেরিকান সেনা হতের সংখ্যা ৪৪৮৪ জন। আর যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মোট খরচ হয়েছে ৮০৬ বিলিয়ন ডলার, যে অর্থ জুগিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের করদাতারা। ইরাক যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের কোনো মঙ্গল বয়ে আনেনি। কেননা সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক দুরবস্থার যেসব খবর পত্রপত্রিকায় ও গবেষণাপত্রে ছাপা হচ্ছে, তা দেশটির ভবিষ্যৎকে একটি বড় প্রশ্নের মাঝে ঠেলে দিয়েছে। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক পলিসি বিভাগের অধ্যাপক শেলডন ড্যানিজার সম্প্রতি ২৯টি শহরে একটি জরিপ চালান। তাতে দেখা যায়, আমেরিকায় প্রতি দুজনের মাঝে একজন চরম গরিব। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র কোটি কোটি ডলার খরচ করছে যুদ্ধের পেছনে, সেখানে নিজ দেশে দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে পারেনি। ড্যানিজার তার গবেষণাপত্রে লিখেছেন, ফুড স্টাম্প এবং ট্যাক্স ক্রেডিটের মতো সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিগুলো দারিদ্র্যের হার কমিয়ে রেখেছিল। কিন্তু দারিদ্র্য এখন আর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই। এমনকি তা ২০১০ সালের চেয়েও বেড়ে গেছে। ভাবতে অবাক লাগে, যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে দারিদ্র্য বাড়ছে, সেখানে দেশটি যুদ্ধের পেছনে (আফগানিস্তান ও ইরাক) ব্যয় করেছে ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি একটি বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনেক ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। বেকারত্বের হার সেখানে ৯ দশমিক ১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির অবস্থাও উদ্বেগজনক। গড় প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশেরও কম। একদিকে যুদ্ধের খরচ, অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব এবং করপোরেট হাউসগুলোর অতিরিক্ত মুনাফা জন্ম দিয়েছে 'অকুপাই মুভমেন্ট'-এর। ওয়াশিংটনের ফ্রিডম প্লাজায় যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে (ঙপঃড়নবৎ ২০১১ গড়াবসবহঃ), তার মূল টার্গেট যুদ্ধের খরচ কমানো ও সামাজিক খাতে ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো। এ আন্দোলন গতকাল ৭৫ দিন অতিক্রম করেছে। অন্যদিকে নিউইয়র্কের 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলন গতকাল পার করেছে ৯২ দিন। এই 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলন, যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমাজের বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে একধরনের প্রতিবাদ। নোয়াম চমস্কি এ ধরনের আন্দোলনকে সমর্থন করেছেন। চমস্কি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে চিহ্নিত করেছেন চষঁঃড়হড়সু হিসেবে। অর্থাৎ সম্পদের কারণে একটি ধনিক শ্রেণীর জন্ম হয়েছে, যারা অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন। এরা সমাজের মাত্র ১ ভাগ জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন, বাকি ৯৯ ভাগ চৎবপধৎরধঃ, অর্থাৎ অনিশ্চিতভাবে জীবন যাপনকারী একটি শ্রেণী। এই দুই শ্রেণীর মাঝে দ্বন্দ্ব এখন অনিবার্য।
পরিসংখ্যান বলে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় অর্থনীতির দেশে যেখানে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের পেছনে (ইরাক ও আফগানিস্তান) ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করছে (প্রতি মাসে ৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার), সেখানে জনগোষ্ঠীর ৯ দশমিক ১ ভাগের কোনো চাকরি নেই। শতকরা ১৫ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদের ৫ ভাগের ১ ভাগ মালিক হচ্ছে জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ ভাগ মানুষ। ক্ষোভটা তাই ওয়াল স্ট্রিটকে ঘিরেই। ওয়াল স্ট্রিটকে ধরা হয় পুঁজিবাদের একটা সিম্বল হিসেবে। প্রধান প্রধান করপোরেট হাউসগুলোর অফিস সেখানে। স্টক একচেঞ্জ ভবনও এখানে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রে পুঁজিবাদী সমাজে ১৯৭০ সালে ধনী গুণী হিসেবে পরিচিতদের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আয়ের ৮ থেকে ৯ ভাগ অর্থ সঞ্চিত হতো। আজ ২০১১ সালে তারা ভোগ করে মোট সম্পদের ২৩ দশমিক ৫ ভাগ। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ব্রাকলে) অধ্যাপক এমানুয়েল সাজ (ঊসধহঁবষ ঝধবু) তার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন কীভাবে আমেরিকান সমাজে বৈষম্য তৈরি হয়েছে। তার মতে, ১০ ভাগ আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের মোট বেতনের ৪৯ দশমিক ৭ ভাগ গ্রহণ করে। ডেভিড গ্র (উধারফ এৎধ)ি তার এক প্রবন্ধে (ঞযব জরপযবংঃ ষ%. ঐধাব পধঢ়ঃঁৎবফ অসবৎরপধহ্থং ডবধষঃয, অষঃবৎহবঃ) উল্লেখ করেছেন আমেরিকান ধনীদের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের গরিব জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের মোট সম্পদের চাইতেও বেশি। অর্থাৎ ১৫৫ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর সম্পদের চাইতেও বেশি। তার মতে, শীর্ষে থাকা ১ ভাগ ধনী যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ৭০ ভাগের মালিক। যদিও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিটস (ঔড়ংবঢ়য ঝঃরমষরঃু) মনে করেন শীর্ষে থাকা ওই এক ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্রের মোট সম্পদের ৪০ ভাগ। অথচ ২৫ বছর আগে ধনীরা নিয়ন্ত্রণ করতো মাত্র, ১২ ভাগ সম্পদ (ইু ঃযব ১%, ভড়ৎ ঃযব ১%, ঠধহরঃু ভধৎব)। অপর এক গবেষক রবার্ট রাইচ (জড়নবৎঃ জবরপয)-এর মতে, যুক্তরাষ্ট্রেও সর্বোচ্চ বেতনভোগী মানুষদের মাঝে ৫.৩৭ শতাংশ ভোগ্যপণ্যের ক্রেতা। এই পরিসংখ্যানই বলে দেয় যুক্তরাষ্ট্রে একটি শ্রেণী ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে, আর অপর শ্রেণী গরিব থেকে আরো গরিব হচ্ছে, যাদের ক্রয়ক্ষমতা কম, সম্পদের পরিমাণও কম। যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি সমাজব্যবস্থার জন্ম হয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে ঈধংরহড় ঈধঢ়রঃধষরংস। অর্থাৎ ক্যাসিনোনির্ভর একটি অর্থনীতি, যেখানে এক রাতে লাখ লাখ ডলার জুয়া খেলায় হেরে যান অনেক আমেরিকান। ব্যক্তিগত প্লেন নিয়ে আটলান্টায় যান। ক্যাসিনোগুলোর নিজস্ব ফাইভ স্টার হোটেল আছে, সেখানে থাকেন, সারারাত জুয়া খেলে রোববার যার যার শহরে চলে যান। ওখানে একদিকে ক্যাসিনোগুলোর জৌলুস, অন্যদিকে ক্যাসিনোগুলোর কিছুটা দূরে জরাজীর্ণ পুরনো বাড়ি, সেখানে বাস করে বস্নাক আমেরিকানরা, যাদের অনেকেরই চাকরি নেই। স্বাস্থ্যসেবাও তারা পান না। কী বৈসাদৃশ্য! একই দেশের নাগরিক। একজন যেখানে এক রাতে জুয়া খেলে হেরে যান কয়েক হাজার ডলার, অন্যজন সারা মাসেও যার রোজগার নেই মাত্র এক হাজার ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের এই সমাজব্যবস্থায় বৈষম্য তৈরি হয়েছে। পশ্চিম ইউরোপের সমাজব্যবস্থায় 'সোশ্যাল ডেমোক্রেসি'র ধারণা সেখানে গরিবদের, বেকারদের নূ্যনতম অধিকার (স্বাস্থ্য, শিক্ষা) নিশ্চিত করেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই অধিকার নিশ্চিত হয়নি। রাষ্ট্র সব নাগরিকের নূ্যনতম অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। আমি যুক্তরাষ্ট্রে গৃহহীন মানুষ দেখেছি। ভিক্ষা করে এমন লোকও আমি সাবওয়েতে দেখেছি। গায়িকা ম্যাডোনার ভাইও গৃহহীনদের একজন_এ খবরও ছাপা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পত্রপত্রিকায়।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী সেখানে ১৬ দশমিক ৪ মিলিয়ন, অর্থাৎ ১ কোটি ৬৪ লাখ শিশু রয়েছে অত্যন্ত গরিব। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার দরিদ্র পরিবারের যে সীমা নির্ধারণ করেছে (অর্থাৎ ২২ হাজার ৫০ ডলার বছরে), সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের ২১ ভাগ শিশুসন্তান (প্রতি ৫ জনে ১ জন) ওই সব পরিবারে বসবাস করে। জীবনের কোনো একসময় ৯০ ভাগ কৃষ্ণাঙ্গ শিশু 'ফুড স্টাম্প' (বিনে পয়সায় খাদ্য)-এর ওপর নির্ভরশীল ছিল। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য পাস করা একজন গ্র্যাজুয়েট কোনো চাকরির সংস্থান করতে পারছে না, সেখানে ২০১০ সালে করপোরেট হাউসগুলোর প্রধান নির্বাহীর বেতন বেড়েছে শতকরা ২৩ ভাগ। জুকোট্টি পার্কে যারা অবস্থান নিয়ে দিনের পর দিন প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন, তাদের অনেকেরই চাকরি নেই। অথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র বছরে ৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করে আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণের জন্য। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে আফগানিস্তানে যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে অনেকের চাকরির সংস্থান করা যেত। শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বাড়ানো যেত। বাড়ানো যেত 'সামাজিক নেট'-এর পরিধি (ফুড স্টাম্প, হাউজিং ইত্যাদি)। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তা করেনি। ইরাক ও আফগানিস্তানের যুদ্ধ সেখানে যখন কোনো সমাধান বয়ে আনতে পারেনি, তখন লিবিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র 'তৃতীয় যুদ্ধ' এর সূচনা করেছিল। গাদ্দাফির হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে একটা অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে বটে, কিন্তু লিবিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী একটি অস্থিতিশীলতার জন্ম হয়েছে। লিবিয়ায় 'আরেকটি আফগানিস্তান' কিংবা 'আরেকটি সোমালিয়া' জন্ম হওয়া বিচিত্র কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র সেখানে জড়িয়ে গেছে। এখন জনগণের ট্যাক্সের পয়সায় সেখানে যুদ্ধের খরচ মেটাতে হচ্ছে।
এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে এই যে বৈষম্য, এই বৈষম্যের কারণেই সেখানে 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট'-এর মতো আন্দোলনের জন্ম হয়েছে। যদিও পুঁজিবাদী সমাজে এ বৈষম্য নতুন কিছু নয়। পুঁজিবাদী সমাজে পুঁজিই হল আসল কথা। এই পুঁজি একটি নতুন অর্থনীতির জন্ম দিয়েছে। এই সম্পদশালী ধনিক শ্রেণী এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে, যেখানে সাধারণ মানুষের কথা বলার কেউ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে যারা নির্বাচিত হন, তারা এই চষঁঃড়হড়সু-রই প্রতিনিধি। এদের আর্থিক সহায়তায় এরা নির্বাচিত হন। তাই নির্বাচিত হওয়ার পর তারা এই সম্পদশালী ধনিক শ্রেণীরই স্বার্থরক্ষা করেন। নোয়াম চমস্কি লিখেছেন, The world is divided into two blocks-the Plutonomy and the rest। যুক্তরাষ্ট্র এই  Plutonomy অর্থনীতিরই প্রতিনিধিত্ব করে। কার্ল মার্কস শ্রেণী দ্বন্দ্বের কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন শ্রেণী দ্বন্দ্বের কারণে বিপ্লব অনিবার্য। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে 'অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট' আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন করে শ্রেণী দ্বন্দ্বের একটি রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করছি। একটি সামাজিক বিপ্লব সেখানে আসন্ন। যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে তাই একটা শঙ্কা থেকেই গেল।
দৈনিক ডেসটিনি, ২১ ডিসেম্বর ২০১১।
ড. তারেক শামসুর রেহমান
অধ্যাপক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

0 comments:

Post a Comment